মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালনে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুপম দৃষ্টান্ত মুবারক

সংখ্যা: ২৮০তম সংখ্যা | বিভাগ:

পৃথিবীর ইতিহাসে উম্মতের মধ্যে যাঁরা সবচেয়ে বেশি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা করেছেন উনারাই হচ্ছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম। সুবহানাল্লাহ! উনাদের প্রতিটা কথা, কাজ, আমল মুবারক উনাদের মূলেই ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরন মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনাদের জীবনী মুবারক উনার দিকে দৃষ্টি দিলেই তার বাস্তব রূপ আমরা খুজে পাই। সঙ্গত কারণেই উনাদেরকে বানানো হয়েছে সম্মানিত হিদায়েত মুবারক উনার মাপকাঠি। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

فَاِنْ اٰمَنُوْا بِـمِثْلِ مَا اٰمَنْتُمْ بِهٖ فَقَدِ اهْتَدَوْا.

 অর্থ: “যদি তোমরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মতো সম্মানিত ঈমান আনতে পারো, তাহলে অবশ্যই তোমরা সম্মানিত হিদায়েত মুবারক লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৭)

 

খলীফায়ে আউওয়াল, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালনে আগ্রহ মুবারক

 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ دَخَلْتُ عَلـٰى سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقِ الْاَكْبَـرِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيّدِنَا حَضْرَتْ اَبِـىْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَاُم) فَقَالَ فِـىْ كَمْ كَفَّنْتُمُ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ فِـىْ ثَلَاثَةِ اَثْوَابٍ بِـيْضٍ سَحُوْلِيَّـةٍ لَيْسَ فِيْهَا قَمِيْصٌ وَلَا عِمَامَةٌ‏ وَقَالَ لَـهَا فِـىْ اَىِّ يَوْمٍ تُوُفِّـىَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ يَوْمَ الاِثْنَيْـنِ‏ قَالَ فَاَىُّ يَوْمٍ هٰذَا قَالَتْ يَوْمَ الْاِثْنَيْـنِ‏ قَالَ اَرْجُوْ فِيْمَا بَيْنِـىْ وَبَيْـنَ اللَّيْلِ‏ فَنَظَرَ اِلـٰى ثَوْبٍ عَلَيْهِ كَانَ يُـمَرَّضُ فِيْهِ بِهٖ رَدْعٌ مِّنْ زَعْفَرَانٍ فَقَالَ اِغْسِلُوْا ثَوْبِـىْ هٰذَا وَزِيْدُوْا عَلَيْهِ ثَوْبَيْـنِ فَكَفِّنُوْنِـىْ فِيْهَا‏ قُلْتُ اِنَّ هٰذَا خَلَقٌ قَالَ اِنَّ الْـحَىَّ اَحَقُّ بِالْـجَدِيْدِ مِنَ الْمَيِّتِ اِنَّـمَا هُوَ لِلْمُهْلَةِ‏‏ فَلَمْ يُتَوَفَّ حَتَّى اَمْسَى مِنْ لَيْلَةِ الثُّلَثَاءِ وَدُفِنَ قَبْلَ اَنْ يُّصْبِحَ‏.‏

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (আমার সম্মানিত পিতা) সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নিকট উপস্থিত হলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কয় খণ্ড কাপড় মুবারক-এ কাফন মুবারক দিয়েছিলেন?  মহাসম্মানিত  ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, তিন খণ্ড সাদা সাহুলী (স্থানের নাম) কাপড় মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কাফন মুবারক দেয়া হয়েছিলো, যার মধ্যে কোর্তা ও পাগড়ী মুবারক ছিলেন না। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন দিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন? মহাসম্মানিত  ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, সাইয়্যিদু সায়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ)। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, আজ কী বার? মহাসম্মানিত  ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আজ সাইয়্যিদু সায়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ)। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি আশা করি এখন হতে আগত রাতের মধ্যে (আমার বিছাল শরীফ হবে)। অতঃপর অসুস্থকালীন নিজের পরিধেয় কাপড়ের প্রতি লক্ষ্য করে তাতে জাফরানী রং এর চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন, আমার এ কাপড়টি ধুয়ে তার সাথে আরো দু’খণ্ড কাপড় মুবারক বৃদ্ধি করে আমার কাফন মুবারক সম্পন্ন করবেন। আমি বললাম, এটাতো (পরিধেয় কাপড়টি) পুরাতন? তিনি বললেন, মৃত ব্যক্তি অপেক্ষা জীবিতদের নতুন কাপড়ের প্রয়োজন অধিক। সুবহানাল্লাহ! আর কাফন হলো বিগলিত শবদেহের জন্য। তিনি ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার রাতের) সন্ধ্যায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, ভোর হবার পূর্বেই উনাকে দাফন মুবারক করা হয়েছিল।” সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ বুখারী শরীফ- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৩৮৭)

সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনার জিন্দেগী মুবারক পার করেছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ করে। যেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছাল শরীফ উনার সময়ে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

খলীফায়ে ছানী, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালন

মহাসম্মানিত  ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ عَابِسِ بْنِ رَبِيْعَةَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ رَاَيْتُ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَلْفَارُوْقَ الْاَعْظَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عُمَرَ بْنَ الْـخَطَّابِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) يُقَبِّلُ الْـحَجَرَ يَعْنِـى الْاَسْوَدَ وَيَقُوْلُ اِنِّـىْ اَعْلَمُ اَنَّكَ حَجَرٌ لَّا تَنْفَعُ وَلَا تَضُرُّ وَلَوْلَا اِنِّـىْ رَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ.

অর্থ: “হযরত আবিস ইবনে রবী’আহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে দেখেছি তিনি পবিত্র হাজরে আসওয়াদ মুবারক চুম্বন করছেন আর বলছেন “আমি জানি নিঃসন্দেহে তুমি একটি পাথর। কোনো অপকার করতে পারনা, কোনো উপকারও করতে ক্ষমতা রাখ না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তোমায় চুম্বন করতে দেখেছি বলেই আজ আমি তোমাকে চুম্বন করছি।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, তিরমিযি শরীফ, নাসাঈ শরীফ, আত তারগীব ওয়াত তাহরীব- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৪)

সাধারণত বলা হয় হাজরে আসওয়াদে চুম্বন করলে সে মানুষের গুনাহসমূহ চুষে নেয়। কিন্ত হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি শুধুমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার দিকে খেয়াল করেই হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করতেন। এখান থেকেই বুঝা যায় উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার কতটুকু ইত্তিবা করতেন। সুবহানাল্লাহ!

 

হযরত ইবনে উমার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালন

 

উনার সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝে তেমনটিই দেখা যায়। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ مُـجَاهِدٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ كُنَّا مَعَ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا  فِـىْ سَفَرٍ فَمَرَّ بِـمَكَانٍ فَحَادَ عَنْهُ فَسُـئِلَ لِـمَ فَعَلْتَ فَقَالَ رَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَلَ هٰذَا فَفَعَلْتُ.

অর্থ: “হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা কোনো এক সফরে আমরা হযরত ইবনে উমার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমা উনার সাথে ছিলাম। তিনি এক জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় তিনি একটু সরে গিয়ে উনার রাস্তা পরিবর্তন করলেন অর্থাৎ তিনি ডান দিক বা বাম দিক দিয়ে গেলেন। তখন উনাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কেন এমনটি করলেন? তিনি বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এরূপ করতে দেখেছি তাই আমিও উনার মুবারক অনুসরণে এরূপ করলাম।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, বাযযার, আত তারগীব ওয়াত তাহরীব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৬)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا اَنَّهٗ كَانَ يَاْتِىْ شَجَرَةً بَيْـنَ مَكَّةَ وَالْمَدِيْنَةِ فَيَقِيْلُ تَـحْتَهَا ويُـخْبِـرُ اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَفْعَلُ ذٰلِكَ.

অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। পবিত্র মক্কা শরীফ এবং পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মাঝে অবস্থিত একটি বৃক্ষের নিকট যখন তিনি আসতেন তখন তিনি ঐ বৃক্ষটির নীচে শুয়ে বিশ্রাম করতেন। আর বলতেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও এরূপ করতেন।” সুবহানাল্লাহ! ) মুসনাদে বাযযার, আত তারগীব ওয়াত তাহরীব, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৭)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ سِيْـرِيْنَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ كُنْتُ مَعَ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا بِعَرَفَاتٍ فَلَمَّا كَانَ حِيـْنَ رَاحَ رُحْتُ مَعَهٗ حَتّٰـى اَتَى الْاِمَامُ فَصَلّٰى مَعَهُ الْاُوْلـٰى وَالْعَصْرَ ثُـمَّ وَقَفَ مَعَهٗ وَاَنَا وَاَصْحَابٌ لِّـىْ حَتّٰـى اَفَاضَ الْاِمَامُ فَاَفَضْنَا مَعَهٗ حَتّٰـى اِنْتَهَيْنَا اِلَـى الْمَضِيْقِ دُوْنَ الْمَاْزِمَيْـنِ فَاَنَاخَ وَاَنَـخْـنَا وَنَـحْنُ نَـحْسَبُ اَنَّهٗ يُرِيْدُ اَنْ يُّصَلِّـىَ فَقَالَ غُلَامُهُ الَّذِىْ يُـمْسِكُ رَاحِلَتَهٗ اِنَّهٗ لَيْسَ يُرِيْدُ الصَّلـٰـوةَ وَلٰكِنَّهٗ ذَكَرَ اَنَّ النَّـبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا اِنْتَهٰى اِلـٰى هٰذَا الْمَكَانِ قَضٰى حَاجَتَهٗ فَهُوَ يـُحِبُّ اَنْ يَّقْضِىَ حَاجَتَهٗ.

অর্থ: “হযরত আনাস বিন সীরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার হযরত ইবনে উমার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে আরাফাতের ময়দানে ছিলাম। যখন তিনি (আরাফাতের উদ্দেশ্যে) গমন করলেন আমিও উনার সাথে গমন করলাম। অতঃপর যখন ইমাম সাহেব আসলেন উনার সাথে তিনি পবিত্র যুহর ও আসরের নামায (একসাথে ক্বছর করে যুহরের সময়েই) আদায় করলেন। অতঃপর তিনি, আমি এবং আমার কতিপয় সাথী পবিত্র আরাফাতের ময়দানে অবস্থান নিলাম। ইমাম সাহেব যখন পবিত্র আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা করলেন আমরাও উনার সাথে রওনা করলাম। ‘মা’যিমাইন’ নামক স্থানের পূর্বে এক গিরীপথে পৌঁছে তিনি উট থামালেন এবং সেখানে নামলেন। আমরাও উট থামালাম। আমরা ভাবলাম তিনি হয়ত পবিত্র নামায আদায় করবেন। কিন্তু উনার বাহনের রশি ধারণকারী খাদিম বললেন, তিনি এখানে কোন নামায আদায়ের ইচ্ছা করেন নি; বরং তিনি স্মরণ করেছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই স্থান মুবারক-এ এসে উনার হাযত মুবারক পূরণ করেছেন। তাই তিনিও পছন্দ করলেন এ স্থানে উনার হাযত পূরণ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, আত তারগীব ওয়াত তাহরীব-মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৮)

 

খাদিমু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার প্রতি মুহাব্বত মুবারক

 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ اِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ اَبِـىْ طَلْحَةَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَنَّهٗ سَـمِعَ حَضْرَتْ اَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ يَقُوْلُ اِنَّ خَيَّاطًا دَعَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِطَعَامٍ صَنَعَهٗ قَالَ حَضْرَتْ اَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَذَهَبْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلـٰى ذٰلِكَ الطَّعَامِ فَقَرَّبَ اِلَيْهِ خُبْزًا مِّنْ شَعِـيْـرٍ وَمَرَقًا فِيْهِ دُبَّاءٌ قَالَ حَضْرَتْ اَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تعالـٰى عَنْهُ فَرَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَتَبَّعُ الدُّبَّاءَ مِنْ حَوْلِ الْقَصْعَةِ فَلَمْ اَزَلْ اُحِبُّ الدُّبَّاءَ بَعْدَ ذٰلِكَ الْيَوْمِ.

অর্থ: “হযরত ইসহাক্ব ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ ত্বলহাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই তিনি হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছেন, জনৈক দরজী ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এক প্রকারের খাদ্য প্রস্তুত করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দাওয়াত মুবারক করলেন। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, সেই দাওয়াতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে (খাদিম হিসেবে) আমিও গিয়েছিলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট যবের রুটি ও শুরুয়া পেশ করা হল, যার মধ্যে কদুও ছিল। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ালার আশপাশ হতে কদু মুবারক খুজে খুজে বের করে খেতে দেখলাম। সুবহানাল্লাহ! সেই দিন হতে আমিও সর্বদা কদুকে পছন্দ করি।” সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ বুখারী শরীফ- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ নং ৫৩৭৯, মুসলিম শরীফ- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ নং ২০৪১, মুয়াত্তা ইমাম মালিক- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১১৩৩)

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা প্রত্যেকেই সর্বাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ মুবারক করেছেন। উনার মুহাব্বত মুবারক উনার বিষয়কে উনারাও সর্ব্বোচ্চ মুহাব্বত করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাইতো উনারা যমীনে থাকতেই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পেরেছেন এবং সর্ব্বোচ্চ সু-সংবাদ মুবারক লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

আর কেউ যদি হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায় তার জন্য দায়িত্ব হচ্ছে, আখাছ্ছুল খাছ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত  মুর্শিদ ক্বিবলাহ আলাইহিস সালাম উনাকে অনুসরণ করা। কেননা তিনি হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একক ও অদ্বিতীয়, হাক্বীক্বী কায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম