বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নেয়ার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। প্রতিবছর চিকিৎসার নামে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। সরকারের উচিত- দেশের টাকা দেশেই রাখতে চিকিৎসা খাতকে উন্নতকরণ ও এজেন্টদের দালালীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা

সংখ্যা: ২৬২তম সংখ্যা | বিভাগ:

বিদেশে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নেয়ার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। বছরে হাজার হাজার রোগী ভালো চিকিৎসা নেয়ার আশায় বিদেশে পাড়ি জমায়। বিশেষজ্ঞরা বলছে, দেশের সর্বত্র চিকিৎসাসেবার অবকাঠামো বেশ মজবুত। দেশের হাসপাতালগুলোতেই রয়েছে হৃদরোগ, কিডনি, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ বিশেষায়িত সমস্ত চিকিৎসাসেবা। বাংলাদেশেই পুরোপুরি লিভার ট্রান্সপ্যান্টের কাজ করা সম্ভব, কিডনি ডায়ালাইসিসের মতো বিষয়ও দেশে হচ্ছে। এখন সব রকম এক্সপার্টই দেশে ডেভেলপ করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় সব উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জামাদিই দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রয়েছে। কিন্তু তারপরেও বাইরের দেশে রোগীরা যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো মিডিয়ার তথ্য বিভ্রাট। দেশের ভেতরই একটি মহল অপপ্রচার করছে যে, ‘দেশে উন্নত চিকিৎসা নেই’। সেইসাথে ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যরা বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করে আত্মতৃপ্তি পেতেই বিদেশে গিয়ে থাকে। অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কেউ কেউ দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতির উপর আস্থা রাখতে পারছে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা বাধ্য হয়েই বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। তবে বিশেষভাবে দেশী চিকিৎসকদের আচরণগত সমস্যা এবং এজেন্টদের কারণেও বিদেশে পাড়ি জমায় অনেক রোগী।

প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিকিৎসার নামে হাজার হাজার রোগী পাঠানো হচ্ছে। চিকিৎসা বাবদ দেশ ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশে থেকে প্রতি বছর ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশ চলে যায়। আর পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতে চলে যাচ্ছে ৮ হাজার কোটি টাকা। দেশের অগোছালো চিকিৎসা সেক্টরের সুযোগটা লুফে নিচ্ছে তিন শতাধিক এজেন্ট। যাদের মাধ্যমে প্রতি মাসে ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার রোগী বিদেশে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ভারতেই যাচ্ছে গড়ে প্রতি মাসে ১৫ হাজার রোগী। বাকিরা চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া যাচ্ছে। এ হিসাবে প্রতি বছরের কমপক্ষে আড়াই লাখ লোক বিদেশে চিকিৎসার জন্য যায়। এসব এজেন্ট প্রতিনিধি ভিসা প্রসেস ও সংশ্লিষ্ট দেশের ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ সমুদয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। এজন্য তারা প্রত্যেক ব্যক্তি থেকে তিন হাজার টাকা ফি নেয়। এ প্রক্রিয়া ছাড়াও সরকারের মন্ত্রী, এমপিসহ প্রশাসনের বড় বড় কর্মকর্তা ও ব্যবসায়িক ব্যক্তিরা অনেক সময়ে বিদেশে ভ্রমণকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে। যার প্রকৃত হিসাব পাওয়া যায় না। তাতেও কোটি কোটি টাকা খরচ হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।

বলাবাহুল্য, দেশের চেয়ে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সমাজের বিত্তবানদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এতে করে চিকিৎসা বাবদ দেশ থেকে প্রতি বছর ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশ চলে যায়। শুধু কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশে প্রতিবছর শ’ শ’ কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। অথচ সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলে এ অর্থ দেশেই রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশেই এ চিকিৎসা করা সম্ভব। বরং উল্লেখ্য, বিদেশ থেকেও কিডনি রোগীরা বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসতে পারে। কারণ কিডনী চিকিৎসায় বাংলাদেশ বিশ্বমানের উন্নতি করেছে। এদিকে ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর ও চিকিৎসকের উপর আস্থাহীনতার কারণে প্রতিবছর দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, দেশে বর্তমানে মোট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ। প্রতিবছর কমপক্ষে ২০ হাজার রোগী দেশের বাইরে যায় চিকিৎসা করাতে। সে হিসাবে রোগীপ্রতি গড়ে ৩ লাখ টাকা করে খরচ হলেও বছর শেষে সেই অঙ্ক দাঁড়ায় ৬০০ কোটি টাকাতে। তবে সবারই সমান টাকা এবং সমান সময় ব্যয় হয় না। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত সম্ভব। বহু লোক বিদেশে চলে যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। যারা বড়লোক তারা বিদেশে যাবে, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সমমানের চিকিৎসা আমাদের দেশের ডাক্তাররা দিতে পারবে নাÑ এটা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ আমার দেশের ডাক্তাররা যথেষ্ট মেধাবী। তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। উন্নত ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মেধাবী আখ্যায়িত করে তাদের কাজের সুযোগ করে দেয়ার উপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দুঃখজনক হলেও শিক্ষার মতো উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য আমাদের দেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে আড়াই লক্ষাধিক রোগী ভারত, সিঙ্গাপুর, ব্যাংককসহ বিভিন্ন দেশে যায়। এই খাতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে চলে যায়। এ রোগীরা দেশেই উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিলে বা নিতে পারলে প্রতিবছর দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হতো। প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, এদেশের অনেকে সামান্য অসুখেই বিদেশে যায়, এটা সত্যি। অনেকে বিদেশে চিকিৎসা নেয়াকে স্টেটাস সিম্বল মনে করে। বলাবাহুল্য, দেশের রাজনীতিক, মন্ত্রী, আমলা, ব্যবসায়ী ও সেলিব্রেটিদের মধ্যেই এই প্রবণতা বেশি। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার দল ও সরকারের উচ্চপদস্থরা যদি এখন থেকে দেশেই চিকিৎসা নেয়, তাহলে এ দৃষ্টান্ত অন্যদেরও মানসিকতা বদলে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।

তবে বিদেশগামী রোগীদের সাধারণ ভাষ্য হলো- এর চেয়ে কম খরচে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আসা যায়। তারপর এদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনো রোগীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। দেশের নামীদামি হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ নৈমিত্তিক ব্যাপার। তারপর চিকিৎসকদের রোগ নির্ণয়ে ভুল করা, চিকিৎসকদের অতিমাত্রায় বাণিজ্যিক মনোবৃত্তি এসব দেশের রোগীদের বিদেশমুখী করতে ভূমিকা রাখছে।

এক্ষেত্রে আমরা মনে করি, এ অভিযোগ অনেকের বেলায় সত্য হলেও সবার ক্ষেত্রে নয়। সেক্ষেত্রে অন্ধভাবে অভিযোগ না করে ভালো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসক খুঁজে বের করা নাগরিকের কর্তব্য। পাশাপাশি সরকারেরও উচিত- শুধু দেশের চিকিৎসার আহ্বান জানিয়ে ক্ষ্যান্ত না হওয়া, বরং চিকিৎসকের ব্যবহার উন্নত নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি চিকিৎসার নামে সব হয়রানি এবং প্রলোভন বন্ধ করা। বিদেশে নিয়ে যাওয়ার এজেন্ট দালালদের শক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা। বর্তমান সব প্রতিকূল অবস্থার বিপরীতে অনুকূল ও উৎসাহব্যাঞ্জক স্বতঃস্ফূর্ত পরিবেশ তৈরি করা।

-আল্লামা মুহম্মদ আরিফুল্লাহ, ঢাকা

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।