মুবারক হো ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার সুমহান মহিমান্বিত বিলাদত শরীফ

সংখ্যা: ২২৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার প্রথম শব্দ মুবারক হলো- ‘ইক্বরা’ অর্থাৎ ‘পড়’ বা ‘জান’। মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা বা বান্দী হিসেবে বিশেষত আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হিসেবে সর্বাগ্রে আমাদের জানার বিষয় কী? তা ভালোভাবে উপলব্ধি করতে হবে। কারণ একজন বান্দা বা বান্দীর সর্বশেষ পরিণতি হলো- তার মৃত্যু পরবর্তী জীবন তথা জান্নাত বা জাহান্নাম। মূলত মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাক্ষাৎ মুবারক। উনারা যদি বান্দার দুনিয়াবী জীবনের আমল পছন্দ করেন তবে বান্দার কামিয়াবী তথা জান্নাত। আর মহান খোদা তায়ালা তিনি না করুন উনারা যদি বান্দার কৃত আমলে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তবে তার জন্য অনন্তকালের জন্য লা’নত তথা জাহান্নাম। কাজেই বান্দা বা বান্দীর জন্য রহমত কামানোর পবিত্র ইলম এবং লা’নত থেকে বাঁচার পবিত্র ইলম অর্জন অপরিহার্য এবং সর্বপ্রথম গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা, হুসনে জন, আদব-কায়দা অর্জন, একান্ত মুহব্বত-মারিফাত লাভ এবং সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তা’যীম-তাকরীম প্রদর্শনই বান্দা-বান্দীগণের প্রধান কর্তব্য এবং রহমত প্রাপ্তির প্রধান উৎস। সব ফাযায়িল-ফযীলত, রহমত-বরকত, ছাকীনা, নাজাতের উনারাই আধার। সুবহানাল্লাহ!
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সুমহান ফযীলত মুবারক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন,
“হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতদেরকে) বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না। (আর তোমাদের পক্ষে তা দেয়াও সম্ভব নয়) তবে যেহেতু তোমাদের ইহকাল ও পরকালে নাজাত লাভ করতে হবে, মুহব্বত-মারিফাত, রেযামন্দি মুবারক হাছিল করতে হবে সেহেতু তোমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে- আমার নিকটজন তথা হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদ আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের প্রতি তোমরা সদাচারণ করবে।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
‘পবিত্র তিরমিযী শরীফ’ ও ‘পবিত্র মিশকাত শরীফ’- উনাদের মধ্যে বর্ণিত আছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখেছি, তিনি পবিত্র (বিদায়) হজ্জে আরাফার দিন উনার ‘কাসওয়া’ নামক উষ্ট্রীর উপর সাওয়ার অবস্থায় খুতবা মুবারক দান করছেন। আমি শুনেছি, তিনি খুতবা মুবারক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের মাঝে এমন নিয়ামত রেখে যাচ্ছি, তোমরা যদি শক্তভাবে ধরে রাখো, তবে কখনো গুমরাহ হবে না। তা হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব মুবারক ও আমার ইতরাত তথা হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ৫ই শা’বান শরীফ আহলে বাইত শরীফ তথা পাক পাঞ্জাতনের অন্যতম সাইয়্যিদুশ শুহাদা, ইমামিল হুমামাইন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সুমহান ও মহিমান্বিত পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার দিন।
সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি চতুর্থ হিজরীর শা’বান মাসের ৫ তারিখ মদীনা শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র বিলাদত শরীফ লাভ করেন। বিলাদত শরীফ উনার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার কান মুবারক-এ আযান ও ইকামত দিয়ে দোয়া মুবারক করেন। সাতদিন পর আকীক্বা করে উনার নাম মুবারক রাখেন হযরত ইমাম ‘হুসাইন’ আলাইহিস সালাম।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি আমার থেকে এবং আমি হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার থেকে।”
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনারা হচ্ছেন পবিত্র বেহেশত উনার যুবক উনাদের সাইয়্যিদ।”
বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, মুসলমান হিসেবে ব্যক্তি তথা দেশ মাত্রই সুমহান ও মহিমান্বিত ৫ই শা’বান শরীফ অত্যন্ত মর্যাদা-মর্তবার সাথে পালন করা উচিত।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কেবল নিজস্ব দিবস হিসেবে প্রায় পঞ্চাশটির মতো দিবস পালন করা হয়। এর মধ্যে ২৫শে জানুয়ারি কম্পিউটারে বাংলা প্রচলন দিবস থেকে ১৪ই ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস। ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবস, ১০ই নভেম্বর নূর হোসেন দিবস, ৯ই ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস-এর মতো দিবসও পালন করা হয়।
কিন্তু ৯৭ ভাগ মুসলমানের এদেশে যিনি ঈমানের মূল সাইয়্যিদুশ শুহাদা, ইমামিল হুমামাইন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ পালনের কোন প্রক্রিয়া নেই। মূলত এজন্য এদেশে রহমত নেই। আইন-শৃঙ্খলা নেই। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির অভাব আর মারামারি, হানাহানি, হরতাল, ভাংচুর, বোমাবাজি ইত্যাদির শেষ নেই।
পাশাপাশি প্রত্যেক মুসলিম-অমুসলিম সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে- উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস উপলক্ষে বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করা এবং বিশেষ সরকারি খরচে ব্যাপক জওক-শওকের সাথে দিবসটি যথাযথ পালন করা এবং সকল মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে উনার জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পবিত্র কারবালা উনার কথা শুনেনি এমন মুসলমান খুব কমই রয়েছে। তবে পবিত্র কারবালা উনার নছীহত বুঝেছেন এমন মুসলমানের সংখ্যাও বলতে গেলে খুবই কম। পবিত্র কারবালা উনার মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি হক্ব মত-পথে থাকার ক্ষেত্রে যে অনুপম দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তা ইতিহাসে বেমেছাল। একদিকে শিশু-নারীসহ উনার সাথে মাত্র ৭২-৮২ জন আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম যাঁরা অস্ত্রহীন, সহায়-সম্বলহীন। অপরদিকে অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত কাট্টা কাফির, কমবখত, বদবখত ইয়াযীদের বিশাল বাহিনী। সামান্য আপোস এক্ষেত্রে পবিত্র শাহাদাত শরীফ উনার কাহিনী ঘুরিয়ে দিতে পারতো, দিতে পারতো সমৃদ্ধির সুযোগ। কিন্তু না-হক্বের সাথে বিন্দুমাত্র আপোস করলেন না আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতিভূ সাইয়্যিদুশ শুহাদা, ইমামিল হুমামাইন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম। বিশাল না-হক্ব বাহিনীকে বেপরওয়া করে হক্ব মত-পথে অটল থেকে পান মুবারক করলেন পবিত্র শাহাদাত উনার অমীয় পেয়ালা।
বলাবাহুল্য, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার সে অনুপম আদর্শ মুবারক আজ সম্পূর্ণ ও সার্থকভাবে প্রতিফলিত, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ও উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের মাঝে। (সুবহানাল্লাহ)
আজকের প্রচ- দাপটশালী মিডিয়াকে অগ্রাহ্য করে উনারা পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী ছবি তোলার বিপক্ষে বলে যাচ্ছেন। দোর্দ- পরাক্রমশালী যাবতীয় গোমরাহ শাসক তথা তন্ত্র-মন্ত্রের বিরুদ্ধে বলে যাচ্ছেন। ব্যাপক প্রাধান্য বিস্তারকারী সব উলামায়ে ‘সূ’দের বিরুদ্ধে একাই জিহাদ করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় মূলত উনিই নিচ্ছেন এবং আরো সামগ্রিকভাবে নিবেন শুহাদায়ে কারবালা উনার প্রতিশোধ।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে মহান মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খাছ ছোহবত, মুহব্বত, নিছবত- তায়াল্লুক এবং রেযামন্দি নছীব করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৯

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৮ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৭ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৭ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

দুর্নীতি দমনে এককালের মহাদাম্ভিক দৈত্য দুদকের দুর্দান্ত দুর্নীতি এটাই প্রমাণ করে যে অন্য কোন নীতি বা ব্যুরো নয়-আত্মিক পরিশুদ্ধতা তথা ইলমে মারিফাতের অনুশীলন অর্জনেই সবধরনের দুর্নীতি প্রবণতা রোধ সম্ভব।