সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার রচিত ও পঠিত কতিপয় সুমহান না’ত শরীফ

সংখ্যা: ২৪৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার রচিত ও পঠিত কতিপয় সুমহান না’ত শরীফ


নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালামতিনি প্রায় ১২টিরও অধিক সম্মানিতনা’ত শরীফ পাঠ করেন। যেগুলো‘নু‘ঊতুয যাহরা আলাইহাস সালাম’হিসেবে খ্যাত। নিম্নে সেই সকল সম্মানিত না’ত শরীফ থেকে কয়েকখানা সম্মানিত না’ত শরীফ ও উনাদের অনুবাদ তুলে ধরা হলো।

প্রথম না’ত শরীফ ও উনার অনুবাদ

عَنْ  حَضْرَتْ عَلِـىّ كَرَّمَ الله وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ لَمَّا رُمِسَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَاءَتْ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَوَقَفَتْ عَلٰى قَبْرِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاَخَذَتْ قَبْضَةً مّنْ تُرَابِ الْقَبْرِ فَوَضَعَتْهٗ عَلٰى عَيْنَيْهَا وَبَكَتْ وَاَنْشَاَتْ تَقُوْلُ:

مَاذَا عَلٰى مَنْ شَمَّ تُرْبَةَ اَحْمَدَ

اَنْ لَّايَشُمَّ مَدَى الزَّمَانِ غَوَالِيَا

صُبَّتْ عَلَىَّ مَصَائِبُ لَوْ اَنَّهَا

صُبَّتْ عَلَى الْاَيَّامِ صِرْنَ لَيَالِيَا

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হলো, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি এসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার নিকটে অবস্থান মুবারক করলেন। তারপর তিনি সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মাটি মুবারক থেকে এক মুষ্টি মাটি মুবারক নিয়ে উনার দুই চোখ মুবারক-এমাখলেন এবং কান্না মুবারক করতে করতে এই বলে সম্মানিত না’ত শরীফ রচনা মুবারক করলেন –

مَاذَا عَلٰى مَنْ شَمَّ تُرْبَةَ اَحْمَدَ

اَنْ لَّايَشُمَّ مَدَى الزَّمَانِ غَوَالِيَا

صُبَّتْ عَلَىَّ مَصَائِبُ لَوْ اَنَّهَا

صُبَّتْ عَلَى الْاَيَّامِ صِرْنَ لَيَالِيَا

অর্থ: “যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মাটি মুবারক বা ধূলি-বালি মুবারক উনাদের ঘ্রাণ মুবারক নেয়, তার জন্য আর কি চাই? তার জন্য সারা জীবন বা অনন্তকাল যাবৎ আর কোন খোশবুর ঘ্রাণ নেয়ার প্রয়োজন নেই। সুবহানাল্লাহ!

(নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে) আমার উপর যেসব মুসিবত আপতিত হয়েছে, তা যদি দিনসমূহের উপর আপতিত হতো, তাহলে দিনগুলো রাতে পরিণত হয়ে যেতো।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১২/২৮৯, তুহফাহ, শরহে কাফিয়াহ, তাফসীরে রূহুল মা‘আনী ১০/১৪৬, ইত্তিহাফুয যায়ির ১/১৬৭, আদ দুররাতুছ ছামীনাহ ফী আখবারিল মাদীনাহ ১/১৩৯, জামউল ওসায়িল ফী শরহিশ শামায়িল, মিরক্বাত শরীফ ৩য় খ-, ইরশাদুস সারী ২/৩৭৮, ফাতাওয়ায়ে ফিক্বহিয়্যাহ ২/১৮, তুহফাতুল হাবীব ৭/৪৭৮, আশ শরহুল কাবীর লিইবনে কুদামাহ ২/৪৩০, আল মুগনী ফী ফিক্বহ ৫/৪৫, আল মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ৩/৫৮২, শারহুয যারক্বনী আলাল মাওয়াহিব ১২/১৬৮, ‘ঊয়ূনুল আছার ২/৪০৯, নুযহাতুল মাজালিস ১/৩২৭, ওয়াফাউল ওয়াফা ৪/২১৮ ইত্যাদি)

শব্দার্থ: مَاذَا কি? عَلٰى উপর, مَنْ যে, যারা, شَمَّ ঘ্রাণ নিয়েছে, تُرْبَةَ মাটি মুবারক,  ধূলি-বালি মুবারক, ধুলা, ধুলো, اَحْمَدَ অধিকতর প্রশংসাকারী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ইসম (নাম) মুবারক, مَدَى দুরত্ব, আওতা, প্রসার, ব্যাপ্তি, পরিধি, সময়কাল, মেয়াদ, শেষ সীমা, اَلزَّمَانِ সময়, কাল, যুগ, যামানা, صُبَّتْ আপতিত হয়েছে, ঢলে পড়েছে, عَلَيَّ আমার উপর, مَصَائِبُ মুসিবতসমূহ, বিপদসমূহ, لَوْ যদি, اَنَّهَا নিশ্চয়ই তা, اَلْاَيَّامِ দিনসমূহ, صِرْنَ ফিরে এসেছে, পরিণত হয়েছে, হতো,  لَيَالِيَا রাতসমূহ।

দ্বিতীয় না’ত শরীফ ও উনার অনুবাদ

وَلَمّا تُوُفّـىَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَدُفِنَ وَرَجَعَ الْمُهَاجِرُوْنَ وَالْاَنْصَارُ اِلـٰى رِحَالِـهِمْ وَرَجَعَتْ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ اِلـٰى بَيْتِهَا اجْتَمَعَ اِلَيْهَا نِسَاؤُهَا فَقَالَتْ

اِغْبَرَّ اٰفَاقُ السَّمَاءِ وَكُوّرَتْ …

 شَمْسُ النَّهَارِ وَاَظْلَمَ الْعَصْرَان

فَالْاَرْضُ مِنْ بَعْدِ النَّبِىّ كَئِيْبَةٌ …

اَسَفًا عَلَيْهِ كَثِيْرَةَ الرَّجَفَان

فَلْيَبْكِهٖ شَرْقُ الْبِلَادِ وَغَرْبُهَا … ..

 وَلْتَبْكِهٖ مُضَرُ وَكُلُّ يَـمَانٖ

وَلْيَبْكِهِ الطَّوْدُ الْمُعَظَّمُ جُوْدُهٗ …

 وَالْبَيْتُ ذُو الْاَسْتَارِ وَالْاَرْكَان

يَا خَاتَـمَ الرُّسُلِ الْمُبَارَكُ قَبْرُهٗ …

صَلّٰى عَلَيْكَ مُنَزّلُ الْقُرْاٰن

 نَفْسِىْ فِدَاؤُكَ مَا لِرَأْسِكَ مَائِلًا …

 مَا وَسَّدُوْكَ وِسَادَةُ الْوَسْنَان

অর্থ: “আর যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনাকে সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হলো, তখন হযরত মুহাজির ও আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উনাদের বাড়ি ফিরে আসলেন। আর সায়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে প্রত্যাবর্তন করলেন। উনার চারপাশে হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জমা হলেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন (না’ত শরীফ পাঠ করলেন)

اِغْبَرَّ اٰفَاقُ السَّمَاءِ وَكُوّرَتْ …

شَمْسُ النَّهَارِ وَاَظْلَمَ الْعَصْرَان

فَالْاَرْضُ مِنْ بَعْدِ النَّبِىّ كَـئِيْبَةٌ …

اَسَفًا عَلَيْهِ كَثِيْرَةَ الرَّجَفَان

فَلْيَبْكِهٖ شَرْقُ الْبِلَادِ وَغَرْبُهَا … ..

وَلْتَبْكِهٖ مُضَرُ وَكُلُّ يَـمَان

وَلْيَبْكِهِ الطَّوْدُ الْمُعَظَّمُ جُوْدُهٗ …

وَالْبَيْتُ ذُو الْاَسْتَارِ وَالْاَرْكَانٖ

يَا خَاتَـمَ الرُّسُلِ الْمُبَارَكُ قَبْرُهٗ …

صَلى عَلَيْكَ مُنَزّلُ الْقُرْاٰن

نَفْسِىْ فِدَاؤُكَ مَا لِرَأْسِكَ مَائِلًا …

مَا وَسَّدُوْكَ وِسَادَةُ الْوَسْنَانٖ

অর্থ: “আকাশের দিগন্তসমূহ ধূলায় ধূসরিত হয়েছে, দিবসের সূর্য হয়েছে আলোক শূন্য, আর যামানা হয়েছে অন্ধাকারাচ্ছন্ন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত শুধু দুঃখ-মলিনই হয়নি; বরং দুঃখ ভারে প্রকম্পিতও হয়েছে। অতঃপর যেন ক্রন্দন করে উনার জন্য প্রাচ্য-পাশ্চাত্য, আরো যেন ক্রন্দন করে মুদ্বার ও প্রত্যেক ইয়ামেনবাসী। যেন ক্রন্দন করে উনার জন্য মহান বদান্যতার অধিকারী বিরাট পাহাড় এবং রুকন ও গিলাফ বিশিষ্ট ঘর তথা সম্মানিত কা’বা শরীফ। ইয়া খ্বাতামার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যাঁর সম্মানিত রওযা শরীফ বরকতময়, সম্মানিত কুরআন শরীফ অবতীর্ণকারী মহান আল্লাহ পাক আপনার প্রতি ছলাত পাঠ করুন। সুবহানাল্লাহ! আমার জীবন আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনার সম্মানিত শির বা মাথা মুবারক কাত হয়নি, তন্দ্রাচ্ছন্নের বালিশ আপনাকে বালিশে শয়ন করায়নি। অর্থাৎ আপনি সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মাঝে তন্দ্রাচ্ছন্ন নন; বরং আপনি সদা-সর্বদা সবকিছু অবলোকন করছেন এবং শুনছেন তথা আপনি সর্বাস্থায় সর্বত্র হাযির এবং নাযির।” সুবহানাল্লাহ! (আর রওদ্বুল উনফ ৪/৪৫৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১২/২৮৯, ইত্তিহাফুয যায়ির ১/১৭১,ইরশাদুস সারী ৬/৪৭২, সালওয়াতুল কায়ীব বিওয়াফাতিল হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/২৭, ‘উইয়ূনুল আছার ২/৪৩৪, আল মুক্বতাফা মিন সীরাতিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/২৪৩, আল ইকতিফা ২/৬১, বাহজাতুল মাহাফিল ২/১২০, নিহায়াতুর আরাব ১৮/২৮৫, আল হামাসাহ ১/৭৮, যাহরুর আদাব ১/৪২ ইত্যাদি)

শব্দার্থ: اِغْبَرّ ধুলায় ঢেকে গেছে, ধূসরবর্ণ হয়েছে, ধূলিময় হয়েছে, اٰفَاقُ দিগন্তসমূহ, সুদূর প্রান্তসমূহ, দূরবর্তী অঞ্চলসমূহ,اَلسَّمَاءِ  আসমান, আকাশ, গগন, كُوّرَتْ অন্ধকার হয়েছে, অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েছে, কিরণবিহীন হয়েছে, আলোক শূন্য হয়েছে, شَمْس  সূর্য, اَلنَّهَارِ দিবস, দিবা, দিন, اَظْلَمَ অন্ধকার হয়েছে, তমসাচ্ছন্ন হয়েছে, তিমিরাচ্ছন্ন হয়েছে, اَلْعَصْرَانٖ সময়, যুগ, কাল, শতাব্দী,  الْاَرْضُ পৃথিবী, কায়িনাত, بَعْدِ পরে, পরবর্তীতে, النَّبِىِّ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,  كَئِيْبَةٌবিষণ্ন, দুঃখপূর্ণ, অবসাদগ্রস্ত,اَسَفًا  দুঃখ করা, দুঃখিত হওয়া, অনুতপ্ত হওয়া, মনক্ষুণ্ন হওয়া, عَلٰى উপর, ه উনার, كَثِيْرَةَ অনেক, বেশি, অধিক, বহু, প্রচুর, পর্যাপ্ত, الرّجَفَانٖ কেঁপে উঠা, কম্পিত হওয়া, فَ অতঃপর, لْيَبْكِه যেন উনার জন্য কাঁদে, شَرْقُ পূর্ব, প্রাচ্য, اَلْبِلَاد ভূখ-সমূহ, ভূমিসমূহ, শহরসমূহ, غَرْبُ পশ্চিম, পাশ্চাত্য, هَا তার, وَ আর, আরো, لْتَبْكِهٖ যেন কাঁদে উনার জন্য, مُضَرُ মুদ্বার, كُلُّ প্রত্যেক, يَـمَانِ ইয়ামেনবাসী, الطّوْدُ উচ্চ পর্বত, বিরাট পাহাড়, الْمُعَظَّمُ সম্মানিত, শ্রদ্ধেয়, মর্যাদাবান, মহান, جُوْدُ দান, দানশীলতা, বদান্যতা, উদারতা, الْبَيْتُ ঘর, ذُو অধিকারী, বিশিষ্ট,الْاَسْتَارِ  পর্দাসমূহ, আবরণসমূহ, الْاَرْكَان রুকনসমূহ, স্তম্ভসমূহ, খুঁটিসমূহ, يَا হে, خَاتَـمَ শেষ, الرُّسُلِ রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা, الْمُبَارَكُ বরকতময়, বরকতপূর্ণ, কল্যাণময়, قَبْرُ সম্মানিত রওযা শরীফ, هٗ উনার, صَلّى তিনি ছলাত পাঠ করুন, عَلٰى উপর, كَআপনার, مُنَزِّلُ নাযিলকারী, অবতীর্ণকারী, الْقُرْاٰنٖ সম্মানিত কুরআন শরীফ, نَفْسِ আত্মা, প্রাণ, জীবন, ىْ আমার, فِدَاؤُكَ আপনার জন্য উৎসর্গ হোক, আপনার জন্য কুরবান হোক, مَا নেই, নাই, لِ জন্য, رَأْسِ শির মুবারক, মাথা মুবারক, كَ আপনার, مَائِلًا  কাত, مَا وَسَّدُوْكَ বালিশে শোয়ায়নি, وِسَادَةُ বালিশ,  الْوَسْنَانٖ তন্দ্রাচ্ছন্ন, নিদ্রাচ্ছন্ন, তন্দ্রালু, নিদ্রালু।

তৃতীয় না’ত শরীফ ও উনার অনুবাদ

বিশ্বখ্যাত কিতাব সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ উনার ১২তম খন্ডের ২২৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে –

وَقَالَتْ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ:

اِذَا اشْتَدَّ شَوْقِىْ زُرْتُ قَبْرَكَ بَاكِيًا ..

اَنُوْحُ وَاَشْكُوْ لَا اَرَاكَ مُجَاوِبِـىْ

فَيَا سَاكِنَ الصَّحْرَاءِ عَلَّمْتَنِىْ الْبُكَا ..

وَذِكْرُكَ اَنْسَانِـىْ جَمِيْعَ الْـمَصَائِب

فَاِنْ كُنْتَ عَنّـِىْ فِـى التُّرَابِ مَغِيْبًا ..

فَمَا كُنْتَ مِنْ قَلْبِ الْـحَزِنِ بِغَائِب

অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন –

اِذَا اشْتَدَّ شَوْقِىْ زُرْتُ قَبْرَكَ بَاكِيًا ..

اَنُوْحُ وَاَشْكُوْ لَا اَرَاكَ مُجَاوِبِـىْ

فَيَا سَاكِنَ الصَّحْرَاءِ عَلَّمْتَنِىْ الْبُكَا ..

وَذِكْرُكَ اَنْسَانِـىْ جَمِيْعَ الْـمَصَائِب

فَاِنْ كُنْتَ عَنّـِىْ فِـى التُّرَابِ مَغِيْبًا ..

فَمَا كُنْتَ مِنْ قَلْبِ الْـحَزِنِ بِغَائِب

অর্থ: “যখন আমার আগ্রহ, মুহব্বত মুবারক প্রবল আকারে প্রকাশ পায়, তখন আমি ক্রন্দনরত অবস্থায় আপনার সম্মানিত রওযা শরীফ যিয়ারত করি। আমি কান্না মুবারক করি এবং আমার কষ্ট মুবারক ব্যক্তি করি, কিন্তু আপনাকে আমার সাড়াদানকারীরূপে দেখতে পাই না। অতঃপর হে নির্জন প্রান্তরের প্রবাসী তথা সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মাঝে অবস্থানকারী, আপনিই আমাকে কান্না মুবারক শিক্ষা দিয়েছেন। অর্থাৎ আপনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণেই আমি আজ কান্না মুবারক করছি। আর আপনার সম্মানিত যিকর তথা স্মরণ মুবারক আমাকে সমস্ত বালা-মুসিবত, বিপদ-আপদ ভুলিয়ে দিয়েছে।

অতঃপর যদিও আপনি আমার থেকে সম্মানিত মাটি মুবারক তথা সম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে অদৃশ্য। কিন্তু আপনি আমার সম্মানিত ব্যথিত ও চিন্তিত হৃদয়ে সর্বদা দৃশ্যমান, উপস্থিত, হাযির।” সুবহানাল্লাহ!

শাব্দিক অর্থ: اِذَا যখন, اِشْتَدَّ তীব্র হয়েছে বা হয়, কঠিন হয়েছে বা হয়, বেড়ে যায়, প্রবল হয়, شَوْقِىْ আমার আগ্রহ, ইচ্ছা, আকাঙ্খা, زُرْتُ আমি যিয়ারত করেছি বা করি, قَبْرَ সম্মানিত রওযা শরীফ, كَ আপনার, بَاكِيًا ক্রন্দনরত অবস্থায়, اَنُوْحُ আমি কান্না মুবারক করি, আমি আর্তনাদ মুবারক করি,  اَشْكُوْ আমি অভিযোগ করি, আমি কষ্ট ব্যক্তি করি, لَا اَرَاكَ আমি আপনাকে দেখি না, مُجَاوِبِ সাড়াদানকারী, জাওয়াবদানকারী, ىْ আমার, فَ অতঃপর, يَا হে,  سَاكِنَবাসিন্দা, নিবাসী, বসবাসকারী, অধিবাসী, الصَّحْرَاءِ নির্জন প্রান্তর, জনমানবহীন, عَلَّمْتَ আপনি শিক্ষা দিয়েছেন, نِىْ আমাকে, الْبُكَا কান্না মুবারক, ক্রন্দন মুবারক, وَ আর, ذِكْرُ সম্মানিত যিকর মুবারক, আলোচনা মুবারক, স্মরণ মুবারক, كَ আপনার, اَنْسَانِـىْ আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে, جَمِيْعَ সমস্ত, সকল, الْـمَصَائِب বালা-মুসিবতসমূহ, বিপদ-আপদসমূহ, اِنْযদি, كُنْتَ আপনি হন, عَنّـِىْ থেকে আমার, فِـى মধ্যে, التُّرَابِ সম্মানিত মাটি মুবারক, সম্মানিত রওযা শরীফ, مَغِيْبًا অদৃশ্য, فَ অতঃপর, مَا كُنْتَ আপনি নন, مِنْ হতে,  থেকে, قَلْبِ সম্মানিত অন্তর মুবারক, সম্মানিত হৃদয় মুবারক, الْـحَزِنِ দুঃখিত, ব্যথিত, বিষণ্ন, শোকাকুল, শোকাতুর غَائِب অদৃশ্য, অনুপস্থিত।


-আল্লামা মুহম্মদ আবু বকর ছিদ্দীক্ব।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম