শিক্ষার্থীদের সাইবার ক্রাইম, আদালত পাড়ায় প্রকাশ্যে পুলিশ কর্তৃক কিশোরীর সম্ভ্রমহরণ এবং এসবের প্রতিকার প্রসঙ্গে

সংখ্যা: ২১৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমুন্নত, সুমহান আল্লাহ পাক উনার জন্যই সকল প্রশংসা। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যই সকল ছানা-ছিফত।

আদালতে মামলা করতে গিয়ে পুলিশের হাতে সম্ভ্রমহরণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী। গত ২৯শে মে ২০১২ তারিখে দুপুরে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালত ভবন সংলগ্ন পুলিশ ক্লাবে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে বিকালে ওই কিশোরী আদালত প্রাঙ্গণে নির্যাতনের ঘটনা সাংবাদিক ও আইনজীবীদের কাছে বর্ণনা করলে পুলিশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা নির্বিচারে তাদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে তিন সাংবাদিক ও দুই আইনজীবীসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া দুই আইনজীবীকে মারতে মারতে পুলিশ থানায় নিয়ে গেছে।

বলাবাহুল্য, পুলিশের কামুক এবং ধর্ষক চরিত্র এখন হরহামেশা প্রকাশ পাচ্ছে। এ নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। কিন্তু আলোচনা হচ্ছেনা- কেন এবং কোন কারণে পুলিশের মতো একটি শৃঙ্খলিত বাহিনীর সদস্যরাও এতটা বিপথগামী হচ্ছে?

উল্লেখ্য, পুলিশ এ সমাজেরই অংশ। পুলিশ আলাদা কোনো গ্রহের বাসিন্দা নয়। সুতরাং সমাজ যখন কলুষিত হবে সাইবার ক্রাইমের মতো অশ্লীলতায় সমাজ ভরে যাবে তখন শুধু পুলিশ কেন? খোদ বিচারক পর্যন্ত কলুষযুক্ত হতে বাধ্য।

প্রসঙ্গত: গত ৩০শে মে ২০১২ তারিখের পত্রিকায় এসেছে স্বয়ং স্পিকার, বিচারক ও উচ্চ আদালতের গভীর সমালোচনা করেছেন এবং এভাবে চলতে থাকলে খোদ জনগণই উচ্চ আদালত ও বিচারকদের প্রতি রুখে উঠবে বলে সাবধান করেছেন।

বর্তমান কথিত সমাজবিদরাও সামাজিক অপরাধসমূহ নিয়ে উচ্চ-বাচ্য করছেন। পত্র পত্রিকায়ও হেডিং হচ্ছে-

“সারাদেশে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার ক্রাইম, বলি মেয়েরা।”

“সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে বিপথগামী হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।”

“অপ্রতিরোধ্য পর্নো সন্ত্রাস, বেপরোয়া সাইবার ক্রাইম।”

ইন্টারনেট বা কম্পিউটার ভিত্তিক অপরাধগুলোকে বলা হয় সাইবার ক্রাইম।

প্রচলিত সাইবার ক্রাইমের মধ্যে আছে ফ্রড কিংবা প্রতারণা, ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চুরি, ব্ল্যাকমেইল, পর্নোগ্রাফি, হ্যারাজমেন্ট, অনলাইনের মাধ্যমে মাদক পাচার ও ব্যবসা প্রভৃতি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা নগরী এখন দেশি পর্নো ছবিতে সয়লাব। এগুলোর অধিকাংশই প্রতারণার মাধ্যমে তৈরি করা। গোপন ভিডিও, মুঠোফোনের ক্যামেরা, বাংলা ছবির কাটপিস, যাত্রার উত্তেজনাকর দৃশ্য, মডেলিংয়ের নামে প্রতারণা, ফটোশপ প্রভৃতি ব্যবহার করে এগুলো তৈরি করা হচ্ছে। একটি চক্র এগুলো পর্নো ছবি হিসেবে বাজারজাত করছে। বাজারে এগুলো বিক্রি হচ্ছে ‘রিয়াল রেপ সিন’ নামেও। রাজধানীর অভিজাত শপিং কমপ্লেক্স, সিডি-ভিসিডির দোকানেও এগুলো পাওয়া যাচ্ছে। মূলত স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরাই এসব ছবির মূল ক্রেতা। এদের অনেকেই শপিং কমপ্লেক্সগুলোয় এসে তাদের মুঠোফোন বা পেন ড্রাইভে এগুলো ডাউনলোড করে নিয়ে যায়। রাজধানীর ফার্মভিউ সুপার মার্কেটে রয়েছে বেশ কিছু বেআইনি মুঠোফোন সার্ভিসের দোকান। এখানে মাত্র ৪০ থেকে ৬০ টাকায় মুঠোফোনে দেখার উপযুক্ত অশ্লীল ভিডিও চিত্র কপি করে দেওয়া হয়। আশপাশে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় অল্পবয়সী শিক্ষার্থীরাই এখানকার অশ্লীল ভিডিও চিত্রের মূল ক্রেতা। এখন কম মূল্যে বড় স্ক্রিন ও মেমোরি কার্ডসহ মুঠোফোন সহজলভ্য হওয়ায় এতে অশ্লীল ভিডিও দেখার প্রবণতা বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীরা এক বা দুই গিগাবাইট মেমোরি কার্ডে অশ্লীল ভিডিও চিত্র ভরে নেয়।

ঢাকার পর্নো ছবির সবচেয়ে বড় মার্কেট ইস্টার্ন প্লাজা। এখানকার ৮০-৯০টি মুঠোফোনের দোকানে নিয়মিত এ ধরনের ভিডিও চিত্র আপলোড করা হয়।

‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, শহরে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একটা বড় অংশ পর্নোগ্রাফি বা ব্লু ফিল্ম দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের শতকরা ৭৭ ভাগ কিশোর পর্নোগ্রাফির দর্শক। মোবাইল ফোন, সাইবার ক্যাফে ও বাসায় ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে শিশু-কিশোররা পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হচ্ছে। কর্মজীবী ও পথশিশুরা সিডি’র পর্নোগ্রাফি দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। অনেক পথশিশু অর্থের বিনিময়ে পর্নোগ্রাফিতেও অভিনয় করছে। অনেকে আবার পর্নোগ্রাফি বিক্রিও করছে।

গবেষণা থেকে জানা যায়, স্কুলগামী শিশুরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি ব্যবহারকে সবচেয়ে নিরাপদ ও সহজ মাধ্যম বলে মনে করে। গবেষণায় বলা হয়েছে, স্বভাবতই শিশু-কিশোরীদের চাহিদা বেশি থাকায় নানা প্রলোভনে তাদের এ কাজে আনা হচ্ছে। উল্লেখ্য, শিশুদের পর্নোগ্রাফির বিষয়টি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়লেও সমাজ সে ব্যাপারে সতর্ক নয়। যেসব শিশু পর্নোগ্রাফি দেখছে ও পর্নোগ্রাফির পণ্য হচ্ছে তারা সমাজের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দেবে।

সরকারের হাতে পর্নো সাইটগুলো নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রয়েছে। তারা খারাপ সাইটগুলো ফিল্টার করতে পারে। এ ছাড়া প্রতিটি ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের উপর নজরদারির ব্যবস্থা রাখা উচিত।

বাংলাদেশ সরকার সাইবার ক্রাইম মোকাবেলা করার জন্য খুব বেশি উদ্যোগী নয়। কারণ এ ধরনের ক্রাইম শনাক্ত করতে যে ধরনের যন্ত্রপাতি এবং তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ জনবল থাকা দরকার সেটা নেই। দেশে মোবাইলের মাধ্যমে অসংখ্য অপরাধমূলক কর্মকা- হচ্ছে। নুড ছবি তোলা হচ্ছে। পরে ছবিগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এই মাধ্যমটি প্রতারণার একটি বড় হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুয়া আইডি খুলে ভুয়া ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা করা হচ্ছে।

তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৬৮ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের দ্রুত ও কার্যকর বিচারের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে।

গঠিত সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকার একজন দায়রা জজ বা একজন অতিরিক্ত দায়রা জজকে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেবে। অনুরূপভাবে নিযুক্ত একজন বিচারক নিয়ে এই ট্রাইব্যুনাল ‘সাইবার ট্রাইব্যুনাল’ নামে অভিহিত হবে। এই ধারার অধীন গঠিত সাইবার ট্রাইব্যুনালকে পুরো বাংলাদেশের স্থানীয় অধিক্ষেত্র অথবা এক বা একাধিক দায়রা অধিক্ষেত্র প্রদান করা যেতে পারে। ট্রাইব্যুনাল তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর আইনের অধীন অপরাধের বিচার করবেন। ৭৪ ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, এতদুদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই আইনের অধীন অপরাধ দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য হবে। সরকার একটি প্রজ্ঞাপন দ্বারা এক বা একাধিক সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারে। সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনাল অধীন সাইবার ট্রাইব্যুনাল বা দায়রা আদালত কর্তৃক ঘোষিত রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনবে ও নিষ্পত্তি করবে।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি যে, সমাজে পুলিশ থেকে বিচারকদের অনৈতিকতার পেছনে মূলত যাবতীয় বেপর্দা বেহায়াপনা থেকে সাইবার ক্রাইম জাতীয় অশ্লীলতাই দায়ী। আর এটা প্রচলিত ধারার বিচারে প্রতিহত করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন অশ্লীলতা সম্পর্কিত পূর্ণ ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিফলন। সমাজের যাবতীয় বেপর্দা-বেহায়াপনা বন্ধকরণ তথা পূর্ণ ইসলামী পর্দা পালন। কেবলমাত্র তখনই সাইবার ক্রাইম বন্ধ হবে। শিক্ষার্থী থেকে পুলিশ অনৈতিক প্রবণতা থেকে ফিরে যাবে।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ আলম মৃধা

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১