হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের একক অনন্য বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা তথা ছেলে আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা বানাত তথা মেয়ে আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট আট (৮) জন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মধ্যে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  উনারা হচ্ছেন চার (৪) জন এবং হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন চার (৪) জন। সুবহানাল্লাহ! হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হচ্ছেন-

১. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম,

২. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম,

৩. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম এবং

৪. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হচ্ছেন-

১. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম,

২. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম,

৩. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম এবং

৪. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের একক অনন্য বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের একক অনন্য বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে সম্মানিত ছহীহ সনদ মুবারক-এ অনেক সম্মানিত হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে। যেমন ‘ছহীহ বুখারী শরীফসহ আরো অন্যান্য বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ উনাদের কিতাব মুবারক’ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِسْـمَاعِيْلَ بْنِ اَبِىْ خَالِدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ قُلْتُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ اَبِىْ اَوْفٰى رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ رَاَيْتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ ابْنَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَاتَ وَهُوَ صَغِيْرٌ وَّلَوْ قُضِىَ اَنْ يَّكُوْنَ بَعْدَ سَيّـِدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِىٌّ لَّعَاشَ ابْنُهٗ وَلٰكِنْ لَّا نَبِىَّ بَعْدَهٗ

অর্থ: “হযরত ইসমাঈল ইবনে আবূ খালিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললাম, আপনি কি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ (হযরত ইবরাহীম) আলাইহিস সালাম উনাকে দেখেছেন? তিনি বললেন, (হ্যাঁ, দেখেছি।) ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি (দুনিয়াবী দৃষ্টিতে) অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নবী হওয়ার (নবী ও রসূল হিসেবে প্রকাশ হওয়ার) কোনো (কুদরতী) ফায়সালা থাকতো, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি অবশ্যই দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু ফায়সালা তো হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কোন নবী হবেন না, কেউ নবী হিসেবে প্রকাশ হবেন না। (তাই ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি (দুনিয়াবী দৃষ্টিতে) অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।) সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মুখতাছার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ اَبِىْ خَالِدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ سَـمِـعْتُ ابْنَ اَبِىْ اَوْفـٰى رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ يَقُوْلُ لَوْ كَانَ بَعْدَ النَّبِىِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِىٌّ مَّا مَاتَ ابْنُهٗ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ.

অর্থ: “হযরত ইবনে আবূ খালিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছি, যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নবী বা রসূল হওয়ার ব্যবস্থা থাকতো, তাহলে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করতেন না।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৩১/৪৫৪, কাশফুল খফা ২/১৫৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/২৫ ইত্যাদি)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنِ السُّدِّىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قُلْتُ لِاَنَسٍ رَضِىَ الله تَعَالـى عَنْهُ كَمْ بَلَغَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ النَّبِىِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَدْ كَانَ غُلَامًا بِالْـمَهْدِ وَلَوْ بَقِىَ لَكَانَ نَبِيًّا وَّلٰكِنْ لَّـمْ يَبْقَ لِاَنَّ نَبِيَّكُمْ اٰخِرُ الْاَنْبِيَاءِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

অর্থ: “হযরত ইমাম সুদ্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আমি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু উনাকে সুওয়াল করেছিলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক কতো ছিলেন? তিনি বললেন, তিনি ছিলেন উনার মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার (হযরত মারিয়াহ ক্বিবতিয়াহ) আলাইহাস উনার সম্মানিত কোল মুবারক উনার শিশু। যদি তিনি দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন, তাহলে তিনি অবশ্যই নবী তথা রসূল হতেন। অর্থাৎ উনার সম্মানিত রিসালতী শান মুবারক প্রকাশ হতো। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু তিনি দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক না করে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। কারণ আপনাদের (সমস্ত কায়িনাতের) নবী-রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সর্বশেষ নবী-রসূল। (উনার পরে যেহেতু আর কেউ নবী বা রসূল হবেন না, নবী বা রসূল হিসেবে প্রকাশ পাবেন না, তাই সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।”) সুবহানাল্লাহ! (ইবনে আসাকির, সুবুলুল হুদার ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/২৫)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ الله تَعَالـى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلّى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ وَلَوْ عَاشَ لَكَانَ صِدِّيْـقًا نَّبِيًّا

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত জানাযার নামায পড়ান। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন। আর তিনি যদি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন, তাহলে তিনি অবশ্য অবশ্যই ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর নবী-রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা আমার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ)

আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ الله تَعَالـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ عَاشَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ لَكَانَ صِدِّيْـقًا نَّبِيًّا.

অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন, তাহলে তিনি অবশ্য অবশ্যই ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর নবী-রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা আমার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/২৫, মুসনাদে আহমদ শরীফ)

এরূপ আরো অনেক রিওয়ায়েত রয়েছে। মূল কথা হলো, উপরোক্ত সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে যে, যদি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করতেন, তাহলে তিনি অবশ্য অবশ্যই  ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর নবী ও রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার যেই হুকুম মুবারক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্যান্য সকল মহাসম্মানিত হযরত আবনা  (ছেলে আওলাদ) আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রত্যেকের ঠিক একই হুকুম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ যদি হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করতেন, তাহলে উনারা প্রত্যেকেই অবশ্য অবশ্যই  ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর নবী ও রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!

আর যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কোনো নবী বা রসূল হবেন না, কেউ নবী বা রসূল হিসেবে প্রকাশ হবেন না। তাই হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকে দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, তা সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

সেটাই মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, এক কথায় হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!

হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের একক অনন্য বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,

বুযূর্গী-সম্মান মুবারক

হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী ও সম্মান মুবারক বর্ণনা করতে গিয়ে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছে, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন ‘আহলু বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ তথা নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন, ‘সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন’ তথা সারা কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন উনাদের প্রতেক্যের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ! উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ’ তথা জান্নাতবাসী সমস্ত মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ! উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন ‘উম্মু আবীহা’। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছে ঈমান।” সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

عَنْ حَضْرَتْ اَلْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ رَضِىَ الله تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّمَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِضْعَةٌ مِنِّىْ يُؤْذِيْنِىْ مَا آذَاهَا.

অর্থ: “হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রাবি‘য়াহ (হযরত যাহরা) আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার গোশত মুবারক থেকে একখানা টুকরো মুবারক। তিনি হচ্ছেন আমার লখতে জিগার, নয়ণের মণি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে যেই বিষয়গুলো কষ্ট দেয়, সেই বিষয়গুলো মূলত আমাকেই কষ্ট দেয়।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যদিও এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রাবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে ‘বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা হয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই এবং হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন ‘বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার সম্মানিত গোশত মুবারক উনার টুকরো মুবারক, লখতে জিগার মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক যাহির হওয়ার কারণে জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সেখানে যেতে হয়েছিলো, উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কিন্তু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত ধূলি-বালি মুবারক পাওয়ার জন্য বেক্বারর ছিলেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মূল আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবন হয়েছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই এবং হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন ‘বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার সম্মানিত গোশত মুবারক উনার টুকরো মুবারক, লখতে জিগার মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনাদের বিষয়টি কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।” সুবহানাল্লাহ!

হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের একক অনন্য বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে ‘নুযহাতুল মাজালিস’-এ বর্ণিত রয়েছে-

قال الكسائى وغيره لـما خلق الله آدم خلق من ضلعه الأيسر حواء وهو في الجنة وأودعها حسن سبعين حوراء فصارت حواء بين الحور العين كالقمر بين الكواكب وكان آدم نائما فلما استيقظ مد يده إليها فقيل له حتى تؤدي مهرها قال وما هو قال أن تصلي على سيدنا محمد صلى الله عليه وسلم ثلاث مرات وقيل حتى تعلمها معالم دينها وكان آدم عليه السلام أودعه الله من الحسن والكمال حتى أن خده الأيمن يغلب شعاع الشمس وكان نور سيدنا محمد صلى الله عليه وسلم في خده الأيسر يغلب على القمر وكان حضرت يوسف عليه السلام فيه فلما نظر آدم في وجه حواء نظرت حواء في وجه آدم قال يا حواء ما أرى أن الله تعالى خلق خلقا أحسن منك ومني فأوحى الله تعالى إلى حضرت جبريل خذ بيد حواء وآدم إلى الفردوس الأعلى وافتح لهما قصرا من القصور ففتح باب قصر من الياقوت الأحمر فيه قُبَّة مِنَ الْكَافُوْرِ على قوائمه الزبرجد في روضة من زعفران ففتح جبريل باب القبة فرأى سريرا من الذهب قوائمه من الدر عليه جارية لها نور وشعاع على رأسها تاج من ذهب مُرَصَّع بالجواهر لم ير آدم أحسن منه عليه صورة جميلة قال آدم يا رب من هذه الصورة قال حضرت فاطمة بنت نبي سيدنا محمد صلى الله عليه وسلم قال يا رب من يكون بعلها فقال الله تعالى يا حضرت جبريل إفتح باب قصر من ياقوت ففتح له فرأى فيه قبة من الكافور فيها سرير من ذهب عليه شاب حسنه كحسن يوسف عليه السلام فقال هذا بعلها علي بن أبي طالب فقال يا رب هل لهم أولاد فأمر الله تعالى جبريل عليه السلام أن يفتح باب قصر من اللؤلؤ ففتح باب قصر من اللؤلؤ فيه قبة من الزبرجد فيها سرير من العنبر عليه صورة الحسن والحسين عليهما السلام فرجع آدم إلى موضعه

অর্থ: “হযরত ইমাম কুসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ আরো অনেকেই বলেন, জান্নাতে যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করার পর উনার বাম পাঁজরের হাড় মুবারক থেকে উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেন। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনার মধ্যে ৭০ জন হুরের সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া করেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক সকল হুরদের মঝে এরূপভাবে ফুটে উঠলো যেমন সমস্ত তারকারাজির মাঝে চন্দ্রের সৌন্দর্য। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাকে বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। যখন তিনি ঘুম থেকে উঠলেন, তখন তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার দিকে স্বীয় হাত মুবারক বাড়ালেন। তখন উনাকে বলা হলো, সম্মানিত মোহরানা মুবারক আদায় করা ব্যতীত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে স্পর্শ করা যাবে না। সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক কী? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর তিনবার দুরূদ শরীফ পাঠ করুন। সুবহানাল্লাহ! আর কেউ কেউ বলেন (কোনো কোনো বর্ণনা মতে), আপনি উনাকে সম্মানিত দ্বীনী তা’লীম দিবেন- এই শর্তে স্পর্শ মুবারক করতে পারবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক এবং পূর্ণতা মুবারক হাদিয়া মুবারক করলেন। ফলে উনার সম্মানিত ডান গাল মুবারক উনার সৌন্দর্য মুবারক সূর্যের আলোকজ্জ্বলকে হার মানালো। যা ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার এক অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সম্মানিত বাম গাল মুবারক-এ এমন সৌন্দর্য মুবারক রাখা হলো, যা চন্দ্রের আলো থেকে সমুজ্জ্বল। আর এটা সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক উনার দিকে দৃষ্টি মুবারক দিলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম! আমার দেখা মতে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার এবং আমার চেয়ে আর কাউকে এতো অধিক সৌন্দর্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করেননি। সুবহানাল্লাহ!

তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করলেন, (হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম!) আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইসি সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত হাত মুবারক ধরে উনাদেরকে ‘ফিরদাউসে ‘আলা’ উনার নিকট নিয়ে যান এবং উনাদের জন্য সেখানকার প্রাসাদসমূহ থেকে দুইটি প্রাসাদ মুবারক খুলে দিন। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি লাল ইয়াকুত পাথরের একটি প্রাসাদের দ্বার উন্মুক্ত করে দিলেন, সেখানে জাফরানের বাগানের মধ্যে কর্পূরের একখানা সম্মানিত গম্বুজ মুবারক ছিলো, যার পায়া ছিলো গোমেদ তথা পীতবর্ণের মণিবিশেষ দ্বারা তৈরি। তারপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত গম্বুজ মুবারক উনার দরজা মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে একখানা স্বর্ণ নির্মিত খাট মুবারক দেখতে পেলেন, যার পায়াগুলো ছিলে মুক্তার। তিনি উক্ত খাট মুবারক-এ একজন মহাসম্মানিতা মহিলা দেখতে পেলেন, যেই মহাসম্মানিতা মহিলা উনার থেকে অবিরত ধারায় সম্মানিত নূর মুবারক এবং রশ্মি মুবারক বিচ্ছূরিত হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মাথা মুবারক-এ জাওহার খচিত স্বর্ণের তাজ মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত মহাসম্মানিতা মহিলা উনার থেকে এতো অধিক বিস্ময়কর খুব ছূরত মুবারক উনার অধিকারিণী আর কাউকে কখনো দেখেননি। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! এতো অধিক বেমেছাল বিস্ময়কর সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী এই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক তিনি কে? মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তিনি হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! উনার সম্মানিত যাওজুম মুকাররাম (স্বামী) কে হবেন? অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি ইয়াকুত নির্মিত প্রাসাদের দরজা মুবারকখানা খুলে দিন। তারপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত প্রাসাদের দরজা মুবারকখানা খুলে দিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সেখানে একখানা কর্পূর নির্মিত গম্বুজ মুবারক উনার ভিতর স্বর্ণের খাট মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় (বরং উনার চেয়েও) অত্যধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী একজন সম্মানিত যুবক  উনাকে দেখতে পেলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, ইনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জাওযুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবী ত্বালিব আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! উনাদের কী কোনো আওলাদ রয়েছেন?

তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে লু’লু’ তথা অতি মূল্যবান মুক্তা মুবারক দ্বারা নির্মিত একখানা প্রাসাদ মুবারক উনার দ্বার মুবারক খুলে দিতে নির্দেশ মুবারক দিলেন। ফলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত প্রাসাদ মুবারক উনার দ্বার মুবারক উন্মুক্ত করে দিলেন। সেখানে জমরূদ নির্মিত একখানা গম্বুজ মুবারক ভিতরে একখানা আম্বরের খাট মুবারক-এ সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম) উনার এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম) উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সম্মানিত ছূরত মুবারক শোভা পাচ্ছিলেন। (উনাদেরকে দেখে, সবশেষে) সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার স্থানে ফিরে আসলেন। সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২য় খ- ১৭২ পৃ.)

মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রত্যেকেরই সম্মানিত ছূরত মুবারক ও সৌন্দর্য মুবারক বেমেছাল এবং উনাদের প্রত্যেকের জন্যই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ এরূপ সর্বোত্তম ব্যবস্থা মুবারক রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ!

তাহলে হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনাদের বিষয়টি কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! তবে এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করার এবং সে অনুযায়ী উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম করার ও সম্মানিত ছানা-ছিফত করার মাধ্যমে হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-আল্লামা মুহম্মদ আমীন

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম