সংখ্যা: ২১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

قل لا اسئلكم عليه اجرا الا المودة فى القربى

অর্থ: æহে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন (হে বিশ্ববাসী)! আমি তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাইনা। তবে আমার আত্মীয়-স্বজন উনাদেরকে মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীম করবে।” (সূরা শুরা: আয়াত শরীফ ২৩)

উপরোক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিভিন্ন তাফসীরের কিতাবে বিভিন্ন হাদীছ শরীফ-এর আলোকে বলা হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে মুহব্বত-মা’রিফাত, তায়াল্লুক-নিছবত, হিদায়েত-রহমত, বরকত ইত্যাদি দিচ্ছেন সে জন্য কোন বিনিময় উম্মতের কাছে চাননি। তবে উনার সম্মানিত বংশধরদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার, উনাদের তা’যীম-তাকরীম করার, উনাদের অনুসরণ-অনুকরণ করার তাক্বীদ দিয়েছেন।

আরো উল্লেখ্য, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশ ধারা সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম ও উনার আওলাদদ্বয় হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের মাধ্যমে বিশ্বময় জারী রয়েছে। (তাফসীরে ইবনে হাতেম, ইবনে কাছির, মাযহারী, মারেফুল কুরআন ইত্যাদি)

এই মর্মে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

الحسن والحسين عليهما السلام سيدا شباب اهل الجنة

অর্থ: æহযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনারা হচ্ছেন বেহেশ্তের যুবকদের সাইয়্যিদ বা সর্দার।”

অতএব, যারা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের বংশের বা আওলাদ উনারাই সাইয়্যিদ বা আওলাদুর রসূল।

এই আওলাদুর রসূল বা সাইয়্যিদগণ উনাদের  প্রতি তাযীম-তাকরীম করা, উনাদের খিদমত করা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভূক্ত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, æমহান আল্লাহ পাক উনার কছম! ততক্ষণ পর্যন্ত কোন মুসলমান ব্যক্তির অন্তরে ঈমান দাখিল হবেনা (হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবেনা) যতক্ষণ  সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য আমার বংশধর হওয়ার কারণে কুরাঈশদেরকে মুহব্বত না করবে।” আওলাদুর রসূলগণ কুরাঈশগণের অন্তর্ভূক্ত অর্থাৎ আওলাদুর রসূলগণ উনাদের মুহব্বতই ঈমানের অঙ্গ।” (মুসনাদে আহমদ, ইবনে কাছির)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, æআমি তোমাদের জন্য দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। প্রথমটি হলো, মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব। যার মধ্যে রয়েছে হিদায়েত ও নূর। তোমরা কিতাবুল্লাহ্কে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধর। æতিনি কিতাবুল্লাহ্র প্রতি উৎসাহ প্রদান করলেন। অতঃপর বললেন, æদ্বিতীয়টি হলো, আমার আহলে বাইত বা (আওলাদগণ) বংশধরগণ। উনাদের ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক করছি। উনাদের ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক করছি।” (মুসলিম, মিশকাত)

অন্যত্র সাইয়্যিদুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

تركت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وعترتى اهل بيتى

অর্থঃ æনিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যদি তোমরা তা আঁকড়িয়ে ধর তবে পথভ্রষ্ট হবে না। প্রথমতঃ মহান আল্লাহ পাক-উনার কিতাব ও দ্বিতীয়তঃ আমার বংশধর (আওলাদগণ)।”

আহ্লে বাইত তথা আওলাদুর রসূলগণ উনাদের খুছূছিয়ত, মর্যাদা, মর্তবা, বৈশিষ্ট্য ও ফযীলত সম্পর্কে অন্য হাদীস শরীফে রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, æনিশ্চয়ই আমার আওলাদগণ উনাদের উদাহরণ  হলো হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। যে তাতে প্রবেশ করেছে (অর্থাৎ যে আমার আওলাদগণ উনাদেরকে মুহব্বত করে) সেই নাযাত পেয়েছে।” (সিররুশ শাহাদাতাইন)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, æনিশ্চয়ই আমার আওলাদগণ বণী ইসরাইলের হিত্তাতুন-এর ন্যায়। যারা তা বলেছে (অর্থাৎ যারা উনাদের তাযীম-তাকরীম করেছে) তারা নাযাতপ্রাপ্ত।” (সিররুশ্ শাহাদাতাইন)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন, æতারকারাজী আসমানের নিরাপত্তা দানকারী আর আমার বংশধর বা আওলাদগণ যমীনের নিরাপত্তা দানকারী। সুতরাং যখন আমার আহলে বাইত বা আওলাদগণ (দুনিয়া থেকে) চলে যাবেন তখন দুনিয়াবাসী সকলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।” (মুসনাদে আহমদ, মিশকাত শরীফ, হাশিয়ায়ে মিশকাত)

বিশ্ববাসীর জন্য নিরাপত্তা দানকারী, নাযাত দানকারী, ধ্বংস থেকে রক্ষাকারী, ঈমান-আমল হিফাযতকারী, আওলাদুর রসূলগণকে মুহব্বত করলে তবে মহান আল্লাহ পাক ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি পাওয়া যাবে। এ মর্মে ইরশাদ হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

احبوا الله لـما يغذوكم من نعمة احبونى لحب الله واحبوا اهل بيتى لحبى

অর্থ: æমহান আল্লাহ পাক তোমাদের যে নিয়ামত দান করেছেন তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো। আর আমাকে মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি লাভ করার জন্য। আর আমার আহলে বাইত উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার সন্তুষ্টির জন্য।”

আর তাই অতীতের সকল ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়া-ই-কিরাম মহান আল্লাহ পাক ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য মন প্রাণ উজাড় করে এমনকি সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে আওলাদে রসূলগণ উনাদেরকে মুহব্বত করেছেন, খিদমত করেছেন। æআনোয়ারে আরিফীন” কিতাবে হযরত রবি বিন সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক খিদমতের তা’যীম-তাকরীমের, মুহব্বতের বিরল ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি হজ্জের যাত্রা পথে আওলাদুর রসূলগণ উনাদেরকে মুহব্বত করে, উনাদের দুঃখে ব্যথিত হয়ে আওলাদুর রসূলগণ উনাদের এক অসহায় পরিবারকে সাহায্য করেছিলেন বলে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং উনাকে স্বপ্নযোগে দীদারের মাধ্যমে সু-সংবাদ দান করেছেন।

আওলাদুর রসূলগণ উনাদেরকে বর্ণনাতীত মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শনের নজীর স্থাপন করেছেন ইমামুল আইম্মা, হাকিমুল হাদীস, হযরত ইমাম আবূ হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি একবার বসে দরস দেয়ার সময় মাঝে মাঝে দরস বন্ধ করে বার বার দাঁড়িয়ে এক শিশু যিনি আওলাদুর রসূলগণ উনাদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন উনাকে সম্মান প্রদর্শন করেছেন (সুবহানাল্লাহ্)। আর এর মূল কারণই হচ্ছে উনারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট উনারা মানুষের ঈমান-আমল হিফাযতের উছীলা। উনাদের অনুসরণ-অনুকরণ পথ ভ্রষ্টতা থেকে বাঁচিয়ে রাখবে।

-আল্লামা মুহম্মদ মুফীজুর রহমান

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম