তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

সংখ্যা: ১৯৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণ মানুষের ন্যায় মায়ের রেহেম শরীফ থেকে পৃথিবীতে তাশরীফ আনেননি। শুধু তাই নয় নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের কেউই সাধারণ মানুষের মত ভূমিষ্ট হননি। কারণ হলো, নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণকে আল্লাহ পাক খাছ বা বিশেষভাবে মনোনীত করেই সৃষ্টি করেছেন।

এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

الله يجتبى اليه من يشاء

অর্থ: “আল্লাহ পাক যাকে চান উনাকে খাছ নিয়ামত দানে অর্থাৎ নবী-রসূলরূপে মনোনীত করেন।” (সূরা শূরা-১৩)

উল্লেখ্য, নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা যেহেতু আল্লাহ পাক-উনার তরফ থেকে খাছভাবে মনোনীত এবং আল্লাহ পাক-উনার বার্তা বা ওহীর ধারক ও বাহক সেহেতু আল্লাহ পাক উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে দিয়েছেন। অর্থাৎ উনাদের বিষয়গুলো আর অন্য সব মানুষের বিষয়গুলো একরকম নয়। উনাদের চলা-ফেরা, আচার-ব্যবহার, কথা-বার্তা, আহার-নিদ্রা ইত্যাদি সবকিছুই অন্য মানুষ হতে ব্যতিক্রম। আর ব্যতিক্রম হবেইনা বা কেন, যেহেতু উনারা সার্বিক ও পরিপূর্ণরূপে ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

কাজেই, নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ যমীনে আগমন করেছেন। উনাদের যমীনে আগমন আর অন্যান্য মানুষের যমীনে আগমনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য মানুষ সাধারণত স্বাভাবিক পথেই ভূমিষ্ট বা জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা কেউই স্বাভাবিক পথে যমীনে আগমন করেননি। বরং বিশেষ পথে যমীনে আগমন করেন।

যেমন এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে-

كل مولود غير الانبياء يولد من الفرج وكل الانبياء غير نبينا مولود من فوق الفرج وتحت السرة.

অর্থ: নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা ব্যতীত সমস্ত মানুষই স্বাভাবিক পথেই আগমন করেন। আর সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা স্বাভাবিক পথের উপর ও নাভির নিচ থেকে বিলাদত শরীফ লাভ করেন। (উমদাতুন নুকুল ফী কাইফিয়াতে ওয়ালাদাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

যেখানে নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের যমীনে আগমনের বিষয়টি সাধারণ মানুষের মত নয় সেখানে যিনি নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টি তো আরো ঊর্ধ্বের আরো স্বতন্ত্র। তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই উনার যমীনে আগমন বা তাশরীফ নেয়া সম্পর্কে কিতাবে যে নির্ভরযোগ্য মতটি বর্ণিত রয়েছে তাহলো-

واما نبينا صلى الله عليه وسلم فمولود من الخاصرة اليسرى تحت الضلوع.

অর্থ: আমাদের নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্ সালাম-উনার বাম পার্শ্বের পাঁজরের নিচ থেকে বিলাদত শরীফ লাভ করেন। (উমদাতুন নুকুল ফী কাইফিয়াতে ওয়ালাদাতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

প্রতিভাত হলো, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যান্য মানুষের মত বিলাদত শরীফ লাভ করেননি বা যমীনে তাশরীফ আনেননি। বরং আল্লাহ পাক উনাকে কুদরতিভাবে উনার আম্মা আলাইহাস্ সালাম-উনার বাম পাঁজরের নিচ দিয়ে যমীনে প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ!

আর এ বিষয়টি আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার অন্তর্ভুক্ত যে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামই অন্য মানুষের মত স্বাভাবিক পথে যমীনে আগমন করেননি। বরং উনারা প্রত্যেকেই কুদরতিভাবে কুদরতি পদ্ধতিতে যমীনে আগমন করেন বা তাশরীফ নেন।

কাজেই, যারা বলছে যে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মতো। নাঊযুবিল্লাহ! তাদের যমীনে আগমন কি মায়ের বাম পাঁজরের নিচ থেকে হয়েছে? কখনোই নয়। তাহলে তাদের এ কথা কি করে শুদ্ধ হতে পারে যে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মতো? নাঊযুবিল্লাহ! মূলত তাদের সে বক্তব্য সম্পূর্ণ কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী