প্রসঙ্গ : শিশু নির্যাতন ও শিশু হত্যা॥ সমাধান কোন পথে? পাশ্চাত্যের মতো শিশুদের রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা হবে আত্মঘাতী। কথিত রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নয়, বরং ইসলামী মূল্যবোধ উজ্জীবনের মাধ্যমেই শিশুর প্রতি মমত্ববোধ ও দায়িত্ব তৈরি সম্ভব

সংখ্যা: ২৫১তম সংখ্যা | বিভাগ:

অতি জঘন্য এবং বিস্ময়করভাবে বাড়ছে শিশু নির্যাতন, শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও শিশু হত্যা। এমনকি আপন বাবা-মাও এখন শিশু হত্যায় অভিযুক্ত হচ্ছে। গত ২ মাসে আপন বাবা-মায়ের হাতে ৭০টিরও বেশি শিশু হত্যাকা- হয়েছে। আর এ থেকেই এখন শিশু নির্যাতন ও হত্যার বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। কিন্তু সুষ্ঠু ও সত্যিকার সমাধান কোন পথে- সেদিকটিতে কথিতরা কেউই আলোকপাত করতে সক্ষম হচ্ছে না। বরং তাদের উপদেশ হচ্ছে- মাথা ব্যাথা সারাতে মাথাটাই কেটে ফেলার মতো।

গত ০৬ মার্চ ২০১৬ ঈসায়ী ইয়াওমুল আহাদ বা রোববার মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেছে, রাষ্ট্রের ব্যর্থতার কারণেই দেশে শিশু হত্যা ও নির্যাতন বাড়ছে। অন্যদিকে দাবি উঠছে, কথিত উন্নত দেশ পাশ্চাত্যের ন্যায় শিশুদের রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার। নাউযুবিল্লাহ!

উল্লেখ্য, পাশ্চাত্যে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণেই শিশুদের চরম অধপতন ঘটেছে। কারণ পশ্চিমা সমাজ ব্যবস্থায় নৈতিকতা বলতে কোনো কথা নেই। পশ্চিমা দেশগুলোর সংস্কৃতি মানুষের জৈবিক চাহিদাকে স্বাভাবিক চাহিদা বলে গণ্য করে। একে লুকিয়ে রাখতে হবে, গোপনে রাখতে হবে, কাউকে বলা যাবে না, নারীর সাথে পুরুষ মিশতে পারবে না, এক সাথে কোথাও যেতে পারবে না, প্রেম করতে পারবে না- এসব রীতিকে তারা হাস্যকর বা অবাস্তব বলে গণ্য করে।

পশ্চিমা দেশগুলো বিশ্বাস করে- নারীপুরুষের অবাধ মেলা-মেশায় দোষের কিছু নেই।  নারী-পুরুষ সম্পর্ক সেখানে উন্মুক্ত, অবাধ, স্বাধীন। পশ্চিমা দেশে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা দেয়া হয় না যে, বিয়ে ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক করা যাবে না।

পশ্চিমা দেশের সামাজিক সংস্কৃতি এভাবেই গড়ে উঠেছে। ফলে পশ্চিমা শিশুদের মধ্যে এসব অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপ ব্যাপক। এসব দেশের মেয়ে শিশুরা কুমারী অবস্থাতেই মা হয়। শিশু অবস্থাতেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।

সেন্টার ফর সোশ্যাল জাস্টিজের (সিএসজে) গবেষণা মতে, ব্রিটেনে ৪৬ শতাংশ শিশু জন্ম নেয় কুমারী মায়ের গর্ভে। শুধু মা অথবা বাবার কাছে বেড়ে উঠা সন্তানদের ৭৫ শতাংশ স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। ৭০ শতাংশ মাদকাসক্ত হয়। ৫০ শতাংশ মদ পান করে এবং ৩৫ শতাংশ প্রাপ্ত বয়সে বেকার হয়ে পড়ে। ৪৮ শতাংশ সন্তানদের বয়স ১৬ হওয়ার আগেই দেখে মা-বাবার বিচ্ছেদ। ১০ বছর আগে এ হার ছিল ৪০ শতাংশ। ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘চাইল্ড ট্রেন্ড’র সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ জরিপ মতে, ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে কুমারী মাতা ছিল ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ শিশু অবস্থায়ই পশ্চিমা শিশুরা বিয়ে বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

শুধু তাই নয়, পশ্চিমা সংস্কৃতিতে বিয়ের আগ পরে লিভটুগেদার, সমকামিতা, অবাধ মেলামেশা ইত্যাদি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন বৈধ হওয়ায় পশ্চিমা দেশে ছেলেমেয়ে, মা-বাবা নিজেদের মধ্যে কোন শ্রদ্ধাবোধ, মুহব্বত ভালোবাসা নেই। ফলে মা-বাবারা শিশু অবস্থায় ছেলে-মেয়েদের চাইল্ড হোমে পাঠিয়ে দেয়। অনুরূপ প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়েরাও বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবাকে ওল্ড হোম বা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। এজন্য তারা মা দিবস, বাবা দিবস, ভালোবাসা দিবস প্রবর্তন করেছে। এসব দিবসে বছরে এক দুইবার তারা মা-বাবাকে ভালবাসা দেখায়। আবার মা-বাবার শাসনে বিরক্ত হলে পুলিশ ডেকে জেলে পাঠাতেও কুণ্ঠাবোধ করে না।

কারণ রাষ্ট্র তাদের অভিবাবক। রাষ্ট্র তাদের পৃষ্ঠপোষক। সেখানে মা-বাবার অধিকার নেই তাদের শাসন করার। মা-বাবা শুধু রাষ্ট্রের পক্ষে রক্ষণাবেক্ষণকারী। নাউযুবিল্লাহ!

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পাশ্চাত্যের শিশুদের এই যখন অবস্থা, তখন তাদের অনুকরণের চেষ্টা করা মানে- এদেশের শিশুদের নিজ হাতে হত্যা করে ফেলা। পাশ্চাত্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত সমাজ ব্যবস্থায় আমরা অনুসরণ করতে পারি না। কারণ আমাদের জন্য রয়েছে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ। শিশুদের মুহব্বতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা শিশু সন্তানদের স্নেহ করো, তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করো এবং সদাচরণ ও শিষ্টাচার শিক্ষা দাও।” (পবিত্র তিরমিযী শরীফ)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “যে শিশুদের স্নেহ করে না এবং বড়দের সম্মান করে না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার এসব চেতনা আমাদের মানসিকতায় নেই, শিক্ষা ব্যবস্থায়ও নেই। তাই সমাজ জীবনের কোনো ক্ষেত্রে এর প্রতিফলনও নেই। তাই সমাজ জীবনে আগে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। তাহলেই শিশু নিপীড়ন বন্ধসহ শিশুদের প্রতি মমত্ববোধ তৈরি হবে। শিশুদের নৈতিক চরিত্র গঠন হবে। পাশ্চাত্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত সমাজের উদাহরণ টানতে হবে না।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, শুধু কথিত শিশু আইন থাকলেই তা দিয়ে শিশু নির্যাতন বন্ধ করা যাবে না। যেমনটি বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে অনেক আইন আছে, কিন্তু তা বন্ধ করা যায়নি। তাই নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ইসলামী মূল্যবোধ ও চেতনাকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং মাদরাসা স্কুল কলেজসহ সর্বস্তরের সিলেবাসে তা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

 

 

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।