ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রভৃতি প্রকল্প দিয়ে যানজট নিরসন ও যানচলাচল নির্বিঘ্নে করা সম্ভব নয়। রাজধানীর বিকেন্দ্রীকরণই মূলত সমস্যার সমাধান। বিকেন্দ্রীকরণে সরকারের সঠিক পদক্ষেপ কাম্য।

সংখ্যা: ২৬৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ সহজ করার উদ্দেশ্যে ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করবে সেতু বিভাগ। প্রকল্পটির আওতায় বিমানবন্দর সড়ক থেকে আশুলিয়ার ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়াও নবীনগরে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। জিটুজি ভিত্তিতে এটি নির্মাণ করবে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি)। আর এ জন্য নির্মাণকালেই সুদ গুনতে হবে এক হাজার ১১৭ কোটি টাকা। এর বাইরে প্রকল্পটির জন্য ১২ শতাংশ ভ্যাট ও কর পরিশোধ করবে সরকার। এছাড়া বিভিন্ন সরঞ্জাম আমদানির জন্য চার শতাংশ কাস্টমস শুল্কও সরকারি তহবিল থেকে বহন করতে হবে, যদিও অন্যান্য প্রকল্পে এটি ঠিকাদার নিজেই বহন করে থাকে। আবার পুনঃরফতানির শর্তে যন্ত্রপাতি আমদানির বিপরীতে ধার্যকৃত কাস্টমস শুল্ক মওকুফও করে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

উল্লেখ্য, ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করতে হবে পাঁচ হাজার ৯৫১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আর চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কন্সট্রাকশন (ইপিসি) টার্ন কি চুক্তির আওতায় সিএমসি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। চার বছরে এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার কথা। আর এ সময়ের জন্য এক হাজার ১১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা সুদ নেবে চীন। অর্থাৎ চার বছরের জন্য ঋণের ১০ দশমিক ২০ শতাংশ শুধু সুদই দিতে হবে, যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ সাধারণত গ্রেস পিরিয়ডে শুধু ঋণের সুদ দিতে হয়। তাই নির্মাণকালের এতটা সুদ বাস্তবসম্মত এবং স্বাভাবিক নয়। চীনের ঋণে দুই শতাংশ সুদ হার ছাড়াও দশমিক ২০ শতাংশ কমিটমেন্ট চার্জ ও দশমিক ২০ শতাংশ ম্যানেজমেন্ট চার্জ দিতে হয়। তবে ঋণ ছাড় করতে যত দেরি হবে কমিটমেন্ট ও ম্যানেজমেন্ট চার্জ তত বাড়তে থাকবে। আর পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে পরিশোধ করতে হবে পুরো ঋণ। সবচেয়ে প্রশ্ন ওঠার বিষয় হলো, এই প্রকল্পে শুধু পরামর্শক খাতেই দিতে হবে ৩০৫ কোটি টাকা।

সরকার যানজট নিরসন ও নির্বিঘ্ণে যানচলাচলের জন্য এই এক্সপ্রেসওয়ের মতো বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ৫টি ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা মেট্রোরেল রুট নির্মাণ; ২টি বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি সড়ক নির্মাণ, ইনার, মিডল এবং আউটার নামে ৩টি রিং রোড নির্মাণ; ইনার ও আউটার রিং রোডকে সংযোগকারী ৮টি রেডিয়াল সড়ক নির্মাণঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে বাদেও আরো ৫টি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ- (ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-সিলেট এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-ময়মনসিংহ এক্সপ্রেসওয়ে); ২১টি ট্রান্সপোর্টেশন হাব বা টার্মিনাল নির্মাণ ইত্যাদি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাজেট ধরা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা, সরকারের মেট্রোরেল প্রকল্পে বাজেট ধরা হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্পে বাজেট ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ১৩ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, যানজট নিরসনে প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো ফ্লাইওভারের মতোই নিষ্ফল হবে। উল্লেখ্য, ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের নির্মিত ৯টি ফ্লাইওভার তৈরীর আগে সরকার থেকে উচ্চবাক্যে বলা হয়েছিলো যে, এই ফ্লাইওভারগুলোর মাধ্যমে রাজধানীর যানজট দুর হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর যানজট নিরসনে ফ্লাইওভার কোন ভূমিকাই রাখতে পারেনি উল্টো যানজট বৃদ্ধি ও বাড়তি দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। তেমনি এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, র‌্যাপিড ট্রানজিট, মেট্রোরেল সহ অন্যান্য প্রকল্পগুলোতেও বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী যানজট নিরসন সম্ভব নয়।

সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, প্রতিনিয়ত লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করে যতই নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হোক না কেন, যানজট সম্পূর্নরূপে নিরসন করতে সরকারের একটাই পথ রয়েছে। তা হচ্ছে “বিকেন্দ্রীকরণ”। কারন জনচাপের কারণেই সড়কপথে দুর্ভোগ ও যানজটের সৃষ্টি হয়। যতদিন পর্যন্ত সরকার জনচাপ কমাতে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোর অর্থ বিকেন্দ্রীকরণ প্রকল্পে কাজ না লাগাবে ততদিন পর্যন্ত যানজট  ও সড়কপথে ভোগান্তি নিরসন হবেনা।

ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেলসহ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো বানাতে যে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে তা দিয়ে অন্যান্য জেলাগুলোকে উন্নতকরণ করলে এবং বিকেন্দ্রীকরণ করলে জনসমষ্টিও বিভক্ত হতো এবং যানজটও কমতো। কিন্তু তার বিপরীতে এই প্রকল্পগুলো নির্মাণের পেছনে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, একটাই উদ্দেশ্য তা হচ্ছে- ক্ষমতাসীনদের লুটপাট। যানজট নিসনের সবচেয়ে প্রজ্ঞাপূর্ণ পন্থা হলো আগে জনজট কমানো। ঢাকা শহরে মাত্র ৩৬০ বর্গকিলোমিটার। অথচ এ সংক্ষিপ্ত আয়তনেই বাস করছে প্রায় ২ কোটি লোক। এক্ষেত্রে উচিত হবে এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেয়া।

রাজধানী ঢাকা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মেগাসিটি। এক হিসেবে, প্রতি বছর রাজধানীতে ৫ লাখ করে লোক বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এসব লোকের চাহিদা অনুসারে রাজধানীতে যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে। বছর বছর ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলেও এই লাখ লাখ লোকের জনচাপ সহ্যৃ করতে পারছে না রাজধানী। বিপর্যয় ঘটছে রাজধানীর চলাচলের পরিবেশ। সারাদেশ থেকে মূলত মানুষ রাজধানীতে আসে কর্মের খোঁজে, প্রশাসনিক কাজে, বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে, স্বাস্থ্যসেবা নিতে, আইনি সেবা ইত্যাদি নেয়ার জন্য রাজধানীতে আসছে। আর সেক্ষেত্রে সরকার যদি রাজধানীকে বিকেন্দ্রীকরণ করে, তাহলে এই জনজট তথা যানজট বা শব্দজট সারাদেশে ভাগ হয়ে যায়। যদি রাজধানীর বড় বড় হাসপাতাল, কলকারখানা, চাকরিকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি বিভিন্ন কার্যালয়, আইনি কার্যালয় ইত্যাদি দেশের প্রত্যেকটি জেলায় ছড়িয়ে দেয়, তাহলে মানুষ শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক না হয়ে সেসব জেলাগুলোতেও ছুটবে। এতে করে চাপ কমে আসবে রাজধানীর উপর এবং যানবাহন সংখ্যাও কমে গিয়ে রাজধানীর জন্য সহনীয় হয়ে। এতে আর সরকারের সড়ক উন্নয়ন ও যানজট নিরসনের অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোর জন্য আলাদাভাবে প্রতি বছর বাজেটে লাখো কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে না।

মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।