মালিকুত তামাম, ক্বসিমুন নিয়াম, সাইয়্যিদুল আনাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি প্রকাশ করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারীদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সুসংবাদ

সংখ্যা: ২৮০তম সংখ্যা | বিভাগ:

يَاۤ أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا

অর্থ : আমার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে শাহিদ, মুবাশশির বা সুসংবাদদাতা এবং নাযির বা ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৫)

অর্থাৎ, মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শাহিদ, তিনি শাহিদুন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তিনি হাযির এবং নাযির, তিনি বান্দাহ ও উম্মতের সমস্ত কিছু দেখেন, শুনেন, জানেন, তদারকি করেন, পর্যবেক্ষণ করেন।

এখন যে বা যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খুশি বা সন্তুষ্ট করতে পারবেন, উনাদের জন্য তিনি মুবাশশির। উনাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সুসংবাদ মুবারক ঘোষণা করেন। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সন্তুষ্ট করার সর্বোত্তম মাধ্যম হলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি প্রকাশ করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা। অর্থাৎ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি প্রকাশ করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারীদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সুসংবাদ।

একইভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য যে বা যারা খুশি প্রকাশ করবেনা, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবেনা, যারা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতা করবে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের জন্য নাযির বা ভীতি প্রদর্শনকারী। তাদের জন্য দুনিয়াতে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, অপমান-অবহেলা আর পরকালে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে।

এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফে ও পবিত্র হাদীছ শরীফে এবং ইতিহাসে বহু সংখ্যক দলীল-আদিল্লাহ বিদ্যমান। তবে এ কলামে ঐতিহাসিক বাস্তব কিছু ঘটনা তুলে ধরা হলো, যা বুঝার জন্য যথেষ্ট।

 

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের নিয়ত করায় মৃত্যুদণ্ড হতে মুক্তি লাভ

 

আল্লামা সাইয়্যিদ আবু বকর মক্কী আদ দিমইয়াতী আশ শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত “ইয়ানাতুত ত্বলেবীন” কিতাবে বর্ণনা করেন-

أِنَّهٗ كَانَ فِيْ زَمَانِ الْـخَلِيْفَةِ عَبْدِ الْـمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ شَابٌّ حُسْنُ الصُّوْرَةِ فِي الشَّامِ، وَكَانَ يَلْهُوْ بِرُكُوْبِ الْـخَيْلِ فَبَيْنَمَا هُوَ ذَاتَ يَوْمٍ عَلٰى ظَهْرِ حِصَانِهٖ إِذْ أَجْفَلَ الْـحِصَانُ وَحَـمَلَهٗ فِيْ سِكَكِ الشَّامِ وَلَـمْ يَكُنْ لَّهٗ قُدْرَةٌ عَلٰى مَنْعِهٖ فَوَقَعَ طَرِيْقَهٗ عَلٰى بَابِ الْـخَلِيْفَةِ فَصَادَفَ وَلَدُهٗ وَلَـمْ يَقْدِرِ الْوَلَدُ عَلٰى رَدِّ الْـحِصَانِ فَصَدَمَهٗ بِالْفَرَسِ وَقَتَلَهٗ، فَوَصَلَ الْـخَبْرَ إِلَى الْـخَلِيْفَةِ فَأَمَرَ بِإِحْضَارِهٖ، فَلَمَّا أَنْ أُشْرِفَ إِلَيْهِ خَطْرٌ عَلٰى بَالِهٖ أَنَّ قَالَ إِنْ خَلَّصَنِيَ اللهُ تَعَالٰى مِنْ هٰذِهِ الْوَاقِعَةِ أَعْمَلُ وَلِيْمَةً عَظِيْمَةً وَأسْتَقَرّٰئ فِيْهَا مَوْلِدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا حَضَرَ قَدَامَهٗ وَنَظَرَ إِلَيْهِ ضَحِكَ بَعْدَ مَا كَانَ يَـخْنِقُهُ الْغَضَبَ، فَقَالَ: يَا هٰذَا أَتَـحْسِنُ السِّحْرَ؟ قَالَ لَا وَاللهِ يَا أَمِيْرَ الْـمُؤْمِنِيْنَ. فَقَالَ عَفُوْتُ عَنْكَ، وَلٰكِنْ قُلْ لِّيْ مَاذَا قُلْتَ؟ قَالَ: قُلْتُ إِنْ خَلَّصَنِيَ اللهُ تَعَالٰى مِنْ هٰذِهِ الْوَاقِعَةِ الْـجَسِيْمَةِ أَعْمَلُ لَهٗ وَلِيْمَةً لِاَجْلِ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ الْـخَلِيْفَةُ قَدْ عَفُوْتُ عَنْكَ، وَهٰذِهٖ أَلْفَ دِيْنَارٍ لِاَجْلِ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَنْتَ فِىْ حَلِّ مِنْ دَمِ وَلَدِىْ. فَخَرَجَ الشَّابُّ وَعَفِىَ عَنِ الْقِصَاصِ وَأَخَذَ أَلْفَ دِيْنَارٍ بِبَرَكَةِ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. وَإِنَّـمَا أَطَّلَتِ الْكَلَامُ فِىْ ذٰلِكَ لِاَجْلِ أَنْ يَّعْتَنٰى وَيَرْغَبَ جَـمِيْعُ الْاِخْوَانِ، فِىْ قِرَاءَةِ مَوْلِدِ سَيِّدِ وُلْدِ عَدْنَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

অর্থ : “শাসক আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের শাসনামলে শামদেশের এক সুদর্শন যুবক সে ঘোড়ায় চড়ে খেলতেছিল। একদিন হঠাৎ সে তার ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে যায়। অতঃপর ঘোড়ার পিঠে উঠলে ঘোড়াটি তাকে নিয়ে শাম দেশের পথে চলতে শুরু করে। ঘোড়াটিকে সে থামাতে সক্ষম হচ্ছিল না। অতঃপর ঘোড়াটি শাসকের দরজায় গিয়ে উপনীত হলো। তখন শাসকের এক ছেলে ঘোড়ার সামনে চলে আসলো এবং শাসকের ছেলেটিও ঘোড়াটিকে ফিরিয়ে রাখতে সক্ষম হলো না বরং সে ঘোড়ার দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং নিহত হয়।

এই সংবাদ শাসকের নিকট পৌঁছলে শাসক উক্ত যুবককে তার দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য আদেশ করলো। শাসকের আদেশ যখন তার প্রতি ঘোষণা করা হলো, সেটা কঠিন বিপদ মনে করে সেই যুবক বললো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে আমি বড় করে ওলীমা বা খাবারের মজলিসের ব্যবস্থা করবো এবং তা (প্রতিবছর) জারী রাখবো।

অতঃপর সেই যুবক শাসকের সমীপে উপস্থিত হলো এবং তার দিকে দৃষ্টি দিল। তখন হত্যা করার গোস্বা সত্ত্বেও শাসক হেসে দিল। অতঃপর বললো, হে ব্যক্তি! তুমি কি জাদু করো? সে বললো, হে আমীরুল মু’মিনীন! মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি জাদু করি না। অতঃপর শাসক বললো, আমি তোমার অপরাধ ক্ষমা করে দিলাম। অতএব, তুমি যা বলার তা আমাকে বলতে পারো।

তখন সেই যুবক বললো, আমি নিয়ত করেছিলাম, মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি আমাকে এই কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধার করেন তাহলে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে ওলীমা মাহফিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো এবং প্রতিবছর তা জারী রাখবো।

অতঃপর শাসক পুনরায় বললো, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাকে সুমহান নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা হাদিয়া করলাম এবং আমার ছেলের হত্যার অপরাধ থেকেও মুক্তি দান করলাম।

যুবক শাসকের দরবার থেকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে বের হলো এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বরকতে এক হাজার স্বর্ণ মুদ্রা গ্রহণ করলো। এ বিষয়টি যখন প্রকাশিত হলো, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য সেই যুবকের ভাইরা মনযোগী ও আগ্রহী হলো।” (ইয়ানাতুত ত্বালিবীন: ৩য় খন্ড পৃষ্ঠা নং ৬১৩)

অর্থাৎ, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার নিয়ত করার কারণে মৃত্যুদণ্ড হতে মুক্তি লাভ হয়। সুবহানাল্লাহ! দেখা যাচ্ছে, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারীরা দুনিয়াতেই সুসংবাদ লাভ করছেন, অপরিসীম ফায়দা লাভ করছেন। সুবহানাল্লাহ!

 

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী দুনিয়াবাসীর নিকট গুণাহগার হিসেবে পরিচিত হলেও ইন্তেকালের পরে মহান আল্লাহ পাক উনার মকবুল

বান্দা হিসেবে পরিচিত হন

 

কিতাবে উল্লেখ করা হয়-

اِنَّهٗ كَانَ فِيْ زَمَانِ اَمِيْرِ الْـمُؤْمِنِيْنَ هَارُوْنَ الرَّشِيْدِ شَابٌّ فِي الْبَصْرَةِ مُسْرِفٌ عَلٰى نَفْسِهٖ وَكَانَ اَهْلُ الْبَلَدِ يَنْظُرُوْنَ اِلَيْهِ بِعَيْنِ التَّحْقِيْرِ لِاَجْلِ اَفْعَالِهِ الْـخَبِيْثَةِ، غَيْرَ اَنَّهٗ كَانَ اِذَا قَدِمَ شَهْرُ رَبِيْعِ الْاَوَّلِ غَسَلَ ثِيَابَهٗ وَتَعَطَّرَ وَتَـجَمَّلَ وَعَمِلَ وَلِيْمَةً وَاسْتَقَرَّا فِيْهَا مَوْلِدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَدَامَ عَلٰى هٰذَا الْـحَالِ زَمَانًا طَوِيْلًا، ثُـمَّ لَـمَّا مَاتَ سَـمِعَ اَهْلُ الْبَلَدِ هَاتِفًا يَّقُوْلُ: اُحْضُرُوْا يَا اَهْلَ الْبَصْرَةِ وَاشْهَدُوْا جَنَازَةً وَلِيَّ مِّنْ اَوْلِيَاءِ اللهِ فَاِنَّهٗ عَزِيْزٌ عِنْدِىْ، فَحَضَرَ اَهْلُ الْبَلَدِ جَنَازَتَهٗ وَدَفَنُوْهُ، فَرَاوْهُ فِي الْـمَنَامِ وَهُوَ يَرْفُلُ فِيْ حُلَلٍ سُنْدُسٍ وَاسْتَبْرَقٍ، فَقِيْلَ لَهٗ بِـمَ نِلْتَ هٰذِهِ الْفَضِيْلَةَ؟ قَالَ بِتَعْظِيْمِ مَوْلِدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

অর্থ : “বর্ণিত রয়েছে, কথিত খলীফা হারুনুর রশীদের যামানায় বছরা শহরের এক যুবক সে নফসের অনুসরণ করে চলতো। শহরের লোকেরা নিন্দনীয় আমলের জন্য তাকে নিন্দার চোখে দেখতো। তবে যখন সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস আসতেন, এই যুবক কাপড় ধৌত করতেন, সুগন্ধি ব্যবহার করতেন ও সম্মানিত শরীয়ত বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকতেন। সেই সাথে ভালো খাবারের ব্যবস্থাও করতেন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে মাসব্যাপী এ আমল করতেন।

অতঃপর যখন তিনি ইন্তিকাল করেন তখন শহরবাসীগণ গায়েবী আহ্বান শুনতে পান। সেখানে বলা হচ্ছিলো, হে বছরাবাসী! আপনারা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত একজন ওলীর জানাযায় শরীক হোন। নিশ্চয়ই তিনি আমার কাছে খুবই প্রিয়। অতঃপর শহরবাসী উনার জানাযায় উপস্থিত হলেন এবং দাফন সম্পন্ন করলেন। উনারা (শহরবাসী) স্বপ্নে দেখলেন, উক্ত যুবক কারুকার্যপূর্ণ রেশমী কাপড় পরিহিত অবস্থায় ঘোরাফেরা করছেন। উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এ ফযীলত আপনি কি করে লাভ করলেন? তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে তা’যীম করার কারণে।” (ইয়ানাতুল ত্বলেবীন ৩য় খণ্ড ৬১৩ পৃষ্ঠা)

অর্থাৎ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী দুনিয়াবাসীর নিকট গুণাহগার হিসেবে পরিচিত হলেও ইন্তেকালের পরে উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মকবুল বান্দা হিসেবে পরিচিত করেন, বিনা হিসেবে জান্নাত নছীব করেন এবং সীমাহীন মর্যাদা-মর্তবা দান করেন। সুবহানাল্লাহ!

 

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতাকারীদের জন্য দুনিয়াতে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, অপমান-অবহেলা আর পরকালে কঠিন শাস্তি

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

إِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللهُ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَأَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا

অর্থ : “যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয় দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত বা অভিশম্পাত রয়েছে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য কঠিন অপমানজনক আযাবের ব্যবস্থা রেখেছেন। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)

অর্থাৎ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা কষ্ট দিয়েছে, দিচ্ছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা কষ্ট দিবে, তাদের প্রত্যেকের জন্য লা’নত ও আযাব অবধারিত।

এখন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ যেহেতু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খুশি করার সর্বোত্তম উছীলা, সেহেতু পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতা করার অর্থ হলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই বিরোধিতা করা। যা দ্বারা উনাকে সীমাহীন কষ্ট দেয়া হয়। নাউযুুবিল্লাহ! অর্থাৎ যারা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতা করবে, তাদের জন্য দুনিয়াতে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, অপমান-অবহেলা আর পরকালে কঠিন শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে।

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতা করার কারণে মালঊন বা লা’নতগ্রস্ত হওয়ার দৃষ্টান্ত অনেক। তবে বুঝার জন্য দু’টি দৃষ্টান্ত যথেষ্ট।

উবাইদুল হক্ব ওরফে উবাই। ঢাকা বাইতুল মুকাররম মসজিদের এককালের খতিব। প্রতি বছর সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস আসলেই সে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাকে বিদয়াত বলে প্রচার করতো। নাউযুবিল্লাহ! মৃত্যুর সময় তার হাক্বীক্বত জাহির হয়। শিয়াদের কার্যালয়ে ইস্তিঞ্জাখানায় সে মৃত্যুবরণ করে। মৃত্যুর পরপর তার লাশ থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়া শুরু করে। তার পেট ফুলে যায়। বরফ দিয়ে রাখার পরও তার লাশ হতে বিকট দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এখানেই শেষ নয়।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাযার জন্য তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে র‌্যাবের ডগ স্কোয়াডের কুকুর তার লাশে মূত্র ত্যাগ করে। দাফন করার পূর্বেই তার কবর চেপে যায়। তাকে কোন রকম মাটি চাপা দেয়া হয়। স্বপ্নে কেউ কেউ তাকে জাহান্নামের আগুনেও জ্বলতে দেখে। নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদরাসার অধ্যক্ষ আহমক শফী মৃত্যুবরণ করে। সেও পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতা করতো। পবিত্র মীলাদ শরীফ ও পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার তাবারুককে অত্যন্ত অশ্লীল ভাষায় সে মল-মূত্রের সাথে তুলনা করে। নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক। যার কারণে দুনিয়াতে মৃত্যুর পূর্বেই তার উপর লা’নত বর্ষিত হয়। মৃত্যুর পূর্বে সে অহরহ হারাম ও কুফরী কাজে মশগুল হয়ে যায়। মৃত্যুর আগে আগে সে নিজের ছাত্রদের দ্বারা লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়। এমনকি ছাত্রদের দ্বারা সে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করার সংবাদও পরিবেশিত হয়। মৃত্যুর পরপর তার লাশ থেকে কঠিন দুর্গন্ধ বের হতে থাকে । প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সে মৃত্যুর পূর্বে নিজে বড় ইস্তেনজা করে সেই ইস্তেনজা অর্থাৎ মল নিজেই ভক্ষণ করে। এছাড়াও তার লাশবাহী গাড়ী হতে বিকট বিদঘুটে অসহনীয় দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তার ব্যাপারেও ভয়াবহ স্বপ্নের বর্ণনা রয়েছে। নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক।

অর্থাৎ, যে বা যারাই পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার শান মুবারকে বেয়াদবী করেছে, তারা প্রত্যেকেই দুনিয়াতে মালঊন হয়ে লাঞ্ছিত-অপমানিত হয়েছে। আর কবরে কঠিন আযাব-গজবের বিষয়টি মহান আল্লাহ পাক তিনিই ভালো জানেন।

মূলকথা, মালিকুত তামাম, ক্বসিমুন নিয়াম, সাইয়্যিদুল আনাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারীদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সুসংবাদ। একইভাবে যারা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতা করবে, তাদের জন্য দুনিয়াতে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, অপমান-অবহেলা আর পরকালে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি নির্ধারিত।

কাজেই, সবাইকে উপরোক্ত ঘটনাসমূহ হতে ইবরত-নছীহত গ্রহণ করে তা আমলে বাস্তবায়ন করতে হবে। দায়িমীভাবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের সর্বোচ্চ কোশেশ করতে হবে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ছহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত মামদূহ হযরত মুরশিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উছীলায়, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ হাক্বীক্বীভাবে দায়িমী পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।

-মুফতী মুহম্মদ আখি সিরাজুদ্দীন।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম