জরিনা সুন্দরী থেকে মিডিয়ার বাকী সুন্দরীরা নছীহত গ্রহণ করবেন কী?

সংখ্যা: ২০১তম সংখ্যা | বিভাগ:

জরিনা সুন্দরী থেকে মিডিয়ার বাকী সুন্দরীরা নছীহত গ্রহণ করবেন কী? মিডিয়া শিল্প বড় পুজিপতি ক্ষেত্র। যতক্ষণ রূপ যৌবন, পারফর্মেন্স ততক্ষণ মূল্যায়ণ।

এরপর নেকড়া ডাস্টবিন। দুনিয়াতেই এ অবস্থা; তবে পরকালে কী?

 

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

জরিনা সুন্দরী সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট গত ২৭/০৯/২০১০ ইং তারিখে একটি জাতীয় দৈনিকে পত্রস্থ হয়েছে। বলা হয়েছে, “ষাটের দশকের চলচ্চিত্র জগতে সাড়া জাগানো অভিনেত্রী ছিলেন জরিনা। ঐ সময়ে অন্যান্য নায়ক নায়িকাদের সঙ্গে জরিনা ওরফে জরিনা সুন্দরীর অভিনয় মাতিয়ে তুলতো সারাদেশ। জরিনাকে দর্শকশ্রোতা এক নামে চিনতো। চলচ্চিত্র ও নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি স্বামী, সন্তান ও আত্মীয়-পরিজন নিয়ে ছিল তার সুখের সংসার। দর্শক শ্রোতাদের মত আপনজনরাও ঐ সময় জরিনাকে কাছে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল থাকতো। কিন্তু তিনি ভাবতে পারেননি তার জীবনটাই ছিল আসলে একটা অভিনয়। যৌবনে স্বামী, সংসার, সন্তান ও আপনজনের কাছে কতই না মমতা আর সম্মান পেয়েছিলেন। কিন্তু আজ বৃদ্ধা বয়সে আপনজনের সেই মায়া-মমতা ও সম্মান সবই যেন গুঁড়ে বালি । বৃদ্ধ বয়সে আপনজনার নির্যাতন আর মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তাদের ছেড়ে জরিনা ঠাঁই নিলেন বৃদ্ধাশ্রমে। এটাই তার নিয়তি বলে জরিনা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

গাজীপুর মনিপুর বিশিয়া বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২ শতাধিক বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সঙ্গে জরিনা সুন্দরীও একজন বাসিন্দা। যৌবনের ও বৃদ্ধ বয়সের নানা কাহিনী বলতে বলতে তিনি ডুঁকরে কেঁদে উঠেন।

জরিনা জানান, ষাটের দশকে তিনি সাত ভাই চম্পা, গুনাই, রূপবান, জরিনা সুন্দরী, সাগর ভাসা, আপন দুলাল ও বেহুলা ছবিতে অভিনয় করেছেন। এছাড়া আরও অনেক ছবিতে অভিনয় করেন। এক পর্যায়ে স্বামী আনোয়ার হোসেন ভুঁইয়া, এক ছেলে ও এক মেয়ে মারা যাওয়ার পর তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। ছেলের ঘরে তার চার নাতনী ও এক নাতী রয়েছে। আরও নামিদামি স্বজনরাও রয়েছেন।

কিন্তু অন্তিম সময়ে এসে জরিনা এ সব আপনজনদের কাছে লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার শিকার

হন। এক আপনজন তাকে ভারতে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তার কপালে সুখ সয়নি। ফেরত আসেন বাংলাদেশে। পরবর্তীতে স্বজনদের অত্যাচারে বাধ্য হয়ে চলে আসেন এই বৃদ্ধাশ্রমে।”

বৃদ্ধাশ্রমে অনেক স্বজন পরিত্যক্তরাই আশ্রয় নেন। কিন্তু জরিনার আশ্রয় নেয়া একটু ভিন্ন মাত্রায় বিশ্লেষণের দাবী রাখে। কারণ, জরিনা শুধু স্বজন পরিত্যাক্ত একজন গৃহবধু নন, জরীনা ষাটের দশকে একজন সাড়া জাগানো অভিনেত্রী। ঐ সময়ে যেসব সিনেমা জনমনে আলোড়ন তুলেছিলো জরিনা সে আলোড়ন সৃষ্টিকারী অভিনেত্রী। সে সময়ে জরীনার চোখ ধাধানো রূপ ছিলো, আঁখি জুড়ানো দেহ সৌষ্ঠব ছিলো। রূপ ও জৌলুসের সমন্বয়ে জরিনার জমকালো অবস্থান ছিলো। জরিনাকে দেখার জন্য বহু পিপাসার্ত পুরুষ ছিলো। একটু ছোয়া লাভের জন্য বহু ব্যাকুল লোক ছিলো। জরিনা ছিলো তাদের হৃদয়ের মধ্যমনি। আজকের ভাষায় যাকে বলে হার্টথ্রব নায়িকা।

কিন্তু কথা হচ্ছে, ষাটের দশক স্থিতু হয়ে থাকেনি। বিংশ শতাব্দী পার হয়েও একবিংশ শতাব্দী চলছে। এরই মধ্যে সুর্য অনেকবার উঠেছে। চাঁদ অনেকবার ডুবেছে। পাশাপাশি সেদিনের জরিনা সুন্দরীও আজ রূপলাবন্য দেহসুষমা হারিয়ে বার্ধক্যে পৌঁছেছে।

তবে প্রণিধানযোগ্য বিষয় হলো যে,  জরিনা যে শুধু তার স্বজনদের থেকেই বিতাড়িত হয়েছে তা নয়। একদিন জরিনা সুন্দরীর যে বিশাল ভক্তকুল ছিলো তারাও আজ কর্পুরের মত উবে গেছে। তারাও যেমন একদিকে জরিনার মত বার্ধক্যে পৌঁছেছে অপরদিকে বর্তমান যুব মহলও জরিনাকে তার স্বজনদের মতই প্রত্যাখান করছে।

তবে বিষয়টি হলো, বর্তমান যুব সমাজ আজকে যেসব যুব-যুবা নায়িকা-গায়িকাদের নিয়ে মাতামাতি করছে সেসব

নায়ক-নায়িকা

গায়ক-গায়িকা

নর্তক-নর্তকীরাও

কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে জরিনা সুন্দরীর মতই বার্ধক্যে পৌঁছবেন। এবং তখন তাদের স্বজনরা তাদেরকে একান্ত বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠালেও তাদের বর্তমান ভক্তকুলরা ঠিকই হারিয়ে যাবে।

আজকে বলা হচ্ছে, চলচ্চিত্র, প্যাকেজ নাটক, মডেলিং এগুলো একটা ইন্ড্রাস্ট্রি। কিন্তু এই ইন্ড্রাস্ট্রিতে ততক্ষণই চাকুরী থাকে যতক্ষণ রূপ-যৌবন, দেহ-সুষমা অভিনয় নৈপুন্য বজায় থাকে। কিন্তু এ ধারাবাহিকতায় যত বয়স বাড়তে থাকে তার গ্লামার তত কমতে থাকে। সুতরাং এই যখন অবস্থা তখন আজকে তথাকথিত খ্যাতির শিকরে যেসব নায়ক-নায়িকা উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে তারা কী একটু নিচের দিকে তাকিয়ে দেখবে? ষাটের দশকের মাতানো অভিনেত্রী তাও আজকে বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু পত্রিকায় এমনও খবর হয়েছে যে, বস্তিতে তিনদিন না খেয়ে ধুকে ধুকে ঔষুধের অভাবে মারা গেছে আশির দশকেরও সিনেমার নায়িকা।

এসব বাস্তবতা কী নছীহতের বিষয় নয়?

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে দেখে এবং যে দেখায় উভয়ের প্রতি লা’নত।’

লা’নত বলেই কোনো সিনেমার নায়ক-নায়িকার জীবনই আসলে শান্তিতে কাটেনা। ঘর-সংসার ভাঙা তাদের নিত্যদিনের ব্যাপার। এবং পরিশেষে এরকম বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নেয়া অথবা নিজগৃহে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা তাদের স্বাভাবিক পরিণতি।

পাশাপাশি স্বাধীনতা উত্তর এদেশে চলচ্চিত্র শিল্প জ্যামিতিক হারে বেড়েছে। চলচ্চিত্র প্রযোজকরা বলে বেড়ায় যে, তাদের তৈরি চলচ্চিত্র সমাজে মনন ও চেতনা তৈরি করবে। কিন্তু বাস্তব কথা হলো যে, স্বাধীনতা উত্তর এদেশের অপরাধ আর তার বিপরীতে চলচ্চিত্রের আনুপাতিক হিসেব করা হয়- তাহলে দেখা যাবে যে, অপরাধ অনেক গুণে বেড়েছে। অর্থাৎ স্বাধীনতা উত্তর চলচ্চিত্রগুলো সমাজদেহ থেকে কোন অপরাধ প্রবণতা দূর করতে তো সক্ষমই হয়নি উল্টো সামাজিক অবক্ষয় বহুগুণ বাড়িয়েছে। ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্রের অনুকরণে আজকে স্ত্রীরা হরহামেশা স্বামীর গালে থাপ্পর মারছে, পরকিয়া, লিভ টুগেদার সংস্কৃতিতে ভাসছে আর বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পৌঁছে দিচ্ছে।

বলাবাহুল্য, যে বা যারাই সিনেমা দেখে তারা নায়ক-নায়িকাকে মনস্তাস্তি¡কভাবে ভোগ করে থাকে। ঐসব নায়ক-নায়িকা সব দর্শকের চোখের দ্বারা অগণিতবার ধর্ষিত হতে থাকে। এ ধর্ষণও কিন্তু বড় অবমাননার, নিখাদ লাঞ্ছনার। কিন্তু অনেকটা বেশ্যা পেশার বলেই সিনেমার নায়ক-নায়িকারা তা আমলে নেয়না। উল্টো সিনেমা ম্যাগাজিনগুলো হেডিং করে থাকে, ওমুক (?) খ্যাত যৌন

আবেদনময়ী নায়িকা অথবা রূপালী পর্যায় ঝড় উঠানো নায়িকা। (নাউযুবিল্লাহ)

কিন্তু কথা হলো, সব ঝড়ই একসময় থেমে যায়। সিনেমার নায়ক-নায়িকাই শুধু দর্শক শ্রোতারও জীবনঝড়ও এক সময় থামবে। তারাও একসময় মৃত্যুবরণ করবে। তাদেরকেও আল্লাহ পাক উনার কাছে জবাবদিহী করতে হবে।  সেক্ষেত্রে ‘যে কেউ একটা পাপ কাজের সূচনা করলো যতজন লোক সে

পাপ কাজে জড়িত হলো সবার গুনাহ যে গুনাহর পথ দেখিয়েছে তার উপর গিয়ে পড়বে’- এ হাদীছ শরীফ অনুযায়ী নায়ক-নায়িকারা কত পাহাড়-সমুদ্র পরিমাণ গুনাহর জন্মদাতা তারা তা ভেবে দেখবে কী?

পাশাপাশি তারা আরো হিসেব করবে কী তাদের সার্থকতা কি? শুধু যৌবনকাল এবং পারফর্মেন্স সময় এতটুকুই তাদের অর্জন বা ভোগবিলাস। এতটুকুর জন্য তারা দুনিয়াও সামগ্রিকভাবে হারাচ্ছে আর পরকালেও অগণিত জাহান্নামীদের কারণ তথা মহা জাহান্নামী হচ্ছে।

তবে নায়ক-নায়িকাদের পাশাপাশি দর্শক শ্রোতারও আত্মউপলব্ধির জাগরণ দরকার। চলচ্চিত্র জগতে নায়িকারা যেমন অস্থায়ী তেমনি তাদের জীবনও অস্থায়ী। এই অস্থায়ী জগত থেকে স্থায়ী জগত মৃতুর দিকে তাদের ধাবিত হতে হবেই।

কুরআন শরীফ-এ তাই ইরশাদ হয়েছে, “প্রত্যেক নফসকে মুতৃর সাধ গ্রহণ করতে হবে।’

অন্যত্র আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘তোমরা মারা যেওনা মুসলমান না হয়ে।’

মূলতঃ আজকের যুগে ধর্মব্যবসায়ী তথা উলামায়ে ছূ’দের প্রাদুর্ভাব থাকায় এহেন ইসলামী চেতনা কারো মাঝে নেই বললেই চলে।

মূলতঃ এসব সহীহ সমঝ, উপলব্ধি ও কর্মতৎপরতার এই দৈন্যতা ও সমন্বয়হীনতা মূলত ইসলামী প্রজ্ঞার অভাবেই হয়ে থাকে।

আর কাক্সিক্ষত ও বাঞ্ছিত ইসলামী সমঝ ও প্রজ্ঞা কেবলমাত্র যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার নেক ছোহবতেই অর্জন সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

 

-মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।