সর্বাবস্থায় ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয; এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও

সংখ্যা: ২৯২তম সংখ্যা | বিভাগ:

খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,

‏يٰاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ

অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ঈমানদার, মু’মিন-মুসলমান উনাদের জন্য সর্বাবস্থায় ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া ফরয করে দিয়েছেন। এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও পবিত্র নামায ছেড়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া ফরয। সুবহানাল্লাহ!

যেমন এ বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِـيْدِ بْنِ الْمُعَلّٰى رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كُنْتُ اُصَلِّـىْ فَمَرَّ بِـىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَعَانِـىْ فَـلَمْ اٰتِهٖ حَتّٰـى صَلَّيْتُ ثُـمَّ اَتَـيْـتُهٗ فَـقَالَ مَا مَنَـعَكَ اَنْ تَـأْتِـىَ اَلَـمْ يَـقُلِ اللهُ ‏(‏يٰاَيُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ‏)‏‏

অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ ইবনে মু‘আল্লা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার পবিত্র নামায আদায় করছিলাম। এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ডাকলেন। কিন্তু আমি পবিত্র নামায শেষ না করা পর্যন্ত উনার খিদমত মুবারক-এ যাইনি। তারপর (পবিত্র নামায শেষ করে) উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ গেলাম, তিনি আমাকে বললেন, আমার নিকট আসতে আপনাকে কিসে বাধা দিলো? মহান আল্লাহ পাক তিনি কি ইরশাদ মুবারক করেননি- ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে’।” (বুখারী শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৬৪৭, মুসনাদে আহমদ ৩/৪৫০, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭/২৫৫ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ  تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلـٰى حَضْرَتْ اُبَـىِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ  تَـعَالـٰى عَنْهُ وَهُوَ يُصَلِّـىْ فَـقَالَ يَا حَضْرَتْ اُبَـىُّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ فَالْتَـفَتَ فَـلَمْ يُـجِبْهُ ثُـمَّ صَلّٰى حَضْرَتْ اُبَـىٌّ رَضِىَ اللهُ  تَـعَالـٰى عَنْهُ فَخَفَّفَ ثُـمَّ انْصَرَفَ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـقَالَ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَعَلَيْكَ قَالَ مَا مَنَعَكَ اَىْ اُبَـىُّ رَضِىَ اللهُ  تَـعَالـٰى عَنْهُ اِذْ دَعَوْتُكَ اَنْ تُـجِيْـبَـنِـىْ قَالَ اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنْتُ فِـى الصَّلـٰوةِ قَالَ اَفَـلَسْتَ تَـجِدُ فِـيْمَا اَوْحَى اللهُ اِلَـىَّ اَنِ اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُـحْيِـيْكُمْ قَالَ بَـلـٰى اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا اَعُوْدُ

 অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তখন হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি পবিত্র নামাযরত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে ডাকলেন। হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বিষয়টা লক্ষ্য করলেন কিন্তু কোনো জবাব দিলেন না। এরপর হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সংক্ষেপে পবিত্র নামায শেষ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে বললেন, আস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ওয়া আলাইকা অর্থাৎ আপনার উপরও সালাম! হে হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! যখন আমি আপনাকে ডাকলাম তখন কোন্ বিষয় আপনাকে আমার সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিতে নিষেধ করলো? তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নামাযে ছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কি এটা পাননি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার প্রতি সম্মানিত ওহী মুবারক করেছেন যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে, যা তোমাদেরকে জীবন দান করে।’ তিনি বললেন, হ্যঁা অবশ্যই পেয়েছি; ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আর কখনোই এই কাজের পুনরাবৃত্তি করবো না অর্থাৎ যখনই আপনি আমাকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, আমি পবিত্র নামাযরত অবস্থায় থাকলেও আপনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ অবশ্যই সাড়া দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ২/৪১২, মুসনাদুছ ছাহাবাহ ফিল কুতুবিত তিস‘আহ ৬/১১১)

উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ উনাদের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছেন যে, হযরত আবূ সাঈদ ইবনে মু‘আল্লা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত আহবান মুবারক করেছিলেন উনারা পবিত্র নামাযে থাকার কারণে উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেননি। বিষয়টা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পেশ করা হলেও তিনি তা অপছন্দ করলেন এবং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উল্লেখ করে বললেন, আপনারা কি এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ পাননি?

‏يٰاَيُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ

অর্থ: “হে ঈমানদারগণ মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)

তাহলে এখান থেকে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সর্বাবস্থায়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া প্রত্যেক ঈমানদার, মু’মিন-মুসলমান কায়িনাতের সবার জন্য ফরয। সুবহানাল্লাহ!

আর এই বিষয়টার মাধ্যমে মূলত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটানো হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! যেমন এ বিষয়ে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

فَـهٰذَا كَانَ الْـجَوَابُ الْمَفْرُوْضُ عَلَيْهِمْ اَنْ يُّـجِيْـبُـوْهُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاِنْ كَانُـوْا فِـى الصَّلـٰوةِ عَالِـمِـيْـنَ مُسْتَـيْقِنِـيْـنَ اَنَّـهُمْ فِـىْ نَـفْسِ فَـرْضِ الصَّلـٰوةِ اِذِ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فَـرَّقَ بَـيْـنَ نَبِـيِّـهِ الْمُصْطَفٰى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَـيْـنَ غَـيْـرِهٖ مِنْ اُمَّتِهٖ بِكَـرَمِهٖ لَهٗ وَفَضْلِهٖ بِاَنْ اَوْجَبَ عَلَى الْمُصَلِّـيْـنَ اَنْ يُّـجِيْـبُـوْهُ وَاِنْ كَانُـوْا فِـى الصَّلـٰوةِ فِـىْ قَـوْلِهٖ {‏يٰاَيُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ

অর্থ: “অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া এটা হচ্ছেন উম্মতের জন্য ফরয জাওয়াব যদিও তারা নামাযের মধ্যে থাকে, তারা দৃঢ়ভাবে জানে তারা পবিত্র ফরয নামাযের মধ্যে রয়েছে। যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মনোনীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং অন্যদের সম্মান, মর্যাদার বিষয়টা পার্থক্য করেছেন। আর একারণেই মুছল্লিদের জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া ওয়াজিব করেছেন যদিও তারা পবিত্র নামাযে থাকে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে যা তোমাদেরকে জীবন দান করে।’ আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত আবূ সাঈদ ইবনে মু‘য়াল্লা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদের দুজনকে যখন পৃথক পৃথকভাবে ডাকলেন তখন উনারা পবিত্র নামাযের মধ্যে ছিলেন। পবিত্র নামায থেকে পৃথক না হওয়া পর্যন্ত উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেননি। (তখন) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা কি শুনেননি এই বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার প্রতি কি নাযিল করেছেন? অথবা এই কথা মুবারক বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে, যা তোমাদেরকে জীবন দান করে।” (ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ্ ২/১২০)

এমন কি পবিত্র নামাযরত অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিলে পবিত্র নামায বাতিলও হবে না। এ প্রসঙ্গে কিতাবে বর্ণির্ত রয়েছেন,

وَفِـى الْـحَدِيْثِ دَلِـيْلٌ عَلـٰى اَنَّ اِجَابَةَ الرَّسُوْلِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى الصَّلـٰوةِ لَا تُـبْطِلُ الصَّلـٰوةَ

অর্থ: “আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এ বিষয়ে দলীল মওজুদ রয়েছেন যে, নিশ্চয়ই পবিত্র ছলাত উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিলে পবিত্র নামায বাতিল হবে না।” সুবহানাল্লাহ! (শরহুস সুন্নাহ ৪/৪৪৮)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

هٰذَا دَلِـيْلٌ عَلـٰى اَنَّ اِجَابَةَ الرَّسُوْلِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا دَعَا اَحَدًا فِـى الصَّلـٰوةِ لَا تُـبْطِلُ الصَّلـٰوةَ كَمَا اَنَّكَ تُـخَاطِبُ الرَّسُوْلَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى الصَّلـٰوةِ تَـقُوْلُ سَلَامٌ عَلَيْكَ اَيُّـهَا النَّبِـىُّ

অর্থ: “আর এটা হচ্ছে তার দলীল যে, নিশ্চয়ই যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কাউকে সম্মানিত আহবান মুবারক করেন এবং সে পবিত্র ছলাত উনার মধ্যেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়। তাহলে তার নামায বাতিল হবে না। যেমনিভাবে আপনি পবিত্র নামায উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করেন। আপনি বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার প্রতি সম্মানিত সালাম মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (আল মাফাতীহ ফী শরহিল মাছাবীহ ৩/৭০)

আরো বর্ণিত রয়েছেন,

وَاِجَابَةُ الرَّسُوْلِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى الصَّلـٰوةِ لَا تُـبْطِلُ الصَّلـٰوةَ

অর্থ: “আর পবিত্র নামায উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিলে পবিত্র নামায বাতিল হবে না।” সুবহানাল্লাহ! (শরহুল মিশকাত লিত্ব তীবী ৩/১০৮৪)

এখানে ফিকিরের বিষয় হচ্ছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র নামায উনাকে মু’মিনের মি’রাজ বলা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি পবিত্র নামাযে থাকার অর্থ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার যিয়ারত মুবারক-এ থাকা। কিন্তু ঐ অবস্থায়ও যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত আহবান মুবারক করেন, তাহলে তার জন্য ফরয হচ্ছে- পবিত্র নামায ছেড়ে দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া। সুবহানাল্লাহ!

তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতটুকু বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছেন সেটা কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও ফিকিরের উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদেরকেসহ কুল কায়িনাতবাসী সকলকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুজুর্গী-সম্মান মুবারক জানার, বুঝার, উপলব্ধি করার এবং সে অনুযায়ী উনাকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম