ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ এদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রাধান্য প্রাপ্ত। অপরদিকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি চরম অবহেলিত। এই কী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? এই কী স্বাধীনতার প্রেরণা?

সংখ্যা: ২০৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ এদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রাধান্য প্রাপ্ত।

অপরদিকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি চরম অবহেলিত।

এই কী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? এই কী স্বাধীনতার প্রেরণা?

নজরুল এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমান ও ইসলামের কবি।

তাঁর মর্যাদা এদেশবাসী সর্বাগ্রে চায়।

 

 

ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার ভারতের সাথে যৌথভাবে পালন করেছে। কিন্তু গত ২৫শে মে-২০১১ ঈসায়ী তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ১১২তম জন্মদিন অনেকটা অনাদরে আর অবহেলায়ই পালিত হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা সদিচ্ছার সঠিক ও স্বতঃস্ফূত প্রতিফলন কোথাও দেখা গেলো না।

উল্লেখ্য কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বিদ্রোহের কবিই নন, তিনি আমাদের জাতীয় কবিও। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁকে এ মর্যাদা দেওয়া হলেও তার স্মৃতি সংরক্ষণ এবং সৃষ্টিকর্মের প্রসারে নেই আন্তরিক কোনো উদ্যোগ। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, গণমাধ্যম থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠক্রমেও অবহেলিত এ কবি। সরকারি কর্মকা-েও তিনি উপেক্ষিত। ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে উদযাপন করলেও নজরুল জন্মবার্ষিকী পালনের ক্ষেত্রে এমন কোনো চিন্তা সরকারের নেই।

জানা যায়, দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নজরুল জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হলেও প্রচারের অভাবে এটি পড়ে রয়েছে অন্তরালে। একই অবস্থা নজরুলবিষয়ক ওয়েবসাইটেরও। বন্ধ হয়ে গেছে নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান কেন্দ্রীক পর্যটন কার্যক্রম।

জাতীয় কবির মৃত্যুর সাড়ে তিন দশক পরও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রকাশ সম্ভব হয়নি তাঁর পূর্ণাঙ্গ জীবনী। ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে নজরুল এখনো অনেকটাই অচেনা, অজানা।

নজরুলের স্মৃতিধন্য স্থানগুলোকে ঘিরে বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিলেও কখনোই সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও নজরদারি না থাকায় নজরুলের নামে গড়া প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধের পথে। এ সবের পাশাপাশি সাংবাদিকতা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য নজরুলের নামে জাতীয় পর্যায়ে আজও কোনো পদক বা পুরস্কার চালু করা হয়নি।

নজরুলের সাহিত্য বিষয়ে গবেষণার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নেই পর্যাপ্ত বাজেট। জানা যায়, নজরুল ইনস্টিটিউটের গবেষণা ও প্রকাশনা খাত মিলিয়ে বাজেট ১৫ লাখ টাকা। আর নজরুলের নামে একমাত্র সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে গবেষকের পদ মাত্র একটি। অন্যদিকে পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান ‘নজরুল একাডেমী’ এখন গবেষণার কাজ বাদ দিয়েছে।

গবেষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘নজরুল বিষয়ে গবেষণার দুঃখজনক দিক হচ্ছে, যারা এ বিষয়ে পিএইচডি করেন, তারা চাকরি পান না। আমি আমার তত্ত্বাবধানে এ পর্যন্ত পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পিএইচডি করিয়েছি। তাদের কারোরই চাকরি হচ্ছে না।’

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতেও উপেক্ষিত জাতীয় কবি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাংলা বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে তাঁর রচনা পড়ানো হয় মাত্র ২৬ নম্বরের জন্য। আর সেটাও ঐচ্ছিক, আবশ্যিক নয়। শিক্ষাবিদদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা বিষয়ে পাঠ্যসূচি সাজানো হয়েছে ব্রিটিশ আমলে প্রণীত পাঠক্রম দিয়ে। নজরুলের ব্রিটিশবিরোধী ভূমিকা আড়াল করার উদ্দেশ্যেই ওই মডেলকে অনুসরণ করা হচ্ছে।

জানা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠসূচিতে জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলের রচনা একশ নম্বরে আবশ্যক করার প্রস্তাব দিয়ে বেশ কয়েকবার এক অধ্যাপক তিরষ্কৃত হয়েছেন।

কবির স্মৃতিধন্য ময়মনসিংহের ত্রিশালে তাঁর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলেও সেখানে যেসব বিভাগ খোলার কথা ছিল, তার বেশির ভাগই খোলা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধু নজরুলের নামে করেই যেন তাঁর প্রতি দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে রাষ্ট্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি স্কুল ও কলেজের পাঠ্যক্রমেও সেভাবে স্থান পাচ্ছে না জাতীয় কবির রচনাবলী।

সাহিত্য নিয়ে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমীতেও উপেক্ষিত নজরুল। একাডেমী খ্যাতিমানদের পাশাপাশি অনেক অখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী প্রকাশ করলেও জাতীয় কবির জীবনী প্রকাশ করেনি। এখনো পূর্ণাঙ্গ নজরুল রচনাবলী প্রকাশ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। কবির অনেক বই এখন পুনর্মুদ্রণ করার মতো সময় নেই বাংলা একাডেমীর! একই সঙ্গে, একাডেমীতে নির্মিত ‘নজরুল মঞ্চ’ বইমেলার সময় ছাড়া ব্যবহার করা হয় না। বইমেলার সময় মোড়ক উন্মোচন করার কাজে এই মঞ্চটি ব্যবহৃত হয়। বাকি সময় মঞ্চটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে থাকে।

কবির স্মৃতিধন্য স্থানগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কার্যকর উদ্যোগ নেই। সংরক্ষিত না হওয়ায় বদলে যাচ্ছে, মুছে যাচ্ছে কবির স্মৃতিচিহ্ন। অন্যান্য দেশে জাতীয় কবির স্মৃতিজড়িত সব স্থান সংরক্ষণের আওতায় নেওয়া হলেও, এদেশে তা হয়নি। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান, স্থাপনাগুলো দেখার সুযোগ করে দিতে নজরুল ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ‘নজরুল পর্যটন’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছিল ২০০৬ সালের ২১ জানুয়ারি। এ কার্যক্রম গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে বন্ধ।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নজরুল চিকিৎসাধীন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলার ১১৭ নম্বর কক্ষে। এ কক্ষটিও সংরক্ষিত নয়।

নজরুল ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, ঢাকায় নজরুলের স্মৃতিধন্য ৩১টি স্থান রয়েছে। সেসব স্থান সংরক্ষণ এবং সেখানে স্মৃতিফলক বসানোর জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) কাছে নজরুল ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ২০০৬ সালে আবেদন করা হয়েছিল। সে আবেদনে সাড়া দেয়নি ডিসিসি। ১৯৭২ সালের ২৪ মে থেকে ১৯৭৫ সালের ২২ জুলাই পর্যন্ত কবি ধানম-ির যে বাড়িতে বাস ছিলেন, পরিকল্পনার অভাবে সে বাড়িটি এখন লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেছে। বাড়ির সামনের যে বাগানে কবি হাঁটতেন, তা পরিণত হয়েছে গ্যারেজে। এভাবেই জাতীয় কবিকে অবহেলিত করে রাখা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো পরিকল্পনাও নেই সরকারের।

উল্লেখ্য, এদেশের ৯৭ ভাগ অধিবাসী মুসলমান। মুসলমান মাত্রই পরকালে বিশ্বাসী। আর নজরুলের খেয়াপারের তরণী কবিতা পড়ে, সাধারণ মুসলমান পরকালে অনুপ্রাণিত হয়ে কেঁদে দেয়। নজরুলের ‘রমযানের ওই রোযার শেষে’ কাছীদা পাঠ করে সাধারণ মুসলমান তাদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আনন্দের আবহ পায়।

অপরদিকে ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ এদেশের মুসলমানদের সমৃদ্ধির সব বিষয়ে পদদলিত করেছিল। বঙ্গভঙ্গ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিল। তার রচিত বাংলাদেশের কথিত জাতীয় সঙ্গীত এ বিকৃত ‘নয়ন’, ‘জল’, ‘বদন’ এ শব্দগুলো এখনও এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের মুখে উচ্চারিত হয় না। এছাড়া তার কবিতায়, রচনায় এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের আবেগ, অনুভূতি ও বিশ্বাসের কোনো প্রতিফলনই নেই।

পাশাপাশি ‘মসজিদের পাশে কবর দিও ভাই, ……….মুয়াজ্জিনের আজান যেন শুনতে পাই’ নজরুলের কাছিদার এ আর্তি তাঁর জীবনে যেহেতু সত্য প্রমাণিত হয়েছে সে প্রেক্ষিতে তাকে মূলত ইসলাম ও মুসলমানের কবি বলেই অভিহিত করতে হয়।

সুতরাং প্রশ্ন জ্বলন্ত হয়; সে ভারতীয় কবির দেড়শত বছরের জন্মজয়ন্তী, নিজেদের জাতীয় কবি নজরুলের চেয়ে হাজারগুণ বেশি ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অবাধ সরকারি অর্থ ব্যয় করে, বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও জাঁকজমক সহকারে করাই কী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?

বলাবাহুল্য, যুগপৎভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অথবা ৯৭ ভাগ মুসলমানের ঈমানী প্রেরণার প্রেক্ষিত থেকেই সরকারকে অবিলম্বে জাতীয় কবিকে অবহেলা করে ভারতীয় কবির প্রপাগান্ডার প্রবণতা থেকে ফিরে আসতে হবে। সরকারিভাবে জাতীয় কবি নজরুলের মর্যাদা সর্বাগ্রে ও সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

মূলত ইসলামী প্রজ্ঞার অভাবে কোন সরকারই এ সত্যটি আদৌ উপলদ্ধি করতে পারেনি। সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, সরকারেরও প্রয়োজন রয়েছে নেক পরামর্শ তথা নেক ছোহবত, রূহানী সংস্পর্শ তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ।

-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান

 

 

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।