ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৩৪

সংখ্যা: ২১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালোভাবে অনুধাবন করেছিলো শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে- ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর- হ্যামপার। সে মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদের উপর তুর্কি ভাষায় রচিত হযরত মুহম্মদ আইয়ূব সাবরী পাশা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মিরাত আল হারামাইন” কিতাবের ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাংলায় ধারাবাহিকভাবে ভাষান্তর করা হচ্ছে ইনশাআল্লাহ।

ইউনিয়ন এবং প্রগ্রেস পার্টির সদস্যরা যারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুরস্ক খিলাফতের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব নিয়েছিলো, তারা ছিলো ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ। তাদের মধ্যে ছিলো ইসলামের শিক্ষা এবং আদর্শের অভাব। বেশি সংখ্যক যারা সরকারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিল, এরা ছিল ফ্রি-মেসন। এরা তাদের সাম্রাজ্যসহ সমগ্র আরবে মুসলমানগণকে অত্যাচার করেছিলো। এই শাসকশ্রেণী মুসলমানগণকে নির্মমভাবে অত্যাচার করেছিলো। আরবের অধিবাসীরা যারা সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ খান এর সময় ন্যায় বিচার, ক্ষমা, অনুগ্রহ, সম্মান পেতো তারা তৃকীদৈর ভাইয়ের মতই মনে করতো। সেই আরবগণ নতুন ইউনিয়নের সদস্য দ্বারা সংঘটিত লুটপাট ডাকাতি, অত্যাচার দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলো। মক্কা শরীফ-এর আমীর শরীফ হুসেইন ইবনে আলি পাশার নাতি এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজন অত্যাচারে শহীদ হন। সিরিয়ার দামেস্কে ইউনিয়নের সদস্য জামিল পাশা এ কাজ করে।

ইউনিয়নের আর্মিরা সেলোনিক থেকে ইস্তাম্বুলে এসে সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ খানকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভাসদ, আলিম, সাহিত্যিকগণকে ভূ-গর্ভস্থ রুমে বন্দী করে। এমনকি অনেককে পেছন দিক থেকে গুলি করে শহীদ করে যারা নামাযের পর মসজিদ থেকে, অফিস থেকে কাজ শেষে বের হচ্ছিলেন। তারা নিষ্ক্রিয় সরকার হিসেবে সুলতান রশীদকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে এবং বন্দুকের নলের মুখে আইন প্রণয়নকারীদের নিয়োগ দেয়। তারপর যুদ্ধের পর যুদ্ধ, ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে থাকে। ইসলামকে সম্পূর্ণ ভুলে গিয়ে তারা জনগণের উপর অত্যাচার চালাতে থাকে এবং নিজেরা ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে যায়।

এরা অনেক দেশপ্রেমিক, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং একনিষ্ঠ ব্যক্তিগণকে, যারা তাদের বিরোধিতা করেছিলেন উনাদেরকে ফাঁসীতে ঝুলায় এবং অনেককে নির্বাসনে পাঠায়। শরীফ হুসাইন বিন আলী পাশা ছিলেন এমন একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি যিনি ছিলেন একটি প্রদেশের গভর্ণর এবং সুলতান আব্দুল হামিদ খান উনার রাজত্বের সময়ে তিনি খিলাফতের বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে তুরস্ক সাম্রাজ্য জড়িয়ে ফেলার ক্ষেত্রে ইউনিয়নের কার্যক্রমের যখন তিনি বিরোধিতা করেছিলেন তখন ইস্তাম্বুল থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য উনাকে মক্কা শরীফ-এর গভর্নর বানিয়ে পাঠানো হয়।

এই ফ্রি ম্যাসনরা এই যুদ্ধের নামকরণ করেছিলো জিহাদ-ই আকবর।” এই যুদ্ধের আয়োজন করেছিলো আনোয়ার পাশা এবং সেখানে স্বাক্ষর করানো হয়েছিলো সুলতান রশিদকে দিয়ে (১৯১৪ সালের ২৯শে অক্টোবর) এবং সকল মুসলিম দেশগুলোকে স্বাক্ষরিত পত্র পাঠানো হয়েছিলো। সুলতান রশিদ খলীফা হলেও তার কিছু করার ছিলো না। উনাকে যখন স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয় তিনি উনার সহযোগিদের কাছে দু:খ প্রকাশ করে বলতেন, তাদের এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আমি অবগত কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনা।

শরীফ হুসাইন পাশা বুঝতে পেরেছিলেন যে, ইউনিয়নিষ্টরা মুসলমানগণের বিশ্বাসকে ব্যবহার করছে মুসলিমদের কাছে জিহাদের কথা বলছে এবং এভাবে বিশাল তুরস্ক স¤্রাজ্যকে বিভক্ত করছে এবং হাজার হাজার তরুণকে আগুনে নিক্ষেপ করছে। তিনি চেষ্টা করেছিলেন, একটা পথ বের করতে যাতে এসকল দস্যুদের কাছ থেকে মুসলমানগণকে নিরাপদে রাখতে এবং একটা মারাত্মক পরিণতি থেকে সাম্রাজ্যকে রক্ষা করতে। এসব কথা শুনে জামাল পাশা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে দামেস্কে শরীফ হুসেইনের সাথে জড়িত সকল নামিদামী ব্যক্তিবর্গকে শহীদ করে। শরীফ হুসেইন পাশা তার ছেলে শরীফ ফয়সল ইফেন্দিকে দামেস্কে পাঠান বিষয়টি তদন্ত করতে। ফয়সল ইফেন্দি তার বাবাকে জানান যে, যা শোনা হয়েছিলো তা সত্য। তখন শরীফ হুসেইন পাশা আর সহ্য করতে পারলেন না। তিনি মুসলমানগণকে কি ঘটছে সে ব্যাপারে সচেতন করার লক্ষ্যে দ্রুত ২৫শে শা‘বান ১৩৩৪ হিজরী এবং যিলক্বদ, ১৩৩৪ হিজরী তিনি দুটি ঘোষণা প্রকাশ করেন।

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১