সম্মানিত কুরআন শরীফ, সম্মানিত হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি মানহানীকারীদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদের শাস্তিও মৃত্যুদণ্ড

সংখ্যা: ২৬৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানার্থে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য, উনারই মহাসম্মানিত নূর মুবারক থেকে নেয়া এক কাতরা নূর মুবারক থেকে এই সৃষ্টি জগতের বিকাশ। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত আরশ মুবারক, সম্মানিত কুরসী মুবারক, সম্মানিত জান্নাত মুবারক, জাহান্নাম, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, আলো-বাতাস, মাটি-পানি, গাছপালা-তরুলতা, জামাদাত, শাজারাত, হাজারাত, জিন-ইনসান, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ আমরা আমাদের চারপাশে যা কিছু দেখি, সমুদ্রের তলদেশ থেকে শুরু করে গহীন অরন্যে যা কিছু রয়েছে, এক কথায় সমস্ত মাখলূকাত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য, উনারই সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ نُوْرِىْ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْئٍ مِّنْ نُّوْرِىْ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম আমার মহাসম্মানিত নূর মুবারক সৃষ্টি করেন এবং আমার মহাসম্মানিত নূর মুবারক থেকে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাকতূবাত শরীফ, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল ইনসানুল কামিল, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী)

সম্মানিত হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَوْلَاكَ مَا خَلَقْتُ الْـجَنَّةَ

অর্থ: “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সৃষ্টি মুবারক না করলে, জান্নাত সৃষ্টি করতাম না।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী, কানযুল উম্মাল)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

لَوْلَاكَ مَا خَلَقْتُ الْـنَّارَ

অর্থ: “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সৃষ্টি মুবারক না করলে, জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী, কানযুল উম্মাল)। ‘দায়লামী শরীফ-এ’ এসেছে-

عَنِ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللَّهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَعِزَّتِـىْ وَجَلَالِـىْ لَوْلَاكَ مَا خَلَقْتُ الْـجنَّةَ وَلَوْلَاكَ مَا خَلَقْتُ الدُّنْيَا.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমার সম্মানিত ইজ্জত মুবারক এবং সম্মানিত জালালিয়াত মুবারক উনাদের কসম! হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সৃষ্টি মুবারকনা করলে, সম্মানিত জান্নাত মুবারক সৃষ্টি করতাম না এবং আমি আপনাকে সৃষ্টি না করলে, দুনিয়াও সৃষ্টি করতাম না।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৫/২২৭)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

لَوْلَاكَ مَا اَظْهَرْتُ الرُّبُوْبِيَّةَ.

অর্থ: “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সৃষ্টি মুবারক না করলে, আমার সম্মানিত রুবূবিয়াত মুবারক প্রকাশ করতাম না।” সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন-

لَوْ لَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا خَلَقْتُكَ.

অর্থ: “আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি মুবারক না করলে, আপনাকেও সৃষ্টি করতাম না।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম)

সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالىٰ عَنْهُمَا قَالَ اَوْحَى اللَّهُ اِلـٰى حَضْرَتْ عِيْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا حَضْرَتْ عِيْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ اٰمِنْ بِـمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاْمُرْ مَنْ اَدْرَكَهٗ مِنْ اُمَّتِكَ اَنْ يُّؤْمِنُوْا بِهٖ فَلَوْلَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا خَلَقْتُ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَلَوْلَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا خَلَقْتُ الْـجَنَّةَ وَلَا النَّارَ وَلَقَدْ خَلَقْتُ الْعَرْشَ عَلَى الْمَاءِ فَاضْطَرَبَ فَكَتَبْتُ عَلَيْهِ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَكَنَ.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উপর সম্মানিত ওহী মুবারক করেন, হে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আপনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনুন এবং আপনার উম্মতদেরকে আদেশ মুবারক করুন যে, আপনার উম্মতদের মধ্যে যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাবে, তারা যেন উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনে। সুবহানাল্লাহ! কেননা আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি না করলে, আবুল বাশার হযরত আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করতাম না। সুবহানাল্লাহ! আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি না করলে, সম্মানিত জান্নাত মুবারক  সৃষ্টি করতাম না এবং জাহান্নামও সৃষ্টি করতাম না। সুবহানাল্লাহ! আর আমি যখন পানির উপর সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক সৃষ্টি করলাম, তখন সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক কাঁপতে থাকলেন। ফলে আমি সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার উপর সম্মানিত কালীমা শরীফ-

لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللَّهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ   وَسَلَّمَ

লিখে দিলাম। তখন সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক স্থির হয়ে গেলেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ২/৬৭১, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪৮১)

তাহলে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! আর এই কারণেই সম্মানিত কুরআন শরীফ, সম্মানিত হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে আহলু সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হচ্ছে ‘নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি অবমাননাকারীদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণ যোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদের শাস্তিও মৃত্যুদ-। এই মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَه لَعَنَهُمُ اللهُ فِى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا

অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত দুনিয়া ও আখিরাতে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৫৭)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

مَلْعُوْنِیْنَ ۖ اَیْنَمَا ثُقِفُوْا اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِیْلًا

অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে ধরা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৬১)

মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র সম্মানিত ইরশাদ মুবারক করেন-

وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ

অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” (সম্মানিত সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৬১)

আল ইমামুল কাবীর মাফ্খরাতুল মাগরিব হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায ইবনে মূসা আল ইয়াহ্চুবী আস সাব্তী আল মালিকী আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৪৭৬ হিজরী শরীফ এবং বিছাল শরীফ ৫৪৪ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীফ’ উনার ২য় খণ্ডের ৪৭৩ পৃষ্ঠায় বলেন-

اِعْلَمْ وَفَّقَنَا اللهُ وَاِيَّاكَ اَنَّ جَمِيْعَ مَنْ سَبَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوْ عَابَه اَوْ اَلْـحَقَ بِه نَقْصًا فِـىْ نَفْسِه اَوْ نَسَبِه اَوْ دِيْنِه اَوْ خَصْلَةٍ مِّنْ خِصَالِه اَوْ عَرَّضَ بِه اَوْ شَبَّهَه بِشَىْءٍ عَلـٰى طَرِيْقِ السَّبِّ لَه اَوِ الْاِزْرَاءِ عَلَيْهِ اَوِ التَّصْغِيْرِ لِشَأْنِه اَوِ الْغَضِّ مِنْهُ وَالْعَيْبِ لَه فَهُوَ سَابٌّ لَّه. وَالْـحُكْمُ فِيْهِ حُكْمُ السَّابِّ يُقْتَلُ.

অর্থ: জেনে রাখুন! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে ও আপনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বিশুদ্ধ আক্বীদা ও হুসনে যন মুবারক দান করুন, উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল ফযীলত,  বুযুর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করার তাওফীক্ব দান করুন এবং উনার যথাযথ হক্ব মুবারক আদায় করার তাওফীক্ব দান করুন।। যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দেবে, (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত করবে। নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ওজুদ পাক মুবারক উনার সাথে বা উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক উনার সাথে কোনো দোষত্রুটি সংযোজিত করবে নাঊযুবিল্লাহ! বা উনার সম্মানিত বংশ মুবারক বা সম্মানিত দ্বীন (তথা সম্মানিত শরীয়ত মুবারক বা সম্মানিত সীরত মুবারক বা হুকুমত মুবারক) বা উনার কোনো সম্মানিত স্বভাব মুবারক ও সম্মানিত অভ্যাস মুবারক উনাদের সাথে দোষ-ত্রুটি সংযোজিত করবে। নাঊযুবিল্লাহ!

আর এই দোষ-ত্রুটি সংযোজনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে হোক বা ইশারা-ইঙ্গিতে হোক বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিন্দা করার জন্য উনাকে কোনো বস্তু বা ব্যক্তির সাথে উপমা  দিবে বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অবজ্ঞা করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত শান-মান মুবারক উনাকে তুচ্ছজ্ঞান করবে, হেয়জ্ঞান করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে এবং উনার কোনো সম্মানিত আদেশ-নির্দেশ মুবারক বা হুকুম-আহকামের ব্যাপারে দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করবে। নাঊযুবিল্লাহ!

তাহলে সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে গণ্য হবে। নাঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারে এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/৪৭৩)

হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীফ’ উনার মধ্যে আরো বলেন-

وَكَذٰلِكَ مَنْ لَّعَنَه اَوْ دَعَا عَلَيْهِ اَوْ تَـمَنّٰى مَضَرَّةً لَّه اَوْ نَسَبَ اِلَيْهِ مَا لَا يَلِيْقُ بـِمَنْصِبِه عَلـٰى طَرِيْقِ الذَّمِّ اَوْ عَبَثَ فِىْ جِهَتِهِ الْعَزِيْزَةِ بِسُخْفٍ مِّنَ الْكَلَامِ وَهَجْرٍ وَّمُنْكَرٍ مِّنَ الْقَوْلِ وَزُوْرٍ اَوْ عَيَّرَه بِشَىْءٍ مِّـمَّا جَرٰى مِنَ الْبَلَاءِ وَالْمِحْنَةِ عَلَيْهِ اَوْ غَمَصَه بِبَعْضِ الْعَوَارِضِ الْبَشَرِيَّةِ الْـجَائِزَةِ وَالْمَعْهُوْدَةِ لَدَيْهِ وَهٰذَا كُلُّه اِجْمَاعٌ مِّنَ الْعُلَمَاءِ وَاَئِمَّةِ الْفَتْوٰى مِنْ لَّدُنِ الصَّحَابَةِ رِضْوَانُ اللهِ عَلَيْهِمْ اِلـٰى هَلُمَّ جَرًّا.

অর্থ: “অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর অভিসম্পাত করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য বদ দো‘আ করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা উনার ক্ষতি কামনা করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিন্দা করা, আপবাদ দেয়া, দোষী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে উনার সাথে এরূপ বস্তু সম্পর্কিত করবে, যা উনার সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ, সম্মানিত ত্বাবীয়ত বা সুমহান চরিত্র মুবারক-এ নির্বুদ্ধিতামূলক বাক্য, অশ্লীল কথা, অপছন্দনীয় কথা এবং মিথ্যাকে সম্পৃক্ত  করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে সমস্ত তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন, সে বিষয়ে উনাকে তিরস্কার করবে (নাঊযুবিল্লাহ!); মানবীয় স্বভাবসুলভ কারণে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষকে যেসব বিষয় স্পর্শ  করে থাকে যেমন রোগব্যাধি, ক্ষুধা, পিপাসা ইত্যাদি বিষয়ে জিন-ইনসানকে মর্যাদা দানের লক্ষ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষথেকে এই সকল বিষয় গ্রহণ করেছেন বিধায় উনাকে অবজ্ঞা করবে, তুচ্ছ জ্ঞান করবে (নাঊযুবিল্লাহ!), তাহলে সেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে গণ্য হবে। (নাঊযুবিল্লাহ!)। তার ব্যাপারেও এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। তাকেও শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! এ ব্যাপারে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে অদ্যবধি যত হক্বক্বানী-রব্বানী আলিম-উলামা, ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা অতীত হয়েছেন, সবাই ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/৪৭৩-৪৭৪)

মূল কথা হলো, যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অথবা উনার সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয় মুবারক নিয়ে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে, উনার সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ কোনো বক্তব্য পেশ করবে, কোনো কাজ করবে, যে কোনোভাবে উনাকে মানহানী করার চেষ্টা করবে, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। নাঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারে এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। অর্থাৎ তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। সে নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই হোক না কেন। তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাকে সমর্থন করবে, তাদের শাস্তিও মৃত্যুদ-।এই মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য যে, সরাসরি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী বা অবমাননাকারীর উপর যে শাস্তি কার্যকর হবে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে ও মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দকারী বা অবমাননাকারীর উপর ঠিক একই শাস্তি কার্যকর হবে। অর্থাৎ যারা উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে বা অবমাননা করবে, তাদের একমাত্র শাস্তিও মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদের শাস্তিও মৃত্যুদ-।এই মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেননা উনাদেরকে অবমাননা করা বা গাল-মন্দ করার অর্থই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অবমাননা করা বা গাল-মন্দ করা। না‘ঊযুবিল্লাহ!

এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)

আলোচ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে-

نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ

(আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

আর ‘আল বাহ্রুল মাদীদ ফী তাফসীরিল কুরআনিল মাজীদ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

مَـحَبَّةُ اَهْلِ الْبَيْتِ وَاجِبَةٌ عَلَى الْبَشَرِ حُرْمَةً وَّتَعْظِيْمًا لِّسَيِّدِ الْبَشَرِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ قَالَ مَنْ اَحَبَّهُمْ فَبِحُبّـِىْ اَحَبَّهُمْ وَمَنْ اَبْغَضَهُمْ فَبِبُغْضِـىْ اَبْغَضَهُمْ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে এবং উনার মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, পবিত্রতা মুবারক উনাদের কারণে মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা সমস্ত মানুষের জন্য, সমস্ত কায়িনাতের জন্য ফরয। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করলো, সে মূলত আমার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার কারণেই উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করলো। সুবহানাল্লাহ! আর যারা উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, তারা মূলত, আমার প্রতি তাদের বিদ্বেষ থাকার কারণেই উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (আল বাহ্রুল মাদীদ ফী তাফসীরিল কুরআনিল মাজীদ ৫/২১১)

কাজেই,নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে ও মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মানহানী করা বা গাল-মন্দ করার অর্থই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানী করা বা গাল-মন্দ করা। নাঊযুবিল্লাহ!

আল ইমামুল কাবীর মুজতাহিদে মত্বলক্ব হাফিয শাইখুল ইসলাম হযরত আবূ বকর মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুনযির নীশাপূরী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ: ২৪২ হিজরী শরীফ; বিছাল শরীফ: ৩১৯ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন-

اَجْمَعَ عَوَامُّ اَهْلِ الْعِلْمِ عَلـٰى اَنَّ مَنْ سَبَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْتُلُ وَمِـمَّنْ قَال ذٰلِك مَالِكُ بْنُ اَنَسٍ وَّاللَّيْثُ وَاَحْمَدُ وَاِسْحَاقُ وَهُوَ مَذْهَبُ الشَّافِعِـىِّ.

অর্থ: “সকল আহলে ইলম তথা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মালিকী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম লাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হাম্বলী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইসহাক ইবনে রাওয়াহাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সকলেই এই মত পোষণ করেছেন। এবং এটা হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইশরাফ ‘আলা মাযাহিবে আহলিল ‘ইলম ৩/১৬, আল ইক্বনা’ ২/৫৮৪, আল ইজমা’ ৮৭ পৃ., শিফা শরীফ ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১১৯-১২০পৃ., সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১২/২৩, আল মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ২/৩৮৪, শরহুয যারক্বানী লিমাওয়াহিব ৭/৩৩৭, তাফসীরে কুরতুবী ৮/৮২, আল বাহরুর রায়িক্ব শরহু কানযিদ দাক্বাইক্ব ১৩/৪৯৬, রদ্দুল মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার ৪/২৩২ ইত্যাদি )

হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ: ৪৭৬ হিজরী শরীফ এবং বিছাল শরীফ: ৫৪৪ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন-

قَالَ اَبُوْ بَكْرِ بْنُ الْمُنْذِرِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَجْمَعَ عَوَامُّ اَهْلِ الْعِلْمِ عَلـٰى اَنَّ مَنْ سَبَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْتُلُ وَمِـمَّنْ قَال ذٰلِك مَالِكُ بْنُ اَنَسٍ وَّاللَّيْثُ وَاَحْمَدُ وَاِسْحَاقُ وَهُوَ مَذْهَبُ الشَّافِعِـىِّ قَال الْقَاضِىْ اَبُو الْفَضْلِ وَهُوَ مُقْتَضٰى قَوْلِ اَبِـىْ بَكْرِ ۣ الصِّدِّيْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَلَا تُقْبَلُ تَوْبَتُهٗ عِنْد هٰؤُلَاءِ.

অর্থ: “সকল আহলে ইলম তথা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপঅবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মালিকী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম লাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হাম্বলী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইসহাক ইবনে রাওয়াহাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সকলেই এই মত পোষণ করেছেন। এবং এটা হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব। সুবহানাল্লাহ! কাযী আবুল ফযল আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার অভিমত। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিসহ উপরোক্ত সমস্ত হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ইজমা’ তথা ঐকমত্যে (যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিবে, অবমাননা করবে,) তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা’ শরীফ ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১২/২৩, আল মাওয়াহিবুল লাদুন্ নিয়্যাহ)

শায়েখ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে শিহাব ইবনে ইঊসুফ আল বায্যাযী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৮২৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল ফাতাওউল বায্যাযিয়্যাহ আও আল জামি‘উল ওয়াজীয শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন-

اِذَا سَبَّ الرَّسُوْلَ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ اَوْ وَاحِدًا مِّنَ الْاَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ فَاِنَّهٗ يُقْتَلُ حَدًّا وَّلَا تَوْبَةَ لَهٗ اَصْلًا سَوَاءٌ بَعْدَ الْقُدْرَةِ عَلَيْهِ وَالشَّهَادَةِ اَوْ جَاءَ تَائِبًا مِّنْ قِبَلِ نَفْسِهٖ كَالزِّنْدِيْقِ لِاَنَّهٗ حَدٌّ وَّجَبَ فَلَا يَسْقُطُ بِالتَّوْبَةِ كَسَائِرِ حُقُوْقِ الْاٰدَمِيِّيْنَ وَكَحَدِّ الْقَذْفِ لَا يَسْقُطُ بِالتَّوْبَةِ.

অর্থ: “যখন কোনো ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অথবা অন্য সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজনকে গালি দিবে, অবশ্যই তাকে হদ্দ বা শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে তার কোন তাওবা নেই। চাই তাকে বন্দি করার পর তার উপর সাক্ষী পেশ করা হোক অথবা সে স্বেচ্ছায় তাওবাকারীরূপে আসুক সমান কথা। তার হুকুম জিন্দিকের হুকুমের অনুরূপ। কেননা তার উপর হদ্দ তথা শাস্তি ওয়াজিব হয়ে গেছে। কাজেই তার তাওবার দ্বারা তার হদ্দ তথা শাস্তি রহিত হবে না। যেমনিভাবে মানুষের যাবতীয় হক্বসমূহ এবং অপবাদের হদ্দ তথা শাস্তি তাওবার দ্বারা রহিত হয় না।” (ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/৪৪২)।

তিনি আরো বলেন-

قُلْنَا اِذَا شَتَمَه عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ سَكْرَانُ لَا يُعْفٰى وَيُقْتَلُ اَيْضًا حَدًّا وَهٰذَا مَذْهَبُ اَبِىْ بَكْرِ ۣ الصِّدِّيْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَالْاِمَامِ الْاَعْظَمِ وَالثَّوْرِىِّ وَاَهْلِ الْكُوْفَةِ وَالْمَشْهُوْرُ مِنْ مَذْهَبِ مَالِكٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَاَصْحَابِه. قَالَ الْـخَطَّابِـىُّ لَا اَعْلَمُ اَحَدًا مِّنْ الْمُسْلِمِيْنَ اخْتَلَفَ فِـىْ وُجُوْبِ قَتْلِه اِذَا كَانَ مُسْلِمًا وَّقَالَ ابْنُ سَحْنُوْنَ الْمَالِكِىُّ اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِرٌ وَّحُكْمُهُ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِىْ عَذَابِه وَكُفْرِه كَفَرَ. قَالَ اللهُ تَعَالـٰى فِيْهِ ﴿مَلْعُوْنِیْنَ ۖ اَیْنَمَا ثُقِفُوْا اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِیْلًا﴾ وَرَوٰى عَبْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى بْنِ جَعْفَرٍ عَنْ عَلِىِّ بْنِ مُوْسٰى عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَدِّه عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِىِّ بْنِ حُسَيْنٍ عَنْ اَبِيْهِ عَنِ الْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ، عَنْ اَبِيْهِ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ، وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ. وَاَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَتْلِ كَعْبِ بْنِ الْاَشْرَفِ بِلَا اِنْذَارٍ وَّكَانَ يُؤْذِيْهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَذَا اَمَرَ بِقَتْلِ اَبِىْ رَافِعِ ۣ الْيَهُوْدِىِّ وَكَذَا اَمَرَ بِقَتْلِ ابْنِ خَطَلٍ لِّـهٰذَا وَاِنْ كَانَ مُتَعَلِّقًا بِاَسْتَارِ الْكَعْبَةِ

অর্থ: “আমরা বলি যখন কোনো ব্যক্তি মাতাল বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিবে, তাকেও ক্ষমা করা যাবে না। তাকেও হদ্দ তথা শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। এটাই খলীফাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার, হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার, হযরত ইমাম সুফ্ইয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং কূফাবাসী উনাদের অভিমত। এবং তা হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ও উনার অনুসারীদের অভিমত হিসেবে প্রসিদ্ধ। হযরত ইমাম খত্তাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

لَا اَعْلَمُ اَحَدًا مِّنْ الْمُسْلِمِيْنَ اخْتَلَفَ فِـىْ وُجُوْبِ قَتْلِهٖ اِذَا كَانَ مُسْلِمًا

 ‘আমি এমন কোনো মুসলমান পাইনি, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালিদানকারীর ক্বতল তথা মৃত্যুদ- আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে মতবিরোধ করেছেন, যদি সে মুসলমান হয়ে থাকে।’ সুবহানাল্লাহ!

হযরত ইমাম মুহম্মদ সাহ্নূন মালিকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

 اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِرٌ وَّحُكْمُهُ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِىْ عَذَابِه وَكُفْرِه كَفَرَ.

‘সমস্ত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এ বিষয়ে ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী, আবমাননাকারী কাফির। তার  হুকুম হলো, তাকে ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরনের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ করবে, সে নিজেও কাফির হবে (এবং তাকেও হত্যা করতে হবে)।’ সুবহানাল্লাহ!

এই সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

مَلْعُوْنِیْنَ ۖ اَیْنَمَا ثُقِفُوْا اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِیْلًا

অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে ধরা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।” (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৬১)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মূসা ইবনে জা’ফর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আলী ইবনে মূসা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে, তিনি উনার সম্মানিত পিতা থেকে, উনার পিতা উনার দাদা থেকে, তিনি মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন আলাইহিমুস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার সম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার থেকে, তিনি ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন- নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ.

অর্থ: “যে ব্যক্তি কোনো নবী আলাইহিস সালাম উনাকে গালি দিবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে গালি দিবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে তিনি কোন সতর্কীকরণ ছাড়াই কা’ব ইবনে আশরাফকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! একই কারণে তিনি আবূ রফি’ ইহুদীকেও শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে একই কারণে তিনি সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার গিলাফ মুবারক উনার সাথে ঝুলন্ত থাকা সত্ত্বেও ইবনে খত্বালকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২-২৪৩)

-আল্লামা মুহম্মদ মানছুর আলী

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম