সুদ পরিশোধেই ব্যয় হবে বাজেটের ১১ শতাংশ। প্রত্যেক বছর বাজেটের আকার বাড়লেও এর সুফল পাচ্ছে না দেশ ও দেশের জনগণ। জনগণের উচিত সরকারকে বাধ্য করা- ঋণের ধারা থেকে সরে এসে অভ্যন্তরীণ অর্থ-সম্পদের দিকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেটকে গণমুখী করার জন্য।

সংখ্যা: ২৬৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রতিবছর বাজেটের আকার বড় হচ্ছে। বাড়ছে সরকারের ব্যয়। কিন্তু ব্যয় অনুযায়ী আয় হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে ঘাটতি বাজেট। আর এ ঘাটতি মেটাতে নিতে হচ্ছে ঋণ। এতে প্রতি বছরই ঋণ বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে ঋণের সুদ। আবার এ সুদ পরিশোধ করা হচ্ছে ঋণ নিয়ে। আগামী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ১১ দশমিক ১ শতাংশই ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে। যা টাকার অংকে ৫১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে মোট বাজেটের ১০ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়। যা ছিল ৪১ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সুদ ব্যয় এক বছরে বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ২৫ শতাংশ।

উল্লেখ্য, গত ৭ জুন ইয়াওমুল খামীস বা বৃহস্পতিবার চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, যা বিদায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৯৩ হাজার কোটি টাকা বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। সংশোধন করে তা ৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকায় নামানো হয়। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৩. ৪ শতাংশ। আর ঘাটতি ১ লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪.৯ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে সরকারের অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা থেকে ঋণ ধরা হয়েছে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা, চলতি অর্থবছরে যা আছে ৬০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। দেশীয় উৎস থেকে ঘাটতি পূরণে ৪২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা হয়েছে ব্যাংকিং খাত থেকে। আর বাকি টাকা আসবে সঞ্চয়পত্র থেকে। আর বাকি অর্থ বিদেশি ঋণ ও সহায়তা হিসেবে নেয়া হবে।

প্রতি বছরই এভাবে জিডিপির পাঁচ শতাংশের মতো ঘাটতি রেখে বাজেট দেয় সরকার। আর এবারের মতোই তিন খাত থেকে অর্থের যোগান হয়। অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজেটও বড় হচ্ছে প্রতি বছর। আর ঋণের পরিমাণও বাড়ছে। এ কারণে সুদ পরিশোধেও ব্যয় বাড়ছে।

বলাবাহুল্য, সরকারের ভুল নীতির কারণে এ সুদব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে ঘাটতি মেটানো হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে সামনে সরকারি কর্মচারীদের বেতনভাতা ও সুদ পরিশোধেই বাজেটের সমুদয় অর্থ ব্যয় করতে হবে। সঙ্কুচিত হয়ে যাবে উন্নয়ন বাজেট। অথচ নীতি পরিবর্তন করলে অপেক্ষাকৃত বিনা সুদে ঘাটতি বাজেটের অর্থায়ন করা যেত।

প্রতিবছরই সরকার বাজেটের আকার বাড়াচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী সরকার আয় বাড়াতে পারছে না। এ কারণে ঋণ নির্ভরতা বেড়ে যাচ্ছে বাজেট বাস্তবায়নে। ঋণ নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে সুদ ব্যয়। যেমন, গত ৫ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় বেড়েছে প্রায় শতভাগ। ২০১১-১২ অর্থবছরে বাজেটে সুদব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। ৫ বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা।

বলাবাহুল্য, সাধারণত বাজেট শব্দটির মধ্যে একটি দেশের উন্নয়ন এবং বার্ষিক পরিচালনা নীতি নিহিত রয়েছে। মূলত, বাজেটের উদ্দেশ্যেই হলো দেশের এবং দেশের জনগণের উন্নয়ন। কিন্তু প্রত্যেক বছরই বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেলেও এর বৃহৎ অংশই চলে যাচ্ছে অনুৎপাদন, অনুন্নয়ন ও সুদ পরিশোধের খাতে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সরকার দেশে অনেক অপ্রয়োজনীয় বড় বড় প্রকল্প নিচ্ছে। যা বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিত্যক্ত। ফ্লাইওভার, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে বিদেশী ঋণ বিনিয়োগ করছে। অথচ এগুলো এদেশের উপযোগীও নয়, প্রয়োজনীয়ও নয়। এরূপ অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় বাড়ায় ঋণের বোঝাও বাড়ছে। দেশী-বিদেশী ঋণ নিয়ে এসব প্রকল্প করলেও তা সুফল বয়ে আনছে না। কেননা এক্ষেত্রে বিদেশী ঋণের দায় অনেক, যা দেশের মানুষের পক্ষে বহন করা কঠিন।

ঋণ নিয়ে তা উৎপাদন খাতে দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগাতে না পারলে অর্থনীতি ক্রমেই একটি দুষ্টু চক্রের মধ্যে পড়ে যাবে। ফলে ঋণ শোধ করতেই সরকারের একটি বড় অংশ ব্যয় হবে। এখনো এককভাবে সরকারি ব্যয়ের একটি বড় অংশই ব্যয় হয় সুদ পরিশোধে।

অভিজ্ঞমহলের মতে, সুদ বাবদ ব্যয়ের কোনো অর্থনৈতিক উপযোগিতা নেই। শুধু ঋণ নেয়াই নয়, বরং ঋণের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কেননা এছাড়া সুদের ঋণ উৎপাদন খাতে দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগাতে না পারলে সুদের চক্রের মধ্যে পড়বে দেশের আর্থিক খাত। ফলে ঋণ শোধ করতেই সরকারকে বাজেটের বড় অংশ ব্যয় করতে হবে। আর এতে বেশি খরচ করলে উন্নয়ন বাজেট ও অবকাঠামো খাতে সরকারকে বিনিয়োগ কমিয়ে আনতে হবে। যা আবার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরবে।

উল্লেখ্য, আমাদের অর্থনীতির গঠন, অবস্থা বিবেচনায় আনলে বিদেশী ঋণের প্রয়োজন নেই। সুদ পরিশোধের বিষয়টি এখন অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋণ নেয়ার ফলে স্বাধীন অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঋণের কারণে অত্যাবশ্যকীয় সেবাখাতের বিনিয়োগ হ্রাস ও সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কট তৈরি বা শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সেবা খাতকে বাণিজ্যিকীকরণ করতে বাধ্য হয়েছে অযাচিত ঋণ গ্রহণের ফলে। এতে প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি, বরং দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাশাপাশি দেশ হয়েছে ঋণভারে জর্জরিত। প্রচলিত ঋণ গ্রহণ নীতিমালা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য ঋণ সঙ্কটে রূপ নেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কাজেই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে জনগণের এখন সচেতন হয়ে সরকারের ঋণ গ্রহণের বিরূদ্ধে সক্রিয় হতে হবে।

-মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।