চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

সংখ্যা: ১৯৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

বর্তমান সংখ্যার আলোচনা: ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসক গোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলিক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভূঁইফোড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

জবধষ ঐরুৎর ঈধষবহফধৎ ওসঢ়ষবসবহঃধঃরড়হ ঈড়ঁহপরষ ইধহমষধফবংয  নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে। সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে (অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে) তারা ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-

পূর্ব প্রকাশিতের পর

৯। কয়েকটি দেশ (২-৩টি), বাংলাদেশসহ রমাদ্বান শরীফ, ঈদ পালন করে ১ থেকে ২ দিন পর নিজ দেশে খালি চোখে চাঁদ দেখার পর। কিন্তু হাদীছ শরীফ তা বলে না।

১০। পৃথিবীর সকল দেশ রমাদ্বান শরীফ এবং পবিত্র ঈদ পালন করবে, যদি পৃথিবীর কোথাও ঘবি গড়ড়হ দৃশ্যমান হয়।

নবম প্রশ্নের জবাব: বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ নিজ দেশে খালি চোখে চাঁদ দেখে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ এবং ঈদ পালন করে। এ বিষয়টি হাদীছ শরীফ-এর পূর্ণ অনুসরণ। আর যেহেতু হাদীছ শরীফ-এর পূর্ণ অনুসরণ করা হয়েছে, ফলে অনুসরণকারী দেশগুলো অবশ্যই বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। অথচ কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর পূর্ণ অনুসরণ করার পরও গ-মূর্খ, চরম জাহিল, শরীয়তের ইলম বিবর্জিত তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ারের মন্তব্য হচ্ছে æকিন্তু হাদীছ শরীফ তা বলে না”। তার ভাষ্য অনুযায়ী বোঝা যায় খালি চোখে নিজ দেশ থেকে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করাটা শরীয়তসম্মত হয়নি। নাঊযুবিল্লাহ! চাঁদ বিষয়ে তার যে আক্বীদা সেটা স্পষ্ট তার ১০ নম্বর বর্ণনায় ।

দশম প্রশ্নের জবাব: তার বর্ণনা অনুযায়ী পৃথিবীর কোথাও ঘবি গড়ড়হ দৃশ্যমান হলে নাকি সকল দেশ পবিত্র রমাদ্বান শরীফ এবং ঈদ পালন করবে। নাঊযুবিল্লাহ!

আমরা সবাই জানি ঘবি গড়ড়হ কখনো দৃশ্যমান হয় না। আর যদি এই মূর্খ ইঞ্জিনিয়ার নতুন চাঁদ অর্থে ঘবি গড়ড়হ বলে থাকে তথাপিও তার বক্তব্য সঠিক হয়নি। কেননা পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দৃশ্যমান হলে তা সারাবিশ্বের জন্য প্রযোজ্য হবে এর স্বাপেক্ষে এই মূর্খ ব্যক্তি কোন শরীয়তের দলীল পেশ করতে পারবে না। দু’ভাগে এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।

প্রথমত: শরীয়তের দলীলের মাধ্যমে।

দ্বিতীয়ত: সাধারণ যুক্তির মাধ্যমে। হাদীছ শরীফ-এর সঠিক ব্যাখ্যা করেছেন মাযহাবের ফক্বীহগণ। শাফিয়ী মাযহাব অনুযায়ী প্রতিটি শহরে শহরে চাঁদ দেখা শর্ত। আর হানাফী মাযহাব অনুযায়ী কোন স্থানে চাঁদ দৃশ্যমান হলে তার সর্বদিকে ৪৮০ থেকে ৫০০ মাইল ব্যাপী এলাকার সকলেই এক উদয়াস্থলে চাঁদ দেখা অনুযায়ী আরবী মাস শুরু করবেন। কোন হাদীছ শরীফ-এ, কোন মাযহাবে নেই বিশ্বের কোন একস্থানে চাঁদ দৃশ্যমান হলে সারাবিশ্বের জন্য তা প্রযোজ্য হবে।

এবার সাধারণ যুক্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যাক। আমরা জানি পৃথিবীর কোন এক অংশে যখন দিন থাকে তখন অন্য অংশে থাকে রাত। দেখা যায়, যখন কোন অংশে চাঁদ দেখা যায় তখন অন্য অংশে থাকে এমন সময়, যখন না খাওয়া যাবে সাহরী, না পড়া যাবে ঈদের নামায। ফলে সেই দেশের অধিবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী দিনের জন্য। সুতরাং কোন স্থানে চাঁদ দেখা গেলেই সেই চাঁদ দেখা অনুযায়ী সারাবিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করা এবং রোযা রাখা সম্ভব নয়।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোন এক রমযান মাসের শেষে রিয়াদে প্রথম চাঁদ দেখা গেল এবং মনে করি সে দিনটি সোমবার এবং সন্ধ্যা ৫:৩০ ঘণ্টায় রিয়াদের আকাশে চাঁদ দেখা গেল। তখন আর্জেন্টিনায় সময় সোমবার সকাল ১১:৩০ ঘণ্টা। রিয়াদের চাঁদ দেখা অনুযায়ী আর্জেন্টিনার মুসলমানগণ ঈদের নামায পড়তে চাইলেও তা সম্ভব নয় কেননা তখন ঈদের নামাযের ওয়াক্ত থাকে না। আবার যখন রিয়াদে পরের দিন মঙ্গলবার ভোর ৬:৩০ ঘণ্টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে তখন আর্জেন্টিনায় মঙ্গলবার রাত ১২:৩০ ঘণ্টা (এএম)। সে সময় ঈদের নামায পড়া সম্ভব নয়। যেহেতু রিয়াদের সঙ্গে আর্জেন্টিনার সময়ে পার্থক্য ৬ ঘণ্টা সেহেতু সউদী আরবে যে সন্ধ্যায় চাঁদ দেখবে তার ৬ ঘণ্টা পর আর্জেন্টিনায় চাঁদ দেখা যাবে। সুতরাং সউদী আরবের সাথে আর্জেন্টিনার মুসলমানদের একই দিনে ঈদ পালন করা সম্ভব নয়।

বিশ্বের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র রবিউস

সানী মাসের চাঁদের রিপোর্ট

জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১৫ই মার্চ, ২০১০, সোমবার, রাত ৯টা ১ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।

অমাবস্যার দিন সউদী আরবে পবিত্র রবিউস্ সানী মাসের চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র

রবীউস সানী মাসের চাঁদের রিপোর্ট

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১৬ই মার্চ, ২০১০, মঙ্গলবার, ভোর ৩টা ১ মিনিটে।

বাংলাদেশে পবিত্র রবীউস্ সানী মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে ১৬ই মার্চ, ২০১০, মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৬টা ৮ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৬টা ৩৬ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ২৮ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ৬.৫ ডিগ্রী উপরে অবস্থান করবে এবং চাঁদ খুঁজতে হবে ২৭৩ ডিগ্রী আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখার কোন সম্ভাবনা নেই।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫৮

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৬

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

আশ্চর্য হলেও সত্য যে সব যুদ্ধাপরাধী ও ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারাই মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম বিরোধী । ‘কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ হবে না’ এ প্রতিশ্রুতির সরকারের কাছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের এ দাবি- অবিলম্বে দেশ থেকে মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম বিরোধী সব মাওলানা নামধারীদের বহিষ্কার করা হোক ।