মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় মদদে এ শতাব্দীর সবচেয়ে নৃশংসতম-বর্বরতম ও অবাধ রোহিঙ্গা হত্যাকা- হচ্ছে নাসাকা বাহিনী অকথ্য নির্যাতন করার সাথে সাথে অবাধে তরুণীদের সম্ভ্রমহরণ করে যাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব এবং তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থাগুলো রহস্যজনক নিশ্চুপ কেন?

সংখ্যা: ২১৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

গত প্রায় দুই মাস ধরে চলা মুসলিম বিরোধী দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলমান শহীদ করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গারা দাবি করেছেন।

গত ২৮ জুন একদিনের হামলায় নিহত হয়েছে সাড়ে ছয়শ’ রোহিঙ্গা মুসলমান। কিন্তু এসব খবর বিশ্বের  মিডিয়ায় খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। মূলত: মুসলমান হওয়ার কারণেই পাশ্চাত্যের মিডিয়ায় এসব খবর গুরুত্ব পাচ্ছে না এবং একই কারণে পশ্চিমা বিশ্ব তথা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এ বিষয়ে নীরবতা পালন করছে।

মিয়ানমারে ২০১০ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমেও বেসামরিক পোশাকের সামরিক সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেনারেল থেইন সেইন হচ্ছে সাবেক সামরিক জান্তা। সে ১০ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানকে সে দেশ থেকে বের করে দেয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে। সে বলেছে, রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন অথবা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার পরিচালিত আশ্রয় শিবিরে পাঠানোই রোহিঙ্গা সমস্যার ‘একমাত্র সমাধান’। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে তাদের নিজ ভূখ- থেকে বিতাড়নের ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়। গত কয়েক দশক ধরেই ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।

রোহিঙ্গা মুসলমান সব ধরনের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। নাগরিক অধিকারতো দূরের কথা, গোটা রোহিঙ্গা অধ্যুষত অঞ্চলকেই এক ধরনের কারাগারে পরিণত করে রাখা হয়েছে। নিজ গ্রামের বাইরে যাওয়ার অধিকারটুকু পর্যন্ত তাদের নেই। মিয়ানমারের অন্য কোনো অঞ্চলে যাওয়া তো কল্পনাই করতে পারে না রোহিঙ্গারা। পাশের গ্রামে যাওয়ার জন্যও দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাসাকার কাছ থেকে ট্রাভেল পাস নিতে হয়। অতি গুরুতর অসুস্থ রোগীকেও গ্রামের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হয়।

কিন্তু সেই ট্রাভেল পাস পাওয়াও অত্যন্ত কঠিন। এ জন্য নাসাকাবাহিনীকে দিতে হয় বড় অঙ্কের ঘুষ। ট্রাভেল পাসে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে গ্রামে ফিরতে না পারলে নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ার অধিকার হারাতে হয় এবং তখন ঠাঁই হয় কারাগারে। এরপর ১৯৯০ সালে আরাকান রাজ্যে স্থানীয় আইন জারি করা হয়। আইনটিতে আরাকানে বাস করা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এই আইন অনুযায়ী এই অঞ্চলে বাস করা রোহিঙ্গাদের বিয়ের আগে সরকারি অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। এই অনুমোদন দেয়ার দায়িত্বেও রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাসাকা। সেই বিয়ের অনুমোদন পাওয়া খুবই কঠিন। সরকারের নির্ধারিত ফি’র পাশাপাশি এ জন্য বিপুল পরিমাণ ঘুষ দিতে হয় নাসাকাবাহিনীকে। তার পরও বিয়ের অনুমতি পেতে অধিকাংশ সময় বছরের পর বছর চলে যায়। তাই রোহিঙ্গাদের পক্ষে তাদের দেশীয় অনুমোদন সাপেক্ষে বিয়ে করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

শিক্ষা ক্ষেত্রেও রোহিঙ্গারা বৈষম্যের শিকার। আরাকানের খুব কম সংখ্যক মুসলমানই প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পার হতে পেরেছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে এমনিতেই স্কুলের সংখ্যা খুব কম। আর গ্রামের বাইরের স্কুলে পড়তে যেতে চাইলেও সেই ট্রাভেল পাস নেয়ার কঠিন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। আর পাহাড়সম বাধা অতিক্রম করে কোনভাবে উচ্চ শিক্ষার যোগ্যতা অর্জন করলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ার অনুমতি পায়না রোহিঙ্গারা। এই হলো মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের আংশিক দুরবস্থা।

বরতমানে কার্ফিউ’র অজুহাতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী মুসলিমদের উপর নির্বিচারে গুলী চালাচ্ছে।’

সরকারি মদদে সেখানকার নির্যাতন-হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন ভারতে আশ্রয় নেয়া উদ্বাস্তুরা। তারা ইরানের ইংরেজি ভাষার নিউজ চ্যানেলকে জানিয়েছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের উপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে। তারা জানান, “আমরা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে জীবনযাপন করছি। তরুণীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অকথ্য সম্ভ্রমহানি চালাচ্ছে। তাদের অনেককে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালানোর পর আবার ফেরত দিয়েছে যাতে আমরা এ অবমাননা নিয়ে চিরদিন বসবাস করি।”

এ ছাড়া, বিবাহিত নারীদের ধরে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধরে নিয়ে যাওয়া নারীদেরকে আর ফেরত দেয়া হচ্ছে না।

রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সরকার সমর্থিত সাম্প্রতিক দাঙ্গায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এসব হতভাগ্য মানুষের ঘর-বাড়ি লুট করার পর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। মূলত: রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে নির্মম অপরাধযজ্ঞ চালানো হয়েছে তা নিছক কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নয় বরং ‘সরকার সমর্থিত জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’।

গত আগস্ট মাসের ১ম সপ্তাহে নাসাকার কর্মকর্তারা অন্তত ৪০০টি মসজিদে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। নাসাকা বাহিনী সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, কাউকে মসজিদের আশপাশে দেখা গেলে সাত বছরের কারাদ- দেয়া হবে।

কিন্তু এসব কিছু জেনেও পাশ্চাত্যসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এ বিষয়ে নীরবতা পালন করছে। তারা রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর হত্যা, সম্ভ্রমহরণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে না। মুসলমান হওয়ার কারণেই তারা এ বিষয়ে নীরবতা পালন করছে। এ অবস্থায় অন্তত মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদ আশা করছে নিগৃহিত রোহিঙ্গা মুসলমানেরা।

অপরদিকে চরম ছলনার আশ্রয় নিয়ে রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতনের বিষয়ে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ওআইসি’র প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দকে তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য মিয়ানমারে আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটির সরকার।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রাখাইন সফরের পরই দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন এ ঘোষণা দিলো। তাছাড়া সে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ওআইসি নেতৃবৃন্দের কাছে রাখাইনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরারও আহ্বান জানায়। এর আগে ওআইসি প্রেসিডেন্ট একমেলিদ্দিন এহসান গ্লু সেসময় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো সহিংসতা এবং জাতিগত নির্মূল অভিযানের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি পরিদর্শক দল পাঠানোর প্রস্তাব করে। এছাড়া এ বিষয়ে মিসর, সৌদি’র প্রস্তাবিত তদন্তের ব্যাপারে তাদের অপেক্ষা করার কথাও বলে সে।

এ দিকে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাই অভিযোগ করেছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী দাঙ্গাকারীদের হাত থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষা করার পরিবর্তে তাদের উপর দমন অভিযান চালাচ্ছে। সে মুসলিম নির্যাতনের ব্যাপারে স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানায়।

উল্লেখ্য, খোদ জাতিসংঘের এরূপ স্বীকৃতির পরও জাতিসংঘের ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা মুসলমানদের প্রতি তার নিখাদ পক্ষপাতদুষ্টতার পরিচয় প্রতিভাত হয়।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি মিয়ানমারের হত্যাকাণ্ডে জাতিসংঘ ও পশ্চাৎবিশ্ব তথা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নীরব, বিষয়টি শুধু তাই নয় বরং মুসলমানদের প্রভাবশালী সংগঠন ওআইসি এবং শক্তিশালী মুসলিম দেশগুলোও এ ব্যাপারে রহস্যজনক নীরব। এর কারণ হলো বিশ্বমুসলিম গোষ্ঠী এখন বিশ্বায়নের ধান্ধায় পড়ে নিজস্ব মুসলিম বিশ্বের চেতনা ও সহমর্মিতা হারিয়েছে। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “গোটা মুসলিম বিশ্ব এক দেহ, দেহের কোন স্থানে আক্রান্ত হলে অন্য স্থানেও তা সংক্রমিত হবে।” কিন্তু পাশ্ববর্তী দেশ মিয়ামনমারে এরূপ অব্যাহত  খুন, সম্ভ্রমহরণ, লুটপাট হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া কোথায়? অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোরই বা ক্ষোভ কোথায়? পাশ্চাত্য বিশ্ব না এগুলেও খোদ মুসলিম রাষ্ট্রই এমনকী শুধু বাংলাদেশও যদি মিয়ামনমারের প্রতি অর্থনৈতিক অবরোধ রাখতো তাহলেও মিয়ানমার না খেয়ে মরতো। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য পাচার হওয়াই মিয়ানমার বেঁচে আছে। এছাড়া মুসলিম বিশ্ব এটা যদি জাতিসংঘে অথবা আন্তর্জাতিক দরবারে জোরদারভাবে তুলতো তাতেও কাজ হতো। কিন্তু মুসলিশ বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের সে আহবান কেউ করছে না। বিষয়টি যুগপৎ মর্মন্তুদ ও অনৈসলামিক।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ জিশান আরিফ

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১