সংখ্যা: ২৭৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার গুরুত্ব-তাৎপর্য এবং বেমছাল ফযীলত মুবারক (১ম পর্ব)

 

 

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّكَ لَعَلـٰى خُلُقٍ عَظِيْمٍ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই আপনি সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ক্বলাম শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,

قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُـحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِـىْ يُـحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ.

অর্থ: “(আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত মুবারক করে থাক, তাহলে আমার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ কর। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলে ‘ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)

মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের রেযামন্দি ও সন্তুষ্টি মুবারক এবং ইহকাল-পরকালে নাজাত ও হাক্বীক্বী কামিয়াবী লাভের একমাত্র পথ হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুকসরণ-অনুকরণ। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুকসরণ-অনুকরণ করা ব্যতীত কেউ কস্মিনকালেও মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের রেযামন্দি ও সন্তুষ্টি মুবারক এবং ইহকাল-পরকালে নাজাত ও হাক্বীক্বী কামিয়াবী লাভ করতে পারবে না। তাই সমস্ত জিন-ইনসানের জন্য ফরয হচ্ছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করা। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার গুরুত্ব-তাৎপর্য এবং বেমছাল ফযীলত মুবারক তুলে ধরা হলো-

১. যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নাত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবেন, উনারা সম্মানিত হিদায়াত মুবারক লাভ করবেন:

এ সম্পর্কে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَاِنْ تُطِيْعُوْهُ تَهْتَدُوْا.

অর্থ: “আর যদি তোমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করো, তাহলেই তোমরা সম্মানিত হিদায়াত মুবারক লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪)

হযরত আবূ উমামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

فَمَنْ اَخَذَ بِسُنَّتِـىْ فَقَدِ اهْتَدٰى وَمَنْ تَرَكَهَا ضَلَّ.

অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবেন, তিনি অবশ্যই সম্মানিত হিদায়াত মুবারক লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক তরক করবে, ছেড়ে দিবে, সে গোমরাহীতে নিমজ্জিত হবে, পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত্ ত্ববারানী ৭/২৫২, মাজমা‘উয্ যাওয়াইদ ২/৩০৭ ইত্যাদি)

২. যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবেন, উনাদেরকে কুদরতময়ভাবে গোমরাহী থেকে হিফাযত করা হবে:

এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّـىْ قَدْ خَلَّفْتُ فِيْكُمْ مَا لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُـمَا مَا اَخَذْتُـمْ بِـهِمَا اَوْ عَمِلْتُمْ بِـهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّتِـىْ وَلَنْ تَفَرَّقَا حَتّٰـى يَرِدَا عَلَىَّ الْـحَوْضَ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিঃসন্দেহে অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক উনাদেরকে আঁকড়ে ধরে রাখবে অথবা উনাদের উপর আমল করবে, ততদিন পর্যন্ত কস্মিনকালেও তোমরা গোমরাহ হবে না, পথভ্রষ্ট হবে না। সেই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হচ্ছেন, (এক) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং (দুই) আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক কখনোই পৃথক হবেন না। অবশেষে উনারা আমার সাথে হাউযে কাউছারে মিলিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ১০/১১৪)

অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّــىْ قَدْ خَلَّفْتُ فِيْكُمْ مَا لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُـمَا اَبَدًا مَا اَخَذْتُـمْ بِـهِمَا اَوْ عَمِلْتُمْ بِـهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّتِـىْ فَلَنْ يَّتَفَرَّقَا حَتّٰـى يَرِدَا عَلَىَّ الْـحَوْضَ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিঃসন্দেহে অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক উনাদেরকে আঁকড়ে ধরে রাখবে অথবা উনাদের উপর আমল করবে, ততদিন পর্যন্ত কস্মিনকালেও তোমরা গোমরাহ হবে না, পথভ্রষ্ট হবে না। সেই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হচ্ছেন, (এক) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং (দুই) আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক কখনোই পৃথক হবেন না। অবশেষে উনারা আমার সাথে হাউযে কাউছারে মিলিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহ্লিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ্ ১/৮৯)

অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّــىْ قَدْ خَلَّفْتُ فِيْكُمْ شَيْئَيْـنِ لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُـمَا اَبَدًا مَا اَخَذْتُـمْ بِـهِمَا وَعَمِلْتُمْ بِـهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّتِـىْ وَلَنْ يَّتَفَرَّقَا حَتّٰـى يَرِدَا عَلَىَّ الْـحَوْضَ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিঃসন্দেহে অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক উনাদেরকে আঁকড়ে ধরে রাখবে এবং উনাদের উপর আমল করবে, ততদিন পর্যন্ত কস্মিনকালেও তোমরা গোমরাহ হবে না, পথভ্রষ্ট হবে না। সেই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হচ্ছেন, (এক) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং (দুই) আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক কখনোই পৃথক হবেন না। অবশেষে উনারা আমার সাথে হাউযে কাউছারে মিলিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু মাযাহিবে আহ্লিস সুন্নাহ্ লি ইবনে শাহীন ৪১ নং পৃষ্ঠা, আত্ তারগীব ফী ফাদ্বাইলিল আ’মাল ওয়া ছাওয়াবি যালিক লি ইবনে শাহীন ১৫২ নং পৃষ্ঠা)

অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَلَّفْتُ فِـيْكُمْ شَيْئَيْـنِ لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُـمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّتِـىْ وَلَنْ يَّتَفَرَّقَا حَتّٰـى يَرِدَا عَلَـىَّ الْـحَوْضَ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের জন্য দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক উনাদেরকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, ততদিন পর্যন্ত কস্মিনকালেও তোমরা গোমরাহ হবে না, পথভ্রষ্ট হবে না। আর সেই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হচ্ছেন, (এক) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং (দুই) আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক কখনোই পৃথক হবেন না। অবশেষে উনারা আমার সাথে হাউযে কাউছারে মিলিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানুদ দারাকুত্বনী ৫/৪৪০)

অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّــىْ قَدْ تَرَكْتُ فِيْكُمْ شَيْئَيْـنِ لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُـمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّتِــىْ وَلَنْ يَّتَفَرَّقَا حَتّٰـى يَرِدَا عَلَـىَّ الْـحَوْضَ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিঃসন্দেহে অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক উনাদেরকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, ততদিন পর্যন্ত কস্মিনকালেও তোমরা গোমরাহ হবে না, পথভ্রষ্ট হবে না। আর সেই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হচ্ছেন, (এক) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং (দুই) আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক কখনোই পৃথক হবেন না। অবশেষে উনারা আমার সাথে হাউযে কাউছারে মিলিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ১/৯৩)

অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَرَكْتُ فِـيْكُمْ اَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَـمَسَّكْتُمْ بِـهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

অর্থ: “হযরত ‘আমর ইবনে ‘আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের জন্য দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক উনাদেরকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, ততদিন পর্যন্ত কস্মিনকালেও তোমরা গোমরাহ হবে না, পথভ্রষ্ট হবে না। আর সেই দুখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হচ্ছেন, (এক) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং (দুই) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (তারতীবুল আমালী ১/২০২, জামি‘উ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাদ্ব্লিহী ১/৭৫৫)

উল্লেখ্য যে, সাধারণভাবে মানুষ জেনে থাকে যে, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা মুরসাল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা মারফূ’ এবং তা মুত্তাছিল সনদে বর্ণিত। যা সর্বাধিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত ‘আমর ইবনে ‘আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবেন, উনারা কখনো গোমরাহ্ হবেন না। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে কুদরতময়ভাবে গোমরাহী থেকে হিফাযত করবেন। সুবহানাল্লাহ!

৩. যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করবেন অথবা আঁকড়ে ধরে থাকবেন,  উনারা সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে অবস্থান করবেন:

এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضَرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ كَانَ مَعِـىَ فِـى الْـجَنَّةِ.

অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত আমাকেই মুহব্বত মুবারক করলেন। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত মুবারক করলেন, তিনি আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে অবস্থান করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী, তুহ্ফাতুল আহ্ওয়াযী ৭/৩৭১, জামি‘উল উছূল মা‘য়াত তাহ্ক্বীক্বী ৯/৫৬৭, ক্বাওয়া‘ইদুত্ তাহ্দীছ ১/৫৫, ইমতা‘উল আসমা’ ৩/১৫২, আস সুন্নাহ্ ক্ববলাত্ তাদ্ওয়ীন ইত্যাদি)

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ اَخَذَ بِسُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ فَهُوَ مَعِـىَ فِـىْ الْـجَنَّةِ.

অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরলেন, তিনি মূলত আমাকেই মুহব্বত মুবারক করলেন। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত মুবারক করলেন, তিনি আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে অবস্থান করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মাত্বালিবু ‘আলিয়াহ্ ১৩/১০৫, ইতহাফুল খিয়ারাহ্ ৭/১৪২ ইত্যাদি)

অন্য বর্ণনায় রয়েছে-

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَلْاٰخِذُ بِسُنَّتِـىْ مَعِـىَ فِــىْ حَظِيْرَةِ الْقُدُسِ.

অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরে থাকবেন, তিনি ‘হাযীরাতুল ক্বুদ্স’ নামক সম্মানিত স্থান মুবারক-এ (সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার বিশেষ স্থান মুবারক-এ) আমার সাথে অবস্থান করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল বাদরুল মুনীর ২/৫৯৮, আত্ তালখীছুল হাবীর ফী তাখরীজি আহাদীছির রাফি‘য়িল কাবীর লি ইবনে হাজার আসক্বালানী ১/৩৮৬, আল ইছাবাহ্ ৮/২১৬ ইত্যাদি)

৪. যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবেন, উনাদেরকে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি বিশেষ চারখানা সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক দ্বারা সম্মানিত করবেন:

এ সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ حَفِظَ سُنَّتِـىْ اَكْرَمَهُ اللهُ تَعَالـٰى بِاَرْبَعِ خِصَالٍ اَلْـمَحَبَّةُ فِـىْ قُلُوْبِ الْبَرَرَةِ وَالْـهَيْبَةُ فِـىْ قُلُوْبِ الْفَجَرَةِ وَالسَّعَةُ فِـى الرِّزْقِ وَالثِّقَةُ فِـى الدِّيْنِ.

অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে হিফাযত করবেন, আঁকড়ে ধরে রাখবেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নাত মুবারক উনার উপর ‘আমল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তি উনাকে চারটি স্বভাব মুবারক দ্বারা সম্মানিত করবেন। সুবহানাল্লাহ! (১) নেককার ব্যক্তি উনাদের অন্তরে উনার প্রতি মুহব্বত মুবারক পয়দা করে দিবেন, (২) বদকারদের অন্তরে উনার রো’ব তথা ভয় পয়দা করে দিবেন, (৩) উনার রিযিকে প্রাচুর্যতা দান করবেন, বরকত দান করবেন এবং (৪) উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর অবিচল রাখবেন, ইস্তিক্বামত রাখবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে রূহুল বায়ান ৩/২৬২, তাফসীরে হাক্কী ৭/২৪৫)

৫. যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবেন, উনাদেরকে দুনিয়া এবং আখিরাতের সমস্ত প্রকার বিপদণ্ডআপদ, আযাব-গযব থেকে কুদরতময়ভাবে হিফাযত রাখা হবে:

এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِــىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةٌ لَّا تَـمَسَّهُمْ فِتْنَةَ الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ اَلْمُقِرُّ بِالْقَدَرِ وَالَّذِىْ لَا يَنْظُرُ فِـى النُّجُوْمِ وَالْمُتَمَسِّكُ بِسُنَّتِـىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তিন প্রকার ব্যক্তিত্ব উনাদেরকে দুনিয়া এবং আখিরাতের কোনো ফিতনা (বিপদণ্ডআপদ, আযাব-গযব) স্পর্শ করবে না। (১) যাঁরা তকদীরের উপর বিশ্বাস করেন, (২) যাঁরা তারকা দেখেন না অর্থাৎ নক্ষত্রের প্রভাব বিশ্বাস করেন না এবং (৩) যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ! (জামি‘উল আহাদীছ ১১/৪৮০, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/১১৩৭৮, আল ফিরদাউস ২/৯৬ ইত্যাদি)

৬. যাঁরা বর্তমান ফেতনা-ফাসাদের যামানায় একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরে থাকবেন অথবা জিন্দা করবেন, উনাদেরকে কমপক্ষে একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের সমপরিমাণ ফযীলত মুবারক দান করা হবে:

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ يُّطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيْمًا.

অর্থ: “যে বা যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করবেন, উনারা অবশ্যই বিরাট সফলতা লাভ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহ্যাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৭১)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْاِمَامِ الْاَوَّلِ مِنْ اَهْلِ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَمَسِّكُ بِسُنَّتِـىْ فِـىْ دِيْـنِهٖ فِـىْ الْـهَرْجِ لَهٗ اَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ.

অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি ফিতনা-ফাসাদের সময় সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের ব্যাপারে আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরে রাখবেন, তিনি একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের ফযীলত মুবারক লাভ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল আমালী হাদীছ শরীফ নং- ৫০১)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ تَـمَسَّكَ بِسُنَّتِـىْ عِنْدَ فَسَادِ اُمَّتِـىْ فَلَهٗ اَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ.

অর্থ: “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার উম্মতের ফিতনা-ফাসাদের সময় আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরে রাখবেন, তিনি একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের ফযীলত মুবারক লাভ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আয যুহ্দ লিল বাইহাক্বী ১/২০৭, ২২১, আল কামিল লিইবনে ‘আদী ৪৬০, আল আমালী)

অপর বর্ণনায় রয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَـمَسَّكَ بِسُنَّتِـىْ عِنْدَ فَسَادِ اُمَّتِـىْ فَلَهٗ اَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার উম্মতের ফিতনা-ফাসাদের সময় আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরে রাখবেন, তিনি একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের ফযীলত মুবারক লাভ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আয যুহ্দ লিল বাইহাক্বী ২০৭, আল কামিল লিইবনে ‘আদী ৪৬০, মিশকাত শরীফ, কাশফুল মানাহিজ লিআবিল মা‘য়ালী ১/৪৭, লাওয়াক্বিহিল আনওয়ারিল কুদ্সিয়্যাহ্ ১/৫ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْقَائِمُ بِسُنَّتِـىْ عِنْدَ فَسَادِ اُمَّتِـىْ لَهٗ اَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার উম্মতের ফিতনা-ফাসাদের সময় আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার উপর দায়িম-ক্বায়িম থাকবেন, অবিচল থাকবেন, তিনি একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের ফযীলত মুবারক লাভ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মাদখাল লিল বাইহাক্বী, আল বা‘িয়ছ লিআবী শামাহ্ ১/১৮, মিফতাহুল জান্নাহ্ লিস সুয়ূত্বী ১/১৩)

আল্লামা হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন যে, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা ত্ববারানী শরীফ উনার মধ্যেও রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحْيَا سُنَّتِـىْ عِنْدَ فَسَادِ اُمَّتِـىْ فَلَهٗ اَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার উম্মতের ফিতনা-ফাসাদের সময় আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে জিন্দা করবেন, তিনি একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের ফযীলত মুবারক লাভ করবেন।” সুবহানাল্লাহ!

ফেতনা-ফাসাদের যামানায় একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করলে এতো বেমেছাল ফযীলত মুবারক লাভের অসংখ্য-অগণিত কারণ রয়েছেন। তার মধ্যে একখানা বিশেষ কারণ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَمَسِّكُ بِسُنَّتِـىْ عِنْدَ اخْتِلَافِ اُمَّتِـىْ كَالْقَابِضِ عَلَى الْـجَمْرِ.

অর্থ: “হযরত ‘আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার উম্মতের ইখতিলাফ তথা ফিতনা-ফাসাদের সময় আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরে থাকা, হাতের তালুতে জ্বলন্ত অঙ্গার রাখার ন্যায় অত্যন্ত কঠিন হবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (বাহ্রুল ফাওয়াইদ ১/৪৮৫, আল ফাতহুল কাবীর লিস সুয়ূত্বী ৩/২৪২, নাওয়াদিরুল উছূল ২/৩২৭, জামি‘উল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ২২/১২৬, জাম‘উল জাওয়ামি’ লিস সুয়ূত্বী ১/১৯৯৩৪, আল জামি‘উছ ছহীহিস সুনান ওয়াল মাসানীদ ১/৪৮৫, ফাইদ্বুল ক্বদীর ৬/৩৩৯, আত তাইসীর লিল মানাওই ২/৮৭৯, আত তানওইর ১০/৪৬৫ ইত্যাদি)

অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَاْتِـىْ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ اَلْمُتَمَسِّكُ فِيْهِ بِسُنَّتِـىْ عِنْدَ اخْتِلَافِ اُمَّتِـىْ كَالْقَابِضِ عَلَى الْـجَمْرِ.

অর্থ: “হযরত ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মানুষের উপর এমন একটি সময় আসবে, সে সময়টি হবে আমার উম্মতের ইখতিলাফের সময়। তখন আমার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে দৃঢ়তার সাথে আঁকড়ে ধরে থাকা, হাতের তালুতে জ্বলন্ত অঙ্গার রাখার ন্যায় অত্যন্ত কঠিন হবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (নাওয়াদিরুল উছূল ২/৩২৭, জামি‘উল আহাদীছ ২৩/৪৫৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ লিস সুয়ূত্বী ১২/৭৯৫ ইত্যাদি)

একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক এবং সম্মানিত উহুদ জিহাদ মুবারক-এ যাঁরা শহীদ হয়েছেন, এরূপ একশত সম্মানিত শহীদ উনাদের সমপরিমাণ ফযীলত মুবারক দান করা হবে। সুবহানাল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার যে ফযীলত মুবারক বর্ণনা করা হয়েছে, তা সাধারণভাবে বান্দা-বান্দী, উম্মতদেরকে বুঝানোর জন্য বলা হয়েছে। হাক্বীক্বত হচ্ছেন- সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের সমস্ত আমল যদি এক পাল্লায় রাখা হয়, আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে এক পাল্লায় রাখা হয়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার পাল্লা মুবারকই লক্ষ-কোটি গুণ বেশি ভারি হবেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে বেশি বেশি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা’ তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ছিদ্দীকুর রহমান।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম