তথাকথিত মডেলকন্যা আদৃতার খুন থেকে চট্টগ্রামে ছাত্রী সম্ভ্রমহরণকারী ওসি মিজান- সবাই সামাজিক অবক্ষয়ের খণ্ডিত চিত্র। ঘুনে ধরা সমাজটাকে না বদলালে; মডেলিং, সিনেমা-সংস্কৃতি, বেপর্দা বন্ধ না করলে; অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে খোদ রাষ্ট্রযন্ত্র। (১)

সংখ্যা: ২১০তম সংখ্যা | বিভাগ:

তথাকথিত মডেলকন্যা আদৃতাকে হত্যার খবরটি প্রায় সব পত্র-পত্রিকায় আলোচিত হয়েছে। এখনো এর ফলোআপ চলছে।

তথাকথিত মডেলকন্যা আদৃতার হত্যাকা- নিয়ে আলোচনা আরো হতে পারে এজন্য যে, এটা শুধু একজন মডেলকন্যার পরিণতি নয়। বরং হত্যার মতো পরিণতি না হলেও প্রায় সব মডেলকন্যা তথা নায়িকা-গায়িকারাই মূলত একই বলয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে।

মডেলিং অথবা নায়িকা-গায়িকার খাতায় নাম লেখাতে গিয়ে তাদেরকে প্রথমতঃ কারো খপ্পরে পড়ে নিজের সতীত্ব, সম্ভ্রম বিসর্জন দিতে হচ্ছে। এবং এ সংখ্যা শুধু একজনই নয়।

যখন যাকে প্রয়োজন তখন তাকেই সন্তুষ্ট করতে হচ্ছে।

আবার মডেল অথবা উঠতি নায়িকা-গায়িকা হিসেবে ঠাট বজায় রাখতে গিয়ে শুধু দেহব্যবসা নয়, রীতিমতো মাদকও বিক্রি করতে হচ্ছে। এ থেকেই এখন নতুন শব্দ তৈরি হয়েছে ‘ইয়াবা সুন্দরী’ থেকে ‘ফেন্সিডিল সম্রাজ্ঞী।’

পত্রিকায় খবর হয়েছে, এক বছর আগে কাজের সুবাদে র‌্যাম্প মডেল তাহিয়া তাবাসসুম আদৃতার (২০) সঙ্গে আরেক র‌্যাম্প মডেল আশীষ কর্মকার ওরফে রেহান ওরফে বিদ্যুৎ (২৩)-এর পরিচয় হয়। এরপর নাম ও ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে আশীষ রেহান নামে আদৃতার সঙ্গে ঘনিষ্টতা ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে। তাদের সম্পর্ক এক পর্যায়ে লি ভটুগেদারে পৌঁছে। এরপর আদৃতা বিয়ের জন্য তাকে চাপ দিতে শুরু করলে রেহান বারবার তা প্রত্যাখ্যান করে।

গত ৩রা নভেম্বর মোহাম্মদপুরের জেনেসিস ভিউ বিজ্ঞাপন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পুলিশ আদৃতার লাশ উদ্ধার করে। এরপর থেকেই পুলিশ ও গোয়েন্দারা আদৃতার ঘনিষ্ঠজনদের উপর নজরদারি শুরু করে। পরে ঘনিষ্ঠ পাঁচ বন্ধুকে শনাক্ত করা হয়। মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়েছে। মামলার তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, খুন হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে আদৃতা এসব ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এর মধ্যে জেনেসিস ভিউ অ্যান্ড মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের দু’জন ও আদৃতার তিন সহকর্মী বন্ধুর নাম পাওয়া গেছে। তদন্ত সূত্র জানায়, আদৃতাকে ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়েছে। তার সঙ্গে অনেক প্রভাবশালী লোকজনের সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন পণ্যের মডেল বানানোর লোভ দেখিয়ে তারা আদৃতাকে ব্যবহার করেছে। পরে মডেল হিসেবে তাকে নেয়নি। এ নিয়ে অনেক বিপণন কর্মকর্তার সঙ্গে আদৃতার বিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে অবৈধ মেলামেশার বিষয়টি ফাঁস করার হুমকি দেয়ার পর তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছিল আদৃতা।

আদৃতার খালা রুমী জানায়, আদৃতা তার সঙ্গেই গোড়ানের একটি বাসায় থাকত। তার বাবা তৌহিদুল ইসলাম আজাদ থাকেন কুমিল্লায়। মা বেবি থাকেন ঢাকার মতিঝিলের বোনের বাসায়। কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর আদৃতা ঢাকায় আসে। এরপর থেকে সে মডেলিংয়ের চেষ্টা করতে থাকে। (সকালের খবর : ১৫/১১/২০১১ ঈসায়ী)

উল্লেখ্য, মডেলিং, র‌্যাম্প মডেলিং এখন বহুল প্রচলিত ও শ্রুত শব্দ। কিন্তু এর ভেতরটা পুরোই অন্ধকার। এ জগতের বাসিন্দারা কখনই চরিত্রবান থাকে না। অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক থাকে বহুজনের সাথে। বিয়ের পরও সৎ থাকা যায় না। আসে পুরানো সঙ্গীদের দাবি পূরণের আহবান। এক পর্যায়ে মুখোমুখি হয় হত্যাকা-ের।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে সাড়া জাগানো মডেলকন্যা তিন্নী খুন হওয়ার ৫ দিন পর তার গলিত লাশ বুড়িগঙ্গা সেতুর নিচ থেকে পুলিশ উদ্ধারের পর আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম তা দাফন করেছিল। পরে লাশের পরিচয় মিললে এ নিয়ে শোবিজে হইচই পড়ে যায়। আলোচিত সেই হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভি এখনো বিদেশে ফেরারি। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিন্নীর স্বামী পিয়াল গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস করেছে কয়েক মাস। বিচারাধীন ওই মামলার রায় সহসাই ঘোষণা হতে পারে বলে নিহতের পারিবারিক সূত্র দাবি করেছে।

(২)

বলাবাহুল্য, মডেল নায়িকা-গায়িকাদের এসব কাহিনী এটাই প্রতিভাত করে যে, সমাজ আজ চরিত্রহীনতার পঙ্কিলতার আবর্তে মহা কলুষিত। এ কলুষতা সংক্রমিত। এমনকি মন্ত্রিত্বের পদ থেকে আরম্ভ করে খোদ পুলিশ প্রশাসনেও এ আজ মহামারিরূপে দেখা দিয়েছে।

ভাত একটা টিপার মতোই এর নিকৃষ্ট নজিরও আজ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত। গত ১৪/১১/১১ তারিখে পত্রিকায় হেডিং ও খবর হয় :

‘চট্টগ্রামে ছাত্রী সম্ভ্রমহরণ চেষ্টা মামলায় ওসি কারাগারে।’

চট্টগ্রামে হোটেলে আটকে রেখে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় বি-বাড়িয়ার কসবা থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গত রোববার চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম এটিএম নিজামুল হকের আদালতে ওসি মিজান আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলেও আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। কলেজ ছাত্রীকে সম্ভ্রমহরণ চেষ্টার ঘটনার প্রায় চার মাস পর আলোচিত ওসি মিজানকে কারাগারে যেতে হলো।

মামলার বিবরণে জানা যায়, এ বছর ১২ জুলাই চট্টগ্রাম ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী ও তার এক ছেলে বন্ধু ফয়’স লেকে বেড়াতে গেলে ওসি মিজান নিজেকে এসি (সহকারী কমিশনার) ইকবাল পরিচয় দিয়ে দু’জনকেই জোর করে তার গাড়িতে তুলে নগরীর চকবাজার এলাকায় ‘আল আকাবা’ হোটেলে নিয়ে যায়। রাতে দু’জনকে দুটি কক্ষে আটকে রেখে ছাত্রীটিকে সম্ভ্রমহরণের চেষ্টা চালায় ওসি মিজান। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীটি হোটেল কক্ষের বাথরুমে আশ্রয় নিয়ে ভেন্টিলেটরের কাঁচ দিয়ে নিজের হাত ও গলাকেটে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ওসি মিজান পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২৩ সেপ্টেম্বর ওসি মিজান, আল আকাবা হোটেলের ম্যানেজার ও বয়কে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। তিন মাস পালিয়ে থাকার পর ওসি মিজান চট্টগ্রামের আদালতে হাজির হয়ে উচ্চ আদালত থেকে নেয়া জামিননামা দাখিল করে। জামিনের মেয়াদ শেষে আদালত ১৩ নভেম্বর তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল। সে অনুযায়ী গত রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

উল্লেখ্য, ধর্ষক থেকে রক্ষকের ভূমিকা হলো পুলিশের। কিন্তু সে পুলিশই যদি হয় ধর্ষক, তাহলে সমাজ আজ কোন অধঃপাতে গেছে?

উল্লেখ্য, সমাজ অনেকগুলো এককের সমন্বয়। অনেকগুলো পরিবারের সমষ্টি। তাই সমাজে ঘুন ধরলেও তার প্রতিকারে তার প্রতিরোধে এগিয়ে না আসলে সমাজের অবক্ষয়ের ¯্রােতে ভেসে যেতে হবে সবাইকে।

খোদ রাষ্ট্রযন্ত্রেরও করুণ দশা বরণ ব্যতিরেকে উপায় থাকবে না।

রাষ্ট্রের মন্ত্রী, বিচারক, প্রশাসন থেকে পুলিশ প্রায় সবাই থাকবে মনস্তাত্ত্বিকভাবে এক একটা ধর্ষক, লুণ্ঠক।

পোশাকী আচরণের ভেতরে মন-মানসিকতা থাকে পশুর মতো।

কেবল সুযোগ পেলেই হলো- খুবলে খাওয়া।

পিলখানার ঘটনাপ্রবাহ কী এর যথেষ্ট উদাহরণ নয়?

এর চেয়ে বড় শিক্ষাও কী আমাদের দরকার?

-মুহম্মদ মুহসীনুর রহমান

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।