নাগরিক চেতনায় ও সরকার পরিচালনায় মূল্যবোধের প্রতিফলন ও বৃদ্ধি ঘটাতে হলে ইসলামী আদর্শের অনুশীলন ও চর্চা অনিবার্য

সংখ্যা: ২০১তম সংখ্যা | বিভাগ:

রাষ্ট্রযন্ত্রটি কেবল বিকল হতেই বাকী নয়; বরং মহাবিস্ফোরনোম্মুখ হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র যার উপর ভর করে আছে সেই সমাজে ঘুনে ধরে কতবেশি ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে-দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, দুর্ঘটনা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হতেই উন্মোচিত হয়। পাশাপাশি প্রতিভাত হয়, নাগরিক চেতনায় ও সরকার পরিচালনায় মূল্যবোধের প্রতিফলন ও বৃদ্ধি ঘটাতে হলে ইসলামী আদর্শের অনুশীলন ও চর্চা অনিবার্য।

 

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

এমপির অস্ত্রে নিজ দলীয় কর্মী খুন। বিরোধীদলীয় কর্মীর লাঠির আঘাতে জর্জরিত হয়ে নাটোর উপজেলা চেয়ারম্যান খুন। আর সে খুনের প্রতিবাদ সভা করতে গিয়ে ট্রেন চালিয়ে ৬ জন খুন। এরপরে নাটোরে টিজিং-এর প্রতিবাদে আরো এক খুন। রূপগঞ্জে হাউজিং নিয়ে খুন। খুন যেন দেশে চেপে বসেছে।

গত ১১/১০/২০১০ ইং, সোমবার স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে নিহত শহীদ জেহাদ স্মরণে জাতীয়বাদী ছাত্রদল সিরাজগঞ্জ সয়দাবাদ রেলগেট নামক স্থানে সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে সমাবেশ চলছিল। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল তিনটার দিকে দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একটি আন্তনগর ট্রেন ওই স্থান দিয়ে যাচ্ছিল। রেললাইন ও সমাবেশমঞ্চের মধ্যে দূরত্ব কম হওয়ায় খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা নেতা-কর্মীদের অনেকেই লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে বা বসে ছিলেন। ট্রেনটি হুইসেল দিতে দিতে খুব কাছে এসে পৌঁছালেও অনেকে সেখানেই অবস্থান করেন। এতে চলন্ত ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। অনেককে আহতবস্থায় সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ট্রেনটি ধীরগতিতে ঘটনাস্থল পার হওয়ার সময় বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা পাথর নিক্ষেপ করে ট্রেনের কাচ ও জানালা ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে মঞ্চ থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে ট্রেনটি থেমে যায়। ট্রেনটি থামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ভেতরে ঢুকে চালক ও কর্মীদের মারধর করতে থাকেন। এসময় আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীরা দিগি¦দিক ছুটতে থাকে। ইট-পাথরের হামলায় অনেক যাত্রীর মাথা ফেটে রক্ত পড়তে দেখা যায়। অনেক যাত্রী অভিযোগ করেন, তাঁদের টাকা, স্বর্ণালংকার, মুঠোফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার দাবী অনুযায়ী, ‘উল্লাপাড়ায় সমাবেশ করার জন্য প্রথমে জায়গা নির্বাচন করা হলেও সেখানে মন্ত্রী পদমর্যাদার একজন উপদেষ্টার আসার কারণে করা হয়নি। পরে এই স্থানে সমাবেশ করার জন্য আগে থেকে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। এবং তাদের বলা হয়েছে, দুপুর দুইটার পর থেকে সাতটা পর্যন্ত কোনো ট্রেন এই লাইনে চলবে না।’

অপরদিকে রেল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘রেললাইনের আশপাশে জনসভার অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

প্রত্যক্ষদর্শরা জানান, ‘ট্রেন খুব কাছে আসার পর হুইসেল বাজিয়েছে। রেললাইনের ওপর বসা ও দাঁড়ানো মানুষ বুঝতে পারেনি, ট্রেন আসছে।’ এদিকে দুর্ঘটনার পর পর বিক্ষুব্ধ জনতা ট্রেনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

প্রসঙ্গতঃ বর্ণিত ঘটনায় সভা অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ কিভাবে অনুমতি দিলেন? এটা যেমন জ্বলন্ত প্রশ্ন?

সভা আয়োজনকারীরাও রেল লাইন সংলগ্ন জায়গাকে বেছে নেয়ার আগে চিন্তা করলেননা, দায়িত্ববোধের পরিচয় দিলেন না এটাও বড় প্রশ্ন?

অপরদিকে জনতাও কেন রেললাইনের উপর বসাকে নীতিহীন ও দায়িত্বহীন বলে মনে করলেন না সেটাও তাদের প্রতি নিবদ্ধ প্রশ্ন?

এমনকি তারা এতই বেখেয়াল যে, দ্রুত গতিতে ও শব্দে

আসা একটা ট্রেনের আগমন ধ্বনিটাও বুঝতে পারলেন না?

এতখানি গাফিল মানসিকতা নিয়ে তারা জীবন-যাপন করেন কেন, সেটাও এক স্বাভাবিক প্রশ্ন?

অপরদিকে ট্রেন থামার সাথে সাথেই ট্রেন সংশ্লিষ্ট

লোককে পিটিয়ে নিহত করা ।

যাত্রীদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে রক্তাক্ত করা। তাদের জিনিসপত্র লুটপাট করা।

সর্বোপরি ট্রেনের ৭টি বগীতে আগুন ধরিয়ে দেয়া;

প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতিক্রিয়া, ঘাতকের কায়দায় কেন?  এসবই ঘোর তীর্যক প্রশ্ন?

পাশাপাশি প্রশ্ন, কুমিল্লা যুবদলের প্রকাশ্য অস্ত্রবাজি দেশে আইন শৃঙ্খলার ভারসাম্য কোন পর্যায়ে?

প্রশ্ন- ওভারটেক করার মানসিকতার প্রেক্ষিতে ব্রীজ থেকে ছিটকে নদীতে বাস দুর্ঘটনার মত ঘটনার আর কত জন্ম?

প্রশ্ন- দুই দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে যেখানে নদীতে ডুবে যাওয়া একটি বড় বাসকে উদ্ধার নয়, কেবল ডুবে যাওয়া স্থানটি পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারলো না কেন?

অথচ সে কাজটি মাত্র একজন সাধারণ জেলের দ্বারা সম্ভব হতে পারলো?

উপরোক্ত সব কিছুই প্রতিভাত করে যে, দেশের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন তথা সর্বস্তরের মানুষদের মাঝেই

মানবিক চেতনা,

আদর্শিক মূল্যবোধ,

দায়িত্বপরায়ণতা,

কর্তব্যনিষ্ঠা,

সহনশীলতাসহ সব সামাজিক মূল্যবোধ চুড়ান্তভাবে বিদায় নিয়েছে।

সমাজ এখন একটা মূল্যবোধহীন ধ্বংস্তুপ কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে। এজন্য এ সমাজের উপর দাঁড়ানো বর্তমান রাষ্ট্রযন্ত্রটি যে কোন সময় শুধু বিকলই নয়; বরং  আত্মঘাতী বিস্ফোরনোম্মুখ হয়ে পড়তে পারে।

প্রধানমন্ত্রী যেমন বিরোধী দলীয় নেত্রীর দিকে সন্দেহের বান নিক্ষেপ করেছেন-

পাল্টা বিরোধীদলীয় নেত্রীও প্রতিহিংসার, জ্বালাও-পোড়াও তথা সরকার পতনের ডাক দিয়েছেন। এ ডাক কার্যকর করতে বিরোধীদলীয় নেত্রীর লোকজন আস্কারা পেলে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে, কুমিল্লার যুবদলের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি করে তার স্পষ্ট নমুনা দেখিয়েছে।

অপরদিকে ছাত্রলীগ, যুবলীগের টেন্ডারবাজি, মারামারির হিংস্রতা নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীও মহাবিব্রত। দলীয়

নেতাদের হিমশিম অবস্থা। পাশাপাশি দু’দলেই নেতাদের

উচ্চ পর্যায়ে বিভেদ, বিবাদ এখন বেসামাল অবস্থা। সব মিলিয়ে ভার পড়ছে কিন্তু ঐ রাষ্ট্রযন্ত্রটির উপরই।

কাজেই এর কলকব্জা এখন যে কেবল নড়বড়ে তাই নয়; বরং কলকব্জা ভেঙ্গেচুড়ে রিয়েকশনে এখন গোটা যন্ত্রটিই বিস্ফোরিত হতে পারে। রাষ্ট্রযন্ত্র শব্দটির উৎপত্তি দ্বারা প্রতিভাত হয়, আসলে সমকালীন কথিত রাষ্ট্র চলে যন্ত্রের প্রক্রিয়ায়ই।

এখানে মানবতা, আদর্শ, ইসলাম অনুসরণ করা হয় না। এর চর্চা হয় না। অনুশীলন হয় না। অথচ যন্ত্র সে তো একসময়ে বিকল হবেই। কিন্তু আদর্শতো বিকল হয় না। ইসলাম পালন তো বিফলে যায় না। কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘তোমরা চিন্তিত হয়োনা, তোমরা পেরেশানিগ্রস্থ হয়োনা, তোমরাই কামিয়াব হবে, যদি তোমরা ইসলাম পালন করে মু’মিন হও।’ বিদায় হজ্জের খুৎবায় তাই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের জন্য দু’টো জিনিস রেখে যাচ্ছি- যতক্ষণ তোমরা তা আকড়ে থাকবে ততক্ষণ উন্নতির শীর্ষ শিখরে থাকবে। আর যখনই তা থেকে বিচ্যুত হবে তখনই পদদলিত ও লাঞ্ছিত হবে। আর তাহলো, কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ।’

মূলতঃ এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার নেক ছোহবতে তা খুব সহজেই পরিপূর্ণ হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

 

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।