সাইয়্যিদুল আরব ওয়াল আজম, সাইয়্যিদু কুরাইশ, মাহবূবে এলাহী, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার কতিপয় সম্মানিত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল আরব ওয়াল আজম, সাইয়্যিদু কুরাইশ, মাহবূবে এলাহী, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আল জাদ্দুছ ছানী তথা উনার মহাসম্মানিত দাদাজান সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম । সুবহানাল্লাহ! উনারা ছিলেন চার ভাই-

১.         সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম।

২.         সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুশ শামস ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম।

৩.         সাইয়্যিদুনা হযরত মুত্তালিব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম।

৪.         নাওফিল ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম।

কেউ কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন উনার ভাই উনাদের মধ্যে সকলের বড়। আবার কেউ কেউ ভিন্ন মতও পোষণ করেছেন।

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম এবং সম্মানিত পরিবার উনাদের সকলের নিকট সর্বাধিক প্রিয় ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি আল জাদ্দাতুছ ছালিছাহ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আতিকাহ বিনতে মুররাহ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

তিনি কুরাইশ বংশের বনু হাশিম শাখার সম্মানিত প্রথম পুরুষ। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত নাম মুবারক ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত আমর আলাইহিস সালাম। উনার সীমাহীন সম্মান ও মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার কারণে উনাকে ‘আমরু ‘উলা বা আমরুল ‘আলী’ বলে সম্বোধন করা হতো। সুবহানাল্লাহ! তিনি সকলের মাঝে হাশিম আলাইহিস সালাম হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। এর কারণ হিসেবে সীরাতগ্রন্থসমূহে অনেক বর্ণনা রয়েছে। অনেকের মতে তিনি মক্কা শরীফ-এ দুর্ভিক্ষের সময় রুটি টুকরা টুকরা করে ছারীদ তৈরি করে সবাইকে খাওয়ান, যার কারণে তিনি সকলের মাঝে হাশিম হিসেবে পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা ‘হাশমুন’ শব্দ মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন, চূর্ণ করা, গুঁড়ো করা, টুকরো করা ইত্যাদি। আর সেখান থেকে ‘হাশিম’। অর্থ- টুকরাকারী, গুঁড়োকারী, চূর্ণকারী।

তিনি ছিলেন বেমেছাল দানশীল। উনার বদান্যতার বিষয়টি আরব এবং অনারব তথা সারা পৃথিবীতে প্রসিদ্ধ ছিলো। সুবহানাল্লাহ!

তিনিই সর্বপ্রথম কুরাইশদের জন্য শীত ও গ্রীষ্মকালীন দুটি বাণিজ্য সফর প্রচলন করেন। সুবহানাল্লাহ! যেই বিষয়টি স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত কুরআন শরীফ উনার ‘সম্মানিত সূরা কুরাইশ শরীফ’ উনার মধ্যে আলোচনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আবার তিনিই সর্বপ্রথম মক্কা শরীফ-এ হাজীদেরকে ছারীদ দ্বারা আপ্যায়ন করেন। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আল জাদ্দুছ ছালিছ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আবদু মানাফ ইবনে কুছাই আলাইহিস সালাম উনার পর রিফাদাহ ও সিক্বায়াহ তথা হাজীদের খাদ্য খাওয়ানো ও পানি পান করানোর দায়িত্ব মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী। এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

وكان من أحسن الناس وأجملهم،

অর্থ: “তিনি ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বোত্তম ও সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/২৭০)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-

كان النور يرى على وجهه كالهلال يتوقّد، لا يراه أحد إلا أحبّه وأقبل نحوه.

অর্থ: “চাঁদ যেরূপ প্রজ্বলিত হয়, তদ্রুপ সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহেরা মুবারক-এ মহাসম্মানিত নূর মুবারক তথা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রজ্বলিত অবস্থায় দেখা যেতেন। সুবহানাল্লাহ! যে কেউ  সেই সম্মানিত নূর মুবারক দেখতো, সে উনাকে মুহব্বত না করে পারতো না এবং সে উনার নিকট চলে আসতো।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/২৭০)

আবূ সা’দ আব্দুল মালিক ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম নীশাপুরী খরকূশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ: ৪০৭ হিজরী) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,

وكان النور على وجهه كالهلال يتوقد شعاعه، لا يمر بشيء إلا سجد له، ولا يراه أحد إلا أقبل نحوه

অর্থ: ‘চাঁদ যেমন তার আলোক রশ্মি প্রজ্বলিত করে থাকে, ঠিক তেমনিভাবে আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক ঝলমল করতেন। অর্থাৎ আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ চাঁদের ন্যায় সুস্পষ্টভাবে নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখা যেতেন এবং চাঁদের আলোর ন্যায় সেখান থেকে মহাসম্মানিত নূর মুবারক উনার রশ্মি মুবারক বিচ্ছূরিত হতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কোনো কিছু (যেমন পশু-পাখি, গাছ-পালা, তরুলতা ইত্যাদির) পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে সেগুলো উনাকে সিজদা করতো আর জিন-ইনসান উনাকে সম্মান করতো। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তিই সেই মহাসম্মানিত নূর মুবারক দেখতো, সে মুহব্বতের সাথে উনার নিকট অগ্রসর হতো। সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ১/৩৩১)

সুতরাং এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানী সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার আলোচনা মুবারক পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে এবং রোম ও পারস্য সম্রাটদের নিজ মেয়েদেরকে উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেয়ার জন্য দূত প্রেরণ:

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারকেও ছিলো। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে  যারা সম্মানিত আসমানী কিতাব মুবারক উনাদের ইলম মুবারক রাখতেন, উনারা উনাকে দেখেই চিনে ফেলতেন যে, তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নূর মুবারক ধারণ করে আছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনার মাঝে এখন মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবস্থান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই আরব-অনারবের সকল সম্ভ্রান্তশীলা মহিলাগণ উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ (শাদী মুবারক-এ) আবদ্ধ হওয়ার জন্য বেকারার ছিলো। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে মুজাদ্দিদে আ’যম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “স্বয়ং রোম ও পারস্য কথিত সম্রাটরা তাদের নিজ মেয়েদেরকে আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দেয়ার জন্য দূত প্রেরণ করেছিলো। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।” সুবহানাল্লাহ!

