ভারত থেকে আসা নিম্নমানের বীজে হুমকিতে দেশের কৃষিব্যবস্থা। নিম্নমানের বীজে ফলন বিপর্যয়ের পাশাপাশি ছড়াচ্ছে নব্য নানা ফসলী রোগ। ভারতীয় নিম্নমানের বীজ আমদানি নিষিদ্ধ না করা হলে ধ্বংস হবে কৃষি ও কৃষক।

সংখ্যা: ২৭৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

গত ১০ মার্চ প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, ভারত থেকে পাট বীজ আমদানি করছে সরকার। চলতি মৌসুমে দেশে পাট চাষের জন্য ভারত থেকে ৬ হাজার ৭২৫ টন পাট কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স¤প্রতি জাতীয় বীজ বোর্ডের ৯৮তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বীজ বোর্ডের সভায় বেসরকারি পর্যায়ে ভারত থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশিত মানের ৫ হাজার ৪২৫ টন তোষা পাট বীজ এবং এক হাজার ৩০০ টন বীজ আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে- যতই করা হোক না কেনো এ পর্যন্ত ভারত থেকে যত বীজ আমদানি হয়েছে তার ৯৮ ভাগই ছিলো নি¤œমানের। যার কারনে গত ২ বছর বাংলাদেশের বহু কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

উল্লেখ্য, ক্ষমতাসীন সরকারের তরফ থেকে ভারতকে বার বার বন্ধুরাষ্ট্র বলা হলেও ভারত দিন দিন বাংলাদেশের প্রতি শত্রুভাবাপন্নমূলক আচরণ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পর থেকে নানা কায়দায় শোষণ করে চলেছে ভারত। ফারাক্কা বাধ তৈরী করে বাংলাদেশকে স্থায়ী মরুকরনের দিকে এগিয়ে নিয়ে উত্তরাঞ্চলের কৃষিতে প্রতি বছর লাখ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি করছে, বাংলাদেশের রফতানিযোগ্য পণ্যে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি করছে, সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশী নিরীহ নাগরিককে হত্যা করছে, নিম্নমানের পণ্য দিয়ে দেশের বাজার সয়লাব করে দেশীয় ব্যবসায়ীদের পথে বসাচ্ছে। আর এরপরও যখন বাংলাদেশ কৃষিখাতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করছে, বিশ্ববাজারে কৃষিপণ্য রফতানি করে লাখ কোটি টাকা অর্থনীতিতে যোগ করছে তখন বাংলাদেশের কৃষিকে স্থায়ীভাবে ধ্বংস করার জন্য দেশের কৃষিখাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চাচ্ছে, গার্মেণ্টস সেক্টরের মত বাংলাদেশের কৃষিখাতকে নিম্নমানের বীজ দিয়ে ধরাশায়ী করে ভারতীয় কৃষিবাজার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা।

প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, ভারত থেকে নিম্নমানের বীজ আমদানিতে হুমকির মুখে পড়ছে দেশের কৃষি। রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে নিম্নমানের ভারতীয় বীজ। এসব বীজের সঙ্গে সীমান্ত পেরিয়ে আসছে আগাছা, মিলিবার্গ, প্ল্যান্ট হপারসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকামাকড়ও। এতে হুমকি বাড়ছে দেশের অন্যতম শষ্য ভা-ার খ্যাত বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষিতে। এখনকার কৃষকরা দিন দিন আধুনিক চাষাবাদে ঝুঁকছে। এক দশকে বেড়েছে বাণিজ্যিক আবাদ। কিন্তু নেই পর্যাপ্ত উচ্চফনশীল বীজের যোগান। কারণ চাহিদার মাত্র ১০ শতাংশ উচ্চ ফলনশীল বীজ সরবরাহ করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)।

আর এ সুযোগ নিয়েছে অসৎ সিন্ডিকেট। এ অঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে বিশেষ করে পাট, ভুট্টা, গম, ধান ও বিভিন্ন হাইব্রিড সবজি বীজ আসছে। গত বছর টমেটো চাষে প্রসিদ্ধ রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চাষিরা ভেজাল বীজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া নিম্নমানের বোরো ধান বীজে প্রতারিত হয়েছেন বরেন্দ্রর কৃষকরা। এসব বীজের পুরোটাই চোরাচালান হয়ে এসেছে ভারত থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর গোদাগাড়ীতে অন্তত ১৫টি হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছিলেন চাষিরা। এরমধ্যে ভেজাল ‘ইউএস নাসিব’ বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন কয়েক হাজার চাষি। ফলন বিপর্যয় হয়ে মোটা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। সীমান্ত দিয়ে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৪ টন কৃষিজাত পণ্য আমদানি হয়েছে। এর আগে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরেও আমদানি হয় ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৪ টন।

কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন যেহেতু কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করতে পারছে না। সেহেতু এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে ভারত। নতুন নামে মোড়কজাত করে ভারত থেকে এসব বীজ পৌঁছে যাচ্ছে ডিলারদের কাছে। আর এতে করে কৃষকরা যে শুধু ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে তাই নয়; বরং নানারকম রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে কৃষি খাতে। সম্প্রতি যশোর ও মেহেরপুর অঞ্চলে গমের ব্ল্যাস্টরোগ ছড়িয়ে পড়েছে। যা এসেছে ভারতীয় নিম্নমানের বীজ থেকেই। অন্যদিকে, রাজশাহীর অঞ্চলে বর্তমানে ‘পার্থেনিয়াম’ নামের একটি আগাছা পাওয়া যাচ্ছে। এক দশক আগেও বাংলাদেশে এ আগাছা দেখা যায়নি। এর মূল উৎপত্তিস্থল মেক্সিকো। সেখান থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে ছড়িয়েছে এ আগাছা নিম্নমানের বীজের মাধ্যমে। বীজের মাধ্যমে আসা এই বিষাক্ত আগাছা ফসলের উৎপাদন প্রায় চল্লিশ শতাংশ কমিয়ে দেয়। মানুষ ও প্রাণীর জন্যেও এ আগাছা বিপজ্জনক। এক দশকের মধ্যে ভারত থেকে ক্ষতিকর ‘মিলিবাগ’ এবং ‘প্ল্যান্টহপার’ও এসেছে বাংলাদেশে।

‘মিলিবাগ’ সাধারণত একটি ছোট কালচে ধরনের পোকা। যা পাতার সঙ্গে লেগে থাকে। কখনও কখনও পাতা খেয়ে পাতার রং ধারণ করে। এরা আম, কাঁঠাল, পেঁপে ছাড়াও শোভাবর্ধনকারী গাছ এবং শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি করে। অন্যদিকে আমগাছ ও ধান গাছের মারাত্মক ক্ষতিকর ‘প্লান্টহপার’ অনেকটাই ঘাস ফড়িংয়ের মতো। এ পোকার আক্রমণে ফলন বিপর্যয় হয়। এদেশের কৃষি নিরাপত্তায় রোগাক্রান্ত ভারতীয় বীজের অনুপ্রবেশ বন্ধের বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ কৃষি খাতে ধীরে ধীরে রোলমডেলে পরিণত হলেও কৃষির মূল নিয়ামক বীজ ব্যবস্থাপনায় এবং বীজে স্বয়ংসর্ম্পূনতায় অপূর্ণ রয়েছে। যদি সরকার কৃষিখাতে উন্নত বীজ সরবরাহ করতে পারতো তাহলে আর ভারতীয় নিম্নমানের বীজ কৃষকদের ব্যবহার করতে হতো না। দীর্ঘদিন থেকেও বাংলাদেশের কৃষিবিজ্ঞানীরা সরকারের প্রতি আহবান করে আসছে বীজখাতে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য। এজন্য তারা পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় বিজাগার নির্মাণ করার জন্য। যদি তাদের চাহিদা মতো উন্নত বীজ সরবরাহ করা হতো, তবে বাংলাদেশের পক্ষে স্বল্প সময়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন সম্ভব হতো। কৃষি মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। খামারগুলোর অবকাঠামোর উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন, পর্যাপ্ত বীজ পরীক্ষাগার, জনবল বৃদ্ধি, কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদনও বিপণন সহায়ক নীতিমালা তৈরি, উন্নতজাতের কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ, সর্বোপরি একটি সুষ্ঠু বীজ নীতিমালা তৈরির মাধ্যমে জাতীয় বীজাগার গড়ে তুলতে হবে। এতে করে যেমন ভারতীয় নিম্নমানের বীজ ব্যবহার যেমন বন্ধ হবে তেমনি ফসল উৎপাদনের হারও বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। বিএডিসি’র যে খামারগুলো রয়েছে সেগুলো আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সংস্কার করে সমৃদ্ধ বীজাগার গড়ে তোলা খুবই সম্ভব।

-মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৯

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৮ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৭ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৭ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

দুর্নীতি দমনে এককালের মহাদাম্ভিক দৈত্য দুদকের দুর্দান্ত দুর্নীতি এটাই প্রমাণ করে যে অন্য কোন নীতি বা ব্যুরো নয়-আত্মিক পরিশুদ্ধতা তথা ইলমে মারিফাতের অনুশীলন অর্জনেই সবধরনের দুর্নীতি প্রবণতা রোধ সম্ভব।