মুহইউস সুন্নাহ, আহলে বাইতে রসূল, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল অভূতপূর্ব তাজদীদ মুবারক! দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত আসবাবপত্র, তৈসজপত্রের সুন্নত মুবারক উনার ব্যবহার ও ফযীলত মুবারক প্রকাশ এবং মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক সারা কায়িনাতব্যাপী প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত- ‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়ন

সংখ্যা: ২৭৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ফযীলত মুবারক প্রকাশে সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, নূরে মুকাররম, হাবীবুল্লাহ, মুহইউস সুন্নাহ, কূল মাখলুকাতের ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার শ্রেষ্ঠতম ইমাম ও মুজতাহিদ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক প্রকাশার্থে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার সীমাহীন ফযীলত মুবারক প্রকাশ করেছেন।

তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- “সৃষ্টির শুরু থেকে ক্বিয়ামত অবধি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা, উনাদের সমস্ত উম্মত, পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সমস্ত হযরত আউলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সহ দুনিয়ার সমস্ত মানুষের সমস্ত নেক আমলগুলো যদি মীযানের এক পাল্লায় রাখা হয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র একটি সুন্নত মুবারক এক পাল্লায় রাখা হয়; তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সেই একটি সুন্নত মুবারক উনার ওজন তথা ফযীলত মুবারক-ই সবচেয়ে বেশী ভারী ও সর্বশ্রেষ্ঠ-সর্বোত্তম এবং সম্মানিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ ওয়া সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আর সেই সম্মানিত ফযীলত মুবারক সমূহ যাতে বর্তমান সময়ে সমস্ত উম্মত লাভ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে সাইয়্যিদুনা মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি সীমাহীন পবিত্র সুন্নত মুবারকগুলো সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে তাহক্বীক্ব করে বের করে জারী করছেন। এক কথায় পায়ের তলা থেকে মাথার তালু এবং হায়াতের শুরু থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত সমস্ত সুন্নত মুবারক তথা যিন্দেগীর শতভাগ সুন্নত মুবারকগুলো জানিয়ে দিচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ ওয়া সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!

এমনকি সেই সমস্ত সুন্নত মুবারক পালনের সুবিধার্থে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’।

যাতে করে বর্তমান সময়ের উম্মতগণও সেই মর্যাদাপূর্ণ সুন্নত মুবারকগুলো পালন করে পূর্বের যামানার মানুষদের মত ফযীলত হাছিল করতে পারেন, যেমনটা হাছিল করেছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাসহ খইরুল কুরুনের মহাসম্মানিত ব্যক্তিগণ। সুবহানাল্লাহ!

পারিবারিক, ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ব্যবহৃত সুন্নতী আসবাবপত্র ও সুন্নতী

তৈজসপত্র সমূহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:

সুন্নতী আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র উনাদের পরিচয়: সাধারণভাবে আসবাবপত্র শব্দের স্বাভাবিক অর্থ হচ্ছে ঘরের দ্রব্যাদী, ঘরে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং তৈজসপত্র শব্দের সাধারণ অর্থ হচ্ছে বাসন-কোসন তথা দৈনন্দিন জীবনে রান্নাবান্না ও ব্যবহারিক জীবনে সামগ্রিকভাবে যা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এককথায় মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয় রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা ‘আনহুম উনারা যেসমস্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী, আসবাবপত্রসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদী ব্যবহার করেছেন বা ব্যবহার করার জন্য আদেশ মুবারক করেছেন সেসকল দ্রব্যাদী ও আসবাবপত্রকে সুন্নতী আসবাবপত্র বলা হয়। আর উনারা যেসকল প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী, তৈজসপত্র ব্যবহার করেছেন সেসকল দ্রব্যাদী ও তৈজসপত্রকে সুন্নতী তৈজসপত্র বলা হয়।

একনজরে আসবাবপত্রের সংক্ষিপ্ত বিবরণ:

সম্মানিত সুন্নতী বিছানাপত্র: ঘুমানোর জন্য প্রয়োজন বিছানাপত্রের। চামড়ার তৈরী খেজুরের ছোবড়া মিশ্রিত বিছানায় ঘুমানো খাছ সন্নত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা প্রায় সকলেই চামড়ার তৈরী খেজুরের ছালভর্তি বিছানায় শুয়ে আরাম করতেন এবং ঘুমাতেন। পবিত্র সুন্নতী বিছানাপত্র কেমন ছিল সে সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ: كَانَ ضِجَاعُ النَّبِـيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلَّذِيْ يَنَامُ عَلَيْهِ بِاللَّيْلِ مِنْ اَدَمٍ مَـحْشُوًا لِيْفًا

অর্থ: উম্মুল মুমিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দিক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে বিছানা মুবারকে ঘুমাতেন তা ছিল চামড়ার তৈরী এবং তার মধ্যে খেজুরের ছাল ভর্তি ছিল। (মুসলিম শরীফ, আখলাকুন নবী)

(سَرِيْرٍ) সারীর বা চারপায়া বিশিষ্ট চকি মুবারক :

শাল, সেগুন, শীল কড়ই কাঠের তৈরী সুন্নতী চকি মুবারক ব্যবহার করা পবিত্র সুন্নত মুবারক। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চকি মুবারক ছিল চার পায়া বিশিষ্ট এবং কাঠের তৈরী। এছাড়াও চারপায়া ছিল দড়ির তৈরী, যার ফলে কখনো কখনো নূরুল মুজাসসাম বা জিসিম (দেহ) মুবারকে দাগ পড়ে যেত।

পরিমাপ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দু’ ধরনের চকি মুবারক ব্যবহার করেছেন। একটি ছোট, যার দৈর্ঘ্য সাড়ে চার হাত বা ৮১ ইঞ্চি এবং প্রস্থ দুই হাত বা ৩৬ ইঞ্চি। আর উচ্চতা এক বিঘত বা নয় ইঞ্চি। আর অপরটির দৈর্ঘ্য সাড়ে চার হাত, প্রস্থ সোয়া তিন হাত বা সাড়ে ৫৮ ইঞ্চি। আর উচ্চতা এক বিঘত বা নয় ইঞ্চি। উভয়টির মধ্যে চারটি করে পায়া মুবারক ছিল। তাছাড়া সেই চকি মুবারক উনার ছাউনী মুবারকও দুই ধরনের ছিল। একটি ছিল কাঠের অপরটি ছিল রশির। (সীরাতুন নবী এবং অন্যান্য সীরত গ্রন্থসমূহ)

খেজুর পাতার চাটাই বিছিয়ে নামায পড়া সুন্নত: বাজারে পবিত্র কা’বা শরীফ উনার ছবি, পবিত্র মসজিদসমূহের ছবি সম্বলিত যায়নামায পাওয়া যায়, যাতে নামায আদায় করলে জায়িয তো হবেই না বরং হারাম ও কুফরী হবে। তবে খাছ সুন্নত হিসেবে খেজুর পাতার চাটাইয়ে নামায আদায় করা ফযীলতের কারণ। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّيْ عَلَى الْـحَصِيْرِ وَالْفَرْوَةِ الْمَدْبُوْغَةِ ‏.‏

অর্থ: হযরত মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (খেজুর পাতার তৈরী) চাটাই ও প্রক্রিয়াজাত অর্থাৎ দাবাগত করা চামড়ার উপর ছলাত আদায় করতেন। (আবু দাউদ শরীফ)

(حَصِيْرٍ) হাছীর বা খেজুর পাতার চাটাই মুবারক: বর্তমান সময়ে খাট পালংক ও বাহারী ধরনের চকিসহ আরাম আয়েশের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা ও মাধ্যম তৈরী হয়েছে। অথচ এর বিপরীতে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার মাঝে রয়েছে অফুরন্ত ফযীলতসমৃদ্ধ বিভিন্ন চকি বা চাটাই ও সংশ্লিষ্ট বিছানাপত্র। যেগুলো ব্যবহারে অফুরন্ত ফযীলত রয়েছে। এ বিষয়ে দলীলসমূহ রয়েছে। (তিরমিযী শরীফ: ২৩৭৭; ইবনে মাজাহ শরীফ: ৪১০৯; মুসনাদে আহমাদ শরীফ: ২৭৪৪)

(مِسْحً) মিসহ্ বা চটের বিছানা মুবারক:

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে- হযরত উম্মুল মু’মিনীন আর রবিয়া’ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক খিদমতে সুওয়াল করা হলো, আপনার মুবারক হুজরা শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছানা মুবারক কেমন ছিল? তিনি বলেন, একখানা চট মুবারক ছিল। আমি সেটিকে দুই ভাঁজ করে বিছিয়ে দিতাম এবং তার উপর তিনি ঘুমাতেন। এক রাতে আমি ভাবলাম, এ চটখানা যদি চার ভাঁজ করে বিছিয়ে দেই তাহলে তা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য আরেকটু আরামদায়ক হবে। তাই আমি সেটিকে চার ভাঁজ করে বিছিয়ে দিলাম। সকালবেলা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞেস মুবারক করেন, এ রাতে আমাকে আপনি কী বিছিয়ে দিয়েছিলেন? আমি বললাম, আপনার বিছানাই। তবে সেটিকে আপনার জন্য কিছুটা নরম ও আরামদায়ক করার জন্য আমি চার ভাঁজ করে বিছিয়ে দিয়েছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এটিকে পূর্বের অবস্থায় রেখে দিন। কারণ এর কোমলতা আমার তাহাজ্জুদ নামাযে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। (শামায়েলে তিরমিযী : ৩২৯)

(وِسَادَةٍ) উয়িসাদাহ্ বা চামড়ার বালিশ মুবারক:

সাধারনতঃ শয়নকালে মাথার নিচে বালিশ ব্যবহার করা হয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বালিশ মুবারক সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ كَانَ فِرَاشُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ اَدَمٍ وَحَشْوُهٗ مِنْ لِيْفٍ.

অর্থ: “হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বালিশ মুবারক ছিল চামড়ার তৈরী এবং তার ভেতরে ছিল খেজুর গাছের ছাল।” (বুখারী শরীফ: ৬৪৫৬)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খেজুর গাছের পাতা ও ছোবড়া বা ছাল ভর্তি চামড়ার বালিশ মুবারক ব্যবহার করেছেন। যার দৈর্ঘ্য ২৪ ইঞ্চি আর প্রস্থ ছিল ১৮ ইঞ্চি।

চিরুনী ব্যবহার:  চিরুনী হলো মাথা পরিপাটি ও সুন্দর করার এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত বানাতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই এবং উনাদের অনুসরণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা চিরুনী দিয়ে মাথা আচড়াতেন এবং পরিপাটি থাকতেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْـقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهٗ كَانَ يُعْجِبُهُ التَّيَمُّنُ مَا اسْتَطَاعَ فِيْ تَرَجُّلِهٖ وَوُضُوْئِهٖ

অর্থ: হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা মুবারক করেন। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিরুনী দিয়ে চুল মুবারক আঁচরাতে ও ওযূ মুবারক করতে যথাসাধ্য ডানদিক থেকে শুরু করতে পছন্দ করতেন। (বুখারী শরীফ)

কোন কোন বর্ণনায় হাতির দাঁতের চিরুনী ব্যবহার করার কথা উল্লেখ রয়েছে।

আয়না ব্যবহার করা খাছ সুন্নত: আয়না ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আয়না মুবারক ব্যবহার করতেন তথা আয়না মুবারকে উনার নুরুর রহমত তথা চেহারা মুবারক দেখতেন। কিছু কিছু বর্ননায় পাওয়া যায়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানায় যেহেতু বর্তমানের মত আয়না ছিল না, তাই পানির পাত্রে চেহারা মুবারক দেখে সম্মানিত পাগড়ী, টুপি, রুমাল মুবারক ইত্যাদি গোছগাছ করতেন এবং মাথার চুল মুবারক ও দাড়ি মুবারক আচঁড়াতেন। সে মতে আয়না ব্যবহার করাও খাছ সুন্নতের অর্ন্তভূক্ত। (সীরাত গ্রন্থসমূহ)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَيُّوْبَ بْنِ مُوْسٰى أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ نَظَرَ فِـي الْمِرْاَةِ لِشَكْوٍ كَانَ بِعَيْنَيْهِ وَهُوَ مُـحْرِمٌ.

অর্থ: হযরত আইয়্যুব ইবনে মূসা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, চোখে অসুখ হওয়ায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ইহরাম অবস্থায়ও আয়না দেখেছিলেন। (মুয়াত্তা ইবনে মালিক)

মিম্বর শরীফ ও লাঠি মুবারক: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঝাউ গাছের কাঠ দ্বারা তৈরী মিম্বর শরীফ ব্যবহার করেছেন। সেই মিম্বর শরীফ ছিল তিন তাক বিশিষ্ট। যার উচ্চতা ছিল দেড় হাত অর্থাৎ ২৭ ইঞ্চি। দৈর্ঘ্য ছিল দুই হাত তথা ৩৬ ইঞ্চি। আর প্রস্থ হচ্ছে ১ হাত তথা ১৮ ইঞ্চি। তাছাড়া তিনি খেজুর গাছ দ্বারা তৈরী লাঠি মুবারক ব্যবহার করতেন। যার উচ্চতা ছিল উনার কাঁধ মুবারক বরাবর। তা হাতের মুষ্ঠিতে ধরা যায় বা মুঠ করে ধরা যায় এরূপ মোটা ছিল।

এক নজরে তৈজসপত্রের সংক্ষিপ্ত বিবরণ:

খাছ সুন্নতী কাঠের পেয়ালা-প্লেট মুবারক: কাঠের তৈরী সুন্নতী প্লেট, বাটি, পেয়ালা, কেমন ছিল সে সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ ثَابِتٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ أَخْرَجَ اِلَيْنَا حَضْرَتْ اَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰـى عَنْهُ قَدْحَ خَشَبٍ غَلِيْظًا مُضَبَّبًا بِـحَدِيْدٍ فَقَالَ يَا حَضْرَتْ ثَابِتٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ هٰذَا قَدْحُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

অর্থ: হযরত ছাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন, “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমাদেরকে একটি লোহার পাতযুক্ত, মোটা কাঠের তৈরি মুবারক বাটি বের করে দেখালেন। আর বললেন, হে হযরত ছাবিত (রহমতুল্লাহি আলাইহি)! ইহাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাটি মুবারক।” (শামায়িলুত তিরমিযী, জামউল ওসায়েল)

খাদিমু রসূলিল্লাহ হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সেই কাঠের মুবারক বাটিটি অত্যন্ত আদব ও তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করেছেন। পরবর্তীতে বংশ পরম্পরায় তা সংরক্ষিত ছিল। এমনকি হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বছরাতে তা দেখতে পেয়েছেন এবং তাতে তিনি পানি পান করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। (আশরাফুল ওয়াসায়িল ২৭৫, জামউল ওয়াসায়িল ২৯৪)

খাছ সুন্নতী বিভিন্ন প্লেট, বাটি ও পানপাত্র মুবারক: বাটি, তামা, কাসা, রুপা ও কাঁচ ইত্যাদি দ্বারা নির্মিত পানপাত্রের প্রচলন প্রাচীনকাল থেকেই চালু ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময়েও এরূপ বিভিন্ন ধরনের পাত্র ছিল। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে। যথা:

عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُسْرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰـى عَنْهُ قَالَ: كَانَتْ لِلنَّبِـيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَصْعَةً يُقَالُ لَـها الْغَرَّاءُ يَـحْمِلُهَا اَرْبَعَةُ رِجَالٍ.

অর্থ: হযরত আবদুল্লাহ ইবন বুসর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি বড় খাবারের পাত্র ছিল। তাকে ‘গার্রা’ (সাদা পেয়ালা) বলা হতো। তা বহন করতে চারজন লোকের প্রয়োজন হতো। (আখলাকুন নবী)

কাঁচের পাত্র মুবারক: কাঁচের পাত্র ব্যবহার করাও সুন্নত।

عَنْ حَضْرَتْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَنَّ صَاحِبَ اِسْكَنْدَرِيَّةَ بَعَثَ اِلٰـى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَدْحٍ قَوَارِيْرَ وَكَانَ يَشْرَبُ مِنْهُ.

অর্থ: হযরত উবাইদুল্লাহ ইবন আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত যে, আলেকজান্দ্রিয়ার শাসক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য একটি কাঁচের পাত্র মুবারক উপহার পাঠিয়েছিলেন। তিনি তাতে পানি পান করতেন।

খাবারের জন্য বড় পাত্র মুবারক (قَصْعَةٌ) ক্বছ‘য়াহ:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার সম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা খাদ্য গ্রহণের পাত্র বা বরতন হিসেবে সাধারনতঃ বড় বা মাঝারি পাত্র মুবারক ব্যবহার করেছেন। এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُسْرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَصْعَةٌ يُقَالُ لَـهَا الْغَرَّاءُ يَـحْمِلُهَا اَرْبَعَةُ رِجَالٍ فَلَمَّا اَضْحَوْا وَسَجَدُوا الضُّحٰى اُتِـيَ بِتِلْكَ الْقَصْعَةِ يَعْنِىْ وَقَدْ ثُرِدَ فِيْهَا فَالْتَفُّوْا عَلَيْهَا فَلَمَّا كَثُرُوْا‏.‏

অর্থ: “হযরত ‘আবদুল্লাহ ইবনে বুসর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি বড় খাদ্যের পাত্র ছিল। পাত্রটির নাম ছিল ‘গার্রা’ (সাদা পেয়ালা)। তা বহন করতে চারজন লোকের প্রয়োজন হতো। ছলাতুত দুহার ওয়াক্ত শরু হলে ছাহাবীগণ উক্ত নামায আদায় শেষ করলে পাত্রটি নিয়ে আসা হলো। অর্থাৎ তাতে সুরুয়া মিশ্রিত রুটি (ছারীদ) ছিল। ছাহাবীগণ পাত্রটির চারদিকে ঘিরে বসছিলেন।” (আবূ দাঊদ শরীফ: ৩৭৭৩)

(قُلَّةٌ) কুল্লাহ্ বা মটকি-মটকা কুলফি তথা মাটির পাত্র পানি রাখার বড় মাটির পাত্র:

মটকি বা ছোট মাটির পাত্র। এটি প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং প্রতিটি শ্রেণীর ঘরে দেখা যায়। এগুলি কাদা মাটির সংমিশ্রণে তৈরি হয়: কাদামাটি পানির সাথে মিশ্রিত করা হয়, আকারযুক্ত, সমাপ্ত, পালিশ করা হয়, শুকনো হয় এবং পানি শীতল হয়। মাটির পাত্রে পানি রাখা সুন্নত এবং তা যদি বড় আকারে হয় তাহলে তাও সুন্নত হিসেবে গন্য হবে। তাছাড়া মাটির পাত্রে পানি রাখলে সে পানি সতেজ ঠান্ডা এবং নিরাপদ থাকে। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই পানি রাখার জন্য বড় মাটির পাত্র ব্যবহার করেছেন।

‘কুল্লাহ’ উনার পরিচয়:

কুল্লাহ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় উল্লেখ রয়েছে, হযরত মুহম্মদ ইবনে ইসহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পানির কলসী বা মটকা তথা মাটির পাত্রকে ‘কুল্লাহ’ বলা হয়। যার মধ্যে পানি রেখে পান করা হয়। দুই মটকার অর্থ কম-বেশি পাঁচ মশকের সমান। এককথায়; অনেক বড় বা মাঝারি ধরনের পাত্রবিশেষের নাম কুল্লাহ। (আবূ দাউদ শরীফ)

মাটির ঘড়া-মাটির পাত্র বা মাটির পানির পাত্র মুবারক: অনেক ক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাটির পাত্র বা মাটির পানির পাত্র মুবারক ব্যবহার করেছেন বলে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণনা পাওয়া যায়।

عَنْ حَضْرَتْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ اَبَا اُسَيْدٍ السَّاعِدِيَّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ دَعَا النَّبِـيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـيْ عُرُسِهٖ، وَكَانَتِ امْرَأَتُهٗ خَادِمَهُمْ يَوْمَئِذٍ، وَهِيَ الْعَرُوْسُ، فَقَالَتْ أَوْ قَالَ أَتَدْرُوْنَ مَا أَنْقَعْتُ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ أَنْقَعْتُ لَهٗ تَـمَرَاتٍ مِّنَ اللَّيْلِ فِـيْ تَوْرٍ

অর্থ: হযরত সাহল ইবনে সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। হযরত আবু উসাইদ সাইদী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাসর রাতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দাওয়াত দিলেন। উনার নববধূ সেদিন উনাদের আহার পরিবেশন করেন। উনার আহলিয়া বলেন, আপনারা কি জানেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সেদিন আমি ছিলে-চেঁছে কি পরিবেশন করেছিলাম? রাতের বেলা আমি উনার জন্য টাটকা খেজুর একটি ‘মাটির পাত্রে’ ভিজিয়ে রেখেছিলাম। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আদাবুল মুফরাদ শরীফ, ৭৫১)

পানির মশক: পানির মশক ব্যবহার করা খাছ সুন্নত এমনকি কাউকে সেটা হাদিয়া দেয়াও পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَتٰى حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَهُـمَا فِىْ خَـمِيْلٍ لَـهُمَا وَالْـخَمِيْلُ الْقَطِيْفَةُ الْبَيْضَاءُ مِنَ الصُّوْفِ قَدْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَهَّزَهُـمَا بِـهَا وَوِسَادَةٍ مَـحْشُوَّةٍ اِذْخِرًا وَقِرْبَةٍ‏.‏

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবিয়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের নিকট তাশরীফ আনলেন। তখন উনারা উনাদের একটি সাদা পশমী চাদরে আবৃত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা উনাদেরকে পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ উপলক্ষ্যে হাদিয়া মুবারক করেছিলেন। তিনি আরও হাদিয়া মুবারক করেছিলেন ইযখির ঘাস ভর্তি একটি বালিশ এবং পানির একটি মশক।” (ইবনে মাজাহ শরীফ: ৪১৫২)

(السِّقَاءَ) সিক্বা বা নাবীয পাত্র মুবারক:

খাছ সুন্নতী খাবার হলো সম্মানিত শরবত জাতীয় পানীয় যার নাম পবিত্র নাবীয। আর এই সম্মানিত পানীয় জাতীয় খাবার হৃদয় ঠান্ডা করে ইতমিনান দান করে থাকে। আর এই খাবারের জন্য আলাদা পাত্র ব্যবহার করা হতো যা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

“হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সকালে নাবীয তৈরী করতেন। যখন রাত হতো তিনি তা পান করতেন। অতঃপর তিনি রাতে নাবীয তৈরী করতেন। যখন সকাল হতো তিনি তা পান করতেন। ‘হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি সকাল-সন্ধ্যা নাবীয পাত্র ধুয়ে নিতাম। হযরত মুকাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার পিতা উনার খিদমতে প্রশ্ন রাখেন, দৈনিক দুইবার? তিনি জাওয়াব মুবারক দিয়ে বলেন, হ্যাঁ।” (আবূ দাঊদ শরীফ: কিতাবুশ শারাবাহ: ৩৭১২)

(بُرْمَةٌ) বুরমাহ বা ডেক ও চুলা:

বড় কোন অনুষ্ঠানে ডেকে করে রান্না করাও পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। কারণ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানেও ডেক মুবারকে রান্না করা হতো। এমনকি চুলাতে রান্না করাও সেই হিসেবে পবিত্র সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ ওয়া সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মুতাবিক অনুষ্ঠানে ডেকে এমনকি বড় পাতিল বা বড় ডেকে রান্না করা যে সুন্নত মুবারক সে প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে। কাজেই চুলাতে রান্না করাও সুন্নত এবং বড় পাত্র, বড় পাতিল বা ডেকে রান্না করাও খাছ সুন্নত হিসেবে প্রতীয়মান। (বুখারী শরীফ ২৩৪৯)

(ظُرُوْفُ الْاَدَمِ) যুরূফুল আদাম বা চামড়ার পানপাত্র:

পানি পান করার নির্ধারিত পান পাত্র হিসেবে প্রথম দিকে ছিল চামড়া দিয়ে বিশেষভাবে তৈরী পানি পান করার পাত্র। যা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

“হযরত ইবনে বুরাইদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদেরকে তিনটি বিষয় হতে বিরত থাকতে বলেছিলাম। এখন আমি সেসব বিষয়ে তোমাদেরকে অনুমতি দিচ্ছি। ….আমি তোমাদেরকে পানপাত্র সম্পর্কে নিষেধ করেছিলাম যে, তোমরা চামড়ার পাত্রে নাবীয পান করবে। এখন তোমরা যে কোন পাত্রে পান করতে পারো। কিন্তু তোমরা কখনও মাদক দ্রব্য পান করো না। আমি তোমাদের উপর কুরবানীর গোশতের ব্যাপারে তা তিন দিনের পর না খেতে বলেছিলাম। এখন তোমরা তা (দীর্ঘদিন) খেতে পারো এবং তোমাদের সফরে তা কাজে লাগাতে পারো।” (আবূ দাঊদ শরীফ: কিতাবুশ শারাবাহ: হাদীছ শরীফ নং ৩৬৯৮)

(رِقَاقٌ) রিক্বাক্ব বা ঘি রাখার পাত্র:

ঘি রাখার পাত্র সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, “হযরত আবূ উবাই ইবনে উম্মে হারাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি, অবশ্যই তোমাদের সানা ও সানূত ব্যবহার করা উচিত। কারণ তাতে সাম ছাড়া সব রোগের প্রতিষেধক রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ‘সাম’ কি? তিনি ইরশাদ মুবারক করলেনঃ ‘মৃত্যু। রাবী আমর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, বিন আবূ আবলা বলেছেন, সানূত হলো এক ধরণের উদ্ভিদ, অন্যরা বলেন, বরং তা ঘি রাখার পাত্রে রক্ষিত মধু। (ইবনে মাজাহ: কিতাবুত ত্বিব: হাদীছ শরীফ নং ৩৪৫৭)

(اَلسِّكِّيْنُ) সিককীন বা ছুরি মুবারক:

ছুরি বা চাকু ব্যবহার সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ اُمَيَّةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ اَخْبَـرَهٗ اَنَّهٗ رَاَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـحْتَـزُّ مِنْ كَتِفِ شَاةٍ فِىْ يَدِهٖ فَدُعِيَ اِلَى الصَّلَاةِ فَاَلْقَاهَا وَالسِّكِّيْنَ الَّتِيْ يَـحْتَـزُّ بِـهَا ثُـمَّ قَامَ فَصَلّٰى وَلَـمْ يَـتَـوَضَّأْ‏.‏

অর্থ: “হযরত ‘আমর ইবনে উমাইয়্যাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি নিজ হাত মুবারক-এ বকরীর কাঁধের গোশ্ত থেকে কেটে নিতে দেখেছেন। তারপর নামাযের সময় হলে তিনি তা রেখে দিলেন এবং ছুরিটিও (রেখে দিলেন) যা দিয়ে তিনি কেটে খাচ্ছিলেন। তারপর উঠলেন এবং নামায আদায় করলেন। তিনি (নতুন) ওযূ করলেন না।” (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বয়ামাহ্: হাদীছ শরীফ নং ৫৪০৮)

(سُفْرٌ) সুফরুন বা দস্তরখানা মুবারক:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দস্তরখান মুবারক ছিল চামড়ার এবং তা হাল্কা লাল (খয়েরী) রংয়ের ছিল। (শামায়েলে তিরমিযী, আনিসুল আরওয়াহ্, জামউল ওসায়েল)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ مَا أَكَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى خِوَانٍ وَلَا فِـيْ سُكْرُجَةٍ وَلَا خُبِزَ لَهٗ مُرَقَّقٌ‏.‏ قُلْتُ لِـحَضْرَتْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَلٰى مَا يَأْكُلُوْنَ قَالَ عَلَى السُّفَرِ‏.

অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনো ‘খিওয়ান’ (টেবিলের মত উঁচু স্থানে)-এর উপর খাবার রেখে আহার করেননি এবং ছোট ছোট বাটিতেও তিনি আহার করেননি। আর উনার জন্য কখনো পাতলা রুটি তৈরী করা হয়নি। রাবী (হযরত ইউনুস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি) বলেন, আমি হযরত ক্বত্বাদাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, তাহলে উনারা কিসের উপর আহার করতেন? তিনি বললেন, খয়েরী রংয়ের দস্তরখানের উপর।” (বুখারী শরীফ: ৫৪১৫, ৫৩৮৬, তিরমিযী শরীফ: ১৭৮৮, ইবনে মাজাহ শরীফ: ৩৪১৭)

পরিশেষে বলা যায়, যিনি হায়াতুন নবী, শাহিদুন নবী, মুত্তালা ‘আলাল গইব, হাযির ওয়া নাযির, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের জন্য সম্মানিত আদর্শ মুবারক। কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যেই রয়েছেন আপনাদের জন্য উত্তম আদর্শ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২১)

অর্থাৎ একজন মুসলমান উনার মাথার তালু থেকে পায়ের তলা, হায়াত থেকে মউত, এমনকি হায়াতের পূর্ব থেকে মউতের পর পর্যন্ত, তিনি কি খাবেন, কি পরবেন, কিভাবে চলবেন, কি ব্যবহার করবেন, এক কথায় উনার যাবতীয় করণীয়-কর্তব্য সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ বর্ণনা মুবারক করেছেন। সুতরাং মনগড়াভাবে কোন কিছু করার সুযোগ নেই। সুতরাং যারা সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করবেন অর্থাৎ যারা মুসলমান হবেন, পুরুষ কিংবা মহিলা, উনারা কি ধরনের আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র ব্যবহার করবেন সেটাও শিখতে হবে এবং দেখতে হবে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি আসবাবপত্র ব্যবহার করেছেন, কি তৈসজপত্র ব্যবহার করেছেন। সেগুলো প্রত্যেকটাই আমাদের জন্য আদর্শ মুবারক। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

مَّنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ

অর্থ: যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করলেন তিনি মূলত মহান আল্লাহ পাক উনারই অনুসরণ করলেন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ; পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০)

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَمَا اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَـهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ করুন এবং যা নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকুন এবং এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করুন। নিশ্চয় মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা। (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ; পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ تَـمَسَّكَ بِسُنَّتِـيْ عِنْدَ فَسَادِ أُمَّتِـيْ فَلَهٗ أَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ

অর্থ: “যিনি আমার উম্মতের ফিতনা-ফাসাদের যুগে কোন একটা সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়িয়ে ধরে রাখবেন, উনাকে একশত শহীদ উনাদের ছাওয়াব প্রদান করা হবে।” সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ)

কেমন একশত শহীদের ছওয়াব? হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা ‘আনহুম উনারা সম্মানিত বদর ও সম্মানিত উহুদ জিহাদে শহীদ হয়ে যে রকম মর্যাদা মুবারক হাছিল করেছেন ঠিক সেই রকম মর্যাদা হাছিল করবেন এই আখিরী যামানায় একটা সুন্নত মুবারক আদায় করলেই। সুবহানাল্লাহ! এক হাজার হিজরী শতকের পরবর্তী সময়কে আখেরী যামানা বলা হয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ أَحَبَّ سُنَّتِيْ فَقَدْ اَحَبَّنِيْ وَمَنْ أَحَبَّنِيْ كَانَ مَعِيَ فِي الْـجَنَّةِ

অর্থ:“যিনি আমার পবিত্র সুন্নত মুবারককে মহব্বত করেন অর্থাৎ অনুসরণ করে তিনি যেন আমাকেই মহব্বত মুবারক করেন। আর যিনি আমাকে মহব্বত মুবারক করেন, আমার সাথেই তিনি সম্মানিত জান্নাতে থাকবেন।” (তিরমিযী শরীফ)

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-

قُلْ اِنْ كُنْـتُمْ تُـحِبُّـوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِـيْ

অর্থ: আমার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত হাছিল করতে চাও তাহলে আমাকে অনুসরণ করো।” (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)

হায়াতুন নবী, শাহিদুন নবী, মুত্তালা ‘আলাল গইব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পরিপূর্ণ অনুসরণের লক্ষ্যেই সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, মুহইউস সুন্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন “আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র”। এখানে কাঠের প্লেট, বরতন, বাটি, পেয়ালা, তামার পাত্র, চকি, বালিশ ইত্যাদি ব্যবহার উপযোপী সুন্নতী তৈজসপত্র ও আসবাবপত্রসমূহ পাওয়া যাচ্ছে। আর এ সমস্ত সুন্নতী বিষয়সমূহ তৈরির জন্য মেশিনারিজও স্থাপন করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত মহাসম্মানিত সুন্নতী তৈজসপত্র ও আসবাবপত্র নিজে গ্রহণ করতে ও অন্যান্যদের গ্রহণ করাতে “আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্রে” আসা, দেখা ও জেনে বুঝে নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করা।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-শেখ মুহম্মদ আব্দুর রহমান মা’ছূম।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম