সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ‘ইস্তিঞ্জা’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘নূরুশ শিফা’ ও ‘নূরুল গইব’ শব্দ মুবারকদ্বয় ব্যবহার করা সম্পর্কে যামানার লক্ষস্থল ওলীআল্লাহ, লক্ষস্থল আওলাদুর রসূল, মুজাদ্দিদ আ’যম সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার অভূতপূর্ব তাজদীদ মুবারক

সংখ্যা: ২৩০তম সংখ্যা | বিভাগ:

قد جاءكم من الله نور.

অর্থ : নিশ্চয়ই খলিক্ব-মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট নূর মুবারক তাশরীফ গ্রহণ করেছেন। (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)

অন্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وما ارسلناك الا رحمة للعالـمين

অর্থ : নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সারা কায়িনাতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি। (পবিত্র সূরা আম্বিয়া আলাইহিস সালাম: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭)

অর্থাৎ, উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বয় উনাদের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নূর মুবারক এবং রহমত মুবারক। উনাকে মহান আল্লাহ পাক নূর মুবারক এবং রহমত মুবারক হিসেবেই সৃষ্টি করেছেন। সঙ্গত কারণেই উনার সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক বস্তু মুবারকই রহমত এবং নূর। আর এ জন্যই হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা বা একমত পোষণ করেছেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক প্রাপ্ত প্রতিটি বস্তুই কায়িনাতের সমস্তকিছু হতে অধিক মর্যাদা ও ফযীলত প্রাপ্ত। এমনকি তা আরশে আযীম হতেও অত্যধিক শ্রেষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে উল্লেখ আছে, সাধারণ মানুষ খাদ্য খেলে তা ‘ইস্তিঞ্জা’ ছূরতে বের হয়। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারকে যা প্রবেশ করে এবং যা কিছু বাহিরে তাশরীফ মুবারক রাখেন তা নূর মুবারকে পরিণত হয়ে যান এবং নূর মুবারক হিসেবে বাহিরে মুবারক তাশরিফ রাখেন। সুবহানাল্লাহ!

স্মর্তব্য যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক উনার সমস্তকিছুই পবিত্র হতে পবিত্রতম। উনার মুবারক শানে কোন ধরনের নাপাকীর কল্পনা করাও ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ। ‘ইস্তিঞ্জা’ শব্দের একটি অর্থ হচ্ছে মল-মূত্র ত্যাগ করা। আরেকটি  অর্থ হচ্ছে নাজাত তলব করা। এ দুটি অর্থই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে ব্যবহার করা উনার শান মুবারক উনার খিলাফ। কেননা সাধারণভাবে মল-মূত্র হচ্ছে নাপাক। অথচ উনার সবকিছুই পাক ও পবিত্র। আর তিনি কেন নাজাত তলব করবেন বরং সমস্ত কিছুই উনার উসীলায় নাজাত তলব করবে এবং নাজাত পাবে। কাজেই যেসকল শব্দ উনার শান মুবারক উনার খিলাফ তা ব্যবহার না করে শান মুবারকসম্মত শব্দ ব্যবহার করতে হবে।

আর এ জন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে-

لا تقولوا راعنا وقولوا انظرنا.

অর্থ- (ভাল-মন্দ উভয়ই অর্থ প্রদানকারী শব্দ) ‘রয়িনা’ তোমরা বলবেনা। বরং তোমরা বলো ‘উনযুরনা’। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৪)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুউচ্চ শান মুবারক উনার খিলাফ কোন শব্দই ব্যবহার করা যাবেনা। উনার শান মুবারকের প্রতি খেয়াল রেখে সর্বাধিক উত্তম শব্দ ব্যবহার করতে হবে। কেননা, এ বিষয়টি অত্যধিক স্পর্শকাতর। আক্বীদার সামান্যতম চু-চেরা জাহান্নাম ওয়াজিব করে।

মূলত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক হতে যা কিছুই বাহিরে মুবারক তাশরিফ রাখেন উনার প্রতিটি বিষয়ই কায়িনাতকে পবিত্রকারী। জান্নাত ওয়াজিবকারী, চির সুস্থতা প্রদানকারী, চিরস্থায়ী সুস্বাস্থ্য ও সুঘ্রাণ মুবারক প্রদানকারী। হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক থেকে বাহিরে মুবারক তাশরিফ রাখেন কিছু নূর মুবারক যা পানি মুবারক আকারে একবার একখানা পাত্রে রেখে সেই পাত্র মুবারক তিনি চকি মুবারক উনার নিচে রেখে দিলেন। সকালে সেই নূর মুবারক উনার ব্যাপারে কোন ইচ্ছা মুবারক পোষণ করত সেই পাত্রখানা সম্পর্কে খাদিমাকে কিছু বললে তখন খাদিমা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি সেই নূর মুবারক পান করে ফেলেছি। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন যে, আপনি আপনার জন্য জাহান্নামকে হারাম করে নিলেন। সুবহানাল্লাহ! (খাছায়িছুল কুবরা)

অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, একদা হযরত উম্মু আয়মান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক হতে পানির ছুরতে বাহিরে মুবারক তাশরিফকৃত নূর মুবারক পান করেন। তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, আপনি আর কখনোই পেটের রোগে আক্রান্ত হবেননা। সুবহানাল্লাহ! (মাদারিজুন নুবুওওয়াত)

অন্য একজন মহিলা ছাহাবী সেই নূর মুবারক পান করলে উনাকে উদ্দেশ্য করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, আপনি চিরকালের জন্য সুস্থ হয়ে গেলেন। আর কখনোই আপনি অসুস্থ হবেন না। সুবহানাল্লাহ! (মাদারিজুন নুবুওয়াত)

উপরোক্ত বর্ণনা মুবারক দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক থেকে পানির ছূরত মুবারকে যে নূর মুবারক বাহিরে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন তা হচ্ছেন “نور الشفاء” নূরুশ শিফা।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে ‘ইস্তিঞ্জা’ শব্দটি ব্যবহার না করে বরং মানুষেরা নিজেদের ব্যাপারে যেটাকে ছোট ইস্তিঞ্জা বলে থাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে উনাকে ‘নূরুশ শিফা মুবারক’ বলাটাই আদব হবে এবং মানুষেরা নিজেদের ব্যাপারে যেটাকে বড় ইস্তিঞ্জা বলে থাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে উনাকে ‘নূরুল গইব মুবারক’ বলাটাই আদব হবে। যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক থেকে নুরুল গাইব যখন জমিনে মুবারক তাশরীফ রাখেন অতঃপর যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হুজরা শরীফ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন, তখন আমি সেখানে প্রবেশ করে কোনকিছুর আলামত না পেয়ে শুধু সুঘ্রান মুবারক লাভ করি তখন উনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করি। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের জিসিম মুবারক হতে যা কিছু বাহিরে মুবারক তাশরিফ রাখেন উনাদের প্রতিটি বিষয় মাটিতে পৌঁছামাত্র মাটি উনাদেরকে গায়েব করে দেয় বা গিলে ফেলে। সুবহানাল্লাহ!

যার পরিপ্রেক্ষিতে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি অভূতপূর্ব অনন্য এক তাজদীদ মুবারক করেছেন। তিনি ইরশাদ  মুবারক করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারকই প্রধান নূর মুবারক ও রহমত মুবারক। উনার জিসিম মুবারক হতে যা কিছু বাহিরে তাশরীফ মুবারক রাখেন উনাদের সবকিছুই নূর মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। কাজেই, উনার মুবারক শানে ইস্তিঞ্জা শব্দ ব্যবহার না করে ‘নূরুশ শিফা’ এবং ‘নূরুল গইব’ শব্দদ্বয় ব্যবহার করাটাই অধিক আদব ও সম্মানের পরিচায়ক।

অতএব এ বিষয়ে হুসনে যন বা সুধারণা পোষণ করা ঈমানদার উনাদের দায়িত্ব কর্তব্য। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসিলায় মুসলিম মিল্লাতের সকলকে হুসনে যন পোষণ করার তাওফীক্ব দান করুন। আমিন।

-মাওলানা মুহম্মদ আখি সিরাজুদ্দীন উছমান আওদাহী

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম