৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে ইসলামবিমুখ মিডিয়া কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো ইহুদীদের অদৃশ্য ইশারায় ইসলামবিরোধী বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের উচিত- দেশের সব মিডিয়া বর্জন করে আলাদাভাবে ইসলামী মিডিয়া গঠন করা।

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

বর্তমান দুনিয়ায় মিডিয়া হচ্ছে প্রচার মাধ্যম এবং অদৃশ্য বাকশক্তির প্রতিনিধিত্বকারী। মিডিয়ারই অংশ হচ্ছে সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, ইলেক্ট্রনিক্স সেন্টার ও চ্যানেল ইত্যাদি। বর্তমানে মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। সারাবিশ্বে কোটিরও বেশি মিডিয়া রয়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশেও কয়েক হাজার মিডিয়া রয়েছে। কিন্তু বলার বিষয় হলো- বাংলাদেশের মিডিয়া বিশ্বের অন্যান্য দেশের মিডিয়াগুলোর মতো নয়।

বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ। বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ জনগণ মুসলিম। বাংলাদেশের সরকার নিজেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সেবক হিসেবে দাবি করে থাকে। বাংলাদেশে ১০ লাখেরও বেশি মসজিদ রয়েছে। যেখানে প্রতি ওয়াক্তের হিসেবে কোটি-কোটিবার পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও বাণী প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের ইসলামী সমাজ এবং জনগণের ভাবধারার পুরোপুরি বিপরীত দেশের মিডিয়াগুলো। এককথায় বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ভাবধারা এবং দেশের কোটি কোটি মুসলিমদের সম্পূর্ণ বিপরীতে। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো কোনো সময় দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার স্বপক্ষের কোনো কিছু হাইলাইট বা ফলাও করছে না এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি সম্মান এবং একত্মতা প্রকাশ করছে না। যা কিছু উদাহরণের মাধ্যমেই বোঝানো সম্ভব।

বলা যায়, সারাদেশে ১০ লাখ মসজিদ বিশেষ করে দেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি জুমুয়াহ, ৫ ওয়াক্ত নামায, ঈদের জামায়াত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিশাল জনসমাবেশ ঘটে থাকে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ বিশেষ দিনগুলোর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হলো- অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ, পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর শরীফ, পবিত্র লাইলাতুল মি’রাজ শরীফ, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আদ্বহা শরীফ, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ। কিন্তু দেখা গেছে, কোনো সময়ই এই বিষয়গুলো বাংলাদেশের মিডিয়ায় স্থান পায়নি। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো সবসময় দেশের ইসলামী ভাবধারাকে অবহেলা এবং অবজ্ঞা করে এসেছে।

কিন্তু এর বিপরীতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী, সমাজ বিরোধী এবং নৈতিকতা বিরোধী সমস্ত বিষয়গুলো ফলাও করছে এবং জনমনে তার ব্যপ্তি ঘটানোর অপচেষ্টা করছে। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার কোনো বিষয় সংযুক্ত থাকে না, কিন্তু অশ্লীলতা আর বেহায়াপনাসম্বলিত সর্বপ্রকার ঘটনা ও সংবাদ দিয়ে ভরপুর থাকে। দেশের কোথায় কোন অভিনেত্রী, অপসংস্কৃতিবাদীরা কি বলেছে সেগুলো বাংলাদেশের মিডিয়াতে স্থান পাচ্ছে। বর্তমান যুগের সেলিব্রেটি  নামধারীদের কে কোথায় যাচ্ছে, কি খাচ্ছে, কি করছে ইত্যাদির দিকে বাংলাদেশের মিডিয়া সবসময়ই তৎপর দৃষ্টি রাখছে। কোথায় কোন গায়ক হারাম গান গাইতে গাইতে মৃত্যুতে ঢলে পড়েছে, বিজাতীয় সংস্কৃতি পহেলা বৈশাখে অমঙ্গলযাত্রা বের করেছে, ভারতের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বাংলাদেশে আসছে ইত্যাদি বিষয়ে মিডিয়া আজ মুখর ও সক্রিয়। যা স্পষ্টভাবে দেশের ভাবধারা তথা ইসলামী ভাবধারার সাথে সম্পূর্ণরূপে সাংঘর্ষিক।

শুধু যে সাংস্কৃতিকভাবে মিডিয়া দেশের ইসলামী ভাবধারার বিপরীতমুখী তাই নয়, সেইসাথে বাংলাদেশের মিডিয়া উল্টো পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধিতা করে যাচ্ছে। পহেলা বৈশাখের মতো একটি পূজাকে যারা বৈধ করে কুফরীমূলক ফতওয়া দিচ্ছে তাদেরকেই মিডিয়া ফলাও করছে, দেশের ভেতর যেসব মুক্তমনা নামধারী নাস্তিক্যবাদীরা আজান বন্ধ, বোরকা নিষিদ্ধসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার তাহযীব-তামাদ্দুন নিয়ে যেসব বিদ্বেষিতামূলক কর্মকা- পরিচালনা করছে, বাংলাদেশের মিডিয়া পজেটিভভাবে সেগুলো নিয়ে নিউজ ও প্রতিবেদন ছাপাচ্ছে। কুসংস্কারবাদীদের হোলিপূজার মতো একটি অপসংস্কৃতিকে বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য বৈধভাবে উপস্থাপন করছে মিডিয়া। সবচেয়ে উদ্বেগ আর ক্ষোভের বিষয় হলো, বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পবিত্র সুমহান মহাপবিত্র শান মুবারকে কটূক্তি করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। যা বাংলাদেশের মতো দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সারাবিশ্বের মিডিয়াকে বর্তমানে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রণ করছে কুখ্যাত ইহুদীরা। আর এর পেছনে প্রধান কারণ হলো, এই মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বের বুক থেকে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে তারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। এসব মিডিয়াকে চালানোর জন্য ইহুদীরা তাদের ব্যবসায়ীদের ৯০ শতাংশ অর্থই ব্যয় করছে। বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের প্রধান প্রধান মিডিয়াগুলো ইহুদীরা কব্জা করে রেখেছে। মুসলিম বিশ্বের সবগুলো দেশের মিডিয়াগুলোকে ইহুদীরা নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে স্বদেশীয় দালালদের মাধ্যমে। আর সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোও সরাসরি ইহুদীদের হাতের ইশারায় পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। বাংলাদেশের ভেতর মিডিয়া রীতিমত সন্ত্রাসীপনা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বলতে হয়, বাংলাদেশের মিডিয়া যে শুধু নিজস্বভাবে দেশের ইসলামী ভাবধারার বিপরীতে চলছে সেটাই নয়, সেইসাথে তারা বাইরে থেকে অপমিডিয়াকে দেশের ভেতর প্রমোট করছে। যার একটি বড় উদাহরণ হলো ভারতীয় মিডিয়ার এদেশীয় বিস্তার। ভারতীয় বিভিন্ন অপসংস্কৃতি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এদেশীয় মিডিয়ার ছদ্মাবরণে। আর এর ফলে মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে হিন্দুয়ানী এবং হিন্দুত্ববাদ প্রবেশ করছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর একের পর এক আঘাত হানছে।

পরিশেষে বলতে হয়, যখন বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো দেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় দ্বীন- পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্পূর্ণ বিপরীতে, তখন বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে- এসব অপমিডিয়ার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য দেশে আলাদাভাবে শত শত ইসলামী মিডিয়ার সৃষ্টি করা। বাংলাদেশের মুসলমানদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা। মুসলিমবিশ্ব বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার কাঠামো পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলোক একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গণমাধ্যম বিষয়ক শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিতে হবে। বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলিম; যাদের ভাতৃত্ববোধ প্রকট ও নিগুঢ় করে একত্রিত হয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে যে- বাংলাদেশে কোনো ইসলামবিরোধী মিডিয়া থাকতে পারে না। মুসলিম অধ্যুষ্যিত এদেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াই থাকবে। বিধর্মীর কুটচালের অংশবিশেষ আল-জাজিরা, সিএনএন, এবিসি, বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স ইত্যাদি ইত্যাদি মিডিয়াগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এ দেশেও সম্মানিত ইসলামী আদর্শের আলোকে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী মিডিয়া গঠন করতে হবে। আর তাতেই দেশের সর্বত্র প্রতিফলিত হবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ এবং চেতনা। পদদলিত হবে সর্বপ্রকার ইসলামবিদ্বেষী অপমিডিয়া।

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।