ভয়াবহ মাদক ইয়াবার ছোবল সর্বগ্রাসী। কোমলমতি শিশু থেকে ছাত্ররা ভয়াবহভাবে আসক্ত হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে দেশের ছাত্র ও যুব সমাজকে ধ্বংস করা হচ্ছে। ইয়াবার বিরুদ্ধে সরকারি-বেসরকারিভাবে যুগপৎ জিহাদ ঘোষণা করা দরকার

সংখ্যা: ২৫৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৯ সালের পুরো বছরে ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৪৪ পিস ইয়াবার তুলনায় চলতি ২০১৬ সাল পর্যন্তই উদ্ধার হয়েছে ১ কোটিরও বেশি ইয়াবা। এ চিত্র থেকেই বোঝা যায়, ইয়াবার ভয়াল থাবা কীভাবে গ্রাস করেছে যুবসমাজকে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত ৭ বছরে ইয়াবা আসক্তির সংখ্যা ৩০ লাখে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, মাদক হিসেবে ইয়াবার ব্যবহার বেড়েছে ৭৭গুণ। অধিদপ্তরের হিসাবে, মোট মাদকসেবীর ৫০ ভাগেরও বেশি ইয়াবা ব্যবহার করছে এবং ইয়াবা সেবনকারীরা দিনে ১৩৫ কোটি টাকা ইয়াবা সেবনের পেছনে ব্যয় করছে।

উল্লেখ্য, দেশজুড়ে এখন জমজমাট সর্বগ্রাসী মাদক ইয়াবার বাজার। নতুন প্রজন্ম রীতিমতো ইয়াবার ক্রেজে উন্মাদ। মাদকবাজারে কেনাবেচার শীর্ষে রয়েছে ইয়াবা। রাজধানীর তথাকথিত অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও ইয়াবার সেবন ও বিপণনের আস্তানা গজিয়ে উঠছে। মাদকটি আকারে ছোট হওয়ায় সহজে বহন করা যায়। এ কারণে অন্য মাদকের তুলনায় ইয়াবা সেবনকারী ও বিক্রেতারা খুব সহজে নিরাপদে সেবন ও বিক্রয় করতে পারে। যারা ইয়াবা সেবন করে তারাই বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। আইনের চোখে ফাঁকি দেয়ার জন্য সাংকেতিকভাবে নাম দেয়া হয়েছে বাবা। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন রকম নামে ডাকা হয়।

আরো ভয়ঙ্কর তথ্য হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী আর তরুণ-তরুণী শুধু নয়; ছোট-বড় ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীর একটি অংশ এখন ইয়াবায় আসক্ত। ১৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারী-পুরুষ এখন এ মাদক সেবন করছে। তবে ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী মাদকসেবীর সংখ্যাই বেশি। ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবার থাবায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে বহু পরিবারের সন্তানের জীবন। নেশায় আসক্ত হয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের মায়ের কান্নাও থামছে না। অসহায় এ মায়েদের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে।

নানা প্রতারণার মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া এমএলএম কোম্পানিগুলোর বহুল ব্যবহৃত ‘উল্টো পিরামিড’ পদ্ধতি ব্যবহার করেই রাতারাতি জ্যামিতিক হারে বাড়ানো হচ্ছে ইয়াবার কেনাবেচা। এ পদ্ধতিতে আজ যে ব্যক্তি ইয়াবার ক্রেতা, কালকেই সে হয়ে উঠে খুদে বিক্রেতা। বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে পারলে নিজের নেশার খরচ মেটানোর পাশাপাশি বাড়তি টাকাও পকেটে ঢুকে। নতুন পদ্ধতির এ ইয়াবা বাণিজ্যের কাছে হেরোইন, ফেনসিডিল, বাংলা মদ, গাঁজার ব্যবসাও হার মেনেছে। মাত্র সাত বছরের মধ্যেই দেশের সর্বাধিক বিক্রিত মাদকদ্রব্য হয়ে উঠেছে ইয়াবা। শুধু বাংলাদেশে পাচারের জন্যই মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ৪০টি ইয়াবা কারখানা। এসব কারখানা থেকে প্রতিদিন কোটিরও বেশি ইয়াবা টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম সীমান্তের ৪৩টি পয়েন্ট দিয়ে আসছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের মংডু থেকে বিভিন্ন ধরনের ফিশিং বোটের মাধ্যমে টেকনাফের স্থলবন্দর, শাহপরীর দ্বীপ, মাঝিরপাড়া, জালিয়াপাড়া, ট্রানজিট ঘাট, নাইট্যংপাড়া, সাবরাংয়ের লেজিপাড়া ও বার্মাপাড়া পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিনই দেশে লাখ লাখ পিস ইয়াবা আসছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, বিভিন্ন সংস্থার একশ্রেণীর কর্মকর্তার সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সখ্য ও গোপন লেনদেন থাকায় ইয়াবা প্রবেশ রোধ হচ্ছে না কোনোভাবেই।

প্রসঙ্গত, জীবনীশক্তি ধ্বংসকারী ইয়াবা সেবনকারীরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছে এবং যৌবনশক্তি হারিয়ে ফেলছে চিরতরে। কিডনি সংক্রান্ত নানা জটিলতাতেও ভুগছে তারা। বিভিন্ন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ইয়াবা আসক্তদের উপর পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য জানিয়েছে। ইয়াবা আসক্তদের বক্তব্য হচ্ছে- ছোট বড়িতে অনেক বড় ক্ষতির শিকার হচ্ছে তারা। এছাড়া ইয়াবার পেছনে সেবনকারীরা দিনে খরচ করছে প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা। বছরে এ অঙ্ক দাঁড়ায় ৪৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রতি বছর ইয়াবার আগুনে ধোঁয়া হচ্ছে এ বিপুল অঙ্কের টাকা। আর এ টাকা যোগাড় করতে ইয়াবা সেবনকারীরা সহিংস হয়ে ওঠে। যার ফলে দেশে খুন-খারাবি থেকে শুরু করে ছিনতাই, ডাকাতি, চুরির মতো অপরাধ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে যে ইয়াবা আসছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘আর-৭’। এই আর-৭-এর অন্তত ১০টি ক্যাটাগরির ইয়াবা এখন বাজারে অহরহ মিলছে। এমনকি পান দোকান, চা দোকান, যারা হেঁটে চা বিক্রি করছে- তাদের কাছেও পাওয়া যায়। তবে তাকে চিনে নিতে হবে। পরিচিত লোক ছাড়া ইয়াবা বিক্রি করে না তারা।

সূত্রটি জানায়, আর-৭-এর এক নম্বর ক্যাটাগরির এক পিস ইয়াবার মূল্য প্রায় দুই হাজার টাকা। এর সর্বনিম্ন যে মূল্য রয়েছে, তার এক পিস চারশ’ টাকা। মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনীতিকরা এই ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

এসব কারণেই আজ শহর থেকে অজোপাড়াগাঁও পর্যন্ত সব স্থানেই এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে এই ‘ক্রেজি ড্রাগ’ ইয়াবা। মানবদেহের সবচেয়ে ক্ষতিকর নেশাদ্রব্যের মধ্যে ইয়াবা অন্যতম। ইয়াবা হচ্ছে থাই শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে ‘ক্রেজি ট্যাবলেট’ বা পাগলা ওষুধ। ‘ইয়া’ অর্থ ক্রেজি, আর ‘বা’ মানে হচ্ছে ট্যাবলেট। ইয়াবা হচ্ছে ব্র্যান্ড নেম। ইয়াবা হলো- ‘মেথাফেটামিন’ ও ‘ক্যাফেইন’-এর মিশ্রণ। মেথাফেটামিন উত্তেজক পদার্থ ক্যাফেইনের সঙ্গে হেরোইন মিশিয়ে তৈরি করা হয় ইয়াবা। এ নেশাদ্রব্য হেরোইনের চেয়েও ভয়াবহ।

মোবাইলফোনে অর্ডার দিলেই মুহূর্তেই হাতে চলে আসছে ছোট আকারের হরেক রঙের এই মাদক। এছাড়া এখন পাওয়া যাচ্ছে নির্দিষ্ট কিছু টং ও মুদি থেকে শুরু করে বড় বড় দোকানেও। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় সুচারুভাবে চলছে এই মাদক ব্যবসা।

যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তাদেরও আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। গণতান্ত্রিক আইনের ফাঁকফোকর গলে দিব্যি তারা বেরিয়ে আসছে জেলহাজত থেকে। আবার ফিরছে ইয়াবা ব্যবসায়।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।