একটি মুসলিম রাষ্ট্রে পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে মুসলিম শিক্ষার্থীদের কী শেখানো হচ্ছে? পাঠ্যপুস্তকে নাম দিয়ে যা শেখানো হচ্ছে তা দিয়ে কি একজন মুসলিম শিশু আদৌ ঈমানদার থাকবে? ৯৮% মুসলমান অধ্যুষিত দেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দৃষ্টিতে কুফরী এই সিলেবাস আর কত দিন চলবে? জনগণ তা জানতে চায়

সংখ্যা: ২৪৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

একটি মুসলিম রাষ্ট্রে পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে মুসলিম শিক্ষার্থীদের কী শেখানো হচ্ছে? পাঠ্যপুস্তকে নাম দিয়ে যা শেখানো হচ্ছে তা দিয়ে কি একজন মুসলিম শিশু আদৌ ঈমানদার থাকবে? ৯৮% মুসলমান অধ্যুষিত দেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দৃষ্টিতে কুফরী এই সিলেবাস আর কত দিন চলবে? জনগণ তা জানতে চায়


বর্তমান শিক্ষা সিলেবাস তথা পাঠ্যপুস্তকে শিক্ষাদানের নামে কোমলমতি মুসলিম শিশু-কিশোরদের এমন সব বিষয় শেখানো হচ্ছে, যা সত্যিই বিষ্ময়কর। এসব বিষয় পড়ে কোমলমতি মুসলিম শিক্ষার্থীরা সঠিক আক্বীদা থেকে ভ্রষ্ট হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে ঈমান-আক্বীদা, যা ৯৮% মুসলমান অধ্যুষিত দেশে কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আসুন দেখা যাক- বর্তমান পাঠ্যপুস্তকে পড়ালেখার নামে কী শিখানো হচ্ছে:

(১)

৯ম-১০ম শ্রেণী

বই: মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য

কবিতার নাম: আমার সন্তান

লেখকের নাম: ভারত চন্দ্র রায় গুনাকর

পৃষ্ঠা: ১৬৮-১৭০

কবিতাটিতে আসলে কি বলা হয়েছে?

এটি হচ্ছে হিন্দুদের কথিত দেব-দেবীর প্রশংসা করে লেখা একটি কবিতা। কথিত দেবী ‘অন্নপূর্ণা’র প্রশংসা বর্ণনা করে লেখা এ কবিতাকে ‘অন্নদার মঙ্গল কাব্য’ বলে থাকে। এ

কবিতা সম্পর্কে অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছে:

“…….কৃষ্ণচন্দ্র কর্তৃক অন্নপূর্ণা পূজা উপলক্ষে মহারাজের নিজ কীর্তি এবং তাহার পূর্বপুরুষ

ভবানন্দ মজুমদারের রাজ্য ও রাজা উপাধি লাভের কাহিনী বর্ণনাই ছিল কবির প্রধান উদ্দেশ্য। দেবী অন্নদা (অন্নপূর্ণা) কীভাবে ভবানন্দ মজুমদারকে কৃপা করিলো, এবং ভবানন্দ কীভাবে জাহাঙ্গীরের দ্বারা অন্নপূর্ণা পূজা করাইয়া রাজত্ব ও রাজা খেতাব লাভ করিলো ইহার বর্ণনাই ছিল কবির প্রচ্ছন্ন উদ্দেশ্য। কবিতায় কবি হিন্দু পৌরাণিক অংশ বিশেষ ফলাও করিয়া বর্ণনা করিয়েছে।”

কবিতার উদ্দেশ্য:

মুসলিম শিশু-কিশোরদের কবিতার নাম দিয়ে হিন্দু দেব-দেবীদের প্রশংসাসূচক স্তুতি পড়ানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ কুফরী তথা ঈমানহারা হওয়ার কারণ। নাউযুবিল্লাহ!

(২)

৯ম-১০ম শ্রেণী

বই: মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য

কবিতার নাম: সুখের লাগিয়ে

লেখকের নাম: জ্ঞানদাস

পৃষ্ঠা: ১৬৫-১৬৭

কবিতার মূল বিষয়বস্তু:

হিন্দুদের কথিত দেবতা কৃষ্ণ ও রাধার অবৈধ প্রণয়কাহিনী কথা কীর্তন। রাধা ছিলো মামী ও কৃষ্ণ ছিলো ভাগিনা, তাদের মধ্যে ছিলো অবৈধ সম্পর্ক। এছাড়া কৃষ্ণের ছিলো ১৬ হাজার অবৈধ নারী সম্পর্ক। এই কবিতায় মুসলিম শিশু-কিশোরদেরকে হিন্দুদের সেই অবৈধ প্রণয়কাহিনী শেখানো হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ মিন জালিক!

(৩)

৬ষ্ঠ শ্রেণী

বই: চারু পাঠ

গল্পের নাম: লাল গরুটা

লেখকের নাম: সত্যেন সেন

পৃষ্ঠা: ১৪-১৯

গল্পের মূল বিষয়বস্তু:

নিধিরাম নামে এক লোক ছিলো, তার ছিলো এক লাল গরু। গরুটি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় দুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়, কাজও করে না। তখন নিধিরাম সিদ্ধান্ত নেয় গরুটি বিক্রি করে দেয়ার। তখন বাধ সাধে নিধিরামের বউ ও সন্তানেরা। তারা বলে যে- গরু হচ্ছে মায়ের মতো। মা-বাবাকে যেমন বৃদ্ধ হলে মানুষ ফেলে দেয় না, ঠিক তেমননি গরুও বৃদ্ধ হলে তাকে কসাইয়ের কাছে বিক্রি করা ঠিক নয়। গরু বিক্রি করা হচ্ছে হচ্ছে অধর্ম।

কিন্তু পরিবারের নিষেধ সত্ত্বেও নিধিরাম গরুটি বিক্রি করে দেয়, তখন গরুর মায়ায় সবাই কান্নাকাটি করে, নাওয়াÑখাওয়া ছেড়ে দেয়। একপর্যায়ে ঘরের গরু ঘরে ফিরিয়ে আনে নিধিরাম, তখন সবার মুখে হাসি ফুটে।

এ গল্পের শিক্ষা:

শিক্ষার্থীদের হিন্দুদের গোমাতাবাদ শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। গল্পের মাধ্যমে বলা হচ্ছে, গরু জবাই করা নিষ্ঠুর কাজ, গরুর গোশত খাওয়া ঠিক নয়, তাই গরুকে মায়ের মতো ঘরে রেখে দেয়া উত্তম। মূলত হিন্দুধর্মের গরুকে দেবতা বা গোমাতা হিসেবে গণ্য করা হয়। এবং জবাই না করে ঘরে পূজা করতে বলা হয়। এ গল্পের মাধ্যমে কোমলমতি মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে সেই হিন্দুয়ানী শিক্ষাই প্রদান করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ কুফরী ও ঈমান ধ্বংসের কারণ।

(৪)

৬ষ্ঠ শ্রেণী

বই: চারু পাঠ

গদ্যের নাম: রাঁচি ভ্রমণ

লেখক: এস ওয়াজেদ আলী

পৃষ্ঠা: ১-৭

গল্পের মূল বিষয়বস্তু:

‘রাঁচি ভ্রমণ’ গল্পটি ভারতের ‘রাঁচি’ নামক হিন্দুদের কথিত তীর্থস্থান ভ্রমণের কাহিনীকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে। গল্পটিতে ভারতের বিভিন্ন হিন্দুয়ানী আচার অনুষ্ঠান ও মেলার বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। যেমন ‘রাঁচি ভ্রমণ’ গল্পটির ১ম পৃষ্ঠায় রয়েছে, “দশহরা (পূজা) উপলক্ষে রাস্তার ধারের একটি বড় পুকুরের পাশে এক মেলা বসেছিল। সেই মেলা দেখার জন্যই আশপাশের গ্রাম থেকে এই লোকের আমদানি। মেলার নিকটে পৌঁছুতেই এক নাচের দল এসে আমাদের ঘিরে দাঁড়ালো।”

সাথে সাথে মন্দির ও ম-পের প্রতি মুসলমান শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে গল্পটিতে এধরনের বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে- “সেখানকার প্রধান একটি পাহাড়ের চূড়ায় একজন ভূতপূর্ব কমিশনার মন্দিরের আকারের একটি সুদৃশ্য ম-প বানিয়েছে।”

এ গল্পের শিক্ষা:

এদেশের মুসলমান শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করে ভারতের হিন্দুয়ানী পর্যটন কেন্দ্রে যেতে আগ্রহী করার জন্য রয়েছে রাঁচির বিভিন্ন স্পটের চটকদার বর্ণনা।

এটা অস্বীকার কোনো উপায় নেই যে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কেন্দ্র সুন্দরবন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, টেকনাফ, কুয়াকাটা, সিলেটের জাফলং, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ অনেক কিছুই বাংলাদেশে আছে। কিন্তু সবকিছুকে বাদ দিয়ে এদেশের পাঠ্যপুস্তকে ভারতের হিন্দুধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রের বর্ণনা কেন তুলে ধরা হয়েছে- তা সত্যিই রহস্যজনক বিষয়!

(৫)

৯ম-১০ম শ্রেণী

বই: মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য

কবিতার নাম: সময় গেলে সাধন হবে না

লেখকের নাম: লালন শাহ

পৃষ্ঠা: ১৭১-১৭২

কবিতার মূল বিষয়বস্ত বর্ণনা:

বাউলসাধনা হলো এক ধরনের বিকৃতশ্রেণীর যৌনসাধনা। বাউলেরা তাদের নিজেদের সমাজে নারী-পুরুষের মধ্যকার বিকৃত ও অস্বাভাবিক সম্পর্ক রাখে বিধায় তারা ভদ্রসমাজের নিকট তাদের রহস্য ফাঁস করতে চায় না। এজন্য তারা তাদের গানে বিভিন্ন সাংকেতিক ও ইঙ্গিতপূর্ণ অর্থ ব্যবহার করে থাকে। ওইসব গানের কথা সাধারণ মানুষের কাছে যতোই স্বাভাবিক মনে হোক না কেন, সেগুলোর মধ্যে চরম পর্যায়ের অশ্লীলতা বিরাজ করছে।

সেরকমই একটি কবিতা হলো বর্তমান ৯ম-১০ম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ নামক কবিতাটি। এই কবিতার শুরুতেই বলা হয়েছে-

“সময় গেলে সাধন হবে না

দিন থাকতে দিনের সাধন কেন করলে না

জান না মন খালে বিলে

মীন থাকে না জল শুকালে

কী হয় তার বাঁধন দিয়ে

শুকনা মোহনা”

কবিতাটি যেহেতু বাউল লালন ফকির লিখেছে, তাই এখানে ‘সাধন’ বলতে বাউলসাধনাকেই বুঝতে হবে। বাউল পরিভাষায় ‘সাধন’ শব্দের নির্দিষ্ট অর্থ আছে।

বাউলদের ভাষায় ‘সাধন’ কাকে বলে?

বাউল গবেষকদের মতে- “নারী-পুরুষে মিলন বাউলদের সাধনার সারবস্তু। পুরুষের বীজ আর নারীর রজঃ মিলিত হয়ে মানব সন্তানের জন্ম। যৌন উত্তেজনার চূড়ান্ত পর্যায়ে ‘সহজ মানুষ’ বা কথিত ঈশ্বরের অটলরূপ উপস্থিত হয় বলে এদের বিশ্বাস। বাউলরা এই স্তরে পৌঁছে স্থির থেকে সাধন করতে চায়। কাম নদীর নিম্নমুখী ধারাকে ঊর্ধ্বমুখী করে ‘সহজ মানুষ’ সাধন করতে পারে যারা, তারা হলো সিদ্ধ পুরুষ। তাদের মতে, লালন ফকির একজন সিদ্ধপুরুষ।” (তথ্যসূত্র: লালন গবেষক নিয়ামত আলী মাস্টার ও বাউল ডাক্তার আতিক)

মূলত, “সময় গেলে”: এখানে ‘সময় গেলে’ নারীদের মাসিকের নির্দিষ্ট সময়কে বোঝানো হয়েছে।

কবিতায় বলা হয়েছে-

“মীন থাকে না জল শুকালে” অর্থ কি?:

বাউল গবেষক ড. আনোয়ারুল করীমের রচিত ‘বাংলাদেশের বাউল’ গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-

“মানুষ সৃষ্টির মূল এই স্ত্রীজননাঙ্গ। এখানেই চন্দ্রের উদয়, এখানেই মীন বা মাছরূপে সাঁই বিরাজ করে। তাই বাউল ভক্তি নিবেদন করে এই যোনিপ্রদেশকে। এখানেই তার সিদ্ধি। এই স্তর অতিক্রম করতে পারলেই সে সাধক।” (সূত্র: বাংলাদেশের বাউল, পৃষ্ঠা- ৩৫৭)

আরেকজন বাউল গবেষক ড. আবদুল করিম মিঞা রচিত ‘বাউল-লালন পরিভাষা’ গ্রন্থে ‘মীন’ শব্দটির অর্থে বলা হয়েছে-

“মাছ হলো- ঈশ্বরের প্রতীক। বাউলদের বিশ্বাস- নারীর রজঃধারায় মীনরূপী পরমাত্মা ভেসে বেড়ায়। নারীর রজঃ ব্যতীরেকে সেই ‘মীন’ ধরার কোনো উপায় নেই। এই মীনের হস্ত পদ স্কন্দ মাথা নেই। যৌন সম্ভোগের মাধ্যমে পরমে স্বরূপ উপলব্ধি হয়। (মীনরূপে সাঁই বিহার করে-লালন)” (তথ্যসূত্র: বাউল-লালন পরিভাষা, পৃষ্ঠা- ৮০)

ড. আবদুল করিম মিঞা তার গ্রন্থে বলেছে, নারীর রজঃ বা মাসিক ব্যতীত এই ‘মীন’ ধরার কোনো উপায় নেই। পাঠ্যপুস্তকে উল্লেখিত ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ বলতে যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, সেটা বলতে এই নারীর মাসিকের সময়কে বোঝানো হয়েছে। এই নির্দিষ্ট সময়ই বাউলদের সাধনার সময়।

কবিতার শেষ অংশ (যা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি-

“অমাবস্যায় পূর্ণিমা হয়

মহাযোগে সেদিন উদয়

লালন বলে তাহার সময়

দ-ও রয় না।”

বাউল গবেষকদের মতে-

নারীর ঋতুকালের মধ্যেই যোগ-মহাযোগ নিহিত থাকে। রজঃস্রাবের রংয়ের তারতম্য আছে। বাউল সাধুরা কালারের ভেরিয়েশন বুঝে ত্রিবেনীতে অপেক্ষা করে। বাউলের ভাষায় এই জোয়ারের চার কালার- লাল, জরদ, সিয়া, সফেদ। একেক দিনে একেক কালার। প্রেমজোয়ারে দেহ পূর্ণ হলে সফেদ জোয়ার আসে। ওই প্রবাহটাই আসল ফাঁদ পেতে ধরতে হয়। বাউল সাধু জোয়ারের ধারা বুঝে বাঁধাল দেয়। ‘শুকনা মোহনায়’ তো বাঁধাল দিলে হবে না!

এজন্য কবিতায় বলা হচ্ছে-

“অমাবস্যা পূর্ণিমা হয়

মহাযোগ সেই দিনে উদয়

লালন বলে তাহার সময়

দন্ডও রয় না।”

এখানে ‘অমাবস্যা’ শব্দের অর্থ:

‘বাংলাদেশের বাউল’ বইতে রয়েছে-

“বাউলসাধনায় অমাবস্যা শব্দের একটি বিশেষ অর্থ ও প্রয়োগ রয়েছে। এখানে অমাবস্যা অর্থ স্ত্রীর ঋতুবতী হওয়া বা মাসিককালীন সময়।…এই সময়কাল বাউলসাধনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ সময়েই ‘মানুষ’ বা সাঁই-এর আবির্ভাব ঘটে। (বাংলাদেশের বাউল, পৃষ্ঠা- ৩৬৪)

পাঠ্যপুস্তকের কবিতায় প্রশ্ন করা হয়েছে-

“কী হয় তার বাঁধন দিয়ে/ শুকনা মোহনা”। পাঠকেরা সহজেই বুঝতে পারছেন যে- মাসিক বন্ধ হওয়ার পর মেয়েলোকের গোপনাঙ্গকে তুলনা করা হয়েছে ‘শুকনা মোহনা’র সাথে। ঐ কথিত ‘শুকনা মোহনা’য় ‘বাঁধন’ দেয়া তথা বাউলসাধনা করে কোনো লাভ হবে না।

অর্থাৎ ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ এই লালনগীতিটি একটি অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ দেহতাত্ত্বিক বা যৌনাচার বাউলদের অশ্লীল শ্লোক। এখানেই শেষ নয়। পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত চরম অশ্লীল এই কবিতাটির ‘কবি পরিচিতি’ অংশে আরো বলা হয়েছে- “লালনের ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ ‘বাড়ির কাছে আরশী নগর’ ‘আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে’ ইত্যাদি বাংলা তত্ত্ব সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।”

কবি পরিচিতিতে যে ‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’ গানটির ব্যাপক প্রশংসা করা হয়েছে, সেই গানটির অর্থ বিশ্লেষণে ড. আনোয়ারুল করীম তার ‘বাংলাদেশের বাউল’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছে-

“এখানে আরশীনগর স্ত্রীজননাঙ্গের প্রতীক। ‘পড়শী’ অর্থ বাউলের সাঁই, যার অবস্থান স্ত্রীজননাঙ্গে।” (সূত্র: বাংলাদেশের বাউল, পৃষ্ঠা- ৩৬৯)

(৬)

৮ম শ্রেণী:

বই: আনন্দ পাঠ (দ্রুত পঠন)

গল্পের নাম: রামায়ণ-কাহিনী (আদি কা-)

লেখকের নাম: উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী

পৃষ্ঠা: ৫৭-৬৫

পাঠ্যের মূল বিষয়বস্তু:

হিন্দু অন্ধবিশ্বাস অনুযায়ী, ঋষি বাল্মীকি ‘রামায়ণ’ কাহিনীর রচয়িতা। এই গ্রন্থটি হিন্দুশাস্ত্রের স্মৃতিবর্গের অন্তর্গত। মূলত, ৯৮% মুসলমান অধ্যুষিত এদেশের পাঠ্যপুস্তকে হিন্দুদের এ কল্পকাহিনীযুক্ত করে মুসলিম শিশু-কিশোরদের মন-মগজে হিন্দুত্ববাদ বদ্ধমূল করা হচ্ছে, যা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। নাউযুবিল্লাহ!

(৭)

৬ষ্ঠ শ্রেণী:

বই: আনন্দ পাঠ (দ্রুত পঠন)

প্রবন্ধের নাম: রাসূলের দেশে

লেখকের নাম: ইব্রাহীম খাঁ

পৃষ্ঠা: ৪৪-৪৮

প্রবন্ধটির ভাষ্য:

“মরুসূর্য মুহাম্মদ (স.) নতুন আলোকের পরশে আরবের বালুকণা রাশি পর্যন্ত জ্বলে ভাস্বর হয়ে উঠে। দিকে দিকে গড়ে উঠে নতুন নতুন জাতি, নতুন নতুন রাজ্য, নতুন নতুন সভ্যতা।

তারপর মুসলমানদের জাতীয় জীবনে শুরু হয় অবনতির ভাটা। ইসলামের সত্য সনাতন আদর্শ ভুলে তারা চলে ভুল পথে, ডেকে আনে নিজেদের মৃত্যু, আজরাইল শিওরে এসে বসে জান কবজ করতে তৈরি হয়।

এ সময় আবির্ভাব ঘটে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাবের। মধ্য আরবের অন্তর্গত আজাইনাতে জন্ম, বসরা, দামেস্কে ও মক্কায় অধ্যয়ন শেষ করে এ সংস্কাকর ১৮৫০ সালে জন্মভূমিতে ফিরে আসেন ও ঘোষণা করে মুসলমানরা ইসলামের পথ হতে অনেক দূরে সরে গেছে। তাদের আজকের এই দুর্বলতা এই বেইজ্জতিরই জন্য। অতএব, মুসলমানকে আগের পথে ফিরে যেতে হবে, ধর্মে ফিরে যেতে হবে, ধর্মে ফিরে যাওয়ার মধ্যেই তার পুনর্জীবন লাভের একমাত্র পথ। যা ইসলামের বিরোধী তার সাথে কোনো আপোস নেই, কারণ সে আপোসের পরিণাম জাতির অধঃপতন।”

প্রবন্ধটির মাধ্যমে যা শিক্ষা দেয়া হচ্ছে:

বলা হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর মুসলমানরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যায় এবং সে সময় ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী সংস্কার করে পুনরায় আগের ইসলাম ফেরত আনে। নাউযুবিল্লাহ! এটা সম্পূর্ণ ভুল কথা। ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী সংস্কারক বা মুজাদ্দিদ নয়, বরং বাতিল আক্বীদা সৃষ্টকারী ব্রিটিশ দালাল। এজন্য সকল হক্কানী-রব্বানী ইমাম-মুজতাহিদগণ উনারা ইবনে ওহাব নজদীকে একযোগে কাফির বলে ফতওয়া দিয়েছেন।

ইবনে ওহাব নজদী’র জন্ম মূলত ব্রিটিশদের থেকে। ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার দীর্ঘদিন ইবনে ওহাব নজদীর পেছনে কাজ করে একটি ভ্রান্ত মতবাদ জন্ম দেয়, যা ‘ওহাবী’ মতবাদ নামে পরিচিত। এ বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার নিজেই তার স্বীকারক্তিমূলক গ্রন্থ CONFESSIONS of. A BRITISH SPY and. British Enmity Against Islam-এ বিস্তারিত বর্ণনা করেছে।

ইতিহাস বলছে যে, ইবনে ওহাব নজদীর আক্বীদা গ্রহণ করেই পরবর্র্তী নজদের মরুদস্যু (ডাকাত) ‘সউদ’ পরিবার প্রভাব বিস্তার করে এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা টি. লরেন্সের সহযোগিতায় জাজিরাতুল আরবের ক্ষমতায় দখল করে। এ সময় তারা আরবের সমস্ত পবিত্র স্থাপনা ও পবিত্র মাযার শরীফগুলো গুড়িয়ে দেয় এবং জাজিরাতুল আরবের আদি নাম পরিবর্তন করে নিজ পরিবারের নাম অনুসারে ‘সউদী আরব’ রাখে।

এবং অভিশপ্ত নজদের নাম পরিবর্তন করে রাখে ‘রিয়াদ’। নাউযুবিল্লাহ!

তাই পাঠ্যপুস্তকে ‘রাসূলের দেশে’ নামক প্রবন্ধের উদ্দেশ্য কখনোই ভালো নয়, বাংলাদেশের সুন্নী মুসলমানদেরকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম থেকে সরিয়ে ঈমান নষ্ট করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন-মগজে ভ্রান্ত ‘ওহাবীজম’ ছড়িয়ে দেয়াই এর কুটউদ্দেশ্য। নাউযুবিল্লাহ!

সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’। এদেশে প্রত্যেকটি নাগরিক সাংবিধানিকভাবে তার ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ করার দাবি রাখে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সকল মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীও তাদের সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষণ করার হক্বদার। পড়ালেখার মাধ্যমে তারা এমন কোনো কিছু শিখবে না, যা দ্বারা তাদের ঈমান ও আক্বীদা ধ্বংস হয়। এটা অবশ্যই তাদের সাংবিধানিক অধিকার। অথচ পাঠ্যপুস্তকের নামে অবুঝ মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদেরকে যা শেখানো হচ্ছে, তা নির্মম ধোঁকাবাজি ছাড়া অন্যকিছু নয়। এটা অবশ্যই তাদের সাংবিধানিক ধর্মীয় অধিকার ক্ষুণœ করার শামিল। তাই ৯৮% মুসলমান অধ্যুষিত এদেশের পাঠ্যপুস্তক থেকে সমস্ত ওহাবীবাদ, বাউলতত্ত্ব, হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ বাদ দিতে হবে- এটাই সকল মুসলমানগণ উনাদের ঈমানী দাবি।


-মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।