তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

সংখ্যা: ১৯৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নবী ও রসূল হিসেবে স্বীকার করা বা উনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং উনার আদেশ-নিষেধগুলো মেনে নেয়া ও মেনে চলার নামই দ্বীন বা শরীয়ত। এজন্য হাদীছ শরীফ-এ এসেছে নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

الشريعة اقوالى

অর্থাৎ- আমার কথা মুবারকগুলিই শরীয়ত। সুবহানাল্লাহ!

আল্লাহ পাক জাল্লা শানুহূ তিনি যে আমাদের রব তিনি যে আমাদের খালিক্ব  ও মালিক তা আমাদেরকে কে বললেন বা কে জানালেন? কুরআন শরীফ কে বর্ণনা করে বললেন যে এটা আল্লাহ পাক-উনার কালাম? আল্লাহ পাক-উনাকে বিশ্বাস করতে হবে, উনার আদেশ-নিষেধগুলো মানতে হবে তা আমাদেরকে কে বললেন? এসব কিছুই মূলত নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র যবানে উনার মুবারক ক্বওল বা কথা মুবারকের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই, দেখা যাচ্ছে শরীয়তের ধারক-বাহক, প্রবর্তক হলেন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আল্লাহ পাক জাল্লা শানুহূ যেমন শরীয়তের বিধান প্রবর্তন করেছেন তেমনি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও শরীয়তের বিধান প্রবর্তন করেছেন। আর তাই কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, æকোন মুসলমান নর-নারীর জন্য জায়িয হবে না আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ফায়ছালাকৃত কোন বিষয়ে কোন মত প্রকাশ করা। যে আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাফরমানী (আদেশ ও নিষেধের খিলাফ) করবে সে প্রকাশ্য গোমরাহীতে নিপতিত হবে বা গোমরাহ হয়ে যাবে।” (সূরা আহযাব-৩৬)

বুঝা গেল, আল্লাহ পাক-উনার ফায়ছালা মানা যেমন ফরয একইভাবে উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ফায়ছালা মানাও তেমনি ফরয।

এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এর কিতাব আবূ দাউদ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে- হযরত মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, জেনে রাখ, আমাকে কুরআন শরীফ দেয়া হয়েছে এবং তার সাথে তার অনুরূপ হাদীছ শরীফও দেয়া হয়েছে। জেনে রাখ, এমন এক সময় এসে পৌঁছতেছে, যখন কোন উদরপূর্ণ অবস্থাসম্পন্ন লোক তার গদিতে বসে বলবে, তোমরা শুধু এই কুরআন শরীফকেই গ্রহণ করবে। তার মধ্যে যা হালাল পাবে তাকে হালাল জানবে আর তার মধ্যে যা হারাম পাবে তাকে হারাম মনে করবে। অথচ নিশ্চয়ই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা হারাম করেছেন তা আল্লাহ পাক যা হারাম করেছেন তার অনুরূপ। জেনে রাখ, গৃহপালিত গাধা তোমাদের জন্য হালাল নয় এবং ছেদনদাঁতওয়ালা কোন হিংস্র পশুও হালাল নয়। এরূপে সন্ধিতে আবদ্ধ মুসলমানদের হারান বস্তুও তোমাদের জন্য হালাল নয়; অবশ্য সে যদি তার ধারই না ধারে। যখন কোন লোক কোন ক্বওম বা সম্প্রদায়ের নিকট আগন্তুক হিসেবে পৌঁছে তখন তাদের উচিত তার মেহমানদারী করা। যদি তারা না করে তাহলে তাদের কষ্ট দিয়ে হলেও তার মেহমানদারী পরিমাণ জিনিস আদায় করার অধিকার তার রয়েছে। (অথচ কুরআন শরীফে এসব বিষয়ের উল্লেখ নেই)।

হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে, হযরত ইরবায ইবনু সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একদিন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (আমাদের মধ্যে) দাঁড়ালেন এবং বললেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার গদিতে হেলান দিয়ে একথা মনে করে যে, আল্লাহ তায়ালা যা এই কুরআন মাজীদে হারাম করেছেন তা ব্যতীত তিনি আর কিছুই হারাম করেননি? তোমরা জেনে রাখ, আমি আল্লাহ তায়ালার কসম করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে অনেক বিষয় আদেশ দিয়েছি, উপদেশ দিয়েছি এবং অনেক বিষয় নিষেধও করেছি, আমার এরূপ বিষয়ও নিশ্চয়ই কুরআন কারীম-এর বিষয়ের সমান। বরং তা হতেও অধিক অথবা তা অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা মনে রাখবে যে, অনুমতি ব্যতীত আহলে কিতাব যিম্মীদের বসতঘরে প্রবেশ করা, তাদের নারীদের প্রহার করা এবং তাদের ফলÑশস্য খাওয়াকেও আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য হালাল করেননি, যদি তারা তাদের উপর নির্ধারিত কর আদায় করে দেয়। (অথচ এ সকল বিষয় কুরআন পাকে নেই।) আমার মারফতই আল্লাহ পাক এ বিষয়গুলো হারাম করেছেন। (আবূ দাউদ শরীফ)

অর্থাৎ নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নিষেধগুলো আল্লাহ পাক উনার নাযিলকৃত আদেশ-নিষেধগুলোর মধ্যে কোন প্রভেদ নেই। উভয় হুকুমই পালন করা ফরয। প্রতিভাত হলো, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাকে নবী ও রসূল হিসেবে বিশ্বাস করা বা স্বীকার করার নামই হলো ঈমান এবং উনার হুকুম বা আদেশ-নিষেধসমূহ মানা ও পালন করার নামই ইসলাম। এর নামই দ্বীন এবং এর নামই হলো শরীয়ত।

কাজেই, যারা বলছে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তাদের মতো নাঊযুবিল্লাহ! তাদের কথা, তাদের আদেশ-নিষেধ কি আল্লাহ পাক-উনার আদেশ-নিষেধগুলির মতো? সেগুলি কি ওহীর অন্তর্ভুক্ত, দ্বীন বা শরীয়তের অন্তর্ভুক্ত? কখনোই নয়। তাহলে তাদের একথা কি করে শুদ্ধ হতে পারে যে, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মতো। নাঊযুবিল্লাহ!

মূলত তাদের একথা সম্পূর্ণরূপে কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী