সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য ফরয হওয়ার প্রমাণ

সংখ্যা: ২৩০তম সংখ্যা | বিভাগ:

উছূলে ফিক্বাহর সমস্ত কিতাবেই উল্লেখ আছে যে-

الامر للوجوب

অর্থাৎ আদেশসূচক বাক্য দ্বারা সাধারণত ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়ে থাকে। (উছূলুল বাযদুবী, উছূলুশ শাশী, আল মানার, নূরুল আনওয়ার) যেমন- পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- اقيموا الصلوة অর্থাৎ “তোমরা নামায আদায় কর।” পবিত্র কুরআন শরীফ উনার এ নির্দেশসূচক বাক্য দ্বারাই নামায ফরয সাব্যস্ত হয়েছে। অনুরূপ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- واعفوا اللحى  অর্থাৎ “তোমরা (পুরুষরা) দাড়ি লম্বা কর।” পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার এ নির্দেশসূচক বাক্য দ্বারাই কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়েছে। ঠিক একইভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা অর্থাৎ ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ সোমবার শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ করা তথা খুশি প্রকাশ করা বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এ ব্যাপারেও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বহু স্থানে আদেশ-নির্দেশ রয়েছে। যেমন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পবিত্র কালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

واذكروا نعمت الله عليكم

অর্থাৎ “তোমাদেরকে যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে, তোমরা সে নিয়ামতকে স্মরণ কর।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৩)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত নিয়ামত স্মরণ করা, নিয়ামতের আলোচনা করা, নিয়ামত প্রাপ্তি উপলক্ষে নিয়ামত প্রাপ্তির দিন ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা ফরয সাব্যস্ত হয়। অর্থাৎ নিয়ামত প্রাপ্তি উপলক্ষে নিয়ামত প্রাপ্তির দিনে নিয়ামতকে স্মরণ করে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা ফরয। আর সে নিয়ামতকে ভুলে যাওয়া বা খুশি প্রকাশ না করা কঠিন শাস্তির কারণ। এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, শাস্তি থেকে বেঁচে থাকাও বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য ফরয। এ বিষয়টি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ উনার ১১৪ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরও স্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেন-

قال عيسى ابن مريم اللهم ربنا انزل علينا مائدة من السماء تكون لنا عيدا لاولنا واخرنا واية منك وارزقنا وانت خير الرازقين. قال الله انى منـزلها عليكم فمن يكفر بعد منكم فانى اعذبه عذابا لا اعذبه احدا من العالـمين

অর্র্থ : “হে আমাদের রব আল্লাহ পাক! আমাদের জন্য আপনি আসমান হতে খাদ্যসহ একটি খাঞ্চা নাযিল করুন। খাঞ্চা নাযিলের উপলক্ষটি অর্র্থাৎ খাদ্যসহ খাঞ্চাটি যেদিন নাযিল হবে সেদিনটি আমাদের জন্য, আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ (খুশি) স্বরূপ হবে এবং আপনার পক্ষ হতে একটি নিদর্শন হবে। আমাদেরকে রিযিক দান করুন। নিশ্চয় আপনিই উত্তম রিযিকদাতা। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের প্রতি খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিল করবো। অতঃপর যে ব্যক্তি সে খাদ্যসহ খাঞ্চাকে এবং তা নাযিলের দিনটিকে ঈদ তথা খুশির দিন হিসেবে পালন করবে না বরং অস্বীকার করবে আমি তাকে এমন শাস্তি দিব, যে শাস্তি সারা কায়িনাতের অপর কাউকে দিব না।”  (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৪, ১১৫)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত  হলো যে, নিয়ামত প্রাপ্তির দিনটি পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ বা খুশির দিন; যা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত। আরও প্রমাণিত হয় যে, নিয়ামত প্রাপ্তি উপলক্ষে নিয়ামত প্রাপ্তির দিনে যারা ঈদ বা খুশি প্রকাশ করবে না তারা কঠিন আযাব বা শাস্তির সম্মুখীন হবে। অর্থাৎ এ পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারাও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিয়ামত প্রাপ্তি উপলক্ষে নিয়ামত প্রাপ্তির দিনে খুশি প্রকাশ করাকে ফরয করে দিয়েছেন।

এখন কথা হলো- সাধারণভাবে কোন নিয়ামত প্রাপ্তির কারণে নিয়ামত প্রাপ্তির দিন ঈদ বা খুশি করা যদি ফরয হয়, আর হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উম্মতের জন্য আসমান থেকে খাদ্য বা নিয়ামত নাযিল হওয়ার কারণে সে দিনটি যদি পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ বা খুশির দিন হয় এবং সে ঈদকে অস্বীকারকারী বা সে ঈদ না পালনকারী যদি কঠিন আযাব বা শাস্তির উপযুক্ত হয়; তবে যিনি কুল-কায়িনাতের জন্যই সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত অর্থাৎ নিয়ামতে কুবরা আলাল আলামীন তিনি যেদিন যে সময়ে পৃথিবীতে তাশরীফ মুবারক আনলেন সে দিনটি কেন পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ বা খুশির দিন হবে না? সেদিন যারা ঈদ বা খুশি প্রকাশ করবে না, তারা কেন কঠিন আযাব বা শাস্তির উপযুক্ত হবে না?

মূলত সেদিন অর্থাৎ ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ সোমবার শরীফ শুধু  পূর্ববর্তী-পরবর্তী সকলের জন্যেই নয়; কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যেই সবচেয়ে বড় ঈদ অর্থাৎ সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম ও সাইয়্যিদে ঈদে আকবার। সেদিন ঈদ পালন করা শুধু জিন-ইনসানের জন্যেই নয় বরং কুল-কায়িনাতের সকলের জন্য অবশ্যই ফরয। সেদিন যারা ঈদ পালন করবে না তারা ফরয তরক করার কারণে, নিয়ামতের না শুকরিয়া বা অবজ্ঞা করার কারণে অবশ্যই কঠিন আযাব বা শাস্তির উপযুক্ত হবে। তাই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ উনার ৫৮ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বান্দা-বান্দী ও উম্মতদেরকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাভ করার কারণে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করতে সরাসরি নির্দেশ প্রদান করেন। যেমন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا هو خير مـما يجمعون

অর্র্থ : “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় অনুগ্রহ ও রহমত হিসেবে উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা সবকিছু থেকে উত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৮)

অনুসরণীয় হযরত ইমাম-মুজতাহিদ, মুহাক্কিক্ব ও মুদাক্কিক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করাকে ফরয বলে ফতওয়া দেন।

কেননা উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে فليفرحوا অর্থাৎ “তারা যেন খুশি প্রকাশ করে” আদেশসূচক বাক্য ব্যবহৃত হয়েছে। আর আদেশসূচক বাক্য দ্বারা যে ফরয সাব্যস্ত হয় তার উদাহরণ ও দলীল শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে।

কাজেই, প্রত্যেক বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্যে তো অবশ্যই বরং কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের ফতওয়া। এর বিপরীত মত পোষণকারীরা বাতিল ও গোমরাহ।

-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম

 

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম