নারী অধিকার প্রসঙ্গে

সংখ্যা: ২০৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

পাঠ্যবই, স্কুল আর বাড়ির মধ্যেই তাদের জীবন সীমাবদ্ধ। অনেক ছেয়েমেয়েকে আমি দেখেছি যারা খেলাধুলা করতে চায়, কিন্তু মাঠের অভাবে খেলাধুলা করতে পারে না। স্কুল-কলেজ, না বাড়িতে।” (দৈনিক সমকাল: ১১ এপ্রিল ২০১০ ঈসায়ী)

উপরের উক্তির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে আলোচনা করা যাক তথাকথিত পাঠ্যবই নিয়ে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিষয়গুলো পড়ানো হয় অবশ্যই তা দ্বীনি কোন বিষয় নয়। অথচ সবাই জীবনের ৫ বছর থেকে শুরু করে ২৫ বছর পর্যন্ত, কোন কোন ক্ষেত্রে সারা জীবনই এই দুনিয়াবী শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।

হাদীছ শরীফ-এ আছে, দুই প্রকার ইলম অর্জন করা ফরয। ১. ইলমে ফিক্বাহ ২. ইলমে তাছাউফ।

ইলমে ফিক্বাহর মধ্যে যে বিষয়গুলো রয়েছে তা হচ্ছে- নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, হালাল, হারাম, ঈমান, আক্বীদা, শরীর চর্চা ইত্যাদি বিষয়ের মাসয়ালা-মাসায়িল সম্পর্কে জানা। যা একজন মুসলমানের দৈনন্দিন জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এবং ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল আমল সম্পর্কে জানা এবং প্রতিটা ধাপে ধাপে তা পালন করা।

তাছাড়া মুসলমানদের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে জানাও প্রত্যেকের জন্য ফরয। কারণ অতীত ইতিহাস সবসময় সত্য স্বাক্ষ্য বহন করে থাকে যা বর্তমান এবং ভবিষ্যৎকে হাক্বীক্বীভাবে মূল্যায়ন করতে সহায়তা করে। আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জীবনী মুবারক, উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম এবং পরবর্তী থেকে এ পর্যন্ত যত আল্লাহ পাক উনার ওলী রহমতুল্লাহি আলাইহিম দুনিয়াতে তাশরীফ এনেছেন প্রত্যেকের জীবনী মুবারক পড়া, জানা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয-ওয়াজিব। যেহেতু উনারাই দ্বীন ইসলামের ধারক-বাহক; সেজন্য উনাদের জীবনী মুবারক থেকে মুসলমানদের ঈঁষঃঁৎব জানা যেমন সহজ হয় তেমনি বাস্তবে সেভাবে জীবনযাপন করারও আগ্রহ সৃষ্টি হয়। অথচ তথাকথিত মুসলমানগণ তথাকথিত পাঠ্যবইগুলোতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইহুদী, মজুসীরা কথিত সমাজের নামকরা (?) ব্যক্তিবর্গের ইতিহাস ছাপিয়ে থাকে এবং ছাত্র-ছাত্রীরা তাই পড়ে দ্বীনি শিক্ষা বাদ দিয়ে বিজাতীয় বেদ্বীনি ও বদদ্বীনের শিক্ষা গ্রহণ করে সেভাবেই যার যার জীবনকে বাস্তবায়ন করে থাকে। নাউজুবিল্লাহ! যার ফলশ্রুতিতে দেখা যায় আজকের মুসলমানগণ প্যান্ট-শার্ট, কোনাফাড়া জামা পরিধান করে যা খ্রিস্টান ও হিন্দুদের পোশাক। অথচ মুসলমানদের পরা উচিত ছিল মুসলমানদের নির্ধারিত পোশাক- কোণাবন্ধ কোর্তা, সেলাইবিহীন লুঙ্গি, মাথায় পাগড়ি (কালো, সাদা এবং সবুজ রঙের) এবং সাদা রুমাল।

মুসলিম মেয়েদের পরা উচিত ছিল কোণাবন্ধ কামিছ যা কোর্তার মতোই এবং স্যালোয়ার। অথচ তারা কোণাফাড়া কামিছ পরিধান করে থাকে তাও হালে তা এতটাই শর্ট হয়েছে যে, কোমর থেকে সামান্য একটু নিচে থাকে অর্থাৎ নিচের দিকে যা পুরুষের শার্টের সমান! নাঊযুবিল্লাহ!

আজকাল মুসলমানরা ইহুদী-নাছারাদের মত টেবিল-চেয়ারে বসে থাকে। শুধু ঘরেই নয় প্রতিটা শিক্ষাঙ্গন, প্রতিষ্ঠান, শপিং মল, হাসপাতাল সর্বত্র টেবিল চেয়ারের প্রচলন। অথচ মুসলমানদের জন্য বসার তরতীব হচ্ছে মেঝেতে এবং খাওয়ার তরতীব হচ্ছে মেঝেতে বসা এবং চামড়ার দস্তরখান বিছিয়ে কাঠের পেয়ালাতে খাবার, পানি খাওয়া।

শুধু তাই নয়, আজকাল মুসলমানগণ (ছেলে-মেয়ে উভয়ই) বেদ্বীন-বদদ্বীনের মতো বেপর্দা হয়ে বেহায়া-বেলাজের মতো ঘুরে বেড়ায়। আর পর্দা তো দূরের কথা শরীয়তের ‘মাহরাম’ এবং গায়রে মাহরাম শব্দের সাথেও তারা পরিচিত নয়। আবার ছবি তোলা, রাখা, গান-বাজনা মুসলমানদের জন্য হারাম কিন্তু এখনকার গুটিকয়েক মুসলমান ছাড়া প্রত্যেকেই ছবি তুলে থাকে, ঘরে রেখে থাকে, মূর্তি ভাস্কর্য তৈরি করে থাকে এবং ঘরে-প্রতিষ্ঠানে রেখে থাকে। গান-বাজনা শুনে থাকে, শিখে থাকে এবং সন্তানদেরও শিখিয়ে থাকে। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ এগুলো খোদ ইবলিস শয়তানের কাজ। কিন্তু আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, æআমি বাদ্যযন্ত্র এবং মূর্তি ধ্বংস করতে এসেছি।”

ছবি যেখানে থাকে রহমতের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সেখানে প্রবেশ করেন না। সেখানে নামায পড়লে মাকরূহ তাহরীমী হবে এবং ওয়াক্ত থাকতেই নামায আবার দোহরিয়ে পড়তে হবে। গান-বাজনা যেখানে চলতে থাকে সেখানে আল্লাহ পাক উনার রহমত থাকে না। থাকে শুধু জহমত যা আযাবের কারণ। অথচ মুসলমানরা তাই করে থাকে।

এখন আসা যাক খেলাধুলার বিষয়ে। হাদীছ শরীফ-এ এসেছে- ‘প্রত্যেক খেলাধুলা হারাম।’ কিন্তু এখন মুসলমান দেশগুলোতেই বেশি খেলার প্রচলন দেখা যায়। ফুটবল, ক্রিকেট, দাবা, বাস্কেটবল, টেনিস বল, দৌঁড়, কাবাডি, হাডুডু, গাড়ি, সাইকেল, মোটর সাইকেল ইত্যাদি খেলার প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে এবং দর্শক-শ্রোতা আনন্দচিত্তে দেখে ও শুনে থাকে। আফসুস! সেসব মুসলমানদের জন্য। যারা সরাসরি আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নিষেধকে অমান্য করে থাকে।

মুসলমানগণ জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য ‘ঘোড়ায় চড়া, সাঁতার কাটা, তীর ছোড়া’ এই তিনটি বিষয়ের উপর অনুশীলন করতে পারবে। খেলা হিসেবে নয়- কিন্তু এই হাদীছ শরীফ সম্পর্কে মুসলমানগণ বেখবর।

এখন আসা যাক ‘ইলমে তাছাউফের বিষয়ে- এখানে মুসলমানদের মূল শিক্ষাই হচ্ছে ‘যিকির’ দ্বারা ক্বলবের পরিশুদ্ধিতা অর্জনের পদ্ধতি শিক্ষা করা। সবচেয়ে উত্তম যিকিরই হচ্ছে কালিমা শরীফ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ যা পাছ-আনফাছ (শ্বাস গ্রহণ এবং শ্বাস ফেলার) মধ্য দিয়ে করা সবার জন্য সহজ পদ্ধতি। তারপর আল্লাহ পাক উনার ‘যিকিরও রয়েছে যা করার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। অথচ মুসলমানগণ উক্ত যিকির সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাফিল। একমাত্র ‘যিকির’-এর মাধ্যমেই আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত ও মা’রিফাত অর্জন করা যায়। যিকিরের দ্বারা অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।

আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে রহমতপ্রাপ্ত হয়- সে খবর তথাকথিত মুসলমানদের জানা নেই! আল্লাহ পাক তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, æতোমরা বেশি বেশি আল্লাহ পাক উনার যিকির করো। তাহলে অবশ্যই তোমরা কামিয়াবী লাভ করবে।” (সূরা জুমুয়া : আয়াত শরীফ ১০)

অথচ আল্লাহ পাক উনার সৃষ্ট জীব এবং শ্রেষ্ঠ মানুষ, শ্রেষ্ঠ উম্মত. উম্মতে হাবীবী হওয়া সত্ত্বেও ক’জন মুসলমান আল্লাহ পাক উনাকে স্মরণ করে? আল্লাহ পাক আমাদের খালিক্ব, মালিক, রব্বুল আলামীন। তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন উনার ইবাদত-বন্দিগী, আদেশ-নিষেধ পালন করতে। আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ-এর সূরা জারিয়াতের ৫২ নম্বর আয়াত শরীফ-এ জানিয়ে দিয়েছেন- æআমি (আল্লাহ পাক) মানুষ এবং জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি শুধুমাত্র আমার ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য।” কিন্তু মানুষরা বিশেষ করে আজকের মুসলমানগণ এই আয়াত শরীফ-এর মিছদাক হতে পারছে না! দুনিয়ার ভোগ-লালসায় তারা মশগুল। কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ তাদের জন্য ইবরত বা নছীহতের কারণ হচ্ছে না। ইবলিস শয়তানের ধোঁকায় হাজারো রোগ-ব্যাধি তাদের বাহ্যিক এবং অন্তরে বাসা বেঁধে রেখেছে। দুনিয়ার চাকচিক্যে তাদের অন্তরে মোহর পড়ে গিয়েছে। ফলে আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি মুহব্বত তাদের মধ্যে দেখা যায় না। অথচ কবি বলেছেন-

‘দুনিয়া অন্তর লাগানোর জায়গা নয়,

দুনিয়া ইবরত-নছীহত হাছিলের জায়গা।’

এখন আমাদের প্রশ্ন- এসব তথাকথিত মুসলমানগণ কিভাবে আল্লাহ পাক উনার শ্রেষ্ঠ মাখলুক হিসেবে পরিচয় দিবে?

আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হিসেবে দাবি করবে? তাদের সে পথ তারা কি নিজেরাই (দ্বীনি ইলম অর্জন না করার কারণে) বন্ধ করে দিল না?

মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এবং আহলে বাইত উনাদের মুবারক উসীলায় এসব দ্বীন বহির্ভূত বিষয় হতে দূরে রাখেন এবং আমরা যেন সব সময়ের জন্য হাক্বীক্বী মুসলমান, হাক্বীক্বী উম্মত এবং যামানার মুজাদ্দিদে আ’যম উনার হাক্বীক্বী অনুসারী হিসেবে থাকতে পারি। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের নেক ইচ্ছাকে কবুল করুন। আমীন!

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১