-হযরত মাওলানা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
চুল মুবারক উনার সুন্নত
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাথা মুবারক উনার মধ্যে সাধারণত তিন প্রকার চুল মুবারক ছিলো।
(১) কান মুবারক উনার লতী মুবারক পর্যন্ত। যাকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিভাষায় জুম্মা বলা হয়।
(২) কান মুবারক এবং কাঁধ মুবারকের মাঝামাঝি স্থানে ছিলো। যাকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিভাষায় লিম্মা বলা হয়।
(৩) কাঁধ মুবারকের একটু উপরে ছিলো। কাঁধ মুবারক স্পর্শ করেনি। যাকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিভাষায় ওফরাহ বলা হয়। এছাড়াও কখনো উনার চুল মুবারক দুই কান মুবারক উনাদের মাঝামাঝি স্থানে ছিলো যাকে নিছফু উজনাইন বলা হয়। কাজেই, কাঁধ স্পর্শ করে এরূপ লম্বা চুল রাখা হারাম।
হযরত আনাছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন-
كان شعر رسول الله صلى الله عليه وسلم الى نصف اذنيه
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চুল মুবারক অর্ধকান পর্যন্ত প্রলম্বিত ছিলো। (শামায়িলুত তিরমিজী শরীফ)
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন-
كنت اغتسل انا و رسول الله صلى الله عليه وسلم من اناء واحد وكان له شعر فوق الجمة ودون الوفرة
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং আমি একই পাত্রে গোসল করতেছিলাম। সে সময় উনার চুল মুবারক জুম্মা (কান মুবারক উনার লতী মুবারক) অতিক্রম করেছিলো বটে; কিন্তু ওফরাহ পর্যন্ত পৌঁছেনি। অর্থাৎ লিম্মা পর্যন্ত ছিল। (শামায়িলুত তিরমিজী শরীফ)
চারপায়া বিশিষ্ট চকি মুবারক, তোষক মুবারক ও
বালিশ মুবারক উনার সুন্নাত জিন্দাকরণ
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহিউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এমনি অনেক সুন্নত মুবারক জিন্দা বা পুনঃপ্রচলন করেছেন যা সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা যারা অসাধারণ বা খ্যাতিমান উনাদেরও চিন্তা-কল্পনার বাইরে। তিনি মুবারক এ কথাও বলেন যে, মহান আল্লাহ পাক উনার যিনি হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে যা নিছবতযুক্ত বা সম্পৃক্ত তা সর্বকালের, সর্বযুগের শ্রেষ্ঠতম, সর্বাধিক মর্যাদাবান, সবচেয়ে অধিক ফযীলতপূর্ণ। আর যিনি বা যাঁরা সেসব বিষয় বা বস্তুর সাথে নিছবতযুক্ত বা সম্পৃক্ত হবেন তিনি বা তাঁরাও সেরূপই মর্যাদাবান বা ফযীলতপূর্ণ হবেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি ছোট্ট থেকে ছোট্ট, ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম বিষয় ও বস্তুতেও উনার হুবহু অনুসরণ-অনুকরণ করে থাকেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেরূপ বিছানা মুবারক, চকি মুবারক, বালিশ মুবারক উনার মধ্যে শুয়েছেন ও ব্যবহার করেছেন তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাব মুবারকগুলো মন্থন করত: জাহিরী, বাতিনী দিক নির্দেশনা পেয়ে সেরূপই চারপায়া বিশিষ্ট চকি মুবারক, তোষক মুবারক এবং বালিশ মুবারক ব্যবহার করে চলছেন। তিনি দু’ ধরণের চকি মুবারক ব্যবহার করে থাকেন। একটি ছোট, যার দৈর্ঘ্য সাড়ে চার হাত প্রস্থ দুই হাত। আর উচ্চতা এক বিঘত বা নয় ইঞ্চি। আর অপরটির দৈর্ঘ্য সাড়ে চার হাত, প্রস্থ সোয়া তিন হাত। আর উচ্চতা এক বিঘত বা নয় ইঞ্চি। উভয়টির মধ্যে চারটি করে পায়া মুবারক রয়েছে। তাছাড়া সেই চকি মুবারক উনার ছাউনী মুবারকও দুই ধরণের ছিল। একটি ছিল কাঠের অপরটি ছিল রশির।