এই সম্পর্কে ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে ইঊসুফ ছালিহী শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ: ৯৪২ হিজরী শরীফ) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন-

وبعث إليه قيصر رسولا ليتزوج ابنته لما وجد في الإنجيل من صفته فأبى.

অর্থ: “রোম সম্রাট ইনজিল শরীফ-এ আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার ছিফত তথা গুণাবলী মুবারক পেয়ে, উনার নিকট দূত প্রেরণ করেছিলো, তার কন্যাকে উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) দেয়ার জন্য। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত প্রস্তাব অস্বীকার করেন। অর্থাৎ তিনি রোমের কথিত সম্রাটের প্রস্তাব ফিরেয়ে দেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১/২৭০)

আবূ সা’দ আব্দুল মালিক ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম নীশাপুরী খরকূশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ: ৪০৭ হিজরী) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন-

وبعث إليه قيصر حفيد هرقل ملك الروم، وطلب إليه أن يزوج ابنته منه لما وجد في الإنجيل من قصته، وهو أن النور كان في وجهه ظاهرا فأبى

অর্থ: “আর তৎকালীন রোম শাসক বা কথিত সম্রাট আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ দূত প্রেরণ করে এবং উনার নিকট এই আরজী পেশ করে যে, সে তার স্বীয় কন্যাকে উনার নিকট সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) দিতে চায়। সুবহানাল্লাহ! আর এই ঘটনাটি ঘটেছিলো, যখন রোম সম্রাট ইনজীল শরীফ-এ সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম উনার আলোচনা মুবারক পেয়েছিলো তখন। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যে, উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সুস্পষ্টভাবে দেখা যেতেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি (রোম সম্রাটের) উক্ত প্রস্তাব অস্বীকার করেন, ফিরেয়ে দেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ১/৩৩১)

অনুরূপ বর্ণনা পারস্য সম্রাটের ক্ষেত্রেও রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল ছিলো এবং তিনি আরব-অনারব তথা সারা পৃথিবীতে কত বেমেছাল সম্মান মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন যে, স্বয়ং তৎকালীন কথিত পরাশক্তি রোম ও পারস্যের কথিত সম্রাটরা তাদের কন্যাদেরকে উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) দেয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলো; কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং তিনি সারা পৃথিবীতে, সারা কায়িনাতে সকলের নিকট কতটুকু সম্মানিত ছিলেন, সেটা চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ:

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি যখন রোম ও পারস্যের কথিত সম্রাটের রাজকন্যাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন, তখন এক রাতে এক অপূর্ব স্বপ্ন মুবারক দেখতে থাকেন- “স্বয়ং যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত মদীনা শরীফ উনার বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের সম্ভ্রান্তশীলা, বিস্ময়কর সৌন্দর্য মুবারক এবং পূত-পবিত্র চরিত্র মুবারক মুবারক উনার অধিকারিণী আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘আমর আলাইহাস সালাম উনাকে দেখিয়ে বলতেছেন যে, আপনি উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) করুন।” সুবানাল্লাহ!

এই স্বপ্ন মুবারক দেখার পর আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি শাম দেশে সফরকালে মদীনা শরীফ-এ কিছু দিনের জন্য অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর সেখানে কুরইশ বংশীয় বিশেষ শাখা বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের সবচেয়ে সম্ভ্রান্তশীলা, সীমাহীন ইলম মুবারক উনার মালিকাহ, ত্বাহিরাহ, পূত-পবিত্রা  ব্যক্তিত্বা মুবারক আল জাদ্দুছ ছানিয়াহ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে দেখতে পান। তিনি ছিলেন তৎকালীন সময়ে সমগ্র কুরাইশ, আবর এবং আজম তথা সারা পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে পবিত্রতা, সম্মানিতা এবং সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!

আল জাদ্দুছ ছানী লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি আল জাদ্দাতুছ ছানিয়াহ লিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে দেখার সাথে সাথেই চিনে ফেলেন যে, তিনিই স্বপ্ন মুবারক-এ দেখা সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবাহানাল্লাহ! আর উনাকেই সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করেন। এই সম্পর্কে ‘শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

فأري في الـمنام أن تزوج بنت زيد بن عمرو فتزوج بها

অর্থ: “অতঃপর উনাকে স্বপ্ন মুবারক দেখানো হয় যে, তিনি যেন হযরত সালমা বিনতে আমর বিনতে যায়েদ ইবনে আমর আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ (শাদী মুবারক) করেন। অতঃপর তিনি উনাকে নিসবতে আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ১/৩৩১)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী ছহীহ সমঝ এবং বিশুদ্ধ আক্বীদা ও হুসনে যন নছীব করুন। আমীন।

-আল্লামা মুহম্মদ ছাদিক্ব

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম