পুজিবাদী অর্থ ব্যবস্থায় চলছে দেশ। কোটিপতির সংখ্যা এখন লাখেরও বেশি। অধিকাংশরাই কর ফাঁকি দিচ্ছে। অথচ যাকাতদানের চেতনা তৈরি করলে ধনীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসতো। তাতে সম্পদ আহরণ হতো অনেক বেশি এবং দারিদ্র্য দূর হতো নিমিষেই।

সংখ্যা: ২৪৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

পুজিবাদী অর্থ ব্যবস্থায় চলছে দেশ। কোটিপতির সংখ্যা এখন লাখেরও বেশি। অধিকাংশরাই কর ফাঁকি দিচ্ছে। অথচ যাকাতদানের চেতনা তৈরি করলে ধনীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসতো। তাতে সম্পদ আহরণ হতো অনেক বেশি এবং দারিদ্র্য দূর হতো নিমিষেই।

সুষম বণ্টন, স্বতঃস্ফুর্ত সমৃদ্ধির উচ্চাশা নিয়েই যাত্রা হয়েছিল স্বাধীনতা-উত্তর উন্নয়ন পরিকল্পনার। তবে উন্নয়ন ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে সাম্প্রতিক দশকগুলোয় সামাজিক অসমতা ও বৈষম্য যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে ব্রিটিশ ঔপনেসিক আমলের শোষণ-লুণ্ঠন অর্থনীতিরই যেন পুনরুজ্জীবন ঘটছে। সমাজের বিরাট এক অংশ এখনো ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে ঘুমাতে যায়। পরিপূর্ণ ও পুষ্টিকর খাদ্য, প্রয়োজনীয় বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও পরিবেশসম্মত আবাসন সুবিধা এখনো সাধারণের আয়ত্তেরই বাইরে। সমাজের ৭৫ শতাংশের জীবনে অসচ্ছলতা ও অস্বাচ্ছন্দ্যের অন্ত নেই। জীবনমুখী ও সম্মানিত ইসলামমুখী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উন্নয়নতত্ত্ব দেখার প্রয়োজন অনেকটাই হারিয়ে গেছে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে।

প্রসঙ্গত, বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে- দেশের উন্নয়নতত্ত্বের প্রধান ত্রুটি হচ্ছে, এখানে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে জাতীয় আয় বৃদ্ধির উপর; বণ্টনব্যবস্থা নিয়ে ভাবা হয়নি মোটেও। ফলে জাতীয় আয় বাড়ার প্রধান সুবিধাভোগী সীমিত কিছু মানুষ, আর বিরাট অংশের সম্ভাবনা ক্রমেই মিইয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের দ্রুত বড় হওয়া অতি ধনী ও সুবিধাভোগীদের সাম্প্রতিক চিত্র ফুটে উঠেছে ওয়ার্ল্ড আল্ট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট-২০১৩-এ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে ন্যূনতম ৩ কোটি ডলার বা ২৫০ কোটি টাকা সম্পদধারীর সংখ্যা ৯০। তাদের কাছে গচ্ছিত মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বা ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপি’র ১২ শতাংশ। এক বছর আগে এমন ধনীর সংখ্যা ছিল ৮৫। তাদের কাছে গচ্ছিত সম্পদ ছিল ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার বা ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে ধনীদের সম্পদ বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচে। সেখানে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে সম্পদ কুক্ষিগতের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের বেশি। ওয়ার্ল্ড আল্ট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১১ সালে। তাই পাঁচ বছর আগের চিত্র জানার জন্য দেশী-বিদেশী ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য নেয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্য ভা-ারের হিসাবে, ন্যূনতম ৩ কোটি ডলার সম্পদ আছে এমন অতি ধনী ২০০৯ সালে ছিলো সর্বোচ্চ ৫০ জন। তাদের কাছে গচ্ছিত মোট সম্পদের পরিমাণও ৭০০ কোটি ডলারের বেশি হবে না।

উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড আল্ট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট-২০১৩ রিপোর্ট যথাযথ নয়। তবে ‘আমাদের উন্নয়ন সাফল্যে দারিদ্র্যের হার কমার কথা বলা হলেও ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বেড়েই চলেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সমাজের একটি অংশ বড় অঙ্কের কালো টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। কিছু লোক হঠাৎ করে কোটিপতি হয়ে যাওয়ায় সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, যা এসময়কার অস্থিতিশীলতার অন্যতম কারণ। বিষয়টির দিকে নজর দেয়ার সময় এসেছে এখন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ওয়েলফেয়ার মনিটরিং সার্ভে অনুযায়ী, মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশের হাতেই সম্পদের সবচেয়ে বড় অংশ। মধ্যবিত্ত শ্রেণী মোট জনসংখ্যার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। এর বাইরে ৭৫ শতাংশ মানুষই উন্নয়নের বড় ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কোনোভাবে আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলিয়ে দিন পার করছে ৫ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। আর দারিদ্র্য নিত্যসঙ্গী এমন মানুষের সংখ্যা ৫ কোটি ১০ লাখ ৪০ হাজার। দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিতের সংখ্যা দেড় কোটি। এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ খাদ্যচাহিদা মেটাতে হয়ে পড়ছে ঋণগ্রস্ত। সমাজের এ অংশটি ক্রমেই ঋণভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছে।

মূলত, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহুবিধ সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে পুঁজিবাদী অর্থ-ব্যবস্থার ছোবল থেকে বেরিয়ে এসে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইনসাফভিত্তিক অর্থনীতির বাস্তবায়ন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অন্যতম স্তম্ভ যাকাত উনার কঠোর বাস্তবায়ন। সে প্রসঙ্গে আফদ্বালুন নাস বাদাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বলেছিলেন, “যে যাকাতের একটি রশি দিতেও অস্বীকার করবে আমি তার বিরুদ্ধে জিহাদ করবো।” সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য, যাকাত আদায় সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধের প্রচার করলে ধনী মানুষের মাঝে কর ফাঁকি দেয়ার মতো প্রবণতা থাকবে না। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাকাত দিবেন। তাতে আয়কর থেকে যে রাজস্ব আসে তার চেয়ে বহুগুন সম্পদ সরকারি কোষাগারে জমা হবে এবং খুব সহজেই তার সুফল দেশের দরিদ্র মানুষরা পাবে। মুহূর্তেই দারিদ্র্য বিমোচন হবে। সুবহানাল্লাহ!


-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৬

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৫

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৪

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৪ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার মানহানি করার জন্য আন্তর্জাতিক ইসলাম বিদ্বেষী চক্র ‘জুয়েল অব মদিনা’ অপন্যাসের অপপ্রয়াস চালিয়েছে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছে  আর উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মানহানি করার প্রেক্ষাপট তারা এদেশেই রচনার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে  ‘ঘরজামাই’ সুন্নতী চেতনার মানহানি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!