বিশেষ কলাম: পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান মশহূর পবিত্র শবে বরাত এবং উনার আমলসমূহ বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হওয়া প্রসঙ্গে-পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছ শরীফ একদম ছহীহ- এ বিষয়ে সকল আসমাউর রিজাল বিশারদগণ একমত

সংখ্যা: ২৬১তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারা পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ প্রমাণিত। রিজালবিদগণ সনদ ছহীহ হওয়ার ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। বিশ্ব বিখ্যাত হাদীছ শরীফ উনার কিতাব “ছহীহ ইবনে হিব্বানে” ছহীহ সনদসহ বর্ণনা এসেছে-

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُعَافَى الْعَابِدُ بِصَيْدَا رحمة الله عليه، وَابْنُ قُتَيْبَةَ وَغَيْرُهُ ، قَالُوا : حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ خَالِدٍ الأَزْرَقُ رحمة الله عليه، قَالَ : حَدَّثَنَا أَبُو خُلَيْدٍ عُتْبَةُ بْنُ حَمَّادٍ رحمة الله عليه، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ ، وَابْنِ ثَوْبَانَ رحمة الله عليه، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَكْحُولٍ رحمة الله عليه، عَنْ مَالِكِ بْنِ يُخَامِرَ رحمة الله عليه، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رضى الله تعالى عنه، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : يَطْلُعُ اللهُ إِلَى خَلْقِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلاَّ لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ

অর্থ: “হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মধ্য শা’বানের রাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি রহমত উনার ভাণ্ডার নিয়ে সকল সৃষ্টির প্রতি বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।” সুবহানাল্লাহ! (দলীল: সুনানে ইবনে হিব্বান- হাদীছ শরীফ নং ৫৬৩৬, মুজামুল কবীর লি তাবরানী হাদীছ শরীফ নং ১৬৬৩৯, মুজামুল আওসাত লি তাবরানী হাদীছ শরীফ নং ৬৭৭৬, সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীছ শরীফ নং ১৩৯০, শুয়াবুল ঈমান হাদীছ শরীফ নং ৩৫৫২, হুলয়িতুল আওলিয়া ৫/১৯১)

পবিত্র এই হাদীছ শরীফ উনার সম্পর্কে বিখ্যাত রেজাল বিশারদ আল্লামা হযরত নূরউদ্দীন ইবনে হাজার হায়ছামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত কিতাব “মাযমাউয যাওয়ায়িদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়িদ” কিতাবে বলেছেন-

وعن معاذ بن جبل عن النبى صلى الله عليه وسلم قال “يطلع الله إلى جميع خلقه ليلة النصف من شعبان، فيغفر لجميع خلقه، إلا لمشرك، أو مشاحن” رواه الطبرانى فى الكبير والأوسط ورجالهما ثقات

এখানে পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উল্লেখ করে বলেছেন, “ইমাম হযরত তাবরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মু’জামুল কবীর ও আওসাত’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফের সকল রাবী সেকাহ। (মাযমাউয যাওয়ায়িদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়িদ ৬/১২৬ : হাদীছ শরীফ নং ১২৯৬০)

বিখ্যাত ইমাম হযরত মুনযিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “আত তারগীব ওয়াত তারহীব” গ্রন্থে উক্ত হাদীছ শরীফ উল্লেখপূর্বক বলেছেন,

হযরত ইমাম হিব্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ হিসেবে উনার কিতাবে উল্লেখ করেছেন। (আত তারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীছ শরীফ নং ১৫৪৪)

হযরত ইমাম মুনযিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার উক্ত গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন- এই কিতাবে যে হাদীছ শরীফ “ওয়া আন” দ্বারা শুরু, সেসকল হাদীছ শরীফসমূহ সনদ ছহীহ। উক্ত হাদীছ শরীফখানা তিনি ‘ওয়া আন’ দিয়েই শুরু করেছেন।

বর্তমানে যারা পবিত্র লাইলালাতুন নিছফি মিন শা’বান তথা পবিত্র শবে বরাত শরীফ অস্বীকার করে তাদের মূল মুরুব্বী, সালাফী লা’মাযহাবীদের অন্যতম গুমরাহ নাছির উদ্দীন আলবানী তার “সিলসিলাতু আহাদীসি আস সহীহা” কিতাবে পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শরীফ উনার হাদীছ শরীফ উনাকে ছহীহ বলে স্বীকার করে উল্লেখ লিখেছে-

حديث صحيح ، روي عن جماعة من الصحابة من طرق مختلفة يشد بعضها بعضا و هم معاذ ابن جبل رضى الله تعالى عنه و أبو ثعلبة الخشنى رضى الله تعالى عنه و عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه و أبى موسى الأشعرى رضى الله تعالى عنه و أبى هريرة رضى الله تعالى  عنه و أبي بكر الصديق عليه السلام و عوف ابن مالك رضى الله تعالى عنه و ام المؤمنين حضرت عائشة عليها السلام.

অর্থ: “পবিত্র হাদীছ শরীফখানা সহীহ। কেননা এক জামায়াত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের থেকে বিভিন্ন সূত্রে নিসফে শা’বান উনার মর্যাদা উপর একাধিক পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে পবিত্র হাদীছ শরীফটি মজবুতী লাভ করেছে। যে সকল হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে উনারা হলেন, হযরত মু’আয ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু সালাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আব্দল্লাহ বিন আ’মর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু মূসা আল আশ’আরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, হযরত আউফ বিন মালেক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম। এছাড়াও অনেক আকাবীর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। (দলীল: সিলসিলাতু আহাদীসি আস ছহীহা ৩য় খন্ড ১৩৫ পৃষ্ঠা: হাদীছ শরীফ নং ১১৪৪)

সুতরাং প্রমাণ হলো উক্ত হাদীছ শরীফ ছহীহ এবং অনেকগুলো সনদে বর্ণিত। অর্থাৎ শাহেদ ও মুতাবে’ সূত্রে আরো পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত থাকার কারণে উক্ত ছহীহ হাদীছ শরীফ আরো বহুগুণে শক্তিশালী হয়েছে। এখন যারা এমন ছহীহ হাদীছ শরীফ অস্বীকার করবে এবং পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান উনার বিরোধিতা করবে তাদের জন্য বলতে হবে- উক্ত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেই তাদের ফয়সালা বলা আছে। তারা হচ্ছে মুশরিক অথবা হিংসুক। এদের নছীবে পবিত্র শবে বরাত শরীফ জুটবে না।

-খাজা মুহম্মদ নূরউদ্দীন

শোক সংবাদ: সাইয়্যিদাতুন নিসা, সুলতানাতুল আরিফীন, কুতুবুল ইরশাদ, কুতুবুল আক্বতাব, আওলাদে রসূল মুহতারামা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেছেন

আমীরুল মু’মিনীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম তিনি নিঃসন্দেহে আল্লাহ পাক উনার খাছ ওলী উনার প্রতি অপবাদকারী যালিম গং নিঃসন্দেহে গুমরাহ, বাতিল, লা’নতপ্রাপ্ত, জাহান্নামী ও সুন্নী নামের কলঙ্ক রেজাখানীরা আয়নায় নিজেদের কুৎসিত চেহারা দেখে নিক ॥ ইসলামী শরীয়ার আলোকে একটি দলীলভিত্তিক পর্যালোচনা-১২

আহলান-সাহলান! সুমহান পহেলা শাওওয়াল!! মুবারক হো ঈদে বিলাদতে তাহিরাহ, তাইয়িবাহ, মাহবুবাহ, ফাক্বীহা, মাশুক্বাহ, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকীয়্যাহ, নূরে হাবীবা, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম, কুতুবুল আলম, উম্মু আবিহা, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আওলাদে রসূল, হযরত শাহযাদী উলা ক্বিবলা আলাইহাস সালাম

বিশেষ প্রবন্ধ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নিসবত মুবারকই মুহব্বত-মা’রিফাত, কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারকসহ সমস্ত কিছুর মূল, কাজেই যে যতটুকু উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবে, সে ততটুকু কামিয়াবী হাছিল করবে

বিশেষ কলাম: ছবি, মূর্তি-ভাস্কর্য ও বাদ্যযন্ত্র নিশ্চিহ্ন করা, ভেঙ্গে ফেলা খাছ সুন্নত তো অবশ্যই, বরং ফরযে আইন। কেননা এগুলো তৈরি করা ইবলীস শয়তানের কাজ যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সদৃশ্য কোনো প্রাণীর মূর্তি-প্রতিমা, ভাস্কর্য ও ছবি তুলবে, আঁকবে বা বানাবে তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন ওইগুলোর মধ্যে প্রাণ দিতে বলা হবে, কিন্তু তারা তাতে প্রাণ দিতে কখনোই পারবে না, বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দিয়ে প্রস্তুতকারীকে কঠিন শাস্তি দিবেন। নাউযুবিল্লাহ! (১ম পর্ব)