হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাই ইলমে গইব উনার অধিকারী হলে হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং সর্বোপরি সকলের যিনি নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া সাল্লাম উনার হুকুম কি হবে?

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

“একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া কেউ গইব জানেন না” এ কথা মোটেও সঠিক নয়। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি গইব জানেন খালিক্ব মালিক রব হিসেবে এবং কারো মধ্যস্থতা ব্যতিরেকে। আর মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনার মনোনীত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে প্রদত্ব ইলম উনার মাধ্যমে গইবের সংবাদ রাখেন।

মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক তিনি যেহেতু আলিমুল গইবি ওয়াশ্ শাহাদাহ অর্থাৎ দৃশ্য-অদৃশ্য উভয় ইলম উনার অধিকারী সেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে যাঁরা ইলিম প্রাপ্ত হন উনারাও উভয় প্রকার ইলিম উনাদেরই অধিকারী হয়ে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গইব তো অনেক উর্ধ্বের বিষয় বরং যাঁরা কোন নবী আলাইহিমুস সালাম কিংবা কোন রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত নন; বরং উনাদের উম্মতের অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদেরকেও মহান আল্লাহ পাক তিনি ইলমে গইব বা অদৃশ্যের জ্ঞান দান করেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হযরত খিযির আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وعلمنه من لدنا علما

অর্থ: ‘আমি উনাকে ইলমে লাদুন্নী অর্থাৎ আমার তরফ থেকে ইলিম হাদিয়া করেছি।’ (পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)

আহলে সুন্নত  ওয়াল জামায়াত উনাদের মতে, হযরত খিযির আলাইহিস সালাম তিনি একজন ওলীআল্লাহ। এর প্রমান হচ্ছে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত সিকান্দার যুলকারনাইন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রধান উযীর ছিলেন। কোন নবী আলাইহিস সালাম কিংবা কোন রসূল আলাইহিস সালাম উনারা কখনোই কোন ওলীআল্লাহ উনার অধীন হয়ে কাজ করতে পারেন না। উনাকে মহান আল্লাহ পাক ইলমে লাদুন্নী তথা ইলমে গইব হাদিয়া করেছেন। এর প্রমাণস্বরূপ হযরত খিযির আলাইহিস সালাম উনার তিন তিনটি গইবের বিষয় পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেসব গইবের সংবাদ জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দ্বারা সত্যায়ন করা হয়েছে। প্রথমত: হযরত খিযির আলাইহিস সালাম তিনি যে নৌকাতে চড়ে নদী পার হয়েছিলেন তা তিনি ছিদ্র করে দিলেন। দ্বিতীয়ত: একটি বালককে হত্যা করে ফেললেন। তৃতীয়ত: একটি জনপদের অধিবাসীদের কাছে পৌঁছে তাদেরকে মেহমানদারী করাতে বললেন। তারা মেহমানদারী করতে অস্বীকার করা সত্ত্বেও তিনি তাদের একটি ভগ্ন প্রাচীর মেরামত করে দিলেন।

এসব ঘটনার কারণসমূহ বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন:

এক. নৌকাটি যে এলাকার সে এলাকায় একজন যালিম বাদশাহ  ছিলো। সে সে এলাকার সমস্ত ভাল নৌকাগুলো ছিনিয়ে নিত। এ কারণে তিনি নৌকাটি ছিদ্র করে দেন যাতে যালিম বাদশাহ্র লোকেরা ছিদ্র বা ভাঙ্গা দেখে নৌকাটি ছেড়ে দেয় এবং দরিদ্ররা বিপদের হাত থেকে বেঁচে যায়।

দুই. বালকটির হত্যার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ছেলেটি বড় হয়ে সে নিজে কুফরীতে লিপ্ত হয়ে পিতা-মাতাকেও ঈমানহারা করবে। তাই তিনি ছেলেটিকে হত্যা করেন।  মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সৎকর্মপরায়ণ পিতা-মাতাকে এ ছেলের পরিবর্তে তার চাইতে উত্তম সন্তান দান করবেন, যার কাজকর্ম ও চরিত্র হবে পবিত্র এবং সে পিতা-মাতার হক্বও পূর্ণ করবে।

এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে, নিহত ছেলের পিতা-মাতাকে তার পরিবর্তে মহান আল্লাহ পাক তিনি একটি কন্যা সন্তান দান করেন। পরবর্তীকালে যার রেহেম শরীফ-এ দুজন নবী আলাইহিমাস সালাম আগমন করেন। আরেক রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে, উক্ত কন্যার রেহেম শরীফ থেকে আগমনকারী নবী আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক একটি বিরাট উম্মতকে হিদায়েত দান করেন। অন্য এক বর্ণনায় রয়েছে, নিহত ছেলের পরিবর্তে মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত ছেলের মাতার ঘরে সাত জন ছেলে দান করেন যাঁরা প্রত্যেকেই নবী হন। সুবহানাল্লাহ!

তিন. প্রাচীরের নিচে ইয়াতীম বালকদের জন্য রক্ষিত গুপ্তধন স্বর্ণ-রৌপ্যের ভা-ার ছিলো। তা হিফাযতের জন্য তিনি প্রাচীর ঠিক করে দিয়েছিলেন এজন্য যে, উক্ত ইয়াতীম বালকদের পিতা একজন মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী ছিলেন। তাই উনার সন্তান-সন্ততির উপকারের লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা করেন।

স্মরণীয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে ইলমে গইবসহ সর্বপ্রকার ইলিম ও নিয়ামত হাদিয়া করার পদ্ধতি উনার নাম হচ্ছেন ‘ইলমে লাদুন্নী, ইলহাম ও ইলক্বা। আর হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ইলমে গইবসহ সর্বপ্রকার ইলিম ও নিয়ামত হাদিয়া করার পদ্ধতি উনার নাম হচ্ছেন ওহী। বলার অপেক্ষা রাখে না, সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

আরো উল্লেখ্য, ‘শরহে মাওয়াহিব’ কিতাবে লিখা হয়েছে, ‘লাতায়িফুল মিনান’ কিতাবে উল্লেখ আছে যে, কোন কামিল বান্দা বা হক্কানী ওলীআল্লাহগণ উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কোন অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান তথা ইলমে গইব লাভ করা আশ্চর্যের বিষয় নয়। এটা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت ابى سعيد الخدرى قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اتقوا فراسة الـمؤمن فانه ينظر بنور الله

অর্থ: হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মু’মিনের অর্থাৎ প্রকৃত মু’মিন তথা ওলীআল্লাহ উনার অন্তরদৃষ্টিকে ভয় করো। কেননা তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নূর মুবারক দ্বারা অবলোকন করেন।’  (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان الله تعالى قال كنت سـمعه الذى يسمع به كنت بصره الذى يبصربه كنت لسانه الذى ينطق به كنت يده التى يبطش بها كنت رجله التى يـمشى بـها

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, (মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মা’রিফাত অর্জনকারী ওলীআল্লাহ উনার শান মুবারক সম্পর্কে) মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি উনার কান হই, তিনি আমার কুদরতী কান মুবারক-এ শ্রবণ করেন। আমি উনার চক্ষু হই, তিনি আমার কুদরতী চোখ মুবারক-এ দেখেন। আমি উনার যবান হই, তিনি আমার কুদরতী যবান মুবারক-এ কথা বলেন। আমি উনার হাত হই, তিনি আমার কুদরতী হাত মুবারক-এ ধরেন। আমি উনার পা হই, তিনি আমার কুদরতী পা মুবারক-এ চলেন। (বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী)

অর্থাৎ যাঁরা প্রকৃত ওলীআল্লাহ উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নিয়ন্ত্রিত। কাজেই উনাদের সবকিছুই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত বা ক্ষমতা বলেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাই উনাদের গইব সম্পর্কে অবগত হওয়াটা বিস্ময়কর কোন ব্যাপার নয়।

অতএব, হযরত ওলী-আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ক্ষেত্রে যদি ইলমে গইব থাকাটা বাস্তবসম্মত হয় তাহলে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ইলমে গইব থাকাটা আরো বেশি বাস্তবসম্মত। এ বিষয়ে কেবল কাফিররাই চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করে থাকে।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اعطيت جوامع الكلم

অর্থাৎ- “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলিম মুবারক হাদিয়া করা হয়েছে।” (মুসলিম শরীফ)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت معاوية رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من يرد الله به خيرا يفقهه فى الدين و انـما انا قاسم والله يعطى

অর্থ: “হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যার কল্যাণ চান তাকে দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে ছহীহ সমঝ দান করেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদিয়া করেন আর নিশ্চয়ই আমি হলাম (উক্ত হাদিয়া) বণ্টনকারী।” (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সর্বপ্রকার নিয়ামত উনার যিনি হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেছেন। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কায়িনাতবাসী উনাদের মধ্যে যাকে যতটুকু বা যে পরিমাণ ইচ্ছা তাকে সে পরিমাণ বণ্টন করিয়ে থাকেন। দেখা যাচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার ভা-ার মুবারক রয়েছে এবং তিনি সে ভা-ার মুবারক থেকে যাকে যতটুকু প্রয়োজন তাকে ততটুকু দিয়ে থাকেন।

এখন যিনি কুল-মাখলুক্বাতের জন্য বণ্টনকারী তিনি মূলত সৃষ্টির শুরু হতে সৃষ্টির শেষ পর্যন্ত বণ্টনকারী। আর বণ্টনকারী যাদের মাঝে বণ্টন করবেন তিনি তাদেরকে অবশ্যই চিনেন ও জানেন। অন্যথায় না চিনলে ও না জানলে কাকে কতটুকু বা কি পরিমাণ দিবেন? কাজেই বলার অপেক্ষা রাখেনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলমে গইবসহ সমস্ত ইলিমেরই অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য, লওহে মাহফূয সম্পর্কে বলা হয়, সৃষ্টির শুরু হতে যা কিছু হয়েছে, হচ্ছে ও হবে সবকিছুই সেখানে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এখানে বলতে হয়, লওহে মাহফূয সৃষ্টি হয়েছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওজূদ পাক সম্মানিত নূর মুবারক উনার অংশ হতে। আর লওহে মাহফূয যেহেতু সৃষ্টিরাজির মধ্যে একটি সৃষ্টি সেহেতু তারমধ্যে সংরক্ষিত নিয়ামত তথা ইলিমেরও বণ্টনকারী হলেন নূরে  মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার ইলিমের একটা অংশ রাখা হয়েছে লওহে মাহফূযে যেই ইলিম মাখলূক্বাত সম্পর্কিত এবং মাখলূক্বাতের জন্য বণ্টিত। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেহেতু মাখলুক্বাতের সর্বপ্রকার নিয়ামতের বণ্টনকারী সেহেতু তিনি মাখলুক্বাতের অবস্থা সম্পর্কিত ও তাদের জন্য বণ্টিত লওহে মাহফূযে সংরক্ষিত সমস্ত ইলিম উনাদেরও অধিকারী এবং তার বণ্টনকারীও।

মূলকথা হলো, লওহে মাহফূযে সংরক্ষিত ইলিম মুবারক যেরূপ মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা উনার ইলিম মুবারক উনার একটা অংশ তদ্রƒপ উক্ত ইলিম নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারও ইলিম মুবারক উনার অংশ বিশেষ। সুবহানাল্লাহ!

মনে রাখতে হবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরিপূর্ণরূপে গইবের ইলিম বণ্টনকারী। উনার মধ্যেমেই বান্দা ও উম্মত গইব উনার ইলিম জেনেছে, বুঝেছে ও লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ!

কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عالـم الغيب فلا يظهر على غيبه احدا الا من ارتضى من رسول

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি আলিমুল গইব। তিনি উনার গইব উনার ইলিম উনার মনোনীত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত কারো নিকট প্রকাশ করেন না।” (সূরা জিন : আয়াত শরীফ-২৬, ২৭)

প্রতিভাত হলো, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই ইলমে গইব উনার অধিকারী। আর উনারা এই নিয়ামতের অধিকারী হয়েছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বণ্টনের ওসীলায়।

অতএব, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে উপরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দ্বারা যেখানে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ইলমে গইব সম্পর্কে অবহিত হওয়াটাই প্রমাণিত সেখানে যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, যিনি ইমামুল মুরসালীন, যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্ষেত্রে ইলমে গইব সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করা যে কত চরম জিহালতি, গুমরাহী ও কুফরী; তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মূলত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যারা চিরশত্রু, চির লা’নতগ্রস্ত ও চিরজাহান্নামী কেবল তারাই উক্ত বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে।

-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ শুয়াইব আহমদ

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম