৯১ হাজার কোটি টাকার ঋণে সুদ দিতে হবে ৬৯ হাজার কোটি টাকা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামে- দেশের কাঁধে বিশাল ব্যয়ের বোঝা চাপানো যাবে না। দেশবাসীকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া যাবে না।

সংখ্যা: ২৫৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

রাশিয়ার সাথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য গত ২৬শে জুলাই-২০১৬ ঈসায়ী তারিখে ১ হাজার ১৩৮ কোটি ডলার বা প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার ঋণ নিচ্ছে ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। তবে এজন্য সুদে-আসলে রাশিয়াকে ফেরত দিতে হবে ২০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় রাশিয়ার কাছ থেকে নেয়া ৯১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার শুধু সুদ বাবদই সরকারকে ফেরত দিতে হবে ৬৯ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে রূপপুর পারমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত সচিবদের অভিজ্ঞতা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা জানানো হয়।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ঋণের টাকা প্রদানের ১০ বছর পর থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তা পরিশোধ করতে হবে। ২০২৭ সালের ১৫ মার্চ থেকে ঋণের কিস্তি দেয়া শুরু করতে হবে। প্রতিবছরের ১৫ মার্চ ও ১৫ সেপ্টেম্বর সমপরিমাণ কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার ঋণ, প্রযুক্তি ও বিশেষজ্ঞ সহায়তার উপর নির্ভর করে বিপুল ব্যয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প নিয়ে সচেতন মহলে বহুদিন ধরেই উদ্বেগ বিরাজ করছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আপত্তি মূলত ৪টি কারণে।

প্রথমত, এর বিপুল ব্যয় ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বারবার ব্যয়বৃদ্ধি। ২০০৯ সালে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি ডলার বা ২৪ হাজার থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকার কথা বলা হলেও নির্মাণ শুরু হওয়ার আগেই কয়েক ধাপে ব্যয় বাড়িয়ে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার বা ১ লক্ষ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। এই ব্যয় আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা সঠিকভাবে দরকষাকষি করতে না পারাতেই এই অতিরিক্ত ব্যয়। এখানেই আসে দ্বিতীয় আপত্তির কথা। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ-পরিচালনায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ বা জনবল বাংলাদেশের নেই। তৃতীয় কোনো অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে তত্ত্বাবধানের দায়িত্বও দেয়া হয়নি। ফলে সবকিছুর জন্য রাশিয়ান কোম্পানির উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।

তৃতীয়ত, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনো দুর্ঘটনা হলে প্রলয়ঙ্করী ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয় মানুষ ও পরিবেশের। চেরনোবিল, থ্রি মাইল আইল্যান্ড কিংবা সাম্প্রতিক কুকুশিমা-এর মতো বড় বড় দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে প্রযুক্তির দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থানকারী দেশগুলোতে, যারা নিজস্ব দক্ষতাকে কেন্দ্র করে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছিল। কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তেজষ্ক্রিয় দূষণের ঝুঁকি থাকে। উচ্চ সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যা অনুসরণ করা প্রয়োজন তা বাংলাদেশের মতো দেশে কড়াকড়িভাবে মেনে চলা হবে কিনা সে বিষয়ে সংশয় থাকা স্বাভাবিক।

চতুর্থত, বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কাঁচামাল ইউরেনিয়াম থেকে উৎপন্ন তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য ১০ হাজার বছর পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। বলা হচ্ছে- রাশিয়া এই বর্জ্য বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাবে। কিন্তু এই ধরনের কোনো সুনির্দিষ্ট চুক্তি এখনো স্বাক্ষর হয়নি। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে সুদূর রাশিয়ায় নিরাপদে এই বর্জ্য কিভাবে নিয়মিত পরিবহন করা হবে সে বিষয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দামও খুব কম হবে না। এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল চুক্তি সইয়ের পর জানানো হয়েছিল যে- প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে সাড়ে ৫ টাকা। আবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) হিসাবে রূপপুর কেন্দ্রে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম সাড়ে ৭ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ফলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ নিরাপদ তো নয়ই, সস্তাও নয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস-কয়লা-পানি-বায়ু প্রভৃতি বিপুল প্রাকৃতিক উৎস আমাদের দেশে আছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জটিল প্রক্রিয়া সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান, দক্ষতা-অভিজ্ঞতা ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আয়ত্ত করার আগে ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যয়বহুল প্রকল্প কেন?

সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, এর পেছনে একদিকে আছে শাসকদলের বাহবা নেয়ার প্রচেষ্টা, অন্যদিকে বিশাল বাজেটের এই প্রকল্প থেকে হয়তো অনেকের পকেটে মোটা অঙ্কের কমিশন জমা হবে। কিন্তু চরম ঝুঁকি ও হুমকির মুখে পড়বে জনগণ আর ঋণের বোঝা চাপবে দেশের ঘাড়ে।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, বিদ্যুৎ সঙ্কট সমাধানের জন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের স্বার্থ ও প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের গুরুত্ব মাথায় রেখে স্থালভাগে ও সমুদ্রের গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া হয়, যদি বিদ্যমান গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সংস্কার করে একই পরিমাণ গ্যাস থেকে দ্বিগুণ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো হয়, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়, যদি সৌরশক্তি-বায়ুশক্তি-বায়োগ্যাস ইত্যাদি নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ব্যাবহারে জাতীয় সক্ষমতা তৈরির প্রকল্প হাতে নেয়া হয়, যদি এসব কাজে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা-জনস্বার্থ নিশ্চিত করা হয়, তাহলেই সেসব প্রকল্প গ্রহণ করা যায়। কেবলমাত্র তখনই দেশের মালিক জনগণরা উপকৃত হবে- জনগণের স্বার্থে কাজ হবে একথা বলা যায়।

-আল্লামা মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান, ঢাকা

 

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।