মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে বড় সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনাদের সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিবস-রজনীসমূহ ও বিষয় মুবারকসমূহ। সুবহানাল্লাহ!

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

“শা‘য়ায়িরুল্লাহ” তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক উনাদের সম্মানিত পরিচিতি মুবারক:

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَا تُـحِلُّوْا شَعَآئِرَ اللهِ

অর্থ: “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার তথা নির্দশন মুবারকসমূহ উনাদেরকে অবমাননা করো না অর্থাৎ সম্মান করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মায়িদাহ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَنْ يُّعَظِّمْ شَعَآئِرَ اللهِ فَاِنَّـهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوْبِ.

অর্থ:  “আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার তথা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে তা’যীম করলো, সম্মান করলো, নিশ্চয়ই এটা তার অন্তরের তাক্বওয়ার কারণ।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَنْ يُّعَظِّمْ حُرُمٰتِ اللهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَّه عِنْدَ رَبِّه

অর্থ: “আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিষয়সমূহ (তথা নিদর্শন মুবারকসমূহ) উনাদেরকে তা’যীম করলো, সম্মান করলো, তা তার জন্য তার রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অতি উত্তম, অত্যন্ত প্রিয় এবং পছন্দনীয়।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)

উপরোক্ত সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে شَعَائِرَ اللهِ এবংحُرُمٰتِ اللهِ  দুইখানা শব্দ মুবারক ব্যবহার হয়েছে। شَعَائِر শব্দ মুবারকখানা হচ্ছেন شَعِيْرَة শব্দ মুবারক উনার বহুবচন। অর্থ- শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক। আর حُرُمٰت শব্দ মুবারকখানা হচ্ছেন حُرْمَة শব্দ মুবারক উনার বহুবচন। অর্থ- সম্মানিত বিষয়, পবিত্র বিষয়। সুতরাংشَعَائِرَ اللهِ  অর্থ- মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দশন মুবারকসমূহ আর حُرُمٰتِ اللهِ অর্থ- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিষয়সমূহ, পবিত্র বিষয়সমূহ। উল্লেখ্য যে, شَعَائِرَ اللهِ  তথা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দশন মুবারকসমূহ প্রত্যেকটিই সম্মানিত, পবিত্র। আবার حُرُمٰتِ اللهِ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিষয়সমূহ বা পবিত্র বিষয়সমূহ প্রত্যেকটিই হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

সুতরাং মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে প্রত্যেকটি সম্মানিত ও পবিত্র বিষয়ই হচ্ছেন ‘শা‘য়ায়িরুল্লাহ’ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

‘শা‘য়ায়িরুল্লাহ’ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক উনাদের প্রকারভেদ:

‘শা‘য়ায়িরুল্লাহ’ তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ তিনভাগে বিভক্ত। যথা:

(১) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ!

(২) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত নিসবত মুবারকপ্রাপ্ত বা সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিবস-রজনীসমূহ ও বিষয় মুবারকসমূহ। সুবহানাল্লাহ! যেমন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবত মুবারকপ্রাপ্ত বা সংশ্লিষ্ট দিন, রাত অথবা যেকোনো বিষয় মুবারকসমূহ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ মুবারকসমূহ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সম্মানিত নিসবত মুবারকপ্রাপ্ত বা সংশ্লিষ্ট সম্মানিত বিশেষ কোন দিবস-রজনী মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সম্মানিত নিসবত মুবারকপ্রাপ্ত বা সংশ্লিষ্ট যে কোনো সম্মানিত বিষয় মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

(৩) সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় মুবারকসমূহ। সুবহানাল্লাহ! যেমন- সম্মানিত নামায, সম্মানিত রোযা, সম্মানিত হজ্জ, সম্মানিত যাকাত, সম্মানিত কুরবানী ইত্যাদি।

সবচেয়ে বড় মহাসম্মানিত শি‘য়ার বা মহাসম্মানিত নিদর্শন মুবারক :

মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত শি‘য়ার বা নির্দশন মুবারক রয়েছেন, উনাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মহাসম্মানিত শি‘য়ার বা মহাসম্মানিত নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিইয়্যীন,  নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনাদের সম্মানিত নিসবত মুবারকপ্রাপ্ত বা সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিবস-রজনীসমূহ ও বিষয় মুবারকসমূহ। সুবহানাল্লাহ!

কেননা যিনি খ্বাালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَلِلّٰهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُوْلِه وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَلٰكِنَّ الْمُنٰفِقِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ.

অর্থ: “সমস্ত ইজ্জত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ্বাালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) জন্য এবং মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)

অত্র সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল আউওওয়ালীন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ্বাালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার একক মালিক। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার মালিক করে দিয়েছেন। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে উনারাও সমস্ত ইজ্জত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার মালিক। সুবহানাল্লাহ! তারপর হচ্ছেন মু’মিনগণ।” সুবহানাল্লাহ!

আর সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই মু’মিন। উনারা সকলেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। কোনো হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক দেয়া হয়নি, কোনো হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক না এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনারা প্রত্যেকেই মু’মিন। সুবহানাল্লাহ!

যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা-কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

সেটাই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَـلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَـةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّـنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই, যে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার পরেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

আর এটা সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারাই প্রমাণিত যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাঈন শরীফ উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক হাছিল করে স্বয়ং সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো অধিক পবিত্রতা হাছিল করেছেন, ইজ্জত-সম্মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক অর্জন করেছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর অন্যদিকে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে তূর পাহাড়ে যেতে হয়েছিলো সম্মানিত না’লাঈন শরীফ খুলে, কেননা সেখানে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছিলো। যদি তাই হয়, তাহলে এখান থেকেই দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত শি‘য়ার বা নির্দশন মুবারক রয়েছেন, উনাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মহাসম্মানিত শি‘য়ার বা মহাসম্মানিত নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনাদের সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিবস-রজনীসমূহ ও সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে সম্মান করা, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَا تُـحِلُّوْا شَعَآئِرَ اللهِ.

অর্থ: “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার তথা নির্দশন মুবারকসমূহ উনাদের মানহানী করো না অর্থাৎ সম্মান করো, তা’যীম-তাকরীম করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মায়িদাহ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

সুতরাং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে সম্মান করা, তা’যীম-তাকরীম করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

অন্তরের পরিশুদ্ধিতা হাছিল এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের মাধ্যম:

এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَنْ يُّعَظِّمْ شَعَآئِرَ اللهِ فَاِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوْبِ.

অর্থ:  “আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার তথা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে তা’যীম করলো, সম্মান করলো, নিশ্চয়ই এটা তার অন্তরের তাক্বওয়ার কারণ।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَنْ يُّعَظِّمْ حُرُمٰتِ اللهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَّه عِنْدَ رَبّـِه

অর্থ: “আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিষয়সমূহ (তথা নিদর্শন মুবারকসমূহ) উনাদেরকে তা’যীম করলো, সম্মান করলো, তা তার জন্য তার রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অতি উত্তম, অত্যন্ত প্রিয় এবং পছন্দনীয়।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)

সুতরাং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে সম্মান করা, তা’যীম-তাকরীম করা অন্তরের পরিশুদ্ধিতার কারণ এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের কারণ। সুবহানাল্লাহ!

কল্যাণের উপর থাকার একমাত্র উপায়:

সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ عَيَّاشِ بْنِ اَبـىْ رَبِيْعَةَ الْـمَخْزُوْمِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَزَالُ هٰذِهِ الْاُمَّةُ بِـخَيْرٍ مَّا عَظَّمُوْا هٰذِهِ الْـحُرْمَةَ حَقَّ تَعْظِيْمِهَا فَاِذَا ضَيَّعُوْا ذٰلِكَ هَلَكُوْا.

অর্থ: “হযরত ‘আইয়্যাশ ইবনে আবী রবী‘আহ মাখযূমী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এই উম্মত ততদিন পর্যন্ত খায়র বরকত উনার উপর থাকবে, যতদিন পর্যন্ত তারা এই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ তথা সম্মানিত নির্দশন মুবারকসমূহ উনাদেরকে যথাযথ সম্মান করবে, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করবে। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন তারা সম্মানিত নির্দশন মুবারকসমূহ উনাদেরকে ইহানত করবে, মানহানি করবে, অবমাননা করবে, তখন তারা হালাক হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে।” (ইবনে মাজাহ শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরক্বাত শরীফ)

কাজেই এই উম্মত ততদিন পর্যন্ত খায়র বরকত উনার উপর থাকবে, কল্যাণের উপর থাকবে, কামিয়াবী হাছিল করবে, যতদিন পর্যন্ত তারা এই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ তথা সম্মানিত নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে যথাযথ সম্মান করবে, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করবে। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন তারা সম্মানিত নির্দশন মুবারকসমূহ উনাদেরকে ইহানত করবে, মানহানি করবে, অবমাননা করবে অর্থাৎ সম্মান করবে না তখন তারা হালাক হয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে। নাঊযুবিল্লাহ!

বর্তমানে যে মুসলমানরা সারা বিশ্বে লাঞ্ছিত হচ্ছে, অপমাণিত হচ্ছে, যুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, পর্যদুস্ত হচ্ছে তার মূল কারণ হচ্ছে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক উনাদেরকে যথাযথ তা’যীম-তাকরীম মুবারক করছে না, সম্মান করছে না; বরং উল্টো ইহানত করছে, মানহানি করছে, অসম্মান করছে। না‘ঊযুল্লিাহ!

“শা‘য়ায়িরুল্লাহ” তথা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক উনাদেরকে যথাযথ তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার, সম্মান করার সীমাহীন গুরুত্ব

ও তাৎপর্য মুবারক:

ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল আউওয়ালীন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে বড় মহাসম্মানিত শি‘য়ার বা মহাসম্মানিত নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনাদের সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিবস-রজনীসমূহ ও সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন হচ্ছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্মানিত দিবস-রজনী এবং বিষয় মুবারকসমূহ উনাদেরকে যথাযথ তা’যীম-তাকরীম করা, সম্মান করা। যদি জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী তা করতে পারে, তাহলে তারা নাজাত লাভ করবে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করবে, ইহকাল-পরকালে চূড়ান্ত কামিয়াবী লাভ করবে, কাফির-মুশরিকদের যুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবে। শুধু তাই নয়, সমস্ত কাফির-মুশরিকরা সম্মানিত মুসলমান উনাদের গোলামে পরিণত হয়ে যাবে এবং সম্মানিত মুসলমান উনারা আবারো সারা বিশ্বব্যাপী শাসনকার্য পরিচালনা করবে। সুবহানাল্লাহ! আর যদি তারা তা না করে, তাহলে তারা হালাক হয়ে যাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِيْدِ ۣ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لِلّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ حُرُمَاتٍ ثَلَاثًا مَّنْ حَفِظَهُنَّ حَفِظَ اللهُ لَه اَمْرَ دِيْنِه وَدُنْيَاهُ وَمَنْ لَّـمْ يَـحْفَظْهُنَّ لَـمْ يـَحْفَظِ اللهُ لَه شَيْئًا حُرْمَةُ الْاِسْلَامِ وَحُرْمَتِـىْ وَحُرْمَةُ رَحِمِىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ সা‘ঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিষয় মুবারক অর্থাৎ সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন তিনটি। যেই ব্যক্তি এই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ অর্থাৎ সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ হিফাযত বা সংরক্ষণ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার দ্বীনী ও দুনিয়াবী সমস্ত বিষয় মুবারকগুলো হিফাযত করবেন। আর যে ব্যক্তি এই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ অর্থাৎ সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ হিফযত বা সংরক্ষণ করবে না, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার কোনো কিছুই হিফাযত করবেন না। আর সেই সম্মানিত তিনটি বিষয় মুবারক অর্থাৎ সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন, ১. সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত হুরমত মুবারক, ২. আমার সম্মানিত হুরমত মুবারক এবং ৩. আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত হুরমত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববারনী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ)

অপর বর্ণনায় এসেছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِيْدِ ۣ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اِنَّ لِلّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ حُرُمَاتٍ ثَلَاثَةً مَّنْ حَفِظَهُنَّ حَفِظَ اللهُ لَه اَمْرَ دِينِه ودُنْيَاهُ وَمَنْ ضَيَّعَهُنَّ لَـمْ يَحْفَظِ اللهُ لَه شَيْئًا قِيْلَ وَمَا هُنَّ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  قَالَ حُرْمَةُ الْاِسْلَامِ وَحُرْمَتِـىْ وَحُرْمَةُ رَحِمِـىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ সা‘ঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিষয় মুবারক তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন তিনটি। যেই ব্যক্তি এই সম্মানিত বিষয় মুবারক তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে হিফাযত বা সংরক্ষণ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার দ্বীনী ও দুনিয়াবী সমস্ত বিষয় হিফাযত করবেন। আর যে ব্যক্তি এই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে ইহানত করবে, অবমাননা করবে অর্থাৎ সম্মান করবে না, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার কোনো কিছুই হিফাযত করবেন না। সুওয়াল করা হলো, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ কী? জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ১. সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত হুরমত মুবারক, ২. আমার সম্মানিত হুরমত মুবারক এবং ৩. আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত হুরমত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত্ব ত্ববারনী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ)

অপর বর্ণনায় এসেছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِيْدِ ۣ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لِلّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ ثَلَاثَ حُرُمَاتٍ مَّنْ حَفِظَهُنَّ حَفِظَ اللهُ دِيْنَه وَدُنْيَاهُ وَمَنْ لَّـمْ يَـحْفَظْهُنَّ لَـمْ يـَحْفَظِ اللهُ دِيْنَه وَلَا اٰخِرَتَه قُلْتُ مَا هُنَّ قَالَ حُرْمَةُ الْاِسْلَامِ وَحُرْمَتِـىْ وَحُرْمَةُ رَحِمِـىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ সা‘ঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিষয় মুবারক তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন তিনটি। যেই ব্যক্তি এই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে হিফাযত বা সংরক্ষণ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার দ্বীনী ও দুনিয়াবী সমস্ত বিষয় হিফাযত করবেন। আর যে ব্যক্তি এই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে হিফযত বা সংরক্ষণ করবে না, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার দ্বীন ও পরকাল কোনো কিছুই হিফাযত করবেন না। আমি বললাম, সেই সম্মানিত বিষয় মুবারকসমূহ তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ কী?  জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, (সেই সম্মানিত তিনটি বিষয় মুবারক তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ হচ্ছেন,) ১. সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত হুরমত মুবারক, ২. আমার সম্মানিত হুরমত মুবারক এবং ৩. আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত হুরমত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ৯/১১)

আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার তিনটি সম্মানিত বিষয় মুবারক তথা সম্মানিত শি‘য়ার বা নির্দশন মুবারক উল্লেখ করা হয়েছেÑ ১. সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত হুরমত মুবারক, ২. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুরমত মুবারক এবং ৩. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত হুরমত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

অর্থাৎ মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার মুবারক বা সম্মানিত নিদর্শন মুবারক। সুবহানাল্লাহ! কেউ যদি উনাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে সম্মান করে, তা’যীম-তাকরীম করে, তাহলে সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যথাযথভাবে সম্মান করতে পারবে, তা’যীম-তাকরীম করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!

কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-

وَاَحِبُّوْا اَهْلَ بَــيْـتِـىْ لِـحُبِّـىْ.

অর্থ: “আর তোমরা আমার সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফাত মুবারক পেতে হলে, সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ, ত্ববারনী শরীফ, শু‘য়াবুল ঈমান শরীফ)

আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মান করলে, তা’যীম-তাকরীম করলে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে আপসেআপ সম্মান করা হবে, তা’যীম-তাকরীম করা হবে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কায়িনাতের বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। সুবহানাল্লাহ!

কেননা সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ لِـىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا حَضْرَتْ عَلِىُّ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِنَّ الْاِسْلَامَ عُرْيَانٌ وَّلِبَاسُهُ التَّقْوٰى وَرِيَاشُهُ الْـهُدٰى وَزِيْنَتُهُ الْـحَيَاءُ وَعِمَادُهُ الْوَرَعُ وَمِلَاكُهُ الْعَمَلُ الصَّالِحُ وَاَسَاسُ الْاِسْلامِ حُبِّـىْ وَحُبُّ اَهْلِ بَيْتِـىْ.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! নিশ্চয়ই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম লেবাসহীন। উনার সম্মানিত লেবাস মুবারক হচ্ছেন তাক্বওয়া, উনার আসবাবপত্র হচ্ছেন হিদায়াত, উনার সৌন্দর্য মুবারক হচ্ছেন লজ্জা, উনার খুঁটি হচ্ছেন পরহেজগারী, উনার কাঠামো হচ্ছেন সম্মানিত আমলে ছলেহ তথা নেক আমল। আর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মূলভিত্তি হচ্ছেন আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ ২৩/৩২৩, ৩১/২১৪, জামউল জাওয়ামি’, কাশফুল খফা ১/২৩, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১০৫, তারীখে দিমাশক্ব ৪৩/২৪১, মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ৫/৪৭৫ ইত্যাদি)

এই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টভাবে সমস্ত কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন যে-

اَسَاسُ الْاِسْلامِ حُبِّـىْ وَحُبُّ اَهْلِ بَيْتِـىْ

অর্থ: “সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মূলভিত্তি হচ্ছেন আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

মূল ব্যতীত যেমন গাছের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, ঠিক তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ব্যতীতও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। সুবহানাল্লাহ!

সুতরাং সমস্ত বিশ্ববাসীর জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে বড় মহাসম্মানিত শি‘য়ার বা মহাসম্মানিত নিদর্শন মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, আখাচ্ছুল খাছভাবে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে মুহব্বত করা, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা এবং উনাদের সম্মানিত আদেশ-নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী চলা। সুবহানাল্লাহ! তবেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম আবারো পৃথিবীর বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে, প্রতিষ্ঠিত হবে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক কায়িনাতের মাঝে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত মুসলমান উনারা আবারো ফিরে পাবেন উনাদের হারানো ঐতিহ্য। আর কাফির-মুশরিকরা সম্মানিত মুসলমান উনাদের দায়িমী গোলামীতে মশগুল হবে ইনশাআল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার মুবারক  সম্মানিত নিদর্শন মুবারকসমূহ উনাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে সম্মান মুবারক করার, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-আল্লামা মুহম্মদ ছিদ্দীক্ব ইবনে আকরাম।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম