সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বাসমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (পর্ব-৩)

সংখ্যা: ২৬৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৬তম ফতওয়া হিসেবে

“সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক

(২) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিজ সম্মানিত ও পবিত্র হাত মুবারক-এ সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ:

সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১লা রবীউল আউওয়াল শরীফ লাইলাতুল খমীস শরীফ গভীর রাতে সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার উদ্দেশ্যে সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ হতে বের হয়ে ফজরের পূর্বে সম্মানিত সাওর গুহা মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। তিনি সম্মানিত সাওর গুহা মুবারক-এ ৪ দিন ৩ রাত্রি মুবারক সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ লাইলাতুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ অন্ধকার হওয়ার সাথে সাথে সেখান থেকে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে বের হন। তারপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৮ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ বিকালের দিকে সম্মানিত কুবা নামক স্থানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। অতঃপর তিনি সেখানে একখানা সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করেন। যা সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ হিসেবে পরিচিত। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ নির্মাণ করার পর সেখানে সম্মানিত জুমু‘য়াহ উনার সম্মানিত ছলাত মুবরক আদায় করেন। এটাই হচ্ছেন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে সর্বপ্রথম সম্মানিত জুমু‘য়া শরীফ উনার সম্মানিত নামায মুবারক। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ সম্মানিত নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৬৩)

عَنْ حَضْرَتْ اَلشَّمُوسِ بِنْتِ النُّعْمَانِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ نَظَرْتُ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِيْنَ قَدِمَ وَنَزَلَ وَاَسَّسَ هٰذَا الْمَسْجِدَ مَسْجِدَ قُبَاءَ فَرَاَيْتُه يَأْخُذُ الْحَجَرَ اَوِ الصَّخْرَةَ حَتّٰى يَصْهَرَهُ الْحَجَرُ وَاَنْظُرُ اِلـٰى بَيَاضِ التُّرَابِ عَلـٰى بَطْنِه وَسُرَّتِه فَيَأْتِـى الرَّجُلُ مِنْ اَصْحَابِه وَيَقُولُ بِاَبِـىْ وَاُمِّىْ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَعْطِنىْ اَكْفِكَ فَيَقُوْلُ لَا خُذْ حَجَرًا مِّثْلَه

অর্থ: “হযরত শামূস বিনতে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র হিজরত মুবারক করে সম্মানিত কুবা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন এবং সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ উনার ভিত্তিপ্রস্তর মুবারক স্থাপন মুবারক করেন, তখন উনাকে আমি স্বাভাবিক পাথর এবং অনেক বড় বড় পাথর বহন মুবারক করতে দেখেছি। এমনকি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র উনার মাঝে পাথর বহন করার আলামত মুবারক প্রকাশ পেয়ে গেলেন। আর আমি উনার সম্মানিত ও পবিত্র পেট মুবারক এবং সম্মানিত ও পবিত্র পেট মুবারক উনার নিচে মাটির শুভ্রতা লক্ষ্য করেছি। অতঃপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য থেকে একজন সম্মানিত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, দয়া করে (পাথরটি) আমাকে দিন। (আমি আপনার পক্ষ থেকে তা বহন করি।) তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, না; বরং আপনি অনুরূপ পাথর বহন করুন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ২/৩৮৬)

সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৬৪)

اَنَّه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـمَّا اَرَادَ بِنَاءَه قَالَ يَا اَهْلَ قُبَاءَ اِئْتُوْنِـىْ بَاَحْجَارٍ مِّنَ الْـحَرَّةِ فَجُمِعَتْ عِنْدَه اَحْجَارٌ كَثِيْرَةٌ فَخَطَّ الْقِبْلَةَ وَاَخَذَ حَجَرًا فَوَضَعَه ثُـمَّ قَالَ يَا حَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ خُذْ بِـحَجَرٍ فَضَعْه اِلـٰى جَنْبِ حَجَرِىْ ثُـمَ قَالَ يَا حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ خُذْ حَجَرًا فَضَعْه اِلـٰى جَنْبِ حَجَرِ حَضْرَتْ اَبِـىْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ ثُـمَّ قَالَ يَا حَضْرَتْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ خُذْ حَجَرًا فَضَعْه اِلـٰى جَنْبِ حَجَرِ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ নির্মাণ মুবারক করার ইচ্ছা মুবারক পোষণ করেন, তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে কুবার অধিবাসীগণ! আমাকে আপনারা পাথুরে ভূমি থেকে পাথর এনে দিন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট অনেক পাথর জমা করা হয়। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ক্বিবলা মুবারক বরাবর রেখা টেনে ক্বিবলা মুবারক নির্ধারণ করে একখানা পাথর মুবারক নিয়ে সেখানে রাখেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম! আপনি একখানা পাথর মুবারক নিয়ে আমার সম্মানিত পাথর মুবারক উনার পাশে রাখুন। অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনি একখানা পাথর মুবারক নিয়ে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পাথর মুবারক উনার পাশে রাখুন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আপনি একখানা পাথর মুবারক নিয়ে হযরত ফারূক্বে আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পাথর মুবারক উনার পাশে রাখুন। সুবহানাল্লাহ! (আস সীরাতুল হালাবীয়্যাহ শরীফ ২/২৩৭)

সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৬৫-৬৬)

عَنْ حَضْرَتْ قُطْبَةَ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ مَرَرْتُ بِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَه سَيِّدُنَا حَضْرَتْ اَبُوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَسَيِّدُنَا حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَسَيِّدُنَا حَضْرَتْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَهُوَ يُؤَسِّسُ مَسْجِدَ قُبَاءَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَبْنِـىْ هٰذَا الْبِنَاءَ وَاِنَّـمَا مَعَكَ هٰؤُلَاءِ الثَّلَاثَةُ قَالَ اِنَّ هٰؤُلَاءِ اَوْلِيَاءُ الْـخِلَافَةِ بَعْدِىْ

অর্থ: “হযরত কুত্ববা ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমি অতিক্রম করেছি। তখন উনার সাথে ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ উনার ভিত্তিপ্রস্থর মুবারক স্থাপন মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বলেছিলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তা নির্মাণ করছেন আর আপনার সাথে এই তিনজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনারা হচ্ছেন আমার পরে সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার হক্বদার।” সুবহানাল্লাহ! (খছাইছুল কুবরা ২/১৭৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১০/৮৫)

সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৬৭)

اَنَّ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَانَ يَأْتِىْ مَسْجِدَ قُبَاءَ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْـخَمِيْسِ فَجَاءَ يَوْمًا فَلَمْ يَجِدْ فِيْهِ اَحَدًا مِّنَ النَّاسِ فَقَالَ مَا لِـىَ لَا اَرٰى فِـىْ هٰذَا الْمَسْجِدِ اَحَدًا مِّنَ النَّاسِ قَالَ وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِه لَقَدْ رَاَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَسَيِّدَنَا حَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاُنَاسًا مِّنْ اَصْحَابِه وَنَـحْنُ نَنْقُلُ حِجَارَتَه عَلـٰى بُطُوْنِنَا وَاِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـهُوَ اَسَّسَه بِيَدِه.

অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ইয়াওমুল ইছনাইনি আযীম শরীফ এবং ইয়াওমুল খমীস শরীফ সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখতেন। সুবহানাল্লাহ! একদিন তিনি সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে বললেন, কি হলো, এই সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার মধ্যে কাউকে দেখতে পাচ্ছি না কেন? তিনি বলেন, যেই মহান সত্তা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার প্রাণ মুবারক উনার কসম! নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে অনেককে দেখেছি। আমরা এই সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ উনার পাথর আমাদের পেট মুবারক-এ করে বহন মুবারক করেছি। সুবহানাল্লাহ! নিশ্চয়ই স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নিজ সম্মানিত ও পবিত্র হাত মুবারক-এ এই সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার সম্মানিত ভিত্তিপ্রস্থর মুবারক স্থাপন মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে বায্যার শরীফ ১/৪৩০)

এভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ সম্মানিত ও পবিত্র হাত মুবারক-এ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের নিয়ে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ শরীফ সেখানে সম্মানিত ও পবিত্র সম্মানিত জুমু‘য়াহ উনার সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত কুবা শরীফ উনার মধ্যে ৩ দিন ৪ রাত্রি মুবারক-এর অধিক সময় সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই রবী‘ঊল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছানাইনিল আযীম শরীফ সেখান থেকে রওয়ানা হয়ে উক্ত তারীখেই সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ হচ্ছেন আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ও পবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের পর সর্বপ্রথম নির্মিত মসজিদ মুবারক। এই সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ভিত্তি সম্মানিত তাক্বওয়া মুবারক উনার প্রতিষ্ঠিত। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

(৬৮)

لَمَسْجِدٌ اُسِّسَ عَلَى التَّقْوٰى مِنْ اَوَّلِ يَوْمٍ اَحَقُّ اَنْ تَقُوْمَ فِيْهِ ط  فِيْهِ رِجَالٌ يُّـحِبُّوْنَ اَنْ يَّتَطَهَّرُوْا وَاللهُ يُـحِبُّ الْمُطَّهِّرِيْنَ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই এই সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ভিত্তি প্রথম দিন থেকেই সম্মানিত তাক্বওয়া মুবারক উনার উপর প্রতিষ্ঠিত। এটি আপনার দাঁড়ানোর উপযুক্ত স্থান মুবারক। এখানে এমন লোক রয়েছেন, যাঁরা সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনাকে মুহব্বত করেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র লোক উনাদেরকে মুহব্বত করেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৮)

সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ সম্মানিত ও পবিত্র মদিনা শরীফ উনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ থেকে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ উনার দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। ‘কুবা’ মূলত একটি কূপের নাম। পরবর্তী সময়ে কূপটিকে কেন্দ্র করে যে বসতি গড়ে উঠেছে, তাকেও কুবা বলা হতো। সেই যুগসূত্র মুতাবিকই এই সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার নামকরণ করা হয় ‘মসজিদে কুবা’ বলে। হযরত কুলছূম ইবনে হাদাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু নামক একজন প্রবীণ ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার একখ- ভূমির উপর এ সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মিত হয়। সুবহানাল্লাহ!

স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিয়মিত সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ জিয়ারত মুবারক করতেন এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন। সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৬৯-৭১)

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَاْتِـىْ مَسْجِدَ قُبَاءَ كُلَّ سَبْتٍ مَّاشِيًا وَّرَاكِبًا فَيُصَلِّـىْ فِيْهِ رَكْعَتَيْنِ.

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রতি সবতিতে (শনিবার) কখনও সম্মানিত ও পবিত্র ক্বদম মুবারক-এ হেটে আবার কখনও সম্মানিত বাহন মুবারক-এ আরোহণ মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিতেন এবং সেখানে দুই রাকাত সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)

অন্য সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৭২)

عَنْ حَضْرَتْ اُسَيْدِ بْنِ ظُهَيْرٍ ۣ الْاَنْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الصَّلـٰوةُ فِـىْ مَسْجِدِ قُبَاءَ كَعُمْرَةٍ.

অর্থ: “হযরত উসাইদ ইবনে যুহাইর আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত ও পবিত্র  মসজিদে কুবা শরীফ উনার মধ্যে গিয়ে নামাজ আদায় করা একটি সম্মানিত ওমরা মুবারক উনার সমতুল্য নেকীর কাজ। সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরিফ)

তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সম্মানিত ও পবিত্র মসজিদ মুবারক উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ!

 

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১