হুসনুল খুলুক্ব, হুলুওউল কালাম, হামিলু লিওয়ায়িল হামদ্, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম মুবারক যমীনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ

সংখ্যা: ২১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ৭ম দিন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি উনার আক্বীক্বা মুবারক-এর অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি সমস্ত কুরাইশগণকে এই সুমহান আক্বীক্বা মুবারক-এ আসার দাওয়াত দিলেন। এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক রাখার ফিকির করলেন হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কুরাইশগণ উনারা বললেন, হে আবুল হারিস হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম! আপনি এ নাম মুবারক কিভাবে রাখার ফিকির করেছেন? যে নাম মুবারক আপনার পূর্ব পুরুষ কিংবা আপনার সম্প্রদায়ের কেউ কোন দিন রাখেননি? সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি আমার সম্মানিত পৌত্র উনার এ নাম মুবারক রাখার ফিকির করেছি এবং রেখেছি এজন্য যে, যাতে মহান আল্লাহ পাক উনার সমস্ত সৃষ্টি উনার ছানা-ছিফত ও প্রশংসা করে। সুবহানাল্লাহ! (ফতহুল বারী, সীরাতুল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর পূর্বে একটি মুবারক স্বপ্ন দেখেন; যা উনার এ নাম মুবারক রাখার একটি কারণ ছিল। তিনি দেখেন যে, উনার পিঠ মুবারক থেকে একটি শিকল বের হয়েছে যার একটি মাথা আসমানে, একটি মাথা যমীনে, একটি মাথা পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত এবং আরেকটি মাথা পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই শিকলটি একটি বৃক্ষে পরিণত হলো। যার প্রতিটি পাতা সূর্যের আলোর চেয়ে সত্তরগুণ বেশি আলোকোদ্ভাসিত ছিল। পূর্ব ও পশ্চিম তথা সমস্ত মানুষ ওই বৃক্ষের ডালের সাথে জড়িয়ে ছিল। কুরাইশদের কিছু লোক তারা ডাল আঁকড়িয়ে ধরেছিলেন আর কুরাইশদের কিছু লোকজন ওই বৃক্ষটি কাটার ইচ্ছা করছিল। তারা যখন এ উদ্দেশ্যে বৃক্ষের নিকটবর্তী হলো, তখন খুবই সুন্দর সুঠাম দেহের অধিকারী এক যুবক এসে তাদের সরিয়ে দিচ্ছেলেন।

স্বপ্নের ব্যাখ্যা কারকগণ এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে যে, আপনার বংশ মুবারক-এ এমন একজন সুমহান রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমন করবেন, পূর্বপান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্ত তথা সমস্ত জিন-ইনসান উনার অনুসরণ করবে এবং আসমান-যমীন তথা সমস্ত মাখলুক্ব উনার ছানা-ছিফত করবে। এ কারণে সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারক হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাখেন। সুবহানাল্লাহ! (মাদারিজুন নুবুওওয়াত, রউদ্বুল উনফ্, যুরকানী, শরহে মুয়াত্তা ও সীরাতুল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

পাশাপাশি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক রাখার ব্যাপারে স্বপ্ন মুবারক-এ বলা হয়েছিল যে, আপনি গোটা সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, যিনি উত্তম চরিত্র মুবারক-এর অধিকারী, যিনি সৃষ্টির মূল, সকলের সাইয়্যিদ উনাকে রেহেম শরীফ-এ ধারণ করেছেন। কাজেই উনার নাম মুবারক রাখবেন হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

হাদীছ শরীফ-এ এসেছে-

فلما كان اليوم السابع ذبح عنه ودعا له قريشا، فلما اكلوا قالوا يا حضرت عبد الـمطلب عليه السلام : ما سميته؟ قال سميته محمدا صلى الله عليه وسلم، قالوا فما رغبت به عن اسماء اهل بيتك. قال اردت ان يحمده الله فى السماء وخلقه فى الارض.

অর্থ: অতঃপর বিলাদত শরীফ-এর সপ্তম দিনে সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি আক্বীক্বার পশু যবেহ করলেন এবং কুরাইশদেরকে দাওয়াত দিলেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে সকলেই জিজ্ঞাসা করলো, হে হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম! এই সন্তান উনার নাম মুবারক কি রেখেছেন? তিনি বললেন, উনার নাম মুবারক রেখেছি হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তারা বললো, পরিবারের নাম না রাখার কারণ কি? সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি চাই যে, আসমানে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং যমীনে জিন-ইহসান উনার ছানা-ছিফত ও প্রশংসা করুক।” সুবহানাল্লাহ! (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৮৫ পৃষ্ঠা, বাইহাক্বী শরীফ, ইবনে আসাকীর)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাম মুবারক হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা সৃষ্টির পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিল। পবিত্র কুরআন শরীফ-এর অনেক স্থানেই উনার নাম মুবারক উল্লেখ রয়েছে।

যেমন ‘সূরা আলে ইমরান’-এর ১৪৪ নং আয়াত শরীফ-এ

وما محمد  الا رسول

অর্থ : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রসূল ব্যতীত কেউ নন।

‘সূরা আহযাব’-এর ৪০ নং আয়াত শরীফ-এ

ما كان محمد ابا احد من رجالكم ولكن رسول الله وخاتم النبيين

অর্থ : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের (প্রাপ্ত বয়স্ক) কোন পুরুষের পিতা নন। বরং তিনি হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল এবং শেষ নবী।

‘সূরা মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ২ নং আয়াত শরীফ-এ

وامنوا بما نزل على محمد وهو الحق من ربهم

অর্থ: ঈমানদাররা তাদের রব তা‘আলা উনার তরফ থেকে যে সত্য (দ্বীন) হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি  নাযিল হয়েছে তা বিশ্বাস করে।

‘সূরা ফাতহ’-এর ২৯ নং আয়াত শরীফ-এ

محمد رسول الله

অর্থ: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল।

কাজেই, হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাম মুবারক সৃষ্টির পূর্ব থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক হিসেবে মনোনীত ছিল।

স্মরণীয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের পূর্বে এই অনন্য নাম মুবারক-এর সন্ধান কেউ খুঁজে পায়নি। আহলে কিতাবধারীরা যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক সম্পর্কে তাদের আসমানী কিতাব থেকে অবগত হলো তখন তাদের মধ্যে কোন কোন গোত্রের কেউ কেউ তাদের সদ্যজাত শিশুর নাম ‘মুহম্মদ’ রাখতে শুরু করলো। তাদের আশা ছিল যে, তাদের ‘মুহম্মদ’ নামের সন্তানটি যেন হয় আখিরী নবী বা শেষ নবী। (মাদারিজুন নুবুওওয়াত)

محمد (কালিমা) শব্দটির মূলবর্ণ-  حمد ‘হামদ’ শব্দটি প্রশংসনীয়, পছন্দনীয়, গুণ সম্পন্ন, পরিপূর্ণ মর্যাদা সম্পন্ন, ফযীলতপূর্ণ এবং সৌন্দর্যম-িত ইত্যাদি অর্থে এসে থাকে, আর تحميد মাছদার থেকে محمد (কালিমা) বা শব্দ মুবারক গৃহীত। বাবে تفعيل যার ব্যবহার কেবল পরিপূর্ণতা ও পুনরাবৃত্তির জন্য হয়ে থাকে। সুতরাং محمد শব্দ মুবারক তাহমীদ শব্দের مفعول বা কর্মকারক। ফলে এর অর্থ হবে ওই পবিত্র ও গুণসম্পন্নজাত, যার প্রকৃত, পরিপূর্ণতা এবং সৌন্দর্যের কারণে শ্রদ্ধা ও মুহব্বতের সাথে যা বারবার উচ্চারণ করা হয় অর্থাৎ যিনি পরম প্রশংসিত।

উল্লেখ্য যে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার احمد ‘আহমদ’ নাম মুবারক-এর তাহক্বীক হলো- উক্ত কালিমা বা শব্দ মুবারকখানা واحد مذكر বাহাছ اسم تفضيل থেকে নেয়া হযেছে। এ হিসেবে অর্থ মুবারক হচ্ছে সর্বোত্তম তথা সর্বাপেক্ষা বা সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশংসাকারী। আর তিনিই সর্বাপেক্ষা বা সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশংসাকারী এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। কারণ মহান আল্লাহ পাক উনাকে সমস্ত সৃষ্টির উপর সর্বোচ্চ সম্মান হাদিয়া করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন একক খালিক্ব মালিক হিসেবে বেমেছাল প্রশংসিত অনুরূপভাবে মাখলুক্ব মাঝে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একক। মাখলুক্ব হিসেবে তিনি বেমেছাল প্রশংসিত। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার উম্মতগণ মহান আল্লাহ পাক উনার সবচেয়ে বেশি প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করেন। এজন্য পূর্ববতী হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমনের সুসংবাদ ‘আহমদ’ কালিমা বা শব্দ দ্বারা প্রদান করেছেন। যেমন, এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ উল্লেখ আছে-

قال عيسى بن مريم يبنى اسرائيل انى رسول الله اليكم مصدقا لـما بين يدى من التورة ومبشرا برسول ياتى من بعدى اسمه احمد.

অর্থ : æহযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হে বনী ইসরাঈল! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। আমার পূর্ববর্তী তাওরাত শরীফ-এর আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূল উনার সুসংবাদ দানকারী যিনি আমার পরে আগমন করবেন; উনার নাম মুবারক হচ্ছে ‘আহমদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (সূরা ছফ : আয়াত শরীফ ৬)

উল্লেখ্য, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লক্ষ কোটি নাম মুবারক রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ ও প্রধানতম নাম মুবারক হচ্ছে হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যা উনার দাদা সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি উনার বিলাদত শরীফ-এর সপ্তম দিন আক্বীক্বা করে আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করেছিলেন।

প্রসিদ্ধ ও বিশ্ব বিখ্যাত জীবনী মুবারক-এর কিতাব ‘মাদারিজুন নুবুওওয়াত’-এর মধ্যে রয়েছে, ‘আল্লাহ’ যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার জাতিবাচক নাম মুবারক, তেমনই হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম নাম মুবারক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জাতিবাচক নাম মুবারক। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক দিয়েছেন মহান আল্লাহ পাক তিনি। যা সৃষ্টির শুরু থেকে নির্ধারিত ছিল। তবে বিলাদত শরীফ-এর সপ্তম দিন সে নাম মুবারক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। সুবহানাল্লাহ!

আর বিশেষ করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতামহ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমেই সেই পবিত্র নাম মুবারক-এর আনুষ্ঠানিক আয়োজন হয়।

উল্লেখ্য যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করেই محمد হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক উনাকে হাদিয়া করেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, ‘নূরে মুহম্মদী’ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামক কিতাবের ৪৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما قال لـما اراد الله تعالى خلق الـمخلوقات قبض قبضة من نوره ثم قال لها كونى حبيبى محمدا صلى الله عليه وسلم فطاف نور محمد صلى الله عليه وسلم بالعرش قبل حضرت ادم عليه السلام بخمس مائة عام وهو يقول الحمد لله فقال الله تعالى من اجل ذلك سميتك محمدا صلى الله عليه وسلم

অর্থ : সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন মাখলুক্বাত সৃষ্টি করার ইচ্ছা পোষণ করলেন অর্থাৎ যখন আল্লাহ পাক তিনি প্রকাশ হওয়ার ইচ্ছা করলেন তখন তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে আমার হাবীব! আপনি আমার হাবীব হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হয়ে যান। তিনি তাই হয়ে গেলেন। অতঃপর নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টির পাঁচশত বৎসর পূর্বে আরশে আ’যিমে তাওয়াফ করেছিলেন এবং বলেছিলেন الحمد لله সেই সময় উনার যিকির মুবারক ছিল এটাই। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন,

من اجل ذلك سميتك محمدا صلى الله عليه وسلم

হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই জন্যই তো আমি আপনার নাম মুবারক হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রেখেছি। সুবহানাল্লাহ! (নুজহাতুল মাজালিস, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

উক্ত হাদীছ শরীফ ছাড়াও অনেক হাদীছ শরীফ রয়েছে যার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জাতি নাম মুবারক হচ্ছে হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম; যা উনার দুনিয়াতে আগমনের পূর্বেই প্রকাশ করা হয়েছে এমনকি এই নাম মুবারক সম্পর্কে সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিস সালামসহ, ফেরেশতাকুল আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই অবগত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার বিশেষ দু’খানা নাম মুবারক (মুহম্মদ ও আহমদ) যা আসমানবাসী ও যমীনবাসী তথা কায়িনাতের সকলেরই জানা রয়েছে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত ‘আহমদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাম মুবারক-এর আসমানবাসী সকলেই চিনেন। আর যমীনবাসী হযরত ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাম মুবারক-এ চিনে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!

-মুফতীয়ে আ’যম আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম