সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দায়িমীভাবে ২৪ ঘন্টাই সম্মানিত ছলাত পাঠ করা ফরয

সংখ্যা: ২৮৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

যিনি খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّ اللهَ وَمَلٰٓئِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِـىِّ یٰۤـاَیُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُـوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِـيْمًا

অর্থ: “নিশ্চয়ই যিনি খ্বলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার সকল সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দায়িমীভাবে সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে যাচ্ছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! হে ঈমানদাররা! তোমরাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করো, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করো এবং অত্যন্ত আদবের সাথে উনার প্রতি সম্মানিত সালাম মুবারক পেশ করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন যে-

اِنَّ اللهَ وَمَلٰٓئِكَـتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِـىِّ

“নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার সকল সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দায়িমীভাবে সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে যাচ্ছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করে যাচ্ছেন।” সুবহানাল্লাহ!

তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কখন থেকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ শুরু করেছেন এবং কখন পর্যন্ত সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করবেন? মূলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সৃষ্টি মুবারক করেছেন এবং তখন থেকেই উনার প্রতি দায়িমীভাবে সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে যাচ্ছেন, এখনও সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যেহেতু ক্বদীম তাই তিনি অনন্তকাল যাবৎ সম্মানিত ছালাত মুবারক পাঠ করতেই থাকবেন অর্থাৎ পাঠ করে যেতেই থাকবেন। তিনি কখনও সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করা থেকে বিরত থাকবেন না। সুবহানাল্লাহ! আর এ কথা কখনও কল্পনা করা যায় না যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন এক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজূদ মুবারক উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করবেন, অথচ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজূদ মুবারক থাকবেন না, উনার উপস্থিতি মুবারক থাকবেন না। না‘ঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন ক্বদীম, তিনি কখনও ফানা বা লয় হবেন না, ঠিক তেমনিভাবে উনার সাথে সংযুক্ত হওয়ার কারণে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও উনার অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছেন, তিনিও কখনও ফানা বা লয় হবেন না। সুবহানাল্লাহ!

যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে, সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি থাকবেন। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

كُلُّ مَنْ عَلَـيْـهَا فَانٍ وَّيَــبْـقٰى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْـجَلٰلِ وَالْاِكْرَامِ

 অর্থ: “সারা কায়িনাতের সমস্ত কিছু ফানা বা ধ্বংস হয়ে যাবে। একমাত্র আপনার মহামহিম ও মহানুভব রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজূদ মুবারক বাক্বা বা স্থায়ী থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আর রহমান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬-২৭)

আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার অধীন। তাই যখন সমস্ত কায়িনাতের সমস্ত কিছু ফানা বা ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকবেন, যেমনিভাবে সৃষ্টির শুরুতে যখন কিছুই ছিলো না, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে যাচ্ছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করতেই থাকবেন, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!

আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যেহেতু নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন,

یٰۤـاَیُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُـوْا صَلُّوْا عَلَـيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِـيْمًا

অর্থ: “হে ঈমানদাররা! তোমরাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করো, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করো এবং অত্যন্ত আদবের সাথে উনার প্রতি সম্মানিত সালাম মুবারক পেশ করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)

তাই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশক্রমে ও উনার অনুসরণে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দায়িমীভাবে ২৪ ঘণ্টাই সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করা, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

صِبْـغَةَ اللهِ وَمَنْ اَحْسَنُ مِنَ اللهِ صِبْـغَةً

অর্থ: “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রঙ্গে রঞ্জিত হও। মহান আল্লাহ পাক উনার চেয়ে উত্তম রঙ্গে রঞ্জিত আর কে আছে? সুবহানাল্লাহ!” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৮)

মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছে কুদছী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

تَـخَلَّـقُوْا بِاَخْلَاقِ اللهِ

অর্থ: “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত চরিত্র মুবারক-এ চরিত্রবান হও।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে রূহুল মা‘য়ানী ১৫/৩৯৫)

এই বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে যায়, হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে। সুবহানাল্লাহ! যেমন-

عَنْ حَضْرَتْ اُبَـىِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قُـلْتُ يَـا رَسُوْلَ الله صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّـىْ اُكْـثِرُ الصَّلـٰـوةَ عَلَـيْكَ فَكَمْ اَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلـٰـوتِـىْ فَـقَالَ‏ مَا شِئْتَ‏ قُـلْتُ اَلرُّبُعَ‏ قَالَ مَا شِئْتَ فَاِنْ زِدْتَّ فَـهُوَ خَيْـرٌ لَّكَ‏‏ قُـلْتُ اَلنّـِصْفَ‏ قَالَ‏ مَا شِئْتَ فَاِنْ زِدْتَّ فَـهُوَ خَيْـرٌ لَّكَ قُـلْتُ فَالـثُّــلُـثَــيْـنِ‏ قَالَ مَا شِئْتَ فَاِنْ زِدْتَّ فَـهُوَ خَيْـرٌ لَّكَ‏ قُـلْتُ اَجْعَلُ لَكَ صَلـٰوتِـىْ كُلَّهَا‏ قَالَ اِذًا تُكْفٰى هَـمُّكَ وَيُكَفَّرُ لَكَ ذَنْــبُكَ‏‏

অর্থ: “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম- ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি ছলাত মুবারক পাঠ করতে চাই, আপনার বেশি বেশি ছানা-ছিফত মুবারক করতে চাই। কত সময় ধরে আপনার প্রতি ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবো? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতটুকু সম্ভব আপনি করুন। আমি বললাম, তাহলে চার ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় ৬ ঘণ্টা আপনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবো। এটা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতটুকু সম্ভব আপনি করুন, তবে এর চাইতে আরো বৃদ্ধি করতে পারলে আরো উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি অর্ধেক সময় অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় ১২ ঘণ্টা আপনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবো? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতটুকু সম্ভব আপনি করুন, তবে এর চাইতে আরো বৃদ্ধি করতে পারলে আরো উত্তম হবে। সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, তাহলে আমি তিন ভাগের দুই ভাগ সময় অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় ১৬ ঘণ্টা আপনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবো? এটা শুনে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার যতটুকু সম্ভব আপনি করুন, তবে এর চাইতে আরো বৃদ্ধি করতে পারলে আরো উত্তম হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি আমার জিন্দেগীর সমস্ত সময় অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টাই আপনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করবো, আপনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবো। সুবহানাল্লাহ! এটা শুনে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খুশি হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি খুশি হয়ে ইরশাদ মুবারক করলেন, খুব উত্তম! আপনি যদি এটা করতে পারেন, তাহলে আপনার জিন্দেগীর যত নেক মাক্বছূদ রয়েছে, সবগুলো পুরা করে দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ! এবং আপনার জিন্দেগীর যত গুনাহ-খাতা রয়েছে, সব ক্ষমা করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

কাজেই, যারা বলে থাকে যে, জীবনে মাত্র একবার দুরূদ শরীফ পাঠ করা ফরয, তাদের ফতওয়া সম্পূর্ণরূপেই ভুল এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার খিলাফ হওয়ার কারণে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য তো নয়ই বরং তা সম্পূর্ণরূপেই পরিত্যাজ্য। কেননা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের কোথায়ও নেই যে, জীবনে একবার মাত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করা ফরয।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِــىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَغِمَ اَنْفُ رَجُلٍ ذُكِـرْتُ عِنْدَهٗ فَـلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যার সম্মুখে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হলো, অথচ সে আমার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক (দুরূদ শরীফ) পাঠ করলো না।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَـيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ اَلْبَخِيْلُ الَّذِىْ مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهٗ فَـلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ

অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই ব্যক্তি সবচেয়ে বড় বখীল (কৃপণ), যার সম্মুখে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হয়, অথচ সে আমার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক (দুরূদ  শরীফ) পাঠ করে না।” না‘ঊযুবিল্লাহ!  (তিরমিযী শরীফ)

আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বখীল বা কৃপণদের ব্যাপারে ইরশাদ মুবারক করেন,

اَلْبَخِيْلُ عَدُوُّ اللهِ وَلَوْ كَانَ عَابِدًا

অর্থ: “বখীল মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু, যদিও সে আবিদ তথা ইবাদতগুজার হোক না কেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,

 اَلْبَخِيْلُ لَا يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ وَلَوْ كَانَ عَابِدًا

অর্থ: “বখীল ব্যক্তি সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যদিও সে আবিদ তথা ইবাদতগুজার হোক না কেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ  رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُحْضُرُوا الْمِنْـبَـرَ فَحَضَـرْنَا فَـلَمَّا اِرْتَـقَى الدَّرَجَةَ قَالَ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا اِرْتَـقَى الدَّرَجَةَ الثَّانِـيَةَ قَالَ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا اِرْتَـقَى الدَّرَجَةَ الثَّالِثَةَ قَالَ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا نَـزَلَ قُـلْـنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـقَدْ سَـمِعْنَا مِنْكَ الْيَـوْمَ شَـيْـــئًا مَا كُـنَّا نَسْمَعُهٗ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ حَضْرَتْ جِبْـرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَرَضَ لِــىْ فَـقَالَ بَـعُدَ مَنْ اَدْرَكَ رَمَضَانَ فَـلَمْ يُـغْفَرْ لَهٗ قُـلْتُ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا رَقِـيْتُ الثَّانِـيَةَ قَالَ بَـعُدَ مَنْ ذُكِرْتَ عِنْدَهٗ فَـلَمْ يُصَلِّ عَلَـيْكَ قُـلْتُ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا رَقِـيْتُ الثَّالِثَةَ قَالَ بَـعُدَ مَنْ اَدْرَكَ اَبَـوَيْهِ الْكِـبَـرَ اَوْ اَحَدَهُـمَا فَـلَمْ يُدْخِلَاهُ الْـجَنَّةَ قُـلْتُ اٰمِيْـنَ

অর্থ: “হযরত কা’ব ইবনে উজরাতা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন আমাদেরকে সম্মানিত মিম্বর শরীফ উনার নিকটবর্তী হতে বললেন। আমরা সকলে সম্মানিত মিম্বর শরীফ উনার নিকটবর্তী হলাম। অতঃপর তিনি সম্মানিত মিম্বর শরীফ উনার প্রথম ধাপে আরোহণ করেই বললেন, আমীন! দ্বিতীয় ধাপে আরোহণ করেও বললেন, আমীন! তৃতীয় ধাপে আরোহণ করেও বললেন, আমীন! এরপর খুতবা মুবারক শেষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত মিম্বর শরীফ থেকে অবতরণ করলেন, তখন আমরা বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আজকে আমরা আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যবান মুবারক) থেকে এমন কিছু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনলাম, যা আমরা আর কখনো শুনিনি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, (আমি যখন সম্মানিত মিম্বর শরীফ উনার প্রথম সিঁড়িতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পা মুবারক রাখলাম) তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন এবং বললেন, সে ব্যক্তি ধ্বংস বা হালাক হোক, যে ব্যক্তি সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাস পেলো, অথচ তারপরও নিজের গুনাহখতাগুলো ক্ষমা করাতে পারলো না। আমি বললাম আমীন! অর্থাৎ সে ধ্বংস হোক। অতঃপর দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পা মুবারক) রাখলাম, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সে ব্যক্তি ধ্বংস বা হালাক হোক, যে ব্যক্তির সম্মুখে আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হলো অথচ সে আপনার প্রতি ‘সম্মানিত ছলাত মুবারক’ পাঠ করলো না। আমি বললাম, আমীন! অর্থাৎ সেও ধ্বংস হোক। অতঃপর যখন তৃতীয় সিঁড়িতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক রাখলাম, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সে ব্যক্তি ধ্বংস বা হালাক হোক, যে ব্যক্তি পিতা-মাতা দু’জনকে অথবা দু’জনের একজনকে বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা অবস্থায় পেয়েও তাদের খিদমত করে জান্নাত হাছিল করতে পারলো না, সে ব্যক্তি হালাক বা ধ্বংস। আমি বলালাম, আমীন! অর্থাৎ সে ধ্বংস হোক। (মুস্তাদরাকে হাকিম ৪/১৭০, শু‘আবুল ঈমান ৩/১৩৪, ফাদ্বলুছ ছলাতি ‘আলান নাবিয়্যী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/৩৪, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)

সুতরাং উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ থেকে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, যখনই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হবে এবং শ্রবণ করা হবে, তখনই উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করা ফরয। কেউ যদি তখন সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ না করে, তাহলে সে বখীল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রুতে পরিগণিত হবে, সে হালাক বা ধ্বংস হবে এবং সে জাহান্নামীও হবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। বরং যারা সন্দেহ করবে অথবা চু-চেরা করবে তারাও ধ্বংস হয়ে জাহান্নামী হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!

তাহলে এই ফতওয়া কিভাবে শুদ্ধ হতে পারে যে, জীবনে মাত্র একবার দুরূদ শরীফ পাঠ করা ফরয? না‘ঊযুবিল্লাহ! কস্মিনকালেও শুদ্ধ নয়; বরং সম্পূর্ণরূপেই ভুল এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার খিলাফ হওয়ার কারণে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য তো নয়ই; বরং তা সম্পূর্ণরূপেই পরিত্যাজ্য। না‘ঊযুবিল্লাহ!

আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যেহেতু সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে ২৪ ঘণ্টা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে যাচ্ছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করতেই থাকবেন অর্থাৎ পাঠ করে যেতেই থাকবেন, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করতেই থাকবেন, তাই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরয হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশক্রমে ও উনার অনুসরণে দায়িমীভাবে ২৪ ঘণ্টা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করা, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ইবনে মারইয়াম।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম