চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৩ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

সংখ্যা: ১৯২তম সংখ্যা | বিভাগ:

বর্তমান সংখ্যার আলোচনা: ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসক গোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলিক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভূঁইফোড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

Real Hizri Calendar Implementation Council Bangladesh নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে। সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে (অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে) তারা ৯০টি খোড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পরে। তারা লিখেছে-

১। আল্লাহ পাক আমাদের ১২টি নতুন চাঁদ দিয়েছেন ১২টি চন্দ্রমাস গণনা করার জন্য।

২। একটি চন্দ্রমাসে একাধিক নতুন চাঁদ থাকতে পারে না।

৩। পূর্ণ জ্যোৎস্না আসে চন্দ্রমাসের ১৪/১৫ তারিখে যদি সঠিকভাবে মাসটি ২৯ এবং ৩০ দিনে গণনা করা হয়।

৪। সারা বিশ্বে একটি নির্দিষ্ট দিনে এবং বারে পূর্ণ জ্যোৎস্না আসে।

প্রথম প্রশ্নের জবাব: এই সংগঠনটির তরফ থেকে প্রকাশিত লিফলেটে সম্পাদনার দায়িত্বপালনকারী হিসেবে এনামুল হক নামক একজন তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ারের নাম পাওয়া যায়। তিনি ইংরেজিতে নতুন চাঁদের ব্যাখ্যা করেছেন New Moon হিসেবে। তিনি লিখেছেন,

“Allah has given us 12 new moons to start counting of 12 lunar months.”

আমাদের প্রথম কথা হচ্ছে, আল্লাহ পাক ১২টি নতুন চন্দ্রমাসের গণনার জন্য ১২টি হিলাল বা বাঁকা চাঁদ দিয়েছেন, যাকে ইংরেজিতে বলে Crescent। আর Astronomically New Moon শব্দের অর্থ অমাবস্যা, যে সময় চাঁদ অন্ধকারে ঢাকা থাকে ফলে দেখা যায় না। আর New Moon বা অমাবস্যা অনুযায়ী কখনো নতুন মাস গণনা করা হয় না। তিনি লিফলেটের নিচে চাঁদের উপর ২০৮ পৃষ্ঠার একটি বই-এর লিখক হিসেবে নিজেকে জাহির করেছেন। অথচ তিনি New Moon এবং Crescent -এর পার্থক্য বোঝেন না।

দ্বিতীয়ত তিনি লিখেছেন, There can not be more than one New Moon in a single lunar month অর্থাৎ একটি চন্দ্রমাসে একাধিক নতুন চাঁদ থাকতে পারে না। তিনি একথার মাধ্যমে বোঝাতে চাচ্ছেন, চাঁদ পৃথিবীতে একবারই প্রথম দেখা যাবে এবং সেটিই সারা বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ আলাদা আলাদা ভাবে বিভিন্ন দেশে বা অঞ্চলে চাঁদ দেখে মাস শুরু করাটাকে তিনি বিভিন্ন চাঁদের সাথে তুলনা করেছেন। এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য তিনি যে উল্লেখ করেছেন ১২টি চন্দ্রমাসের জন্য ১২টি নতুন চাঁদ আছে। বাস্তবে কি তাই? চাঁদ তো একটি। যা প্রতিমাসে প্রদক্ষিণ শেষে নতুন হয়ে দেখা যায়। একইভাবে প্রতিমাসে একটি চাঁদই দৃশ্যমান হয়। কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে দিন ও রাত্রির পার্থক্যের কারণে এবং বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অবস্থানের কারণে চাঁদ ভিন্ন ভিন্ন সময় দৃশ্যমান হয়। তাই বলে বলা যাবে না যে ভিন্ন ভিন্ন চাঁদ দৃশ্যমান হয়। সারা পৃথিবীর একস্থানে দেখা গেলেই তা সারা বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য হবে একথাটি শরীয়তসম্মত নয়।

তৃতীয়তঃ এবং চতুর্থতঃ তিনি উল্লেখ করেছেন, যদি মাস সঠিকভাবে গণনা করা হয় তবে চন্দ্রমাসের ১৪/১৫ তারিখে পূর্ণ জ্যোৎস্নার আলো থাকবে। এবং সারা বিশ্বে একই তারিখে এবং বারে সংঘটিত হবে। এক্ষেত্রে তার কথা আংশিক সত্য। যেমন চন্দ্র মাস সঠিকভাবে গণনা করা হলে মাসের ১৪/১৫ তারিখে পূর্ণ জ্যোৎস্না থাকবে। আবার উল্টোভাবে দেখা যায়, যদি কোন দেশে মাসের ১৪/১৫ তারিখে পূর্ণ জ্যোৎস্না না থাকলে বোঝা যাবে মাসটি সঠিকভাবে গণনা করা হয়নি। সারা বিশ্বে কখনো একই সময়ে পূর্ণ জ্যোৎস্নার আলো দেখা যায় না। দিন-রাত্রির জন্য এই দৃশ্যমান হওয়ার পার্থক্য থাকে। আবার সামোয়া এবং টোঙ্গাতে একই রাত্রিতে পূর্ণ জ্যোৎস্নার চাঁদ দেখা গেলেও আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার জন্য তারিখ ও বারের পার্থক্য হয়ে যাবে।

সুতরাং ইঞ্জিনিয়ার সাহেব অপূর্ণ জ্ঞান নিয়ে একটি বিষয়ের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার উচিত এ বিষয়ে আরো জ্ঞান অর্জন করা। আগামীতে আমরা তার আরো খোড়া যুক্তির সঠিক জবাব প্রকাশ করবো। আল্লাহ পাক তাওফিক দানের মালিক।

 

বিশ্বের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র মুহররমুল

হারাম মাসের চাঁদের রিপোর্ট

জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১৬ই ডিসেম্বর, ২০০৯, বুধবার, ১২টা ২ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।

অমাবস্যার দিন সউদী আরবে পবিত্র মুহররমুল হারাম মাসের চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র

মুহররমুল হারাম মাসের চাঁদের রিপোর্ট

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে বুধবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০০৯, সন্ধ্যা ৬টা ২ মিনিটে।

বাংলাদেশে পবিত্র মুহররমুল হারাম মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে বৃহস্পতিবার, ১৭ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৫টা ৫৬ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ৪১ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ৮ ডিগ্রি উপরে অবস্থান করবে এবং চাঁদ খুঁজতে হবে ২৩৮ ডিগ্রি আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখার সম্ভাবনা কম। তবে আকাশ খুব পরিষ্কার থাকলে চাঁদ দেখা যেতেও পারে।

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬২

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২০ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল