সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুছ ছাক্বালাইন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ (খুশি প্রকাশ) করা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরই নির্দেশ ॥ অথচ উলামায়ে ‘সূ’ তথা দুনিয়াদার মাওলানারা তার বিরোধিতা করে

সংখ্যা: ২২১তম সংখ্যা | বিভাগ:

قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا

অর্থ : “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় ফযল বা অনুগ্রহ এবং রহমত হিসেবে উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া দিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৮)

উক্ত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘ফযল’ ও ‘রহমত’ হচ্ছেন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুতরাং তিনি যেদিন পৃথিবীতে আগমন করেছেন সেদিন ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ তথা ফরয। (তাফসীরে দুররে মানছুর শরীফ, খাযিন শরীফ, বাগবী শরীফ)

আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমন ও মহান ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নবী আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের নিকট থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার গ্রহণ করলেন যে, আমি আপনাদের কিতাব ও হিকমত হাদিয়া করবো। অতঃপর যখন আপনাদের নিকট আমার (আখিরী) রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আগমন করে আপনাদের প্রতি নাযিলকৃত বিষয়সমূহকে সত্য প্রতিপাদন করবেন তখন আপনাদের দায়িত্ব হলো, আপনারা (উনাকে পেলে) অবশ্যই উনার প্রতি ঈমান আনবেন এবং উনার খিদমত করবেন। এরপর খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, ‘আপনারা কি আমার এ অঙ্গীকার স্বীকার করে নিলেন?’ উনারা বললেন, ‘আমরা স্বীকার করে নিলাম।’ তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা সাক্ষী থাকুন এবং আমাদের সাথে আমিও (আল্লাহ পাক) সাক্ষী থাকলাম।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে আগমনের বিষয়টি বর্ণনা করেছেন এবং সেই সাথে সমস্ত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের উপর উনার শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনাও দান করেছেন। তা হলো এই যে, কোন নবী আলাইহিস সালাম উনাকে নুবুওওয়াত দেয়া হয়নি, কোন রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে রিসালত দেয়া হয়নি ততক্ষণ পর্যন্ত; যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনয়নের স্বীকৃতি না দিয়েছেন এবং উনার খিদমত করার স্বীকৃতি না দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে লক্ষ্য করে বলেন, সোমবার দিন রোযা রাখবেন। কারণ, এ দিন আমি যমীনে আগমন করেছি এবং বিদায় নিব।” (পবিত্র তিরমিযী শরীফ)

এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আগমনের দিন বা তারিখে উম্মতদেরকে ঈদ (খুশি) পালন করার উৎসাহ দিয়েছেন।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরও ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে, তিনি একদা উনার নিজ গৃহে সমবেত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা মুবারক তথা তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম তথা দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তথায় উপস্থিত হলেন এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব।”

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রহমতের দরজা আপনাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা আপনাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ আপনাদের মতো এরূপ কাজ করবে, তাঁরাও আপনাদের মতো নাযাত (ফযীলত) লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ!

“মা ছাবাতা বিস সুন্নাহ” কিতাবে বর্ণিত আছে, “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার দিনকে সম্মান করবে এবং সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী পালন করবে, এর বিনিময়ে সে জান্নাত লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ!

অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো যে, হাল যামানার উলামায়ে ‘সূ’ তথা দুনিয়াদার মাওলানারা বলে, “… মহান আল্লাহ পাক উনার বড় নিয়ামত হলো নববর্ষ। নববর্ষ পালন করতে গিয়ে দান-খয়রাত করতে হবে, শুকরিয়া আদায় করতে হবে, দোয়া করতে হবে।” (নাউজুবিল্লাহ) (সূত্র : দৈনিক মানবজমিন)

আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ সম্পর্কে উলামায়ে ‘সূ’ তথা দুনিয়াদার মাওলানারা বলে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা বিদয়াত। এটা খ্রিস্টানদের কালচার। খ্রিস্টানরা জন্মদিন পালন করে থাকে। এজন্য এ ধরনের অনুষ্ঠানে দান-খয়রাত করা যাবে না ইত্যাদি।” নাউযুবিল্লাহ!

আশ্বর্যের বিষয় উলামায়ে ‘সূ’ তথা দুনিয়াদার মাওলানারা জন্মদিন পালন খ্রিস্টানদের কালচার বলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ পালন করাকে নাজায়িয ও বিদয়াত ঘোষণা করে। অথচ নববর্ষকে বড় নিয়ামত বলে। তাই তাদের অনুসারীরা ‘পহেলা জানুয়ারি’ বা ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’-এর মতো কাট্টা খ্রিস্টানী কালচারে গা ভাসিয়ে দেয়।

মূলত আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ সম্পর্কে উলামায়ে ‘সূ’ তথা দুনিয়াদার মাওলানাদের উপরোক্ত বক্তব্য জিহালতী, গোমরাহীমূলক ও পরিপূর্ণভাবে কুফরী সম্বলিত হয়েছে।

অথচ মুসলমানগণ যে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করে থাকে উনার সাথে খৃষ্টানদের জন্মদিন পালনে অনেক পার্থক্য রয়েছে। যেমন- খ্রিস্টানরা জন্মদিনে কেক কাটে, মোমবাতি জ্বালায়, নাচ-গান করে, হৈ-হুল্লোর করে। কিন্তু মুসলমানগণ আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ দিবসে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা, পবিত্র জীবনী মুবারক সম্পর্কে আলোচনা করেন, পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করেন।

উল্লেখ্য, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ পালন করা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশ। কিন্তু তারপরেও উলামায়ে ‘সূ’ তথা দুনিয়দার মাওলানারা তার বিরোধিতা করে।

স্মর্তব্য যে, বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবে আ’যম, গাউছুল আ’যম, হাবীবে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ’ পত্রিকায় এ যাবৎ বিস্তর দলীল-আদিল্লাহ দিয়ে প্রমাণ করেছেন, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ পালন করা ফরয।

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার উছীলায় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা সঠিকভাবে বুঝার তাওফিক দান করুন। (আমীন)

-মুছাম্মত সানজিদা ইসলাম।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম