৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রবর্তনের কথা বলা হবে কিন্তু ৭২-এর সংবিধানে উল্লিখিত ‘মদ ও জুয়া নিষিদ্ধ’ পুনঃপ্রবর্তনের কথা বলা হবে না এসব স্ববিরোধী ও দ্বিমুখী প্রবণতা চলতে পারে না। ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশে কোনো মতেই মদ চলতে পারে না।

সংখ্যা: ২১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রশংসার সবকিছুই মহামহিম রাব্বুল আলামীন উনার জন্য। সাথে ছলাত ও সালাম-এর সবই রহমতুল্লিল আলামীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ঘিরে আবর্তিত ও ব্যাপ্ত।

একটি পত্রিকায় গত কয়েকদিনে æহাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, এনবিআর নির্বিকার, শুল্কমুক্ত মদে সাগর চুরি, দিনে একজন বিদেশী মদপান করছে ৭ লিটার, বছরে আমদানি সাড়ে ১৭ লাখ লিটার। ৮১ কোটি টাকার মূল্য দেখিয়ে ৫শ’ কোটি টাকার আমদানি” শীর্ষক খবর এবং তার প্রতিক্রিয়ায় এনবিআর-এর দৃষ্টিভঙ্গি, ‘মদ বিক্রি করতে লাইসেন্স দিবে এনবিআর’- এ বক্তব্য তথা পদক্ষেপের প্রতি বিশেষভাবে দৈনিক আল ইহসান-এর দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।

দেশ একদিকে মদে সয়লাব হচ্ছে অপরদিকে এনবিআর তা ঠেকাতে না পেরে খোদ মদ আমদানিকেই জায়িয করে দিচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! দেশটা যেন ‘হবু চন্দ্রের গবু রাজার’ দেশ হয়ে গেছে।

জানা গেছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশীয় মদ বিক্রির লাইসেন্সপ্রাপ্ত বার, কথিত অভিজাত ক্লাব, বিলাসী পাঁচতারা হোটেল থেকে শুরু করে গুলশান-বনানীর অধিকাংশ রেস্টুরেন্টে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে শুল্কমুক্ত তরল মাদক। দেশের সর্বত্র সয়লাব হয়ে গেছে কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরতদের জন্য আনা বিদেশী মদ-বিয়ারে। কূটনৈতিক বন্ডেডওয়্যার হাউসগুলো বিভিন্ন কৌশলে পাচার করছে শত শত কোটি টাকার শুল্কমুক্ত মদ-বিয়ার। সরকারি পর্যটন কর্পোরেশনের শুল্কমুক্ত বিপণি থেকেও অবাধে পাচার হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও ঢাকা কাস্টমস হাউস দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আসা তরল মাদক সরাসরি বারগুলোতে চলে যাচ্ছে। বছরের পর বছর এ অপকর্ম চললেও দেখার কেউ নেই। সরকারি যেসব দফতর এসব নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করবে তারাও না দেখার ভান করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (নারকোটিক্স), কাস্টমস, পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী প্রতিটি সংস্থা ও এজেন্সির প্রত্যক্ষ যোগসাজশে এভাবে বছরের পর বছর ধরে চলছে উচ্চ মুনাফার তরল মাদক ব্যবসা।

বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ শুল্কের পানীয় পণ্য হচ্ছে মদ ও বিয়ার। এর উপর বিভিন্ন ধরনের শুল্ক মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৪০০ শতাংশ আমদানি ও সম্পূরক শুল্ক কার্যকর। এর মধ্যে কাস্টম ডিউটি ২৫ শতাংশ, রেগুলেটরি ডিউটি ১৫ শতাংশ, সম্পূরক শুল্ক ৩৫০ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ এবং অগ্রিম আয়কর ৩ শতাংশ। এর উদ্দেশ্য ছিল বিদেশী মদ-বিয়ার পানাহার নিরুৎসাহিত করা। কিন্তু তা হয়নি। আর এভাবে কী হয়? কখনোই হবার নয়। বরং উল্টো শুল্ক ফাঁকি বেড়ে গেছে ভয়াবহভাবে। শুল্কমুক্ত মদ-বিয়ারে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। যে কোনো জেলা-উপজেলা এবং রাজধানী ঢাকায় দেদারছে মিলছে বিদেশী মদ-বিয়ার। পাওয়া যাচ্ছে নামমাত্র মূল্যে। যে মদের দাম শুল্কসহ ৪ হাজার টাকারও বেশি পড়ে, তা পাওয়া যাচ্ছে এর অর্ধেকেরও কম মূল্যে। তাহলে প্রশ্ন এত কম মূল্যে বাজারে মদ-বিয়ার আসছে কোথা থেকে? রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অনুমোদিত-অননুমোদিত বারগুলোতে উপচেপড়া ভিড় প্রতিনিয়তই বাড়ছে। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার বোতল মদ ও এর দ্বিগুণেরও বেশি বিয়ার। কারা সরবরাহ করছে উচ্চ শুল্কের মদ-বিয়ার অনেকটা পানির দামে? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালোবাজারে আসা মদের প্রধান উৎস হচ্ছে কূটনৈতিক বন্ডেড ওয়্যার হাউস। বিদেশী দূতাবাস ও মিশনের কূটনীতিক এবং জাতিসংঘ, কথিত দাতা দেশ এবং সংস্থায় কর্মরত বিদেশী নাগরিক প্রিভিলেজড (সুবিধাভোগী) পারসনদের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধায় মদ বিক্রি করাই এসব ওয়্যার হাউসের একমাত্র কাজ। এর বাইরে মদ বিক্রি করা শুধু দ-নীয় অপরাধই না, এতে লাইসেন্স বাতিলের ঝুঁকি থাকে। তারপরও বেপরোয়াভাবে উচ্চ শুল্কের মদ-বিয়ার বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রায় প্রকাশ্যে। বছরের পর বছর এ অপকর্ম চললেও দেখার কেউ নেই।

তথ্য অনুযায়ী, বার্ষিক প্রাপ্যতা ডলার মূল্যে নির্ধারিত থাকায় বন্ডেড ওয়্যার হাউসগুলো ব্যাপক আন্ডার ইনভয়েসিংয়ে মদ আমদানি করছে। শুধু তাই নয়, আমদানি করা মদের মূল্য বহুগুণ কম দেখিয়ে পরিমাণে অনেক বেশি পণ্য খালাস করে নিচ্ছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০-১১ অর্থবছরে দেশের ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউসগুলো ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৩ লিটার মদ ও বিয়ারের আমদানি মূল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশী মুদ্রায় মাত্র ৮১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। কিন্তু হিসাব করে দেখা গেছে, আমদানিকারকদের আনা এসব মদের মূল্য ৫শ’ কোটি টাকারও বেশি।

বলাবাহুল্য, কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট পত্রিকাই বিদেশী মদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট ছেপে যাচ্ছে।

তবে ‘যুগান্তর’ তথা যুমনা গ্রুপের এহেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ পরিবেশনের মূল কারণ হচ্ছে তারাই বাংলাদেশের একমাত্র বিয়ার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের উৎপাদনকৃত পণ্য (ঐঁহঃবৎ) হান্টার বিয়ার দেশে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে যুবক, ছাত্র, কৃষক, পেশাজীবী তথা সর্বসাধারণকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো ৯৭ ভাগ মুসলমানের রাষ্ট্রে হারাম বিয়ারের উৎপাদন ও সর্বসাধারণের কাছে সরবরাহ কতখানি যৌক্তিক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সকল রকম বিদেশী মদ ও এ জাতীয় পদার্থ আমদানি বন্ধ করার অভিপ্রায়ে তথা হান্টার বিয়ারকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে যুগান্তর তথা যুমনা গ্রুপের কিছুদিন পর পর এ ধরনের তথাকথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এটা সকলেরই জানা।

উল্লেখ্য, পত্রিকাটির মালিক নিজেই মদের কারখানার মালিক হওয়ায় তার উৎপাদিত দেশী মদ অবাধে বিক্রির পক্ষেই মূলত রিপোর্ট করে যাচ্ছে।

প্রদত্ত রিপোর্টে প্রতিভাত হচ্ছে যে, বিদেশী মদ বিক্রিটাই হচ্ছে একমাত্র অপরাধ। কিন্তু দেশী মদ দেদারছে বিক্রি হলেও তাতে অসুবিধা নেই। (নাঊযুবিল্লাহ)

এদিকে ২০১১ সালকে বিদায় জানাতে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার প্রতিটি বিলাসী হোটেল ও ক্লাব আয়োজন করেছে উন্মাতাল থার্টিফার্স্ট নাইট। এসব বেলেল্লাপনা আনন্দ উল্লাসের শুরু ও শেষ হচ্ছে মদ পান করে। থার্টিফার্স্টকে বিদায় জানাতে এজন্য শত শত লিটার অতিরিক্ত মদ-বিয়ার মজুদ করা হয়েছে।

অথচ এদেশের ৯৭ ভাগ অধিবাসী মুসলমান। ইসলাম এদেশের রাষ্ট্রধর্ম। মদ ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম। এবং ইসলামে কাট্টা হারাম এই অনুভূতিতেই ৭২-এর সংবিধানে বঙ্গবন্ধু সন্নিবেশ করেছিলেন। আজ ৭২-এর সংবিধানের পুনঃপ্রবর্তনের কথা বলতে অনেক মহল সোচ্চার। কিন্তু তারা যে অর্থে সোচ্চার তা হলো- ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃপ্রবর্তনে। কিন্তু ৭২-এর সংবিধানে শুধু ধর্মনিরপেক্ষতারই উল্লেখ ছিল না। মদ ও জুয়া আক্ষরিকভাবে নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু এই নিষিদ্ধকরণের কথা ৭২-এর সংবিধানে পুনঃপ্রবর্তনকারী কেউ উল্লেখ করছে না। পাশাপাশি তারা ৭৫-এর পরবর্তী শাসক তথা জিয়াউর রহমানের কঠোর সমালোচনা করে। কিন্তু জিয়াউর রহমানই মদের অনুমতি দিয়েছিল। গত টার্মে মইত্যা রাজাকারও মদের কারখানার অনুমতি দিয়েছিল।

প্রসঙ্গত, তাই প্রশ্ন উঠে- জিয়াউর রহমান ও মইত্যা রাজাকারের কঠোর সমালোচনা হবে কিন্তু তাদের করে যাওয়া হারাম কাজ কেন অব্যাহত রাখা হবে?

পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে ‘জাতির জনক’ মানা হবে কিন্তু তার নিষিদ্ধ করা মদ ও জুয়াকে না করা হবে না; তা কেন? এসব কী স্ববিরোধী, দ্বিমুখী প্রবণতা তথা মুনাফিকী নয়? ইসলামে মুনাফিকী ও মদ অত্যন্ত নিকৃষ্ট। এর অবসান অতি জরুরী।

মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই কেবলমাত্র সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ লিসানুল্লাহ

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১