সারা মাস বা বৎসর তথা ক্বিয়ামতব্যাপী দায়িমীভাবে বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে মাহফিল করার অপরিসীম ফাযায়িল ফযীলতসমূহ

সংখ্যা: ২১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

বিশ্ব বিখ্যাত সীরাতগ্রন্থ মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া কিতাবে উল্লেখ আছে-

ولازال اهل الاسلام يحتفلون بشهر مولده عليه الصلوة والسلام ويعملون الولائم ويتصدقون فى لياليه بانواع الصدقات ويظهرون السرور ويزيدون فى المبرات ويعتنون بقراءة مولده الكريم ويظهر عليهم من بركاته كل فضل عميم ومما جرب من خواصه انه امان فى ذلك العام وبشرى عاجلة بنيل البغية والمرام فرحم الله امرا اتخذ ليالى شهر مولده المباركة اعيادا (مواهب اللدنية والانوار المحمدية صفحة (۱۹)

অর্থ: æসমগ্র মুসলিম উম্মাহ সুদূর অতীতকাল থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ-এ খুশি প্রকাশ উপলক্ষে মাসব্যাপী সর্বদা মীলাদ মাহফিল উদযাপন করে আসছে। যিয়াফত প্রস্তুত করে লোকদের খাওয়াচ্ছে এবং মাসব্যাপী রাত্রে বিভিন্ন রকমের ছদকা-খয়রাত দিচ্ছে এবং শরীয়তসম্মত আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করে আসছে। উত্তম কাজ প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি করে চলছে। উনারা বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে মাহফিল করে আসছে- যার বরকতে বরাবরই তাদের উপর আল্লাহ পাক উনার সীমাহীন অনুগ্রহ প্রকাশ পাচ্ছে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে মীলাদ শরীফ তথা বিলাদত শরীফ-এর মাহফিলের বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে এটা পরীক্ষিত হয়েছে যে, ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাহফিল তথা অনুষ্ঠানের বরকতে ওই বছর আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে নিরাপত্তা কায়িম থাকে এবং তড়িৎ গতিতে মনোবাঞ্ছনা পূরণের শুভ সংবাদ বয়ে আনে। অতএব, যিনি বা যারা ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাসের প্রতিটি রাতকে শ্রেষ্ঠতম ঈদের রাত্রে পরিণত করে রেখেছেন উনারা বা উনাদের উপর আল্লাহ পাক উনার খাছ রহমত বর্ষিত হোক।” (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়া ওয়াল আনওয়ারুল মুহম্মাদিয়া/১৯ পৃষ্ঠা)

বিশ্ববিখ্যাত সীরাত গ্রন্থ ‘খুতবাতু ইবনি নুবাতা’-এ বর্ণিত রয়েছে,

ولد من لولاه ما خلق الوجود ولا يصور والد ولا مولود ولد يوم الاثنين لاثنى عشر ليلة خلون من الربيع الاول فاصبحت بطحاء مكة ترقص طربا واهتز الحرم فرحا عجبا واستبشرت اهل السموت بولادته وفازت امنة بسعادته وخرت الاصنام على رئوسها وايقنت الكهنة بخزيها وبؤسها ونطق الضب برسالته واقر الذئب بنبوته وجلالته فله النسب الرفيع المشرف فهو محمد بن عبد الله ابن عبد المطلب ابن هاشم سيد بنى عدنان وخير ال حين ربى عند جده يتيما ورضع ثدى حليمة فصارا حليما فمن عظم ليلة مولده بما امكنه من التعظيم والاكرام كان من الفا ئزين بدار السلام.

অর্থ: æবিলাদত শরীফ-এর দিনে এমন এক মহান ব্যক্তির আগমন ঘটেছে, যিনি না হলে কায়িনাতের কিছুই সৃষ্টি হতো না। সৃষ্টি হতো না কোনো পিতার, না কোনো সন্তানের। সেই মহান হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমন বা বিলাদত শরীফ-এর শুভক্ষণে খুশিতে আলোড়িত হয়েছিলো পবিত্র মক্কা শরীফ-এর কঙ্করময় মরুভূমি। মহা উল্লাস আর আনন্দে মেতে উঠেছিলো হারাম শরীফও। উনার বিলাদত শরীফ-এ আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছিলেন আসমানের ফেরেশতাকুল। উনার সৌভাগ্যে ধন্য হন হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম। উনার আগমনে খান খান হয়ে ভেঙে পড়েছিলো প্রতিমাগুলো। জ্যোতিষীরা বুঝতে পেরেছিলো তাদের লাঞ্ছনা ও দুর্ভাগ্য অনিবার্য। উনার রিসালতের রহস্য জানিয়ে দিয়েছিলো গুঁইসাপ। উনার নুবুওওয়াত ও মহত্ত্বের কথা স্বীকার করেছিলো জঙ্গলের বাঘ। উনার বংশ অতি অভিজাত ও সম্মানিত। তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিন হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম বিন হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম বিন হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম; যিনি ছিলেন আদনান গোত্রের সর্দার। তিনি ইয়াতীম অবস্থায় স্বীয় দাদা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনার কাছে সসম্মানে লালিত-পালিত হন। উনাকে দুধ পান করান হযরত হালিমা সা’দিয়া আলাইহাস সালাম।

সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ দিবসকে তা’যীম-তাকরীম করবে এবং সে উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করবে, সে চির শান্তিময় জান্নাতের অধিকারী হবে।” (খুতবাতু ইবনি নুবাতা)

এ প্রসঙ্গে মাওয়াহিবুল লাদুননিয়া কিতাবে আরো উল্লেখ আছে-

اعلم ان ذكر مولد النبى صلى الله عليه وسلم وجميع مناقبه وحضور سماعه سنة روى ان حسانا يفاخر قياما من رسول الله صلى الله عليه وسلم بحضرته والناس يجتمعون لسماعه-

অর্থ: æহে মুসলমানগণ! আপনারা জেনে রাখুন যে, ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আলোচনা ও উনার সমস্ত শান, মান বর্ণনা করা এবং ওই মাহফিলে উপস্থিত হওয়া সুন্নত তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহান আদর্শ। বর্ণিত আছে যে, হযরত হাসসান বিন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ক্বিয়াম অবস্থায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপস্থিতিতে উনার গৌরবগাথা শান-মান ছানা-ছিফত পেশ করতেন, আর লোকেরা তা শুনার জন্য একত্রিত হতেন।” সুবহানাল্লাহ!

উক্ত কিতাবে আরো উল্লেখ আছে-

فمن اراد تعظيم مولد النبى صلى الله عليه وسلم يكفيه هذا القدر ومن لم يكن عنده تعظيم مولد النبى صلى الله عليه وسلم لو ملئت له الدنيا فى مدحه لـم يحرك قلبه فى الـمحبة له صلى الله عليه وسلم.

অর্থ: যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তাযীম করতে চায় তথা খুশি প্রকাশ করতে চায় তার জন্য উপরোক্ত বর্ণনা যথেষ্ট। আর যে ব্যক্তির নিকট ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তা’যীম নেই তথা সম্মান করে না, সারা দুনিয়া পূর্ণ করেও যদি খুশি প্রকাশ করে উনার প্রশংসা করা হয় তথাপিও তার পাষাণ অন্তর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে প্রকম্পিত হবে না।  (আন নি’য়ামাতুল কুবরা)

-মাওলানা সাইয়্যিদ আহমদ শাবীব

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম