বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে উল্টো জরুরীভিত্তিতে দাম কমাতে হবে। ৮০ হাজার কোটি টাকার ফান্ডের সুবিধা জনগণকে দিতে হবে। সরকারের উচিত- কুইক রেন্টালসহ তেলনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে বের হয়ে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ধাবিত হওয়া।

সংখ্যা: ২৭৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

রাষ্ট্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু বর্তমান সরকার মুনাফার দিকে জোর দিচ্ছে। ব্যয় সমন্বয়ের কথা বলে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। কিন্তু সরকারের নৈতিক দায়িত্ব জনগণের স্বার্থ দেখা, যা তারা দেখছে না। এটা অযৌক্তিক, অন্যায়।

গত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ পাইকারি ও খুচরা বিদ্যুতের মূল্যহার এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ চার্জ বৃদ্ধির প্রস্তাবগুলোর উপর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সম্প্রতি গণশুনানি শেষ করেছে। বিইআরসির কারিগরি কমিটির হিসাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় ৫.৭০ টাকা। কিন্তু ৪.৯০ থেকে ক্রমেই কমতে থাকা পাইকারি বিদ্যুতের মূল্যহার এখন ৪.৭৭ টাকা। ফলে ঘাটতি ৭ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। সে ঘাটতি গণশুনানিতে ন্যায্য ও যৌক্তিক বলে প্রমাণ হয়নি। কারণ, বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যয় ও ব্যয়বৃদ্ধি ন্যায্য ও যৌক্তিক না হলে আর্থিক ঘাটতির দাবি ন্যায্য ও যৌক্তিক হয় না।

সরকারের অপরিকল্পিত পদক্ষেপের কারণেই বিদ্যুত খাতে খরচ বাড়ছে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবেই বিদ্যুতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। সব ধরনের ‘অযৌক্তিক ব্যয়’ কমানো গেলে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। অভিজ্ঞমহল মনে করেন, সুচিন্তিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে বিদ্যুতের মূল্য কমবে।

এক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে ঘাটতি মেটাতে নতুন তহবিল গঠন করা যায়। দৈনিক আল ইহসান শরীফের তথ্য মতে, বর্তমানে জ্বালানি খাতে ৭০ হাজার কোটি টাকা উদ্বৃত্ত আছে। ভোক্তার জামানত বাবদ আছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

এই টাকা দিয়ে বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে বিইআরসির অধীনে একটি তহবিল গঠন করলে বছর বছর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।

বলার অপেক্ষা রাকেনা, বার বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর এই প্রক্রিয়ায় আমরা ভোক্তাদের পক্ষ থেকে উদ্বিগ্ন। এখন বিইআরসি’র কাছে দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, তা অযৌক্তিক এবং অন্যায়। শহরে যেভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, গ্রামে সেভাবে পাওয়া যায় না। অথচ দাম একই। এই বৈষম্যমূলক নীতির আমরা বিরোধী। বার বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে বৈদ্যুতিক শক দেয়ার মতো বেদনাদায়ক।

সরকারের উদ্দেশে আমরা বলছি, আপনারা বৈদ্যুতিক শক দেবেন না। ন্যায্যমূল্যে বিদ্যুৎ দেন। আমরা আবারো বলছি, অপরিকল্পিত ব্যয়বহুল আমদানি করা জ্বালানির কারণে বাড়ছে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ। বাংলাদেশের উচিত সাশ্রয়ী জ্বালানির যোগান দেয়া, যেন বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমে। সাগর, পার্বত্য এলাকাসহ দেশের অনেক এলাকায় এখনো কোনো অনুসন্ধান কাজ হয়নি। কোনো পরিকল্পনায় করা হচ্ছে না। উৎপাদন খরচ কমাতে কোনো উদ্যোগ নাই। ফলে বিদ্যুতের দাম কমাতে হলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে সাশ্রয়ী জ্বালানির যোগান দেয়া জরুরি। এদিকে ক্যাবের সভাপতি বলেছে, সরকার বিদ্যুৎখাতে অনেক কাজ করছে। কিন্তু কিছু কিছু কাজে সমালোচনা হচ্ছে। এরমধ্যে একটি হলো বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি। অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ঠিক হবে না। আমরা চাই, বিইআরসি সবার মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিক। তিনি বলেন, ক্যাবের পক্ষ থেকে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমাতে যেসব প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, সেগুলো কমিশনের উচিত বিবেচনায় নেয়া। ন্যায় বিচার চাই। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে দাম বাড়ানো যৌক্তিক নয়। বিদ্যুতের দাম এক পয়সাও বাড়নোর প্রয়োজন নেই, বরং কমানোর যথেষ্ট সুযোগ আছে।

অপরদিকে দৈনিক আল ইহসানের গবেষনা মতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে সামনে আসছে দুইটি বিষয়। একদিকে, সাগরের বিশাল জায়গা পড়ে আছে, অনুসন্ধান করা হচ্ছে না। অন্যদিকে, আমদানি করে এলএনজি, কয়লা আর তেল আনা হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য। এই অজুহাতেই বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুতের দাম।

প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী প্রায় সব দেশই বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকলেও সরকার এখনো অত্যাধিক ব্যয়বহুল তরল জ্বালানি নির্ভরতায় ঝুঁকে রয়েছে। ভারত, দুবাই, মেক্সিকো, চিলি, ব্রাজিল, অস্টেলিয়া ও মরোক্কসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বড় বড় সোলার নির্ভর প্রকল্প চালু হয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক উৎস থেকে তাদের দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে কাজ করে চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিপরীতে প্রাকৃতিক উৎস তথা গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ অনুসন্ধানে কাজ করছে না। অথচ ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক পত্রিকা দ্য ডিপ্লোম্যাট রিপোর্ট করেছিল- বাংলাদেশ হচ্ছে এশিয়ার নতুন এনার্জি সুপার পাওয়ার, বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে মজুদ আছে প্রায় ২০০ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাস। যা দিয়ে বাংলাদেশ বছরের পর বছর বিদ্যুতের উৎপাদনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালায় জ্বালানির মূল উৎস হিসেবে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, হাইড্রো, বায়ো ফুয়েল, জিও থার্মাল, নদী স্রোত, সমুদ্রের ঢেউ ইত্যাদি শনাক্ত করা হয়েছে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিই আমাদের ভবিষ্যৎ। কারণ অনবায়নযোগ্য খাত থেকে জ্বালানি উৎপাদন সীমিত। এছাড়া এই খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় অন্য যেকোনো পদ্ধতির চেয়ে কম। ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ঘিরে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বাংলাদেশে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, নদীর ও সমুদ্রের ¯্রােতের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ অনেক বেশি উপযোগী। এখানে বছরের অধিকাংশ দিনই পর্যাপ্ত সূর্যের আলো থাকে।

সঙ্গতকারণে আমরা মনে করি, সরকার তখনই জনগনের মাঝে তাদের উন্নয়নের কথা প্রচার করতে পারবে যখন সরকার সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ জনগনের কাছে পৌছাতে পারবে। আর তা তখনই সম্ভব হবে যখন সরকার নবায়নযোগ্য সাশ্রয়ী উৎসগুলোর দিকে দৃষ্টি দিবে এবং সেগুলো কাজে লাগিয়ে দেশের বিদ্যুৎ খাত স্বয়ংসম্পূর্ণ করবে।

-আল্লামা মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।