সন্ত্রাসবিরোধী নয়, মুসলিমবিরোধী ও খনিজ সম্পদ লুটের স্বার্থেই দেশে দেশে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ পরিকল্পনা। বিগত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনে নিহত হয়েছে ৩ কোটি মানুষ, বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৪ কোটি মুসলমান। এই সাম্রাজ্যবাদী লুটেরাদের রুখতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং হাকীক্বীভাবে দ্বীন ইসলামে ফিরে আসার বিকল্প নেই।

সংখ্যা: ২৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

বর্তমানে বিশ্বের বহু মুসলিম দেশ সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও গৃহযুদ্ধের ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত হয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর এই করুণ অবস্থার পেছনে মূল কলকাঠিই নেড়েছে সাম্রাজ্যবাদী-ইহুদীবাদী যুক্তরাষ্ট্র। নাইন ইলেভেনের পর কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নাম দিয়ে তারা ধ্বংস করেছে একের পর এক মুসলিম দেশ। বাস্তচ্যূত হয়েছে কোটি কোটি মুসলমান। নির্মমভাবে শহীদ হয়েছে কোটি কোটি মুসলমান শিশু, নারী তথা নিরীহ মানুষ।

গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত ৮ টি মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে আটটি যুদ্ধ শুরু করেছে অথবা অংশ নিয়েছে এবং তাতে অন্তত ৪ কোটি মানুষ ঘরহারা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাদে ১৯০০ সালের পর থেকে যেকোনও যুদ্ধ বা বিপর্যয়ের কারণে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের চেয়ে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর মধ্যে, আফগানিস্তান (৫.৩ মিলিয়ন), ইরাক (৯.২ মিলিয়ন), পাকিস্তান (৩.৭ মিলিয়ন), ইয়েমেন (৪.৪ মিলিয়ন), সোমালিয়া (৪.২ মিলিয়ন), ফিলিপাইন (১.৭ মিলিয়ন), লিবিয়া (১.২ মিলিয়ন) এবং সিরিয়া ( ৭.১ মিলিয়ন)। এছাড়াও বুর্কিনা ফাসো, ক্যামেরুন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, চাদ, কঙ্গো, মালি, নাইজার, সৌদি আরব এবং তিউনিসিয়ার বাসিন্দাদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। ২০ বছরে ৩ কোটি মুসলমানকে শহীদ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এই সংখ্যা নিতান্তই প্রকাশের স্বার্থে। প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।

এতকিছুর পর সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র এখন কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের ইতি টানতে চাচ্ছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আফগান ছেড়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যে তালেবানকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নাম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আফগানে আগ্রাসন চালিয়েছে তাদের হাতেই আফগানকে তুলে দিয়ে তারা কিভাবে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের ইতি টানছে? মূলত; যুক্তরাষ্ট্র কখনোই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি। তাদের প্রতিটি যুদ্ধই ছিলো রাজনৈতিক, মুসলিমবিরোধী ও খনিজ সম্পদ লুটের স্বার্থে। যা শুরুতেও ছিলো এবং এখনো জারি আছে।

২০০৩ সালের ২০ মার্চ ইরাকে বিধ্বংসী রাসায়নিক অস্ত্র আছে এই অজুহাতে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত হানাদার বাহিনী। তৎকালীন কুখ্যাত বুশ-ব্লেয়াররা আন্তর্জাতিক মতকে উপেক্ষা করে এই আগ্রাসন চালায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত হয় এক সময়ের সমৃদ্ধশালী দেশ ইরাক। পরবর্তীতে প্রকাশ হয়, দেশটিতে কোনো রাসায়নিক অস্ত্রই ছিলোনা। অর্থাৎ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা হয় ইরাককে। সিরিয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক একই পন্থা অবলম্বন করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ায় তারাই তৈরী করে কুখ্যাত সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আইএস। এরপর সেই আইএস দমনের নামে তারা প্রবেশ করে সিরিয়াতে। তাদের সহযোগী হিসেবে সিরিয়াতে প্রবেশ করে ইহুদীবাদী ইসরাইল। ফলে মাত্র কয়েক বছরে বসবাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলে সিরিয়া। লাখ লাখ সিরিয়ান বাস্তুচ্যুত হয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়। ২০১১ সালে লিবিয়ায় গণঅভ্যুত্থান হয় গাদ্দাফির বিরুদ্ধে। সে সময় বিদ্রোহীদের সহযোগীতার নাম দিয়ে লিবিয়ায় ঢোকে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। সোমালিয়া, ইয়েমেন ও মালিতেও একই অবস্থা। এভাবেই একের পর এক মুসলিম দেশ টার্গেট করে ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মুসলিম দেশগুলো ধ্বংসের পর যুক্তরাষ্ট্র মুসলিম দেশগুলো অফুরন্ত খনিজ সম্পদগুলো লুট করেছে এবং করছে। মুসলমানদের নিঃশ্বেষ করার পর তাদের মূল লক্ষ্য মূলত এটিই। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনেরও লক্ষ্য ছিলো খনিজ সম্পদ লুট। দেশটির মাটির নিচে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ উত্তোলনযোগ্য হয়ে আছে। স্বর্ণ আর নিকেল ছাড়াও আফগানিস্তানে আছে লিথিয়াম, কপারসহ অনেক মূল্যবান খনিজ। আছে স্ক্যানডিয়াম, ইউটিরিয়ামসহ বহু দুর্লভ মৃত্তিকা মৌল। আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোকে দরিদ্র বানিয়ে রাখা হলেও দেশগুলোতে রয়েছে স্বর্ণখনিজসহ বহুবিধ মূল্যবান এবং অফুরন্ত খনিজ সম্পদ। যা লুট করতেও আগ্রাসন চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আফ্রিকার মূল্যবান খনিজ সম্পদ থেকে দেদার টাকা লুটে যুক্তরাষ্ট্র। যেমন: কঙ্গো। প্রতিবেশী উগান্ডা, রোয়ান্ডা ও বুরুন্ডি থেকে আসা সশস্ত্র গু-াবাহিনী কঙ্গো দাপিয়ে বেড়ায়, লুট করে সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পশ্চিমা দেশের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে কম দামে তা বিক্রি করে। এইসব দুষ্কৃতীদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য করে থাকে। লিবিয়াতেও আগ্রাসনের সময় বিপুল পরিমাণ তেল লুট করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং এখনো করছে। আলেজেরিয়ার খনিজ সম্পদ বিশেষ করে গ্যাসের দিকেও দীর্ঘদিনের শকুনী নজর যুক্তরাষ্ট্রের। ফলে দেশটিতে বর্তমানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

দেশে দেশে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের বড় বড় তেল ও গ্যাস কোম্পানির ব্যবসায়ীদের ফুলে ফেঁপে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দেশে আগ্রাসনের সময় শত শত কোটি ডলার আয় করেছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে অ্যামাজন, ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট ও টুইটার বিপুল অর্থ আয় করেছে।

প্রসঙ্গত, যেখানে এক সময় পুরো পৃথিবী শাসন করেছে মুসলমান, জ্ঞান-বিজ্ঞান, সমরখাত কিংবা ধন-সম্পদে সর্বশ্রেষ্ট ছিলো মুসলমানরা, সেখানে সারাবিশ্বের মুসলমানরা আজ নির্যাতিত একটি জাতি। যুক্তরাষ্ট্রের মতো লুটেরারা মুসলমানদের নিঃশ্বেষ করে দিচ্ছে। মুসলমানদের হাহাকারে বিশ্বের বাতাস ভারি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের একটিই উত্তর। মুসলমানরা মূল বিষয় থেকে সরে গিয়েছে। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম থেকে সরে গিয়েছে। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্মরণ মুবারক, উনাদের আদর্শ মুবারক থেকে দূরে সরে গিয়েছে। মুসলমানরা তাদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলেছে। মুসলমানরা সাম্রাজ্যবাদী লুটেরাদের মুখাপেক্ষী হয়ে গেছে। ফলে মুসলমানরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারছে না। মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ হারিয়ে ফেলেছে। ঈমানী কুওওয়াত হারিয়ে ফেলেছে। অযোগ্য ব্যক্তিদের মাথায় তোলার কারণে মুসলিম দেশে দেশে আজ মুনাফিক শাসক বসে রয়েছে। যাদের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছে মার্কিনী, ইহুদীবাদীরা।

তবে এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। এখনো যদি বিশ্ব মুসলিম পূর্বের সেই স্বর্ণালী যুগে ফিরে যেতে চায়, তাদের হারানো গৌরব ফিরে পেতে চায়, সাম্রাজ্যবাদীদের কবল থেকে রক্ষা পেতে চায়, নিজেদের ঈমানী কুওওয়াত ফিরে পেতে চায় তাহলে মুসলমানদের উচিত সর্বপ্রথম হাক্বীকীভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলামে প্রবেশ করা। নিজেদের ঈমান-আক্বীদাহ ও আমল ঠিক করা। বিধর্মী-বাতিলদের সকল অপসংস্কৃতি বর্জন করে ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুনে সম্পৃক্ত হওয়া। নিজেদের অস্তিত্ব-স্বকীয়তা ধারণ করা। হীনমন্মতা পরিহার করে আত্মনির্ভরশীল হওয়া। নিজেদের মধ্যে পূর্বের সেই ভ্রাতৃত্ববোধ ফিরিয়ে নিয়ে এসে সব মুসলিম দেশ ঐক্যবদ্ধ হওয়া। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া। ইলম অর্জনে অগ্রগামী হওয়া।

আর এসব পদক্ষেপ তখনই সম্ভব হবে যখন তাবৎ বিশ্ব মুসলিম সঠিক দিকনির্দেশনায় পরিচালিত হবে। আর বর্তমান বিশ্বে একমাত্র সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদানকারী হচ্ছেন বর্তমান যামানার যিনি রাহবার, পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মাহমদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যিনি মুসলমানদের সেই স্বর্ণালী অতীত আবারো ফিরিয়ে নিয়ে আসছেন উনার অসামান্য তাজদীদ মুবারকে। যিনি দূর করছেন মুসলমানদের হীনমন্মতা।

তাই বিশ্ব মুসলমানদের উচিত হবে নিজেদের হতাশা দুর্দশা দূর করতে, সা¤্রাজ্যবাদীদের নির্মূল করতে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরুদ দারাজাত মুবারকে এসে আত্মসমর্পন করা, উনার মুবারক দিক নির্দেশনায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার আলোকে জীবন পরিচালিত করা।

মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।