বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে গুরুত্ব বর্ণনা করলেই পর্দার প্রতি ঝোঁকা হবে; তা কেন? আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অমোঘ আদেশ সেটাই কী মুসলমান মাত্রই পর্দা পালনের জন্য বিশেষ গুরুত্ববহ নয়?

সংখ্যা: ১৯৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

তথাকথিত প্রগতিবাদীরা প্রচার করে থাকে নারী-পুরুষ আলাদা দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন নেই। উন্নয়নের স্বার্থে নারী-পুরুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। ইসলাম প্রচারিত পর্দার কথা এখানে বাহুল্য ও নিষ্ফল। (নাঊযুবিল্লাহ)

তাদের আরো কথা হলো: নারীকে নারী হিসেবে দেখা যাবে না। তাকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। পুরুষ নারীকে নারী হিসেবে দেখতে পারবেনা। দেখবে মানুষ হিসেবে। তাহলে আর কোন ঝামেলা থাকবেনা।

ইসলাম প্রচারিত পর্দার প্রয়োজন হবে না কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রতিভাত হয়েছে যে, পুরুষ নারীকে মানুষ হিসেবে দেখতে পারে না। জন্মগতভাবেই তার সে ক্ষমতা নেই। এ মাসের শুরুতে স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় এ তথ্য দেয়া হয়েছে।

তাদের কথায়, একজন পুরুষ সুন্দরী নারীর পাশে পাঁচ মিনিট বসলেই নাকি পুরুষের মধ্যে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়? যা শরীরে কোট্রিসল নামক বিশেষ হরমোনের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়? আর বিপত্তি সেখানেই? এই হরমোনের বাড়তি প্রবাহ আবার হৃদযন্ত্রের নানা রোগের জন্য দায়ী?

ভ্যালেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা, ৮৪ জন স্বেচ্ছাসেবী পুরুষের উপর গবেষণা চালিয়ে প্রকাশ করেছে এই তথ্য। এসব স্বেচ্ছাসেবীদের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এককভাবে একটি কক্ষে বসিয়ে সুডোকু পাজল (এক ধরনের খেলা) এর সমাধান করতে বলা হয়। এসময় অপরিচিত সুন্দরী এক নারীকে ঢুকিয়ে দেয়া হয় সেই রুমে। আর তাতেই অনেকের শরীরে কোট্রিসল এর প্রবাহ বেড়ে যায়। কিন্তু নারীর স্থলে কোন পুরুষ রুমে ঢুকলে স্বেচ্ছাসেবী পুরুষদের মধ্যে কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি।

গবেষকরা বলছেন, কম বয়সী সুন্দরী নারী আশেপাশে

দেখলে অধিকাংশ পুরুষ প্রেমের সুযোগ আছে বলে ভাবতে শুরু করেন। খুব কম পুরুষই সুন্দরীদের পাশ কাটিয়ে চলতে পারেন।

উল্লেখ্য, বেশিমাত্রায় কোট্রিসলের প্রবাহ হৃদযন্ত্রের ক্ষতি

থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস এমনকি পুরুষকে নপুংসক পর্যন্ত করে ফেলতে পারে। তাই, সম্ভব হলে সুন্দরীদের এড়িয়ে চলাই ভালো। তারা তাই আরো মন্তব্য করেছে সুন্দরী দেখলে আড়চোখে তাকানো পুরুষের নতুন অভ্যাস নয়। তার উপরে যদি সেই নারী একটু বেশিই সুন্দরী হন, তাহলে লাজলজ্জা ভুলে তার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতেও দেখা যায় অনেক পুরুষকে। তবে সাবধান, সুন্দরীরা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

আকর্ষণীয় নারীর সান্নিধ্যে আসলে পুরুষের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে। এমনকি এই চাপ বাড়ার কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উক্ত গবেষক দল।

উল্লেখ্য, ইসলাম কেবল সার্বজনীনই নয় বরং ইসলামই একমাত্র সত্য ধর্ম। এ ধর্মে তাই আবশ্যিকভাবে পর্দা পালনের কথা বলা হয়েছে।

কুরআন শরীফ-এ  æসূরা নিসা, সূরা নূর ও সূরা আহযাব” সূরাসমূহে পর্দা করার ব্যাপারে কঠোর আদেশ-নির্দেশ করা হয়েছে।

যেমন আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, æ(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে। এটা তাদের জন্য পবিত্রতার কারণ। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তারা যা করে তার খবর রাখেন। আর আপনি মু’মিনাদেরকে বলুন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে ও তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (সূরা নূর-৩০,৩১)

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, æহযরত বুরাইদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! দৃষ্টিকে অনুসরণ করোনা। প্রথম দৃষ্টি (যা অনিচ্ছা সত্ত্বে পতিত হয় তা) ক্ষমা করা হবে; কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না।” অর্থাৎ প্রতি দৃষ্টিতে একটি কবীরা গুনাহ লেখা হয়ে থাকে। (আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, দারিমী, মিশকাত)

হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, æহযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেন, আমার নিকট এই হাদীছ শরীফ পৌঁছেছে, যে দেখে এবং দেখায় তার প্রতি আল্লাহ পাক-উনার লা’নত।” (বাইহাক্বী, মিশকাত)

অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার কালাম পাক এবং আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ শরীফ দ্বারা সরাসরি পর্দাকে ফরয করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় বরং চোখের দৃষ্টিসহ সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে হিফাযত করে পর্দা করতে বলেছেন।

এদিকে, পর্দা পালনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ে অভূতপূর্ব তাজদীদ করে মুজাদ্দিদে আযম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেছেন, æপ্রত্যেক মানুষ পুরুষ কিংবা মহিলা হোক, সে প্রতি দু’সেকেন্ডে পাঁচটি করে চোখের পলক বা দৃষ্টি ফেলে থাকে। সে হিসেবে প্রতি মিনিটে ১৫০টি পলক বা দৃষ্টি করে থাকে। আর ঘণ্টা হিসেবে প্রতি ঘণ্টায় ৯০০০ (নয় হাজার) পলক বা দৃষ্টি করে থাকে। সে হিসেবে বেগানা পুরুষ ও মহিলা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার কারণে তাদের উভয়ের প্রতি এক মিনিটে তিনশটি এবং এক ঘণ্টায় আঠারো হাজার কবীরা গুনাহ লিখা হয়। এ হিসাব একজন পুরুষ ও একজন মহিলার ক্ষেত্রে। আর যদি কোন মিটিং-মিছিলে উপস্থিত মহিলা-পুরুষের পরস্পর পরস্পরের দৃষ্টির হিসাব করা হয় তাহলে গুনাহর পরিমাণ আরো বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। ধরা যাক, কমপক্ষে মিটিং-মিছিলের সময় ৩ ঘণ্টা আর পুরুষ ও মহিলার সংখ্যা ১০০+১০০=২০০ জন। এখন একজন পুরুষ ও একজন  মহিলা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দৃষ্টি করার কারণে এক ঘণ্টায় আঠারো হাজার কবীরা গুনাহ  হয় তাহলে একশ জন পুরুষ ও একশ জন মহিলা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার কারণে কবীরা গুনাহর পরিমাণ হবে ৩৬ লক্ষ এবং তিন ঘণ্টায় হবে  ১ কোটি ৮ লক্ষ কবীরা গুনাহ।

অথচ একজন মানুষ যদি একশ বছর হায়াত পায়। আল্লাহ পাক না করুন সে যদি  নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত (ফরয হওয়া সত্ত্বেও) কিছুই না করে তারপরও ১ কোটি ৮ লক্ষ কবীরা গুনাহ হবেনা। যেমন, একশ বছরে অর্থাৎ জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয তা না করার কারণে ১টা কবীরা গুনাহ। যাকাত একশ বছরে একশটা ফরয তা না দেয়ার কারণে ১০০টা কবীরা গুনাহ। রোযা ২৯ বা ৩০টা। হিসাবের সুবিধার্থে যদি ৩০টা ধরে নেয়া হয়  তা না রাখার কারণে একশ বছরে ৩,০০০ কবীরা গুনাহ। এরপর নামায দৈনন্দিন

পাঁচ ওয়াক্ত ফরয ৫টা, এক ওয়াক্ত ওয়াজিব ১টা, সুন্নতে মুয়াক্কাদা- ফজরের ফরযের পূর্বে ১টা, যুহরের ফরযের আগে-পরে ২টা, মাগরিবের ফরযের পর ১টা, ইশার ফরযের পর ১টা মোট ৫টা তা আদায় না করার কারণে সবমিলে দৈনিক ১১টা কবীরা গুনাহ। বছরে  ত্রিশ তারাবীহ (সুন্নতে মুয়াক্কাদা) তা আদায় না করার কারণে ৩০টা এবং দু’ঈদ (ওয়াজিব) তা আদায় না করার কারণে ২টা মোট ৩২টা কবীরা গুনাহ। একশ বছরে নামায- ৪০৪৭০০,  যাকাত- ১০০, রোযা- ৩০০০, হজ্জ- ১টা, সর্বমোট ৪০৭৮০১১টা।

অর্থাৎ একশ বছর কোন ব্যক্তি নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত না করলে তার সর্বোচ্চ কবীরা গুনাহর পরিমাণ হলো মাত্র চার লাখ সাত হাজার আটশ একটা।

আর একজন পুরুষ কিংবা মহিলা যদি কোন মিটিং-মিছিলে যোগ দেয় যে মিটিং-মিছিলে পুরুষ বা মহিলার সংখ্যা কমপক্ষে একশ জন এবং সেখানে একঘণ্টা অবস্থান করে তাহলে শুধু চোখের দৃষ্টির কারণে তার কবীরা গুনাহর পরিমাণ হবে আঠারো  লক্ষ। আর লোক সংখ্যা বেশি হলে এবং বেশি সময় অবস্থান করলে কত লক্ষ-কোটি কবীরা গুনাহ হবে তা  বলার অপেক্ষা রাখে না। তাহলে পর্দার কত গুরুত্ব রয়েছে তা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ মুজাদ্দিদে আযম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি আরো বলেন, সে সৌন্দর্য একটি আপেক্ষিক ব্যাপার। যে লাইলী মজনুর কথা সারাবিশ্বে মশহুর বর্ণনা অনুযায়ী সে লাইলী ছিলো কালো। কিন্তু তারপরেও সেই লাইলীর প্রেমে মজনু এতই মাতোয়ারা হয়েছিল যে লাইলী-মজনু উপাখ্যান যুগ যুগ ধরে বর্ণনা হয়ে আসছে।

এদিকে  যারা নিগ্রো তাদের চোখে মহা সুন্দরী আরেক নিগ্রোই। প্রসঙ্গত সমসাময়িককালে দক্ষিণ আফ্রিকার বহুল পরিচিত নেলসন ম্যান্ডেলা ও ইউনসন ম্যান্ডেলার প্রণয়গত সম্পর্কের দিকটিও আলোকপাত করা যায়। সুতরাং স্পেনের ভ্যান্সেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী কথিত সুন্দরী মহিলাই পুরুষের জন্য বিপদজনক তাই নয়। বরং প্রত্যেক বেগানা মহিলাই পর-পুরুষের জন্য বিপদজনক।

আর তাই ইসলাম সবাইকে পর্দা পালনের হুকুম দিয়েছে। যা সবার জন্যই পালন করা ফরয-ওয়াজিব। সর্বোপরি শুধু বিপদ থেকে বাঁচার জন্যই নয় বরং আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ হিসেবেই প্রত্যেক বান্দার জন্য একান্তভাবে পালন করা উচিত। অন্য কোন আলোচনা এখানে অসার।

-মুহম্মদ আলম মৃধা

ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম এবং সব বেহায়াপনা, বেপর্দা, নাচগান ইত্যাদি সম্পর্কে মানুষকে ইসলামিক ধারণা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তা হলেই কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন পাশ হবে না- এ প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ প্রতিফলন ঘটবে।

জামাতীরা এখন খোদায়ী গযবে ধুকছে। হাদীছ শরীফে বর্ণিত লা’নত তাদের গায়ে লেগেছে। কৃত যুদ্ধাপরাধের বিচারের ভয়ে তারা এখন ভয়ানক আতঙ্কিত হয়ে আছে।

হলিউডের জোলি এবং আমাদের দেশের তথাকথিত নারীবাদী গত ১২.০১.০৯ তারিখে ইন্টারনেটে হেডিং হয়েছে: “হলিউড থেকে বিদায় নিচ্ছে জোলি।”

জামাতীদেরকে জঙ্গিরা কখনও টার্গেট করেনি। জঙ্গিরা মূলতঃ জামাতীদেরই জাত ভাই

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওবামার শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান এর শপথ অনুষ্ঠানের ধরনই নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পূর্ণই আলাদা। এদেশের শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমান তারা আকুলভাবে চায় যে “কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন হবে না।” সে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হোক