মাদকাসক্তি নিরাময়ের নামে অবৈধভাবে গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার নিরাময় কেন্দ্র। চলছে বহুমাত্রিক রমরমা ব্যবসা। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রই মাদক সেবনের নিরাপদ আখড়া এবং এক একটা টর্চার সেল। মাদক দূর করতে হলে ইসলামী মূল্যবোধের বিকল্প নেই।

সংখ্যা: ২৫৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

বেশিরভাগ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলো এখন মাদক সেবনের নিরাপদ আখড়া! নিয়ন্ত্রণহীনভাবেই চলছে দেশের অধিকাংশ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নাকের ডগায় বসে চলছে এসব প্রতিষ্ঠানের নানামাত্রিক বাণিজ্য। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরেরও তেমন কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই এসব অভিযোগের প্রতি। ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা এসব মাদক নিরাময় কেন্দ্রের অধিকাংশই অনুমোদনহীন।

সরকারিভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে মাত্র ৪টি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় নিরাময় কেন্দ্র কম হওয়ার ফলে এক শ্রেণীর অসৎ ব্যবসায়ী সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের নামে গড়ে তুলেছে বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। আর সরকারের যথাযথ তদারকি ও নজরদারি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের উপরি কামাইয়ের লোভে অবাধে ও নিরাপদে মাদক ব্যবসার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে অধিকাংশ মাদক নিরাময় কেন্দ্র। পরিবারের লোকজন মাদকসেবীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সম্মান ও সংঘাত এড়াতে মাদকাসক্ত আপন লোকটিকে টাকার বিনিময়ে নির্বিঘেœ মাদক গ্রহণের ব্যবস্থা করতেও দ্বারস্থ হচ্ছে তথাকথিত মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে। তাদের পরামর্শে ভর্তি করে দেয়া হচ্ছে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে।

রাজধানী ঢাকা শহরের পাঁচ শতাধিকসহ দেশের প্রায় আড়াই হাজার মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র পরিচালিত হলেও সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে এর কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। অনুমোদনহীনভাবে চলছে এগুলো। অনেক ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে এর কার্যক্রম। এসব জায়গা থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছে এমন নজির কম। কেউ কেউ চিকিৎসা নিয়ে কিছুদিন ভালো থাকলেও আবারও তাকে ফিরে আসতে হচ্ছে। এ সুযোগে অভিনব পদ্ধতিতে নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার নামে একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অথচ ওসব কেন্দ্রের অধিকাংশের নেই কোনো বৈধ অনুমোদন এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো দিন দিন গজিয়ে উঠছে নতুন নতুন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র।

বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় ও মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনার জন্য সরকারি শর্তাবলীর মধ্যে রয়েছে- আবাসিক এলাকার পাকা বাড়ি বা ভবনে অবস্থিত, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস, নিরিবিলি সুন্দর পরিবেশ হতে হবে। একজন রোগীর জন্য কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকতে হবে। অন্যদিকে প্রতি ১০ বেডের জন্য পৃথক একটি টয়লেট, বাথরুম, বিশুদ্ধ পানি অন্যান্য সুব্যবস্থা এবং খ-কালীন বা সার্বক্ষণিক একজন মনোচিকিৎসক, সার্বক্ষণিক একজন ডাক্তার, দুজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স বা বয়, একজন সুইপার বা আয়া এবং জীবন রক্ষায় সহায়ক উপকরণ ও অত্যাবশ্যক ওষুধ থাকতে হবে। এছাড়া মাদকাসক্ত ব্যক্তির রক্ত, কফ, মলমূত্র ইত্যাদি পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত যেকোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণের সুবিধা থাকতে হবে। কেন্দ্রে একক বা দলগত পরামর্শক এবং কাউন্সেলিংয়ের জন্য ২০ জনের উপযোগী একটি শ্রেণীকক্ষ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু সরজমিন দেখা যায়, ঢাকার প্রায় ৯৯ শতাংশ নিরাময় কেন্দ্রই মানছে না এ নিয়মগুলো।

এদিকে নিরাময় কেন্দ্রের মতো এনজিওগুলোর কার্যক্রমও বাণিজ্যিক হয়ে পড়েছে। মাদকবিরোধী জনসচেতনতা গড়ার নামে রাজধানীসহ সারা দেশে গড়ে উঠেছে আড়াই শতাধিক এনজিও। তাদের বেশিরভাগ কার্যক্রম বার্ষিক মাদক দিবস পালনের মিছিল, মিটিং, সেমিনার আর র‌্যালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এসব এনজিও শুধু মাদকবিরোধী জনসচেতনতার নামে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার কাছ থেকে প্রতি বছর গড়ে আড়াই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বেসরকারিভাবে মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র করতে হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমোদন না নিয়ে প্রতিদিন গড়ে উঠছে একের পর এক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। কেন্দ্রগুলোতে নিরাময়ের নামে উল্টো মাদক ব্যবসা চলছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। হরেক নামে রঙ-বেরঙের সাইনবোর্ডের আড়ালে গজিয়ে উঠা এসব নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার নামে মাদকাসক্তদের উপর চলে অমানবিক নির্যাতন। অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, জেলখানার মতো ছোট ছোট রুমে মাদকাসক্তদের তালাবন্দি রেখেই চলছে তথাকথিত নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে কিছু অসৎ চক্র ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত করে মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলো। এসব কেন্দ্রে চিকিৎসা সুবিধা বলতে কিছু নেই। বরং মাদক থেকে মুক্ত করার পরিবর্তে চিকিৎসা কেন্দ্রের মধ্যে মাদক সেবন করিয়ে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো অর্থ আদায় করা হয়।

রাজধানীর একটি গার্মেন্টসের লাইনম্যান রওশন তার ভাইকে দিয়ে আসেন মিরপুর-১ এর সুখনীড় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। গাঁজা আর ফেনসিডিলে আসক্ত ভাইকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি করানোর পর দুই মাসে আরো ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। ভর্তির সময় তাকে বলে দেয়া হয় ভাইয়ের ভালো চিকিৎসা চাইলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ। এরপর দুই মাস ১১ দিনের মাথায় বাড়ির সামনে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তার ভাইকে।

কী হয়েছিল জানতে চাইলে রওশন জানান, অল্প আয়ের পরিবারগুলোকে টার্গেট করে ৩০ জন মাদকসেবীকে সংগ্রহ করেছিল কিছু অসৎ ব্যক্তি। রওশন বলেন, ‘৩০ জনের কাছ থেকে দুইমাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিলে দুই মাসে কত টাকা হয় হিসাব করেন। সেই টাকার সামান্য কিছু এই দুইমাস এদের পেছনে খরচ করেছে এরা আর নেশা দূর করা দূরে থাক উল্টা নেশাদ্রব্য খাইয়ে এদের ভুলিয়ে রেখেছে সব। এরপর সবার বাড়ির আশেপাশে বা সামনে তাদের ফেলে রেখে গেছে। ওই বাড়িতে আর সেই কেন্দ্র নেই, ব্যবসা বন্ধ করে টাকা লুটে ওরা পালিয়েছে।’ সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি গঠিত সাব কমিটির আয়োজনে এক সভায় মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোর বিষয়ে এসব অভিযোগ স্বীকারই করে নেয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়, দেশে ৫০ লাখ লোক মাদকাসক্ত। সরকারি উপায়ে নিরাময় সীমিত বলেই বেসরকারি পর্যায়ে এতো অরাজকতা চলছে।

কিন্তু সরকারের এ অক্ষমতা গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার বলছে দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। এই এগিয়ে যাওয়ার অর্থ যদি হয় মাদকের পথে এগিয়ে যাওয়া, তবে তা দেশবাসীর জন্য কল্যাণকর নয়। কাঙ্খিত কাম্য নয়, বরদাশত যোগ্য নয়। বরং আত্মঘাতী ও আত্মবিনাশী এবং আত্মবিধ্বংসী। এর থেকে রক্ষা পেতে হলে আত্মসচেতন হতেই হবে।

সর্বোপরি ইসলামী মূল্যবোধের মুখাপেক্ষীই হতে হবে। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বিরোধী কোনো আইন পাস না করার পক্ষের সরকারকে সেক্ষেত্রে সর্বাধিক পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান, ঢাকা

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।