হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শানে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার এক অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক

সংখ্যা: ২৪৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের শানে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার এক অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক


সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা কত জন। এই বিষয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। কেউ তিন জন বলেছেন, কেউ চার জন আবার কেউ বা এর কম বেশিও বলেছেন। আবার কেউ বা সাত জনও বলেছেন, যা একটা অবান্তর কথা। তবে অধিকাংশের মত ৩ জন ও ৪ জনের পক্ষে। আমরা এখানে সংক্ষেপে বিভিন্ন মতগুলো তুলে ধরবো। উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষ যেন বুঝতে সক্ষম হয় যে, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি এই বিষয়ে কি বেমেছাল তাজদীদ মুবারক করেছেন। এছাড়া আমাদের দ্বিতীয় কোনো উদ্দেশ্য নেই।

কিতাবে যে মতগুলো উল্লেখ রয়েছে সংক্ষেপে সেগুলো হচ্ছে-

الباب الثالث فى عدد أولاده صلى الله عليه وسلم ومواليدهم، وما اتفق عليه منهم وما اختلف

جملة ما اتفق عليه ستة: اثنان ذكور: القاسم عليه السلام وابراهيم عليه السلام، واربع بنات زينب عليها السلام ورقية عليها السلام وام كلثوم عليها السلا وفاطمة عليها السلام وكلهن أدركن الاسلام وهاجرن معه صلى الله عليه وسلم واختلف فيما سواهن. فقيل: لم يولد له صلى الله عليه وسلم سواهم والـمشهور خلافه.

قال ابن إسحاق: وكان له الطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام أيضا، فيكون على هذا جملتهم أربعة ذكور وأربع إناث.

وقال الزبير بن بكار: وفيما رواه عن الطبراني عنه برجال ثقات كان لرسول الله صلى الله عليه وسلم غير ابراهيم عليه السلام القاسم عليه السلام وعبد الله عليه السلام وهو قول أكثر [ أهل النسب].

وقال الدارقطني: وهو الاثبت وصححه الحافظ عبد الغني المقدسي: ويسمى بالطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام، لانه ولد بعد النبوة وقيل: الطاهر عليه السلام والطيب عليه السلام غير عبد الله عليه السلام، فيكون على هذا جملتهم خمسة ذكور وقيل: كان له صلى الله عليه وسلم الطيب عليه السلام والمطيب عليه السلام ولدا في بطن، والطاهر عليه السلام والمطهر عليه السلام ولدا في بطن، فيكون على هذا جملتهم أحد عشر.

قال ابن إسحاق: ولد أولاده كلهم غير إبراهيم صلى الله عليه وسلم قبل الاسلام، ومات البنون قبل الاسلام وهم يرضعون، وتقدم في قول غيره ان عبد الله عليه السلام ولد بعد النبوة، فلذلك سمي بالطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام، فتحصل لنا من مجموع الاقوال سبعة ذكور اثنان متفق عليهما القاسم عليه السلام وإبراهيم عليه السلام وخمسة مختلف فيهم عبد الله عليه السلام والطيب عليه السلام والمطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام والـمطهر عليه السلام، والاصح قول الجمهور أنهم ثلاثة ذكور القاسم عليه السلام وعبد الله عليه السلام وإبراهيم عليه السلام الاربع البنات

অর্থ: “তৃতীয় অধ্যায়- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা কত জন, উনাদের সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং এই বিষয়ে ঐক্যমত ও ইখতিলাফ:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা মোট ৬ জন। এই বিষয়ে ঐক্যমত মত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুই জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। আর চার জন বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম। উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম। বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পেয়েছেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন। এছাড়া অন্যদের ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে।

অতঃপর কেউ কেউ বলেছেন, উনারা ব্যতীত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আর কোনো আওলাদ আলাইহিস সালাম সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি। যা প্রসিদ্ধ মতের খিলাফ।

ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো দুই জন আবনা (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম উনারা ছিলেন। উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

অতঃপর এই মতের ভিত্তিতে মোট যা দাঁড়ায় ৪ জন আবনা’(ছেলে) আলাইহিমুস সালাম এবং ৪ জন বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম। (প্রকৃতপক্ষে এটাই বিশুদ্ধ অভিমত)

আর হযরত যুবাইর ইবনে বাক্কার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যা ইমাম ত্ববারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ রাবী উনাদের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত আরো দুই জন সম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম উনারা ছিলেন। উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি। আর অধিকাংশ নসববীদ উনাদের এটাই অভিমত।

আর হযরত ইমাম দারাকুত্বনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এটাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ অভিমত এবং হযরত হাফিয আব্দুল গণী মুক্বদ্দিসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই অভিমতটিকে ছহীহ বলেছেন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে ত্বইয়িব এবং ত্বাহির এই দুই নাম মুবারক-এ ডাকা হতো। কেননা তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পরে সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীতই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম নামে আরো দুই জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম ছিলেন।

আর এই মতের ভিত্তিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা দাঁড়ায় সর্বমোট ৫ জন।

আবার কেউ কেউ বলেছেন, হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম ও হযরত মুত্বইয়্যাব আলাইহিস সালাম নামে দুই জন আবনা’ (ছেলে) একই সাথে (জমজ) বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। অনুরূপভাবে হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম ও হযরত মুত্বহহার আলাইহিস সালাম নামে দুই জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম উনারাও একই সাথে (জমজ) বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। (যা একেবারে অবান্তর কথা) আর এই মতের ভিত্তিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা দাঁড়ায় সর্বমোট ১১ জন। অর্থাৎ ৭ জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম এবং ৪ জন বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম।

হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্য সকল আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে দুধ মুবারক পানরত অবস্থায় সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর এই কথা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের পর সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। এই জন্য উনার নাম মুবারক রাখা হয়েছিলো ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম ও হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম।

অতএব, বিভিন্ন মত থেকে আমাদের কাছে যা সুস্পষ্ট হলো, আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ৪ জন। দুই জনের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি। আর ৫ জন উনাদের ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে। উনারা হচ্ছেন ১. হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম ২. হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম, ৩. হযরত মুত্বইয়্যাব আলাইহিস সালাম, ৪. হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম, ৫. হযরত মুত্বহহার আলাইহিস সালাম। আর বিশুদ্ধ হচ্ছে জুমহূর উনাদের অভিমত যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আবনা’ আলাইহিমুস সালাম উনারা ৩ জন সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। আর বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন ৪ জন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুনা ফাত্বিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম।” (ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে ইঊসুফ ছালিহী শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৯৪২ হিজরী) : সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ শরীফ ১১/১৬)

আর হযরত ইমাম ইবনে আছীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ: ৬০৬ হিজরী) বলেন-

قد اختلف العلماء في عدد أولاد النبيِّ صلى الله عليه وسلم من الذكور دون الإناث، فقال المكثرون إنهم كانوا ثمانية، أربعة ذكور، وأربع إناث، وقال المقلُّون : إنَّ الإناث أربع، وأما الذكور فثلاثة.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা কত জন। এই বিষয়ে হযরত উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মাঝে ইখতিলাফ রয়েছে। তবে বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিয়ে কোনো ইখতিলাফ নেই। অতঃপর অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অভিমত হচ্ছে ৮ জন উনাদের মধ্যে হযরত আবনা আলাইহিমুস সালাম উনারা ৪ জন এবং হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন। আর কমসংখ্যক উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অভিমত হচ্ছে হযরত আবনা আলাইহিমুস সালাম উনারা ৩ জন এবং হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন।” (জামি‘উল উছূল)

‘ফিক্বহুল আকবর’-এর ইবারতের বরাত দিয়ে অনেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা ৩ জন প্রমাণ করার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছেন। আবার অধিকাংশ তাফসীর বিশারদগণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা ৪ জন বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন হযরত আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ’ উনার মধ্যে সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ উনার ৪০ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে উল্লেখ করেন-

فَإِنَّه وُلِدَ لَه حَضْرَتْ الْقَاسِمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الطَّيِّبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الطَّاهِرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ حَضْرَتْ خَدِيجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَمَاتُوا صِغَارًا وَّوُلِدَ لَه حَضْرَتْ إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ حَضْرَتْ مَارِيَةَ الْقِبْطِيَّةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَمَاتَ أَيْضًا رَضِيعًا.

অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (৩ জন) মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম উনারা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং শৈশবকালেই সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিইয়াহ ক্বিবত্বিইয়্যাহ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনিও সম্মানিত দুধ মুবারক পানরত অবস্থায় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ ৬/৪২৮)

আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ খাযিন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে খাযিন শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,

كَانَ لَه اَبْنَاءٌ حَضْرَتْ الْقَاسِمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الطَّيِّبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الطَّاهِرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) ছিলেন (৪ জন-) সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা ত্বাহির আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি।” (তাফসীরে খাযিন ৩/৪২৯)

তবে মূল কথা হলো- অধিকাংশ ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ আলাইহিমুস সালাম উনারা ৩ জন অথবা ৪ জন। তবে উনারা কেউ উনাদের মতের সপক্ষে অকাট্য কোনো দলীল পেশ করেননি এবং দলীলভিত্তিক ব্যাপক কোনো আলোচনাও করেননি। শুধু উনাদের নাম মুবারক বলে ইতি টেনেছেন। আর উনাদের বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে তো কোনো আলোচনাই করেননি। বিলাদত শরীফ উনার মাস, দিন, তারিখ, সময় উল্লেখ করার তো প্রশ্নই উঠে না; এমনকি পবিত্র বিছাল শরীফ উনার বছর, মাস, দিন, তারিখ, সময়ও উল্লেখ করেননি। (তবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত রয়েছে।) যার কারণে শত শত বছর ধরে এই ইখতিলাফ চলে আসছে। বর্তমানে যারা রয়েছে তাদের অধিকাংশ জনের মত ৩ জনের পক্ষে।

মূল কথা হলো, এরূপ অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। বিভিন্ন কারণে সব ইখতিলাফ এখানে তুলে ধরা অসম্ভব। আর এই সকল ইখতিলাফের কারণে বুঝে উঠা মুশকিল যে, প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা কত জন। না‘ঊযুবিল্লাহ! ফলশ্রুতিতে মুসলমানরা শত শত বছর যাবৎ এক বিশাল মহাসম্মানিত নি’য়ামত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে আসছিলো। না‘ঊযুবিল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অসংখ্য-অগণিত শুকরিয়া যে, উনারা অত্যন্ত দয়া ও ইহসান মুবারক করে আমাদের মাঝে প্রেরণ করেছেন যিনি সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাকে। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আখাচ্ছুল খাছ সম্মানিত তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার মাধ্যমে এবং উনাদের সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী এই বিষয়ে সর্বোত্তম ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন তথা এক অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ছিলেন সর্বমোট ৪ জন এবং তিনি উনার সম্মানিত মতের পক্ষে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্য প্রমাণও পেশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, উনাদের সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ ও সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের বছর, মাস, দিন, তারিখ ও সময় উল্লেখ করে। সুবহানাল্লাহ! সত্যই তা এক অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক। যা সর্বযুগের সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে বিস্ময়াভিভূত করে তুলেছেন। এভাবে এই বিষয়টি কেউ কখনো চিন্তাও করেননি। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা মোট ৮ জন। উনাদের মধ্যে হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ৪ জন এবং হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন। এই হলেন মোট ৮ জন। উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময় মুবারক নিয়ে অনেকের অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা তাহক্বীক্ব করেছি। যমীনে প্রথম তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন কে? সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি নাকি সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম তিনি। এ বিষয়েও অনেকের অনেক ক্বীল-ক্বাল রয়েছে। তবে প্রথমে সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক অনুযায়ী তখন সাড়ে ২৭ বছর। ২য় যিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক অনুযায়ী ২৯ বছর পার হয়ে ৩০ বছর চলছিলেন। এরপর ৩য় এবং ৪র্থ সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি ও সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক অনুযায়ী ৩১ ও ৩২ বছর বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর ৫ম সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক ৩৩ বছর। আর ৬ষ্ঠ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক অনুযায়ী বয়স মুবারক ৩৫ বছর। আর ৭ম সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উনার দুনিয়াবী জিন্দেগীতে বয়স মুবারক ৩৭ বছর। এই ৭ জন উনারা মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন যিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে। আর ৮ম যিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিইয়াহ ক্বিবত্বিইয়্যাহ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। তখন দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বয়স মুবারক ৬১ বছর।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি ২রা রমাদ্বান শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি ২রা রবী‘উল আউওয়াল শরীফ এবং ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম তিনি ৪ঠা রবী‘উল আউওয়াল শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ৮ম হিজরী সনের ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমুয়াহ তথা জুমুয়াবার রাতে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের বছর, মাস, তারিখ এবং সময় সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে প্রায় ২২ মাস অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ উনার ২ তারিখ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক প্রায় ২৯ বছর ৪ মাস। আর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়াতে ৬ দিন অবস্থান মুবারক করেন। তিনি ৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক প্রায় ৩১ বছর। ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে ৮ দিন অবস্থান মুবারক করেন। তিনি ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক প্রায় ৩২ বছর। আর ইবনু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ১০ম হিজরী শরীফ উনার সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ১০ তারিখ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক প্রায় ৬২ বছর।”

সুতরাং মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি উনার এই অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজীদদ মুবারক দ্বারা শত শত বছর ধরে জমে থাকা সমস্ত ইখতিলাফ মিটিয়ে দিয়েছেন এবং তিনি অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, প্রকৃতপক্ষে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হচ্ছেন ৪ জন। সুবহানাল্লাহ! উনার এই মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক অনন্তকাল জারি থাকবে। ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ এই বিষয়ে কোনো চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করতে পারবে না, টু শব্দ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!

আমরা এই কথা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি যে, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি যেভাবে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বিলদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বছর, মাস, তারিখ, সময় উল্লেখ করেছেন, পৃথিবীর কোনো কিতাবে তা উল্লেখ নেই। পৃথিবীর কেউ কখনো দেখাতেও পারবে না। সুবহানাল্লাহ!

মূলত, এটা হচ্ছে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার একখানা একক মহাসম্মানিত আখাচ্ছুল খাছ খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক। যা উনার বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ! এর মাধ্যমেই প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক যে, তিনি প্রায় দেড় হাজার বছর পর তাশরীফ মুবারক এনে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বছর, মাস, তারিখ, সময় উল্লেখ করলেন। অথচ এর আগে এই বিষয়েই কেউ কোনো সুস্পষ্ট ও অকাট্য ফায়ছালা দিতেই সক্ষম হননি যে, প্রকৃতপক্ষে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা কত জন। বরং সকলে ইখতিলাফের মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। আর সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী এক আখাচ্ছুল খাছ সর্বশ্রেষ্ঠ ও বিশেষ নি’য়ামত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে আসছিলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি এই সমস্ত ইখতিলাফকে মিটিয়ে দিয়ে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীকে এক আখাচ্ছুল খাছ সর্বশ্রেষ্ঠ ও বিশেষ নি’য়ামত মুবারক দানে ধন্য করলেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক, সেটা কি কেউ কখনো চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে? কস্মিনকালেও নয়। সুবহানাল্লাহ!

মূলত, মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার যে বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক তা সর্বকালের সর্বযুগের সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার কোটি কোটি গুণ উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় আমরা এতটুকুই বলতে পারি যে, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত এবং তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম মুবারক উনার অধিকারী এবং উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান ইতঃপূর্বে যত মুজাদ্দিদ, ইমাম, মুজতাহিদ, আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এসেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যাঁরা আসবেন উনাদের প্রত্যেকের চেয়ে কোটি কোটি গুণ উপরে। কত উপরে সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

তাই আমাদের জন্য ফরয হচ্ছে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনাকে পেয়ে শুকরিয়া আদায় করে হাক্বীক্বীভাবে ‘ফালইয়াফরহূ’ তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে অনুসরণ করে উনার জন্য সমস্ত কিছু কুরবান করে দেয়া। তবেই আমরা হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারবো।

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে কবূল করুন। আমীন!


-আল্লামা মুহম্মদ আল আমীন

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম